সিলেটে ক্রমেই বাড়ছে যাত্রী হয়রানি; ক্ষুব্ধ সাধারণ যাত্রীরা!
লিখেছেন লিখেছেন মোয়াজ্জেম হুসাইন সায়েম ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১০:১৫:৪৩ রাত
পূণ্যভূমি সিলেটে যাত্রী পরিবহনগুলির নৈরাজ্য দিনের পর দিন বেড়েই চলছে। নগরী একটু ব্যস্ত হলেই বা গাড়ির একটু সংকট দেখা দিলেই ভাড়া বাড়িয়ে দেয়া, নিয়ম বহির্ভূতভাবে এক চতুর্থাংশ যাত্রাপথেও পুরো ভাড়া নেয়া, প্রতিবাদ করলে যাত্রীদের সাথে অশোভন আচরণ করা যেন নগরীর একটি নিত্য নৈমত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। নগরীতে কোনো কার্যকর লোকাল বাস সার্ভিস চালু না থাকায় সিএনজি অটোরিক্সাই হয়ে উঠেছে যাত্রী সাধারণের মূল বাহন। সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ রিক্সা ভাড়া নির্ধারণ করে চার্ট টানালেও সিএনজি ভাড়ার কোনো লাগাম সিটি কর্তৃপক্ষের হাতে নেই। অন্যদিকে 'টাউন বাস' সার্ভিসও কার্যত অকেজো। এজন্যই মূলত যাত্রী হয়রানী। নগরীর প্রাণকেন্দ্র বন্দরবাজার থেকে টিলাগড়, হুমায়ুন রশীদ স্কয়ার, কদমতলি, বটেশ্বর, টুকেরবাজার ইত্যাদি রুটে চলাচলরত যাত্রীবাহী সিএনজিগুলির বিরুদ্ধে প্রতিদিনই পাওয়া যাচ্ছে এমন হয়রানীর খবর! জানা যায়, বন্দর বাজার থেকে টুকের বাজারের দূরত্ব প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার। ভাড়া জনপ্রতি ১৫ টাকা। কিন্তু এর এক চতুর্থাংশ অর্থাৎ লামাবাজারে কেউ নেমে গেলে তাকেও পুরো ভাড়া পরিশোধ করতে হয়! এমনটি কেনো করা হয় জানতে চাইলে বন্দরবাজার কোর্ট পয়েন্ট স্ট্যান্ড কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইলে উনারা কোনো উত্তর দিতে পারেননি। এছাড়াও রাত ৮ টার পর থেকে যখন মানুষের ঘরে ফেরার চাপ বাড়ে, তখন প্রকাশ্যে আরো ৫ টাকা বাড়িয়ে ২০ টাকা নেয়া হয়। স্ট্যান্ডে বিপুল পরিমাণ সিএনজি থাকা সত্ত্বেও ২০ টাকা জনপ্রতি ভাড়ার নিচে কোনো গাড়িই যেতে রাজি হয়না। সিলেট-গোবিন্দগঞ্জ সড়কেও দেখা গেছে একই চিত্র। একটু রাত হলেই বা যাত্রীদের চাপ বাড়লেই বাড়িয়ে দেয়া হয় ভাড়া। প্রতিবাদ করলে পরিবহন শ্রমিকেরা দলবদ্ধভাবে তেড়ে আসেন যাত্রীর দিকে।
যাত্রী নিরাপত্তার দিকেও নূন্যতম লক্ষ্য নেই সিএনজি মালিক বা ড্রাইভারদের। আইন অনুযায়ী সামনের সিটে যাত্রী বহন নিষিদ্ধ থাকলেও এর কোনো তোয়াক্কা করছে না তারা! ব্যবহার করছেনা মিটারও। আর এসব আইন অমান্য করা চলছে প্রশাসনের চোখের সামনেই। প্রশাসনের কর্মচারীরাও নিয়ম বহির্ভূতভাবে সামনের সিটে যাত্রী হিসেবে বোঝাই হচ্ছেন এসব গাড়িতে!
সিংহভাগ পরিবহণ শ্রমিকের ক্রমাগত এসব অনিয়ম, সেচ্ছাচারীতা ও অশোভন আচরণে ক্রমেই ক্ষুব্ধ হচ্ছেন যাত্রী সাধারণ। বেশীরভাগ যাত্রীই মনে করেন কর্তৃপক্ষের যথাযথ মনযোগ, আইন প্রণয়ন, নীতিমালা নির্ধারণ, ভাড়া নির্ধারণ ও আইনের প্রয়োগই পারে সাধারণ গজনগনকে এসব হয়রানী থেকে বাঁচাতে। সেই সাথে অকেজো হয়ে যাওয়া টাউন বাস সার্ভিসকে সচল করলেও যাত্রী হয়রানী লাঘবে কিছুটা সহায়ক হবে।
বিষয়: বিবিধ
৮০৮ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যে কোন রাজনৈতিক দলের মারদাঙ্গা ক্যাডার বাহিনী থাকে এবং এরা সবাই পরিবহন খাতের নেতা ও শ্রমিক।
সম্প্রতি এদের একজন নেতা সরকারের পূর্ণ মন্ত্রী হওয়াতে এদের দৌরাত্ম ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে ।
আইন অনুযায়ী তাদেরকে যদি শাস্তি দেওয়া হয় সেটার প্রতিবাদের তারা ধর্মঘট ডেকে সার দেশ অচল করে দিতে পারে ।
এদেরকে তোয়াজ না করলে কোন রাজনৈতিক দলই মাঠে টিকে থাকতে পারবে না । এটা এরা জানে এবং জানে বলেই সেটার ফায়দা সবসময়ই তুলে। বছরের প্রতিটা দিন তাদের কাছে ঈদের দিনের মত।
মন্তব্য করতে লগইন করুন