__________স্ত্রীদেরকে যৌন অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না_________

লিখেছেন লিখেছেন মারুফ_রুসাফি ০২ মে, ২০১৪, ১১:২৯:১৮ সকাল



স্ত্রীদেরকে ন্যায্য যৌন অধিকার

থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।

কারন, স্ত্রীদেরকে যৌন সংগম

করাও ইবাদতের অংশ।

অথচ অনেক মানুষ

আছে যারা অধিক সওয়াবের

আশায়

স্ত্রীদেরকে ফেলে মাসের পর

মাস ইবাদতের জন্য দূর-

দূরান্তে অবস্থান করে। আবার

অনেকেই

আছে যারা স্ত্রীদেরকে যৌন

অধিকার থেকে বঞ্চিত

করে সারা রাত জেগে ইবাদত

করে।

কিন্তু ইসলামে এটা আদৌ স্বীকৃত

নয়।

আর বিশেষতঃ সারা রাত

জেগে নামায পড়া বা ইবাদত

করা রাসুল (সাঃ)-এর সুন্নাহ নয়।

রাত হল ঘুমের জন্য এবং রাতের

একটি অংশ ইবাদতের জন্য।

ইবাদতের বেলায় মহান আল্লাহ এত

বেশী কঠোরতা অবলম্বন

করতে বলেন নাই।

রাসুল (সাঃ) দৈনিক ১৭ রাক্কাত

ফরয, সুন্নত ও বিতর এবং রাতের

নামাযসহ মোট ৪০ রাকাত নামায

আদায় করতেন

এবং কখনো কখনো যুহরের আগে ২

রাকাত সুন্নতসহ মোট ৩৮ রাকাত

নামায আদায় করতেন।

এ ছাড়া তিনি কোন কোন সময়

কিছু নফল ইবাদত করতেন।

যেমনঃ চাশতের নামায।

তবে, তিনি কোন কোন সময়ের নফল

নামায গুলোকে নিয়মে পরিনত

করেন নাই।

ইবাদত এবং স্ত্রীদের যৌন

অধিকার

বিষয়ে একটি হাদিসে এসেছে যেঃ

আবু মুসা আশয়ারী (রাদিঃ)

থেকে বর্ণিতঃ

হযরত ওসমান ইবনে মাযউন

(রাদিঃ)-এর স্ত্রী মলিন বদন

এবং পুরাতন কাপড়ে নবী (সাঃ)-

এর বিবিদের কাছে এলেন।

তাঁরা তাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ

তোমার এই অবস্থা কেন?

কুরাইশদের মাঝে তোমার

স্বামী থেকে ধনী কেউ নেই।

তিনি বললেনঃ

এতে আমাদের কি হবে?

কেননা আমার স্বামীর রাত

নামাযে কাটে ও দিন রোযায়

কাটে। তারপর নবী (সাঃ) প্রবেশ

করলেন।

তখন নবীজীর স্ত্রীগণ

বিষয়টি তাকে বললেন।

অতঃপর হযরত ওসমান ইবনে মাযউন

(রাদিঃ)- এর সাথে সাক্ষাত

হলে তিনি তাকে বললেনঃ

“আমার মধ্যে কি তোমার জন্য

কোন আদর্শ নাই?”

হযরত ওসমান (রাদিঃ) বললেনঃ

কী বলেন ইয়া রাসূলুল্লাহ? আমার

পিতামাতা আপনার জন্য

উৎসর্গিত!

তখন তিনি বললেনঃ

“তবে কি তোমার রাত

নামাযে আর দিন রোযায়

কাটে না? অথচ তোমার উপর

তোমার পরিবারের হক রয়েছে,

আর তোমার উপর তোমার শরীরেও

হক রয়েছে। তুমি নামাযও পড়বে,

আবার ঘুমাবেও, আর রোযাও

রাখবে আবার ভাঙ্গবেও।"

তিনি বললেনঃ তারপর আরেকদিন

তার স্ত্রী পরিচ্ছন্ন ও সুগন্ধিত

অবস্থায় এলেন যেন নববধু।

***মাজমায়ে জাওয়ায়েদঃ ৭৬১২;

সহীহ ইবনে হিব্বানঃ ৩১৬।

ইবাদত এবং স্ত্রীদের যৌন

অধিকার বিষয়ে অপর

একটি হাদিসে এসেছে যেঃ

আবু জুহাইফা (রাদিঃ) বলেছেনঃ

নবী সাল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালমান

(রাদিঃ) এবং আবু

দারদা (রাদিঃ)-এর মধ্যে ভ্রাতৃত্ব

বন্ধন স্থাপন করেছিলেন। সালমান

(রাদিঃ) এবং আবু

দারদা (রাদিঃ)- এর

সাথে সাক্ষাত করতে গেলেন আর

উম্মে দারদা (রাদিঃ) [আবু

দারদা (রাদিঃ)-এর স্ত্রী] -

কে ময়লা কাপড় পরিহিত অবস্থায়

দেখতে পেলেন এবং তাকে তার

ঐ অবস্থার কারণ

জিজ্ঞাসা করলেন।

তিনি বললেনঃ

“আপনার ভাই আবু দারদার দুনিয়ার

চাহিদা নাই”।

এর মধ্যে আবু দারদা এলেন

এবং তার (সালমানের) জন্য

খাবার তৈরি করলেন আর

বললেনঃ

“খাবার গ্রহণ করো কারণ

আমি রোযা আছি”।

সালমান (রাদিঃ) বললেনঃ

“তুমি না খেলে আমি খাচ্ছি না”।

কাজেই আবু দারদা (রাদিঃ)

খেলেন।

যখন রাত হলো, আবু

দারদা (রাদিঃ) উঠে পড়লেন

(রাতের নামায পড়ার জন্য)।

সালমান (রাদিঃ) বললেনঃ

“ঘুমাও”; তিনি ঘুমালেন।

পুনরায় আবু দারদা উঠলেন

(নামাযের জন্য), আর সালমান

(রাদিঃ) বললেনঃ “ঘুমাও”।

রাতের শেষ দিকে সালমান

(রাদিঃ) তাকে বললেনঃ “এখন

ওঠো (নামাযের জন্য)”। কাজেই

তারা উভয়ে নামায পড়লেন

এবং সালমান (রাদিঃ) আবু

দারদা (রাদিঃ)-কে বললেনঃ

“তোমার ওপর তোমার রবের হক্ব

রয়েছে; তোমার ওপরে তোমার

আত্মার হক রয়েছে, তোমার ওপর

তোমার পরিবারের হক রয়েছে;

কাজেই প্রত্যেককে তার প্রাপ্য হক

প্রদান করা উচিত”।

পরে আবু দারদা (রাদিঃ)

নবী সাল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর

সাথে সাক্ষাত করলেন এবং এ

কথা তার কাছে উল্লেখ করলেন।

নবী সাল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ

“সালমান সত্য বলেছে।”

***ইমাম বুখারী সংগৃহিত

হাদিসঃ ১৮৬৭।

ইবাদত এবং স্ত্রীদের যৌন

অধিকার বিষয়ে অপর

একটি হাদিসে এসেছে যেঃ

কাতাদাহ (রহঃ) বলেছেনঃ

একজন মহিলা উমর (রাদিঃ)-এর

কাছে এসে বললেনঃ

'আমার স্বামী রাতভর নামায

পড়েন এবং দিনভর রোযা রাখেন।

তিনি বললেনঃ

তবে কি তুমি বলতে চাও যে,

আমি তাকে রাতে নামায

পড়তে ও

দিনে রোযা রাখতে নিষেধ

করি?

মহিলাটি চলে গেলেন।

তারপর মহিলাটি আবার

এসে পূর্বের ন্যায় বললেন।

তিনিও পূর্বের মতো উত্তর

দিলেন।

কা’ব বিন সূর (রহঃ) বললেনঃ

আমিরুল মু’মীনিন, তার হক্ব রয়েছে।

তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ

কীরূপ হক্ব?

কা’ব (রহঃ) বললেনঃ

আল্লাহ তা'আলা তার জন্য চার

বিবাহ হালাল করেছেন।

সুতরাং তাকে চারজনের একজন

হিসেব করে প্রত্যেক চার রাতের

এক রাত তার জন্য নির্ধারিত

করে দিন। আর প্রত্যেক চার দিনের

এক দিন তাকে দান করুন।

উমর (রাদিঃ) তার

স্বামীকে ডেকে বলে দিলেন

যেঃ

প্রতি চার রাতের একরাত তার

কাছে যাপন করবে এবং প্রতি চার

দিনের এক দিন রোযা পরিত্যাগ

করবে।'

***মুসান্নাফে আব্দুর

রাজ্জাকঃ ১২৫৮৮।

মন্তব্যঃ

স্ত্রীদেরকে তাদের হক্ব দিতেই

হবে- এখানে কোনই আপোষ নেই।

যৌন সংগম তথা যৌন অধিকার

স্ত্রীদের ন্যায্য শরীরের হক্ব।

যেমনঃ

আল্লামা আল-মুনাবিহ (রহঃ)

বলেছেনঃ

“সঙ্গমের আগে শৃঙ্গার

এবং আবেগপূর্ণ চুম্বন

করা সুন্নাতে মু্ওয়াক্কাদাহ

এবং এর অন্যথা করা মাকরূহ।”

***ফাইজ আল-ক্বাদিরঃ ৫/১১৫,

দ্রষ্টব্য; হাদিসঃ ৬৫৩৬।

সুন্নাতে মু্ওয়াক্কাদাহ

কি ইবাদতের অংশ নয়?

লেখক : সাকিল তালুকদার

বিষয়: বিবিধ

১২৮৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

216402
০২ মে ২০১৪ সকাল ১১:৪৪
হতভাগা লিখেছেন : বেশী করতে গেলে তো তা ধর্ষন হিসেবে গন্য করা হয়
216457
০২ মে ২০১৪ দুপুর ০২:৩৮
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : 100% right .

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File