মহাপ্রলয়- Big Crunch [Scintific Tune]
লিখেছেন লিখেছেন মারুফ_রুসাফি ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৫:০১:৪৮ বিকাল
আমার পোষ্ট টি লেখা আমার আংকেলের আর্টিকেল থেকে নেয়া।আশাকরি ভালো লাগবে।
আমাদের মহাবিশ্বের ভাগ্য বিচ্যুতির কয়েকটি সম্ভারনা রয়েছে; তন্মধ্যে ১.মহা প্রলয়, ২. ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া ৩.শীতল হয়ে যাওয়া। বিজ্ঞানীদের ধারণা আমাদের মহাবিশ্ব হয় সমগ্র তারা ও ছায়াপথ সমুহকে ধ্বংস করে একদিন নিজে নিজেই গুটিয়ে আসবে,নতুবা সম্প্রসারিত হতে হতে এক সময় অসীম শূণ্যতায় পর্যবসিত হবে। Stanford বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতিপদার্থবিদ Steve Allen এ প্রসঙ্গে বলেন,‘প্রকৃত পক্ষে এটি এখনো অনিশ্চিত যে,কি হতে যাচ্ছে আমাদের মহাবিশ্বের ভবিষ্যৎ। ’ তবে যা কিছুই হোকনা কেন সেটি যে সুদুর ভবিষ্যত বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে সেটি নিশ্চিত।
এ বিষয়ে কৃষ্ণশক্তির একটা বিশাল ভূমিকা রয়েছে। আমাদের মহাকাশের ভাগ্য অনেকটাই রহস্যময় কৃষ্ণশক্তির উপর নির্ভর করছে,এই কৃষ্ণশক্তি মহাকর্ষের বিরুদ্ধে ক্রিয়া করে মহাবিশ্বের বস্তুনিলয়কে চারিদিকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে অসীমের পানে। মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ কতটা মন্থর হচ্ছে পরীক্ষা করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা এই কৃষ্ণশক্তির উপস্থিতি অনুভব করেন এবং তা অদৃশ্য ও ধরা ছোঁয়ার বাইরে হলেও প্রায় স্বতঃসিদ্ধের মতই মেনে নিয়েছেন। বিজ্ঞানীরা ভেবেছিলেন মধ্যাকর্ষণের কারণে মহাজাগতিক বস্তুনিলয়ের গতি কমে আসবে, কিন্তু বাস্তবে তাদের গতি ত্বরাণ্বিত হচ্ছে। এর কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা এই কৃষ্ণ শক্তিকেই দায়ী করেছেন। মহাবিশ্বে এই কৃষ্ণশক্তির বিপুল প্রবাহ থাকায় বিজ্ঞানীরা Big Crunch বা মহাকর্ষীয় আকর্ষণে মহাবিশ্বের বিলয়ের সম্পর্কে সন্দিহাণ হয়ে পড়ছেন। তারা বলছেন এই প্রবাহ যদি স্থির থাকে তবে Big Crunch সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে সম্প্রসারণের ধারায় মহাশূণ্য এক বিশাল শূণ্যতায় পড়ে শীতল হয়ে জমে যাবে। এছাড়া আরও একটি সম্ভাবনা রয়েছে,তা হল,যদি কৃষ্ণশক্তির প্রবাহ স্থির না থেকে বিপুলভাবে বেড়ে যায় তবে মহাসম্প্রসারণের গতি প্রাবল্যতা বৃদ্ধি পেয়ে মহাজাগতিক বস্তুনিলয় ছিন্নভিন্ন হয়ে এক অপরের সাথে সংঘর্ষের ফলে এই মহাবিশ্ব ধ্বংস হয়ে যাবে। বিজ্ঞানীরা এই ঘটনার নাম দিয়েছেন Big Rip । মহা বুদবুদ সৃষ্টির বেলায় ছায়াপথগুলি সম্প্রসারণের ধারায় অসীম শূণ্যতায় হারিয়ে যাবে কিন্তু Big Rip এর বেলায় শুধু সম্প্রসারণই ঘটবেনা ছায়াপথের তারাগুলিও বিচ্ছিন্ন হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হবে ও ধ্বংস হয়ে যাবে। তবে বিজ্ঞানীরা অনেক পরীক্ষানীরিক্ষার মা্যামে আমাদেরকে আশ্বস্থ করছেন যে, মহাবিশ্বে কৃষ্ণ শক্তির প্রবাহ স্থির রয়েছে,ফলে Big Rip ঘটার সম্ভাবনা অনিশ্চিত। Steve Allen বলছেন বর্তমানের সকল পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ থেকে দেখা যাচ্ছে সময়ের ধারায় এই কৃষ্ণশক্তির প্রবাহ স্থির রয়েছে। তবে বিজ্ঞানীদের এই নিশ্চয়তার পরেও একটা যদি রয়েছে, বিবর্তণের ধারায় যদি কখনো কোন কারণে কৃষ্ণশক্তি দূর্বল হয়ে পড়ে তবে সম্প্রসারণে ত্বরণ বন্ধ হয়ে,প্রবল হয়ে উঠবে বস্তুভরের আন্ত আকর্ষণ,একসময় সম্প্রসারণের পরিবর্তে পিছুটান বা সঙ্কোচনের ধারা মহাবিশ্বকে গুটিয়ে আনবে তার পূর্বাবস্থায়। বিজ্ঞানীরা এ অবস্থার নামকরণ করেছেন Big Crunch বা মহাপ্রলয়। এটিও হবে বিস্তর সময়ব্যপী ঘটনা। সম্প্রসারণের শেষ পর্যায়ে মহাবিশ্বের যে আয়তন দাঁড়াবে,সঙ্কুচিত হয়ে তা পূর্বাবস্তায় ফিরে যেতে প্রয়োজন হবে বিস্তর সময়, বলা যেতে পারে, তা প্রায় মহাবিশ্বের পূর্ণ বয়সেরই সমান হবে। তবে মহাবিশ্বে কৃষ্ণশক্তির স্থির প্রবাহের কারণে অধিকাংশ বিজ্ঞানীরাই প্রলয়ের ধারনাকে নাকচ করে দিচ্ছেন,তারা বলছেন, মহাবিশ্ব এমনি করে সম্প্রসারণের ধারায় চলতে থাকবে;আর তার ভবিষ্যতও রহস্যেই আবৃত হয়ে থাকবে।
সূধী পাঠক আমরা এতক্ষণ ভাবুকদের মতামত জানলাম,কিন্তু আমরা যারা ভাবুকদের দলে পড়িনা তারা কি ভাবব? হয়তোবা তাদেরই মত করে বলবো, মহাপ্রলয় বা কিয়ামত বলে কিছু নেই। এই প্রকৃতি অনন্তকাল ধরে চলবে; কারণ আমরা যে সেই ভাবুক শ্রেণীর পরীক্ষা নীরিক্ষার ফলাফলের দিকেই চেয়ে থাকি, আর ভাবি বিজ্ঞান যা বলে তাই নীরেট সত্য। কারণ বিজ্ঞান মিথ্যে বলেনা। সূধী পাঠক কথাটি নিতান্তই খাঁটী। তবে একটা ‘যদি’ রেখে তারাও যে, আমাদেরকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছেন। আমাদেরকেও একটু চিন্তা-ভাবনা করার সুযোগ করে দিয়েছেন। আসুননা এই সুযোগে আমরা্ও একটু চিন্তা ভাবনা করে দেখি!
চিন্তার যখন সুযোগ পাওয়াই গেল তবে একবার ভেবে দেখুননা,চেয়ে দেখুন প্রকৃতির দিকে, প্রকৃতিতে ঘটছে অহরহ প্রলয়, প্রাণী জগতে ঘটছে প্রাণবিয়োগ। মহাকাশে অহরহ ঘটছে বিস্ফোরণ, নিস্প্রান জগতে ঘটছে ক্ষয়। কোথায় প্রলয় নেই, প্রতিটি সৃষ্টিই এগুচ্ছে প্রলয়ের দিকে। তবে কেন বলবো মহাপ্রলয় ঘটবেনা। সবকিছু যখন একসাথে বিলয়ের পথে এগুবে তখনইতো ঘটবে মহাপ্রলয়। কখন তা ঘটবে আমরা জানিনা, হয়তো এখনই বা অসীম সময় পরে। ক্ষোদ বিজ্ঞানীরাইতো বলছেন,যদি কৃষ্ণ শক্তি থেমে যায় তবেই শুরু হবে মহাপ্রলয়। এখন প্রশ্ন হল কিভাবে থামবে কৃষ্ণশক্তির প্রবাহ,কি করে ধ্বংস হবে এই মহাবিশ্ব আর কতক্ষণইবা এই ধ্বংস প্রক্রিয়া চলবে? এই প্রসঙ্গে আমরা দেখবো আমাদের ধর্মগ্রন্থ কি বলে, বলাচলে পৃতিবীতে প্রবর্তিত প্রায় সকল ধর্মেই মহাপ্রলয়ের কথা রয়েছে। পবিত্র গ্রন্থ কোরআনেও বিশেষভাবে বর্ণিত হয়েছে মহাপ্রলয়ের কথা। সূরা আল আ’রাফ এ মহান আল্লাহ্ বলছেন,
يَسْأَلُونَكَ عَنِ السَّاعَةِ أَيَّانَ مُرْسَاهَا ۖ قُلْ إِنَّمَا عِلْمُهَا عِندَ رَبِّي ۖ لَا يُجَلِّيهَا لِوَقْتِهَا إِلَّا هُوَ ۚ ثَقُلَتْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ لَا تَأْتِيكُمْ إِلَّا بَغْتَةً ۗ يَسْأَلُونَكَ كَأَنَّكَ حَفِيٌّ عَنْهَا ۖ قُلْ إِنَّمَا عِلْمُهَا عِندَ اللَّهِ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ [٧:١٨٧]
7:187 আপনাকে জিজ্ঞেস করে, কেয়ামত কখন অনুষ্ঠিত হবে? বলে দিন এর খবর তো আমার পালনকর্তার কাছেই রয়েছে। তিনিই তা অনাবৃত করে দেখাবেন নির্ধারিত সময়ে। আসমান ও যমীনের জন্য সেটি অতি কঠিন বিষয়। যখন তা তোমাদের উপর আসবে অজান্তেই এসে যাবে। আপনাকে জিজ্ঞেস করতে থাকে, যেন আপনি তার অনুসন্ধানে লেগে আছেন। বলে দিন, এর সংবাদ বিশেষ করে আল্লাহর নিকটই রয়েছে। কিন্তু তা অধিকাংশ লোকই উপলব্ধি করে না।
সূরা আল আম্বিয়ার ১০৪ নং আয়াতে আল্লাহ্ বলছেন,
يَوْمَ نَطْوِي السَّمَاء كَطَيِّ السِّجِلِّ لِلْكُتُبِ كَمَا بَدَأْنَا أَوَّلَ خَلْقٍ نُّعِيدُهُ وَعْدًا عَلَيْنَا إِنَّا كُنَّا فَاعِلِينَ
২১:১০৪ সেদিন আমি আকাশকে গুটিয়ে নেব, যেমন গুটানো হয় লিখিত কাগজপত্র। যেভাবে আমি প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম, সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি করব। আমার ওয়াদা নিশ্চিত, আমাকে তা পূর্ণ করতেই হবে।
সূরা আল মুরসালাত এ আল্লাহ বলছেন,
فَإِذَا النُّجُومُ طُمِسَتْ
৭৭:৮ অতঃপর যখন নক্ষত্রসমুহ নির্বাপিত হবে,
وَإِذَا السَّمَاء فُرِجَتْ
৭৭:৯ যখন আকাশ ছিদ্রযুক্ত হবে,
وَإِذَا الْجِبَالُ نُسِفَتْ
৭৭:১০ যখন পর্বতমালাকে উড়িয়ে দেয়া হবে এবং
لِأَيِّ يَوْمٍ أُجِّلَتْ
৭৭:১২ এসব বিষয় কোন দিবসের জন্যে স্থগিত রাখা হয়েছে?
সূরা আত-তাকভীর এ আল্লাহ্ বলছেন,
إِذَا الشَّمْسُ كُوِّرَتْ
৮১:১ যখন সূর্য আলোহীন হয়ে যাবে,
وَإِذَا النُّجُومُ انكَدَرَتْ
৮১:২ যখন নক্ষত্র মলিন হয়ে যাবে,
وَإِذَا الْجِبَالُ سُيِّرَتْ
৮১:৩ যখন পর্বতমালা অপসারিত হবে,
إِذَا وَقَعَتِ الْوَاقِعَةُ
সূরা আল ওয়াকিয়া তে মহান আল্লাহ্ বলছেন,
৫৬:১ যখন কিয়ামতের ঘটনা ঘটবে,
لَيْسَ لِوَقْعَتِهَا كَاذِبَةٌ
৫৬:২ যার বাস্তবতায় কোন সংশয় নেই।خَافِضَةٌ رَّافِعَةٌ
৫৬:৩ এটা নীচু করে দেবে, সমুন্নত করে দেবে।(উপর নীচ করবে অর্থাৎ দোলায়িত হবে)إِذَا رُجَّتِ الْأَرْضُ رَجًّا৫৬:৪ যখন প্রবলভাবে প্রকম্পিত হবে পৃথিবী।
وَبُسَّتِ الْجِبَالُ بَسًّا
৫৬:৫ এবং পর্বতমালা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে।
فَكَانَتْ هَبَاء مُّنبَثًّا
৫৬:৬ অতঃপর তা হয়ে যাবে উৎক্ষিপ্ত ধূলিকণা।
সূরা আল ক্বেয়ামাহ তে মহান আল্লাহ্ বলেন,
يَسْأَلُ أَيَّانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ
৭৫:6 সে প্রশ্ন করে-কেয়ামত দিবস কবে?
فَإِذَا بَرِقَ الْبَصَرُ
৭৫:৭ যখন দৃষ্টি চমকে যাবে,
وَجُمِعَ الشَّمْسُ وَالْقَمَرُ
৭৫:৯ এবং সূর্য ও চন্দ্রকে একত্রিত করা হবে-
يَقُولُ الْإِنسَانُ يَوْمَئِذٍ أَيْنَ الْمَفَرُّ
৭৫:১০ সে দিন মানুষ বলবেঃ পলায়নের জায়গা কোথায় ?
إِلَى رَبِّكَ يَوْمَئِذٍ الْمُسْتَقَرُّ
৭৫:১২ আপনার পালনকর্তার কাছেই সেদিন ঠাঁই হবে।
সূধী পাঠক,উপরের আয়াতগুলো লক্ষ্য করুন, মহাপ্রলয় বা কেয়ামাত সম্পর্কে মহান আল্লাহ যা বলেছেন, তাতে পরিস্কার বুঝা যাচ্ছে যে,তা অবশ্যই ঘটবে এবং তা ঘটবে মহাকর্ষের প্রবল টানে। লক্ষ্য করুন আয়াত ২১:১০৪ বলছে, মহাবিশ্বকে গুটিয়ে নেওয়া হবে বইয়ের পাতার মত,অর্থাৎ যে ভাবে খোলা হয় সে ভাবেই গুটিয়ে নেওয়া হবে। কি পরিস্কার বর্ণনা, চেয়ে দেখুন আজকের বিজ্ঞান ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে ‘যদি ’ র বেড়াজালে একই বর্ণনা দিয়েছে। যদি দিয়ে অনিশ্চিত করে রেখেছে। এখন প্রশ্ন হল কখন ঘটবে এবং কতক্ষনেণ ঘটবে? বিজ্ঞানের কাছে এ এক জটীল প্রশ্ন, অনেক ফরীক্ষা নীরিক্ষায়ও কোন সঠিক জবাব নেই, সেখানেও ‘যদি’। লক্ষ্য করে দেখুন, মহান আল্লাহ বিজ্ঞানের জন্ম লগ্নে কি জবাব দিয়েছেন,আয়াত ৭৭:১২ বলছে,‘ এসব বিষয় কোন দিবসের জন্যে স্থগিত রাখা হয়েছে’। অর্থাৎ কোন এক নির্দিষ্ট দিনে ঘটবে এ ঘটনা। সে দিনটি তবে কবে? তা একমাত্র মহান আল্লাহই জানেন। মানুষ তার দিব্যজ্ঞানে জানতে পারবেনা যতক্ষণ না তা দ্বারা আক্রান্ত হবে। অর্থাৎ যে কোন দিন যে কোন সময় শুরু হতে পারে মহা প্রলয়। আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি কি ভাবে বুঝা যাবে? উপরের আয়াতগুলি জুড়েই রয়েছে সেই বর্ণনা। এবার দেখুন, খোদ বিজ্ঞান কি বলছে দিন ক্ষণের ব্যপারে।
আগে পরে যে কোন সময় মহাবিশ্বে শক্তির এক বিপুল পরিবর্তণের দ্ধারা সকল ক্ষুদ্র কণা অতিভারী কণায় পরিবর্তীত হবে। মহাবিশ্বে যত মহজাগতিক বস্তু রয়েছে সকলেই অসীম ভরে রূপান্তরিত হবে,ফলে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়বে আর শুরু হবে আন্তমহাকর্ষীয় আকর্ষণ; এই বিপুল আকর্ষণ বল সকল বস্তুভরকে সঙ্কুচিত করে নিয়ে আসবে এক ক্ষুদ্র গোলকে। এই ভয়ঙ্কর অবস্থাকে বলা হয় অবস্থান্তর, অর্থাত এক অবস্থা থেকে হঠাৎ অণ্য অবস্তায় পরিবর্তন। মহাবিশ্বে এই অবস্থান্তর যে কোন সময়ই ঘটতে পারে। মহাবিশ্বের এই বিশাল কন্দরে যদি হঠাৎ কোন বুদবুদ দেখা দেয় যার মধ্যে সম্পৃক্ত থাকবে হিগস্ কণা এবং দেখাদেয় শক্তির পার্থক্য বাকী অংশের সাথে। এই পর্যায়ে শক্তি পার্থক্যে বুদবুদ যদি নিম্ন পর্যায়ে থাকে তবে বুদবুদটি দ্রুত বর্ধণশীল হয়ে উঠবে যা আলোর গতিতে চারিদিকে বিস্তার লাভ করবে। বুদবুদের ভিতরে যত মৌলিক কথা থাকবে তা বাইরে থাকার চেয়ে বহুগুণে বস্তুভরে বৃদ্ধি পেয়ে শুরু হবে আন্তআকর্ষণ আর পরিনত হবে এক অতি ভর-কেন্দ্রে।
এই অবস্থান্তর নিয়ে যেমন বহু তত্ত্ব তৈরী হয়েছে তেমনি হয়েছে অনেক হিসেব নিকেষ। আগে তা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও এখন আর তা নেই, মহাবিশ্বের অবস্থান্তর পর্যায় এখন স্থির ধারণ। সৃষ্টি তত্ত্ব ও কণা পদার্থ বিদ্যার ছাত্র জেনস্ ফ্রেডরিক বলেছেন,বর্তমানের উন্নত হেসেব থেকে আমরা দুটি বিষয় নিশ্চিত হচ্ছি যে, ১.মহাবিশ্ব সম্ভবত ধ্বংস হবে। এবং এই ধ্বংস আগের চেয়ে এখনকার হিসেবে বেশী সম্ভাব্য। এই অবস্থান্তর প্রক্রিয়া মহাবিশ্বের যে কোন স্থনে যে কোন সময় শুরু হতে পারে যা বাকী অংশকে ধ্বংস করে ফেলবে।
এই অবস্থান্তর নিয়ে নানা তত্ত্বের উদভাবন হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে মহা প্রলয় তত্ব (Big Crunch)
টি মূলত বিগব্যাঙকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত। বিগব্যাঙের মাধ্যামে মহাবিশ্ব ক্ষুদ্র আয়তন থেকে ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে এবং সেই ছড়িয়ে পড়া আজো চলছে ত্বরাণ্বিত গতিতে। সময়ের পরিবর্তনে কোন একদিন এই সম্প্রসারিত মহাবিশ্ব পুনরায় ক্ষুদ্র গণ্ডিতে ফিরে আসবে, এটিই হল মহাপ্রলয় বা Big Crunch
ত্ত্বের মূল বক্তব্য। কিন্তু Jens Frederik Colding Krog বলেচেন যে, মহাবিশ্ব যেহেতু ত্বরান্বিত গতিতে সম্প্রসারিত হচ্ছে ফলে Big Crunch
এর সম্ভাবনা খুবই কম। তথাপি ইদানিংকালের গবেষণায় দেখাযাচ্ছে মহাবিশ্বের ধ্বংস খুবই স্বাভাবিক ব্যপার;আবার এমনও হতে পারে যে, তা কোনদিনই সংঘটিত হবেনা। তবে আমরা জানি মহাবিশ্ব মৌলিক কণায় পরিপূর্ন যার মধ্যে হিগস্ কণাও রয়েছে। তাছাড়া যদি কোন অনাবিস্কৃত কণা থেকে থাকে তবে অবস্থান্তরের সম্ভাবনা আর থাকছেনা; বলেন Jens Frederik Colding Krog. ।
যদিও মাত্র বছর কয়েক আগে হিগস্ কণা আবিস্কৃত হয়েছে, অন্যকোন অনাবিস্কৃত কণার আবিস্কারের জন্য জোড় গবেষণা চলছে। অবশ্য কোন কোন কণা পদার্থবিদ বলছেন যে হিগস্ কণাই মৗলিক কণা নয়। আরও কোন সুক্ষকণার উপস্থিতি মহাবিশ্বের কোথাওনা কোথাও রয়েছে। তারপরেও অধিকাংশ বিজ্ঞানীদের মতে মহাবিশ্বের ধ্বংস অবস্যম্ভাবী;আর এই প্রক্রিয়া বুদবুদ সৃষ্টির মধ্য দিয়েই হবে;যেখানে মৌলিক কণা হিগস্ সৃষ্টি করবে নিম্ন শক্তি ক্ষেত্র ফলে বুদবুদের অভ্যন্তরস্থ সকল কণা পরিবর্তিত হয়ে সৃষ্টি করবে এক অতিকায় ভরকেন্দ্র যা গিলেখাবে বাকি মহাবিশ্বকে। সূত্র-Space industries.com
এখন প্রশ্ন হল এই মহাপ্রলয় কতক্ষণ চলবে?
বিজ্ঞানীদের কাছে এই প্রশ্নের কোন জবাব নেই কারণ তাদের অধিকাংশই মহা প্রলয়ের বিষয়ে অনিশ্চিত এবং মনে করে মহাবিশ্বের ধ্বংস হবেনা। আবার কোন কোন বিজ্ঞানীদের মনে তা ‘যদির’ বেড়াজালে ঘুরপাক খাচ্ছে। এদিকে আমরা সাধারণেরা পড়ে গেছি বিপাকে। কোন পক্ষ অবলম্বন করবো! যদি বিজ্ঞানীদের চৌকশ যুক্তির কাছে মাথা নুইয়ে দেই তবে পৈত্রিক ধর্ম হার মানে কারণ; পবিত্র কোরআন এ প্রসঙ্গে যে ধারনা দেয় তাতে তা মহান আল্লাহ্র নির্দেশে স্বল্প সময়ে সংঘটিত হবে। এবার যদি বিশ্বাসের উপড় নির্ভর করে পবিত্র কোরআনের কথা মেনে নেই তবে মন দোদোল্যমান হয়ে উঠে, মনে হয় বিজ্ঞান বছরের পর বছর ধরে পরীক্ষা নীরিক্ষা করে যে ফলা ফল ঘোষনা করলো তা কি ভুল হতে পারে! তা কি একটা আরবী পুস্তকের কাছে হেরে যেতে পারে? না সূধী পাঠক, বিজ্ঞান হেরে যেতে পারেনা। ভুল হতে পারে আর সে ভুলের পথ ধরেই সে একদিন সত্যের সন্ধান পায়। তাইতো বিজ্ঞানের কাছে নিত্য বলে কিছু নেই। আজ যা সত্যরূপে গ্রহন করলো কাল তারচেয়েও অধিকতর সত্য এসে আগের সত্যকে হারিয়ে দিচ্ছে। বিজ্ঞান সত্যানুসন্ধ্যানী,তার হারজিতে কোন ভয় নেই,নেই কোন লজ্জা। কোন সত্য এসে যখন কোন মিথ্যাকে হারিয়ে দেয় তখন বিজ্ঞান তৃপ্তির হাসি হেসে সেই সত্যকে বুকে তুলে নেয়। তাইতো এর নাম বিজ্ঞান,বিজ্ঞানী নয়। বিজ্ঞানী হল বিজ্ঞানের সেবাদাস, তার কর্মী। বিজ্ঞানীর আবেগ থাকতে পারে, ইচ্ছা অনিচ্ছার দোলাচলে সত্যকে আড়াল করার প্রয়াস পেতে পারে,বা চেখে দেখেও মনের আবেগে মিথ্যাকেই আশ্রয় করতে পারে; তাতে বজ্ঞান কলুসিত হয়না। দূর্গম যাত্রাপথে তার পায়ে হয়তো কাঁদা লাগতে পারে,কিন্তু তা থাকেনা বেশীদিন,প্রকৃত সত্যের জোয়ার এসে তা দুঁয়ে মুছে আবার পবিত্র করে দেয় বিজ্ঞানের পাঁ দু’খানি।
আমরা বিজ্ঞানের কাছে জেনেছি,প্রায় আলোর গতিতে সম্প্রসারণশীল মহাবিশ্ব ১২.৭ বিলিয়ন বছরে আজকের আকৃতিতে এসেছে। এর পরিমাপ কোন মাপকাঠিতে খোদ বিজ্ঞানের পক্ষেও সম্ভব নয়। আলোক বর্ষের হিসেবে কিছু আনুমানিক তথ্য দিয়ে থাকে। সে যাই হোকনা কেন, তবে যে অনেক বড় তাতে কোন সন্দেহ নেই। এখন প্রশ্ন হল এই বিশাল মহাবিশ্ব যদি মহাকর্ষের টানে ফিরে আসেও তবে কতক্ষণে তা পূর্বাবস্থায় ফিরে আসবে? বিজ্ঞান বলছে এটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া,যদি আলোর গতিতেও ফিরে আসে তবে তার জন্যে প্রয়োজন ১৩.৭ বিলিয়ন বছর। এ ক্ষেত্রে বিজ্ঞানকে সহায়তা করার উদ্দেশ্যে আমরা যদি বলি মহাজাগতিক বস্তু নিলয় যে পথে সম্প্রসারিত হয়েছে সে পথে ফিরে না এসে ওয়ারমহোল দিয়ে ফিরে আসবে,তাহলে বেশী সময়ের প্রয়োজনতো নাও হতেপারে। মহাবিশ্বের ত্বরান্বিত সম্প্রসারণের ধারণাটি যখন ছিলনা,তখন কিন্তু বলেছিল বিগব্যাঙ থেকে প্রাপ্ত শক্তি নিয়ে মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হচ্ছে। ১২.৭ বিলিয়ন বছর ধরে সেই শক্তিতেই এই দূর পাল্লার দৌড় প্রতিযোগিতায় মত্ত। কিন্তু মহাকর্ষ এসে যখন বাঁধ সাদল,তখন টনক নড়ে উঠলো, বিজ্ঞানীগন তোড়জোড় লেগেগেলেন পরীক্ষা নীরিক্ষায় বিষয়টি জানতে যে, মহাবিশ্বের গতি কতটা মন্দীভূত হচ্ছে। ভাগ্যের পরিহাস, হতাশা ও বিষ্ময়ে অবাক হয়ে বললেন, মহাবিশ্বের গতি মন্দীভূত হওয়ার স্থলে ত্রান্বিত হচ্ছে। বাস্তব পরীক্ষায় জানা গেল এসব তথ্য। পুরানো হিসেবে বাঁধা পড়লো,এমনটাতো হওয়ার কথা নয়! প্রেশ্ন উঠলো মহাকর্ষ গেল কোথায়। কাগজ কলম নিয়ে বসে গেলেন সবাই। বিজ্ঞান পিতা নউটনের সূত্র ভেস্তে যাচ্ছে। আলবার্ট আইন্সাইনের সূত্রে ফাটল ধরছে। মহা বিপাকে পড়ে গেলেন তারা। অনেক ভাবলেন, অহর্ণিশি পরীক্ষা চালালেন। আর কোন বিকল্প না পেয়ে এক কল্পনার আশ্রয় নিলেন। বিশ্ববাসীকে প্রবোধ দিলেন এক নতুন উপাক্ষান টেনে। বরেণ্য বিজ্ঞানীগন সুর মিলিয়ে বললেন, মহাবিশ্বের সম্প্রসারনের পিছনে রয়েছে এক অপরিচিত শক্তি যার নাম কৃষ্ণশক্তি। এই শক্তিই মহাকর্ষকে আগ্রাহ্য করে মহাবিশ্বকে সম্প্রসারিত করছে। তৎক্ষণাৎ কিছু উৎসাহী কোরআন গবেষক কোরআনের পাতা খুলে বলে বসলেন এইতো কোরআনেও রয়েছে সে কথা। শুধু তাই নয় মুসলিম বেত্তাগন আরও বললেন,এই সম্প্রসারণ একদিন শেষ হয়ে যাবে আর সেদিনই ধ্বংস হয়ে যাবে মহাবিশ্ব। বিজ্ঞানীগন ক্ষোভে ফুসে উঠলেন, ভাবলেন, এত কষ্টের আবিষ্কার কৃষ্ণ শক্তি, তা কি করে তথাকথিত কিতাবের পাতায় থাকতে পারে। বিজ্ঞানীদের সকল প্রচেষ্ঠা ব্যর্থ করে দিয়ে সেই কিতাবই কিনা বলছে মহাবিশ্ব ধ্বস হয়ে যাবে! সবাই উঠে পড়ে লাগলেন নতুন পরীক্ষায়। পেয়েও গেলেন জবাব, বড় কঠিন,দাত ভাঙা জবাব দিলেন কোরআন বেত্তাদেরকে। বললেন‘”Today, to the best of my knowledge, all the best data we have are consistent with a cosmological constant, consistent with dark energy being constant over time,” Allen said. “If people had to bet on anything, they would bet on that.” সূত্র-Space.com, Article-( Endless Void or Big Crunch).
In 2002 to 2006, analysis of data collected from the NASA WMAP Satellite has permitted scientists to conclude that the universe is accelerating. Here is a quote from a NASA website with scientific conclusions. “For the theory that fits our data, the universe will
expand forever!”
The conclusion that the universe will expand forever at an accelerating rate is based on the analysis of more than 800 Cepheid Variable Stars, more than 80 Type 1A Supernova, and more than 3 years of continuous data collection from the NASA WMAP Satellite. Due to the large amount of data involved in this analysis, the conclusion that the universe will expand forever at an accelerating rate is done at a high confidence level. The probability of this conclusion being wrong due to random error is extremely small.
Scientific data supports that the universe will expand forever at a high confidence level. Therefore, any so-called “holy book” that claims the opposite is wrong at a high confidence level. Since the Qur’an is obviously wrong, we must ask, “Who is the source of the Qur’an?” সূত্র- a Bried History of Time- article Science and the Quran.
লক্ষ্য করুন নাসার রিপের্টটি, এই রকম নির্ভেজাল তথ্য পাওয়ার পর কি আর যুক্তিবাদিরা চুপচাপ থাকতে পারে? সরাসরি, বলে বসলেন,‘কোরআন ভুল বলেছে। মহাবিশ্ব ধ্বংস হতে পারেনা।’ কারণ কৃষ্ণশক্তির সররাহ স্থির। মুখ কালো হয়ে গেল উৎসাহী কোরআন গবেষকদের । শুধু তাই নয় তারা আবারও চ্যালেজ্ঞ করে বসলেন,কোরআনের কোথায় রয়েছে মহাবিশ্বের সম্প্রসারনের কথা। কোরআন গবেষকগণ কোন রকমে কিছু ইরেজী তরজমা তুলে ধরলেন,তাতে মানলোনা তারা, আরও বলল, এটি নতুন সংযোজন। আর মুখ রইলোনা কোরআন গবেষকদের। সত্যি বড়ই পরিতাপের বিষয়! মহান প্রভু কি এতই ছোট হয়ে গেলেন, যে কিছু নতুন ইংরেজী তরজমা এনে,তার কথাকে বহাল করতে হবে! কারোর মনে একবারও কি উদয় হলনা যে, কেউ সঠিক তরজমা করতে পারেনি বলেই কি কোরআনের বাণী ভূল হয়ে গেল? এখন কি তার সঠিক তরজমা খুঁজে দেখা যায়না। যদি মূল বক্তব্য বিষয়ের মর্মার্থ সঠিক হয়ে থাকে তবে কারোর ভুল তরজমায় কি আসে যায়। ভুল তরজমাতো আমাদের শিক্ষার দূর্বলতা মাত্র,পবিত্র কোরআনের ভুল নয়।তরজমার বেড়াজালে নীরেট সত্যকে ঢেকে রাখা যায়না; নিজের পবিত্রতা দিয়ে একদিন তা সকলের সামনে উদ্ভাসিত হয়ে উঠে।
উপরে নাসার উদ্ধৃতি থেকে বুঝা গেল,মহা প্রলয় হওয়ার কোন সুযোগ নেই,মহাবিশ্ব তার আপন গতিতে সম্প্রসারিত হয়ে যাচ্ছে এবং তা ভবিষ্যতেও চলতে থাকবে। ধরে নেওয়া গেল যে, দীর্ঘদিনের পরীক্ষা পরিমাপ, কৃষ্ণশক্তির স্থিতিশীল প্রবাহের কথাই বলছে। আর এই কৃষ্ণশক্তি যদি আমাদের মহাবিশ্বকে তার পরিচিত অবয়বে চিরদিন ধরেও রাখে তবুও না বলে থাকার উপায় নেই যে, এই বিশ্ব বরেণ্য বিজ্ঞানীদের মনে কি একবারও আসেনি যে, তাদের কল্পিত এই মহা শক্তি কোন এক অজানা উৎস থেকেই আসছে, এবং তা একদিন ফুরিয়ে যেতে পারে। যদি ফুরিয়ে যায় তখন কি হবে? ভখন প্রবল মহাকর্ষের বিরুদ্ধে কে ঠেলে নিয়ে যাবে মহাজাগতিক বস্তুনিলয়কে। আজকে প্রবাহ আছে বলই যে চিরদিন থাকবে এমন কোন বৈজ্ঞানিক সত্য কি তাদের কাছে জমা আছে?
সূধী পাঠক আমরাও জানিনা কি হবে? পবিত্র কোরআন এমন কোন সুনির্দিষ্ট কৌশল বা প্রযুক্তির উল্লেখ করেনি,শুধু ঘটনার যৎসামান্য ইঙ্গিত দান করেছে। আমরা শুধু যৌক্তিক তর্কে লিপ্ত হয়েছি। এ বিষয়ে মহান আল্লাহ্ই ভাল জানেন। তথাপি জানা ও বুঝা মানুষের সহজাত বৈশিষ্ট। সে কারণেই আমরাও বিভিন্ন রকম তথ্য উপাত্তের সাথে পবিত্র কোরআনের ইঙ্গিতময় বাণীর সম্মিলণ ঘটিয়ে কিছু ধারণা সৃষ্টি করতে সচেষ্ট। ভূল-ভ্রান্তির জন্যে পরম করুণাময়ের কাছে কায়মনে ক্ষমাপ্রার্থী; তিঁনি উত্তম ক্ষমাকারী।
সূধী পাঠক আমরা কৃষ্ণশক্তির উৎস নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার কথা ভাবছিলম, হতে পারে এটি একটি কারণ হয়ে দাঁড়াবে। আবার এও হতে পারে যে,কৃষ্ণশক্তি নিজেই ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। আমরা জানি আমাদের এই মহাবিশ্ব তরান্বিত গতিতে ছূটে চলছে অনিশ্চিত গন্তব্যে। ফলে মহাজাগিতিক বস্তু নিলয়ের ঘণত্ব কমতে কমতে এক অসীম শূণ্যতার সৃষ্টি হচ্ছে। তবে এই শূণ্যতা শুধু আমাদের বাহ্যিক দৃষ্টিতে কারণ আমরা খালি চোখে শূণ্য দেখলেও মহাশূণ্য কিন্ত শূণ্য নয়। তারকামণ্ডল ও ছায়াপথ অঞ্চল সমুহে মহাজাগতিক বস্তু নিলয় ছাড়াও রয়েছে নানাপ্রকার ধূলিমেঘ,বিভিন্ন গ্যাসীয় পদার্থ ও নানা রকমের মহাজাগতিক ধ্বংসাবশেষ। এগুলি সবই দৃশ্যবস্তু, খালিচোখে দৃষ্টিলভ্য না হলেও আজকের যন্ত্রচোকে তারা সূস্পষ্ট। তাছাড়া নাদেখা বহুকিছু রয়েছে যারা যন্ত্রের কাছে ধরা পড়েছে। আবার এমনও অনেক কিছু রয়েছে যা না দেখেও নিঃশংষয়ে আমরা বিজ্ঞানের বদৌলতে মেনে নিচ্ছি;যেমন বিভিন্ন আলোক তরঙ্গের মাত্র সমান্য অংশেরই সন্ধান পেয়েছে আজকের বিজ্ঞান; অবশিষ্টের অবস্থানকে না দেখেও নিঃসঙ্কোচে মেনে নিচ্ছে। আবার কৃষ্ণশক্তিতো একবারেই ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এতক্ষণ আমরা তারামণ্ডল ও তার আশপাশ অঞ্চলের কথা বললাম। তা ছাড়াও বাকী শূণ্য স্থানগুলো যে শূণ্য নয়,কৃষ্ণশক্তিতে ভরপুর তাতো খোদ বিজ্ঞনীরাই বলছেন। বিজ্ঞানীরা একথাও বলছেন যে, এই কৃষ্ণশক্তিই মহাজাগতিক বস্থু সৃষ্টির মূল উপাদান- কৃষ্ণশক্তি থেকে কৃষ্ণপদার্থের মাধ্যামে উৎপত্তি ঘটে মহাজাগতিক বস্তুভরের। এবার তাহলে ভাবা যাক Jens Frederik Colding Krog এর কথা, ‘মহাবিশ্বে যে কোন সময় যে স্থান থেকে শুরু হতে পারে ধ্বংস প্রক্রিয়া’। আর এ প্রক্রিয়া শুরু হবে মৌলিক কণার অবস্থান্তর দশা দিয়ে। আমরা এ বিষয়ে উপরে উক্ত বিজ্ঞানীর তত্ত্ব থেকে জেনেছি। সূধী পাঠক এবার পবিত্র কোরআনের সাথে মিলিয়ে নিন,
إِذَا رُجَّتِ الْأَرْضُ رَجًّا
৫৬:৪ যখন প্রবলভাবে প্রকম্পিত হবে পৃথিবী।
وَبُسَّتِ الْجِبَالُ بَسًّا
৫৬:৫ এবং পর্বতমালা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে।
فَكَانَتْ هَبَاء مُّنبَثًّا
৫৬:৬ অতঃপর তা হয়ে যাবে উৎক্ষিপ্ত ধূলিকণা।
সূধী পাঠক, এখন আমাদের সামনে যে প্রশ্ন এসে দাঁড়াল তা হল, কোন্ ধারনা ঠিক? বিজ্ঞানের না পবিত্র কোরআনের?
বড়ই কঠিণ প্রশ্ন,কোন্ জবাব দিয়ে পাতকী হব! এর কি কোন সুরাহা নেই ! তবে এরূপ ক্ষেত্রে বুদ্ধিমানরা যে দিকে যায় আমরাও সে দিকে ভেবে দেখি। এখানে বাস্তবতার দিকটি বিবেচ্য । আমরা প্রকৃতিতে প্রাণ-নিস্প্রাণ সকল বস্তুরই বিলয় দেখতে পাই। আমাদের চারিপার্শ্বের সকল প্রাণী যেমন নিদিষ্ট সময় অন্তর মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করে তেমনি অন্তিম সময়ে অহরহ বিস্ফোরিত হচ্ছে মহাকাশে নক্ষত্র সমুহ। সবই যেখানে অন্তিম সময়ের দিকে এগুচ্ছে সেখানে আমাদের মহাবিশ্বও সেদিকে যাওয়াটাই স্বাভাবিক।
লক্ষ্য করুন আয়াত ৫৬:৬, বলা হয়েছে সবকিচু ভেঙেচুড়ে সৃষ্টি হবে ধূলিকণা। আর এভাবেই সকল মহাজাগতিক বস্তুর উপর আসবে মহা প্রলয়; সেই সাথে গুটিয়ে আসবে সব ধ্বংসাবশেষ। হয়তো এই ধ্বংসাবশেষের সাথে ক্রিয়া করবে মৌলিক শক্তিকণা(কৃষ্ণশক্তির পরিবর্তীত রূপ)। হয়তো ওটাই হবে মহাবিশ্বের অবস্থান্তর পর্যায়। আর্ সেই থেকে তৈরী হবে নতুন মহাকাশ, নতুন পৃথিবী। যার নিয়মকানুন হবে ভিন্ন।
সূরা ইব্রাহীম আয়াত ৪৮,
يَوْمَ تُبَدَّلُ الأَرْضُ غَيْرَ الأَرْضِ وَالسَّمَاوَاتُ وَبَرَزُواْ للّهِ الْوَاحِدِ الْقَهَّارِ
১৪:৪৮ যেদিন পরিবর্তিত করা হবে এ পৃথিবীকে অন্য পৃথিবীতে এবং পরিবর্তিত করা হবে আকাশ সমূহকে এবং লোকেরা পরাক্রমশালী এক আল্লাহর সামনে পেশ হবে।
তারপর শুরু হবে মহা বিচারদিনের কাজ।
বিষয়: বিবিধ
১২৫২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন