আওয়ামীলীগের সংখ্যালঘু নির্যাতন; কিছু বাস্তব চিত্র
লিখেছেন লিখেছেন মোয়াজ্জেম হুসাইন সায়েম ০৮ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৬:৩৫:৫৭ সন্ধ্যা
দীর্ঘদিন থেকে ভারতের মুসলমানদের নিধনের কোন ইস্যু পাচ্ছে না সেদেশের উগ্র হিন্দুবাদীরা। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সহিংসতার সুযোগে সেই ভয়াবহ কাজটি সেরে নেয়ার পরিকল্পনাই করছে ভারত। আর সে লক্ষ্যে বাংলাদেশে বসবাসরত তাদের দোসরদের দিয়েই নির্বাচন পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের অবস্থানরত সংখ্যালঘুদের উপর পরিকল্পিত হামলা চালানো হচ্ছে। কতিপয় দালাল মিডিয়ার মাধ্যমে দেখানো হচ্ছে, বাংলাদেশের ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলি নির্বাচনে বানচাল করতে না পেরে প্রধান বিরোধী দলের মদদে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে। সেক্ষেত্রে কাজ হচ্ছে দুটো!
১/ ভারতে অবস্থানরত মুসলমানদের উপর ভারতীয় উগ্র হিন্দুবাদী দলগুলিকে উস্কানী দিয়ে হামলা করানো।
২/ বাংলাদেশের ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলিকে নিষিদ্ধ করার রাস্তা প্রসারিত করা ও যে সকল ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলির সহযোগী সংগঠন ভারতে আছে, তাদের ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে নির্মূল করা।
আর ভারতকে সেই মহান কাজটি বাস্তবায়ন করে দিচ্ছে বাংলাদেশে তাদের মদদপুষ্ট দল আওয়ামীলীগ। এর অন্যতম প্রমাণ হচ্ছে, আজ আওয়ামীলীগের এক মুখপাত্র গনমাধ্যমে "পার্শবর্তী দেশের সংখ্যালঘুদের জীবন বিপন্ন হবার আশঙ্কার" কথা জানিয়েছেন!
তারা গত সপ্তাহখানেক যাবত প্রশাসনের সহযোগিতায় দেশের একাধিক জেলায় সংখ্যালঘুদের উপর একের পর এক হামলা করছে! পুড়িয়ে দিচ্ছে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর। আর এর জন্য আওয়ামীলীগের নেতারা একতরফাভাবে দোষারোপ করে যাচ্ছেন ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলিকে। বিশেষ করে জামায়াতে ইসলাম কে। কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসে কোথাও এরুপ প্রমান নেই যে কোন দিন কোন ইসলামী সংগঠন সংখ্যালঘুদের উপর হামলা করেছে। কেননা ইসলামের দৃষ্টিতে সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানদের অঞ্চলে সংখ্যালঘু অমুসলিমরা আমানত স্বরুপ।
বরং সংখ্যালঘুদের উপর হামলা করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটার মতো জঘন্য কাজ আওয়ামীলীগের দ্বারাই বারবার সংগঠিত হয়ে আসছে। তার কিছু দালিলিক প্রমান নিচে বর্ণনা করছিঃ
কেস ষ্টাডি -১
সাথিয়া, পাবনা
গত নভেম্বর ২০১৩ শুরুর দিকে আলোচিত ছিল এই ঘটনাটি। নানা কারনে আলোচিত হয় সেটি। কারন একদিকে এটি ছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর নির্বাচনী এলাকা, অন্যদিকে এটি আবার জামায়াত (যাদেরকে মিডিয়া মুলত দায়ী কারে থাকে বেশীরভাগ ঘটনায়) আমীর মতিউর রহমান নিজামীরও নির্বাচনী এলাকা। ফলে ঘটনায় জামায়াত জড়িত, এটা প্রচার করতে মিডিয়ার বেগ পেতে হয়নি।
২ নভেম্বর ঘটনাটি ঘটার পর অন্যান্য পত্রিকার মধ্যে ৪ নভেম্বর ২০১৩ ইত্তেফাক যেভাবে রিপোর্ট করে,
::২৫ বাড়ি মন্দির ভাংচুর, আগুন , সাঁথিয়ায় হিন্দুপাড়ায় আতংক, গ্রেফতার ১; বিএনপি জামায়াতের ২০ নেতাকর্মীসহ আসামি তিনশ'::
পাবনা জেলার সাঁথিয়ায় হিন্দু পাড়ায় বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা এবং অগ্নিসংযোগের পর এলাকার তিনশ'র বেশি হিন্দু পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। গ্রামের বাসিন্দা হেনা সাহা বলেন, 'রাতে ঘুম হয় নাই। কখন যেন বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়- এই ভয়ে সারা রাত ঘুমাইনি'।
এদিকে এ ঘটনায় বিএনপি ও জামায়াতের ২০ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে গতকাল তিনশ' লোককে আসামি করে পুলিশ মামলা করেছে। এ ঘটনায় রেজাউল করিম নামে বিএনপির এক সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ইত্তেফাকের সেই নিউজটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
একই ঘটনার জন্য হলুদ আলো নামে খ্যাত দৈনিক প্রথম আলোর রিপোর্ট ছিলো সম্পুর্ণ একতরফা!
এখানে ক্লিক করে প্রথম আলোর রিপোর্টটি পড়ুন!
সার কথা হলো, হিন্দুদের বাড়ি-ঘর, মন্দিরে হামলা হয়েছে। এর জন্য দায়ী জামায়াত-বিএনপি। ফলে তাদের কয়েকজন নেতা কর্মীকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
ব্যস, খেলা এখানেই শেষ। থেমে গেল মিডিয়া প্রচার। মনে হয় প্রকৃত অপরাধী ধরা পড়ে গেছে। না, ধীরে ধীরে বের হতে থাকে প্রকৃত ঘটনা, দেখুন-
৭ নভেম্বর ২০১৩, নামকরা ইংরেজী দৈনিক দ্যা ডেইলী ষ্টার Some attackers seen with Tuku শিরোনামে একটি প্রতিবেদনে লিখেছে,
Mithu, one of the men alleged to have vandalised over 100 Hindu houses and temples, inset, at Bonogram in Santhia of Pabna on Saturday, is seen behind State Minister for Home Shamsul Hoque Tuku when he visited the area yesterday.
এখানে ক্লিক করে দেখুন ডেইলী ষ্টারের সেই প্রতিবেদনটি।
আরো কিছু দিন পর ১৩ নভেম্বর ২০১৩, গ্রেফতার হন খোদ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বেয়াই। হিন্দুদের ওপর হামলা, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বিয়াই তসলিম উদ্দিন খানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আওয়ামীলীগের চাটুকার অধিকাংশ মিডিয়া সেই নিউজ এড়িয়ে গেলেও সাহসিকতার সাথে সেই নিউজটি করেছিলো পরিবর্তন ডটকম। সংবাদটি ছিলো নিম্নরুপঃ
"পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার বনগ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল ইসলাম টুকু'র বিয়াই তসলিম উদ্দিন খানকে (৩৫) মঙ্গলবার বিকেলে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত তসলিম বনগ্রাম মিয়াপাড়ার আলহাজ মোসলেম উদ্দিন খানের ছেলে। তসলিম ছাড়াও আতাইকুলা থানার বনগ্রাম ৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি আব্দুর রহমান খাঁজা এবং যুবলীগ কর্মী দুলালকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে গত ১০ দিনে ১৫ জন গ্রেপ্তার হলো। "
এখানে ক্লিক করে দেখুন পরিবর্তন ডটকমের সেই নিউজটি।
একই দিনে বিডিনিউজ ২৪ ডটকম লিখেছেঃ
"স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকায় এই ঘটনার অন্য আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরলেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না বলে অভিযোগ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন হিন্দু নারী।"
বিডিনিউজের সংবাদ দেখুন এই লিংক এ
চরম ধর্মবিদ্বেষী দল হিসেবে পরিচিত সিপিবি-বাসদের পর্যবেক্ষণ দেখুনঃ
"সাঁথিয়ায় হিন্দুদের ওপর হামলা ছিল টুকুর প্রশ্রয়ে" শিরোনামে ১০ নভেম্বর, ২০১৩, কালের কণ্ঠ লিখেছে,
"পাবনার সাঁথিয়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর প্রশ্রয় ছিল- এমন অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। আজ রবিবার পুরানা পল্টনের প্রগতি সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেছে সিপিবি-বাসদ। সেইসঙ্গে তারা প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান। সিপিবি-বাসদের নেতারা বলেন, ওই ঘটনার পর স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সেখানে পরিদর্শনে যান। এটি তার নির্বাচনী এলাকা। নিজেদের প্রতিনিধিকে দেখে আশ্বস্ত হওয়া তো দূরের কথা, তার সঙ্গে হামলাকারীদের অনেককে দেখে মানুষ আতঙ্কে মুখ বন্ধ করে বসে আছে।
সাঁথিয়ায় ওই হামলার পর সিপিবি-বাসদ প্রতিনিধিদল সরেজমিনে ওই এলাকা পরিদর্শন করে। আজকের সংবাদ সম্মেলনে তাদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে বলেন, পুলিশ সক্রিয় হলে এ ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতো। হামলাকারীদের বেশির ভাগই ছিল কিশোর ও তরুণ।"
কালের কন্ঠের সেই নিউজ দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
--------------------------------------------------
কেস ষ্টাডি -২
বরিশাল
পাবনার ঘটনার কয়েকদিন পরেই ঘটে বরিশালের ঘটনাটি। এটিও প্রথমে মিডিয়া হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা হিসেবে প্রচারের চেষ্টা চালায়। "বরিশালে হিন্দু সম্প্রদায়ের ১৮ ঘরে আগুন, আটক ২৫" শিরোনামে অনলাইন নিউজ সাইট রাইজিং বিডি কি লিখেছে দেখুন,
"বরিশাল সদর উপজেলার খানপুরা গ্রামে দুই কলেজ ছাত্রকে জবাই করে হত্যার ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের আরো তিন বসত ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ মুসলিম জনতা। এনিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় মন্দির ও ঠাকুর ঘরসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের ১৮টি বসত ঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।"
রাইজিং বিডির নিউজ দেখতে এখানে ক্লিক করুন
প্রথমে মিডিয়াতে এটিকে ইসলামপন্থীদের হামলা অথবা মুসলিম জনতার হামলা বলে প্রচার করতে থাকলেও ধীরে ধীরে বের হতে থাকলো আসল ঘটনা!
ঘটনার এক সপ্তাহ পর কালের কন্ঠের অনুসন্ধানে বের হয়ে আসে, প্রকৃত তথ্য। দেখুন ২১ নভেম্বর ২০১৩ কালের কন্ঠের রিপোর্ট,
"বরিশালে মন্দির ও বাড়িতে আগুন দেয় ছাত্রলীগকর্মীরা!"
"বরিশাল নগরের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থী নৌকায় করে সদর উপজেলার চরকাউয়ায় গিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের বাড়ি ও মন্দিরে আগুন দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানেও এমন কয়েকজনের নাম জানা গেছে, যারা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।যে খুনের ঘটনার জের ধরে সনাতন ধর্মাবলম্বী ওই পরিবারগুলো হামলার শিকার হয়েছে সেই পারভেজের ভাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এমনকি খুনের ঘটনার পর ওই রাতে চরআইচা এলাকায় ছাত্রলীগের একজন নেতাও গিয়েছিলেন। সেখানে হামলার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বরিশালের ঘটনায় কালের কন্ঠের নিউজ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আসল অপরাধীরা ধরা না পড়ায় একই এলাকায় আবারো একই ধরনের ঘটনা ঘটে। দেখুন ২৫ নভেম্বর, ২০১৩ কালের কন্ঠের আরেকটি রিপোর্ট-
"জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বরিশালের পৌর কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতার নেতৃত্বে এক হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় গৌরনদী পৌরসভার দক্ষিণ বিজয়পুর এলাকার অধিবাসী রতন ভৌমিকের বাড়িতে এই হামলার ঘ্টনা ঘটে। হামলাকারীরা এ সময় ওই বাড়িতে মনসা মন্দিরের নির্মাণাধীন মনসা প্রতিমা ভাঙচুর ও ২ নারীকে আহত করে বাড়িতে তিনটি সাইন বোর্ড টাঙ্গিয়ে দেয়। রতন ভৌমিক জানান. গৌরনদী পৌরসভার দক্ষিণ বিজয়পুর এলাকায় তার পৈত্রিক বাড়ির ২ একর ৭৭ শতক জমি স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ফিরোজ আহম্মেদ ও তার স্বজনরা দাবি করে আসছেন। এ নিয়ে বরিশাল আদালতে দেওয়ানি মোকদ্দমা বিচারাধীন রয়েছে।"
এখানে ক্লিক করে দেখুন কালের কন্ঠের ২য় নিউজটির সত্যতা
আসল ঘটনা হচ্ছে, এটি মোটেও হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা বা ইসলামপন্থীদের হামলা ছিল না। এটি ছিলো আওয়ামীলীগের পরিকল্পিত হামলা।
এসব হামলাকারীরা যখনই ধরা খেয়েছে, তখনই তাদের 'মানসিক ভারসাম্যহীন', 'ব্যক্তিগত শত্রুতা', 'জায়গা নিয়ে বিরোধ', 'খেলা নিয়ে মারামারি' ইত্যাদি দেখানো হয়েছে। কিন্তু কেউ ধরা না খেলে ঢালাওভাবে ইসলামপন্থীদের উপর সকল দোষ চাপিয়ে দেয়া হয়েছে।
কেস ষ্টাডি -৩
যশোর
এটি এখনকার সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা যার জন্য তথাকথিত মিডিয়া, মানবাধিকারকর্মী, সরকারের চাটুকার সংস্থা ও ভারতীয় চেতনামুখী ঘরনার সকল ব্যাক্তিরা যারপরনাই 'উদ্বিগ্ন'।
ইতিমধ্যেই কোন প্রকার বিচার বিভাগীয় তদন্ত ছাড়াই প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও ইসলামপন্থী দল জামায়াতকে সরাসরি দায়ী করে বক্তব্য দিয়েছে সরকারী(!) দল আওয়ামীলীগ! তাছাড়া আওয়ামীলীগের পা-চাটা দেশের সিংহভাগ মিডিয়াও ঢালাওভাবে জামায়াত ও বিএনপিকে দায়ী করে সংবাদ প্রচার করছে। এতে করে এসব মিডিয়া আওয়ামীলীগের দালালীর সর্ব্বোচ্চ নিদর্শন স্থাপন করেছে।
প্রথম দিন অর্থাৎ ৬ ডিসেম্বর ২০১৪ হলুদ আলো খ্যাত দৈনিক প্রথম আলোর রিপোর্টে যা জানতে পারলাম, তার হুবহু নিচে তুলে ধরছিঃ
"মনিরামপুরে আতঙ্কে সংখ্যালঘুরা, নির্বিকার পুলিশ"
"নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পালপাড়ার একজন বাসিন্দা মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, বিজয়রামপুর গ্রামে হিন্দুদের বসবাসের কোনো পরিবেশ নেই। চরম আতঙ্কে কাটছে প্রতিটা মুহূর্ত। ভোট দিতে না গিয়েও বিএনপি-জামায়াতের রোষানলে পড়তে হচ্ছে। তিনি আরও জানান, ‘মুখোশধারীরা বলে গেছে, ভোট দিতে গেলে তোদের পাড়ার এক মাথা থেকে জ্বালিয়ে দিতাম। না গিয়েই তোরা জীবনে বেঁচে গেছিস।"
মনিরামপুর নিয়ে প্রথম আলোর নিউজ দেখুন এখানে ক্লিক করে
অন্যদিকে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকা যশোরের ঘটনা নিয়ে একটি রিপোর্ট করেছে যেখানে দেখা গেছে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনায় প্রধানত দায়ী আওয়ামী লীগ দলীয় হুইপ আব্দুল ওহাব! নিচে সেই রিপোর্টের খানিকটা উল্লেখ করলামঃ
ছবিঃ হুইপ আব্দুল ওয়াহাব
"নির্বাচনের আগেই চাপাতলা মালোপাড়ার বাসিন্দাদের দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন হুইপ অধ্যক্ষ আব্দুল ওহাব। নির্বাচনে নৌকার বাইরে বের হতে না পারলে পরিণাম ভাল হবে না বলে শাসিয়েছিলেন সংখ্যালঘুদের। তিনি তাদের বলেছিলেন, তিনি এখনও আওয়ামী লীগে আছেন, ভবিষ্যতেও থাকবেন। দল তাকে বহিষ্কার করেনি। ফলে এবারের সংসদ নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীক না পাওয়ায় সংখ্যালঘুরা যদি ভেবে থাকেন ওহাব আর আওয়ামী লীগে নেই, তার ক্ষমতা দুর্বল হয়ে গেছে, তাহলে তারা ভুল করবেন। নৌকার প্রার্থী রণজিৎ রায় আপনাদের স্বজাতি হওয়ায় যদি ভাবেন তাকে ছাড়া আপনারা অন্য কাউকে ভোট দেবেন না তাহলে ভুল করবেন। ভোটের পরে এর জন্য আপনাদের খেসারত দিতে হবে। হিন্দু সমপ্রদায়ের নেতৃস্থানীয়দের উদ্দেশ্য করে হুইপ ওহাব বলেছিলেন, আপনারা সামপ্রদায়িকতা থেকে বের হতে পারবেন না, আর আমার কাছে অসাম্প্রদায়িক মানসিকতা আশা করবেন- সেটা হবে না। আপনাদের কর্মকাণ্ডের ওপর নির্ভর করছে ভোটের পরে আমি অসাম্প্রদায়িক থাকবো না সাম্প্রদায়িক আচার-আচরণ করবো। এদেশের জামায়াত-শিবির শুধু সাম্প্রদায়িকতা লালন করে সেটা ঠিক নয়, এদেশের সংখ্যালঘুরাও সাম্প্রদায়িক।"
মানবজমিনের সেই রিপোর্টটি দেখুন এখানে ক্লিক করেঃ
কেস ষ্টাডি-৪
ময়মনসিংহ দাসপাড়া
ময়মনসিংহের দাসপাড়ায় মন্দির ভাংচুরের ঘটনায় প্রথমে মিডিয়া ঢালাওভাবে জামায়াত ও ইসলামপন্থীদের দায়ী করলেও পরবর্তীতে অনলাইন মিডিয়া বাংলানিউজ২৪ডটকম এর একটি রিপোর্ট থেকেই জানা যায়- "হামলাকারীরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ছিলো!" অথচ এই বাংলানিউজই প্রথমে জামায়াতকে দোষারোপ করেছিলো!
বাংলানিউজের রিপোর্টটি পড়তীখানে ক্লিক করুন
কেস ষ্টাডি- ৫
গৌরনদি
বরিশালের গৌরনদীতে একটি হিন্দু বাড়িতে হামলা ও প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় মিডিয়া প্রথমে ঢালাওভাবে জামায়াতকে দোষারোপ করলেও এক পর্যায়ে দৈনিক আমার দেশের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, স্থানীয় এক প্যানেল মেয়র ও যুবলীগ নেতা একটি হিন্দু বাড়ি দখলের জন্য হামলা চালিয়েছে এবং মূর্তি ভংচুর করেছে। এ সময় তুলশী সাহা ও মায়া রানী পোদ্দার নামের দুই মহিলাকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে।
আমার দেশ পত্রিকার রিপোর্টের চুম্বকাংশঃ
"বাড়ির মালিক রতন ভৌমিকের পূর্ব পুরম্নষদের রেখে যাওয়া ২ একর ৭৭ শতক সম্পত্তির ওপর দীর্ঘদিন থেকে লোলুপ দৃষ্টি দেয় স্থানীয় ৭নং ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র এবং উপজেলা যুবলীগ নেতা এসএম ফিরোজ রহমান।
রোববার মধ্যরাতে ফিরোজ রহমানের দুই ভাইয়ের নেতৃত্বে ৮/১০ জন লোক বাড়ির জমির মালিকানা দাবি করে গাছের সঙ্গে তিনটি সাইনবোর্ড ঝুলায়। এ সময় বাড়ির নারী সদস্যরা বাধা দিলে ফিরোজ ও তার লোকজন একত্রিত হয়ে হামলা চালিয়ে মনষা মন্দিরের মূর্তি ভাংচুর করেন। এসময় তুলশী সাহা (৫৫) ও মায়া রানী পোদ্দারকে (৮০) মারধরও করা হয়।"
আমারদেশ পত্রিকার রিপোর্ট পড়তে এখানে ক্লিক করুন
কেস ষ্টাডি-৬
বরিশাল সদরের চরকাউয়া
বরিশাল নগরের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থী নৌকায় করে সদর উপজেলার চরকাউয়ায় গিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের বাড়ি ও মন্দিরে আগুন দেয়। প্রাথমিকভাবে এর দায় বিরোধীদলের উপর চাপানোর চেষ্টা করলেও দৈনিক কালের কন্ঠের রিপোর্টে বেরিয়ে আসে সত্য ঘটনা। কালের কন্ঠ তাদের রিপোর্টে বলেছেঃ
"শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ওই শিক্ষার্থীরা হোস্টেল ছাড়েন। ছাত্রলীগের অনুসারী শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে ছিল শাকিল হাওলাদার, কে এম রফিক, জাকারিয়া, জিয়া, সজীব ও আরিফ। তাঁরা সবাই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত। ছাত্রলীগের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে তাঁদের প্রথম সারিতে অংশ নিতে দেখা যায়।"
চরকাউয়ার ঘটনা নিয়ে কালের কন্ঠের রিপোর্ট পড়তে এখানে ক্লিক করুন
কেস ষ্টাডি-৭
সাতক্ষীরার দেবহাটা
সাতক্ষীরার দেবহাটায় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকটি বাড়ি ঘরে আগুন দিয়ে পালানোর সময় এক যুবলীগ নেতাকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় জনতা। আটককৃত যুবলীগ নেতা আব্দুল গাফফার জানান, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার নির্দেশে সে হিন্দুদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় সে তার আরো তিন সহযোগীর নাম পুলিশকে জানান।
দেবহাটার ঘটনাটির সত্যতা জানতে এখানে ক্লিক করুন
কেস ষ্টাডি-৮
ভোলার লালমোহন
ভোলার লালমোহনের লর্র্ডহার্ডিঞ্জের মন্দিরে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাঙচুর করেছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা আলী ব্যাপারী ও তার দল। এ সময় তাদের মহিলাসহ
৪ জন আহত হয়েছেন। মন্দিরের পুরোহিত কিরণ চন্দ্র দাস জানান, বেলা ১২ টার দিকে মন্দিরের ভিতর গরু আসাকে কেন্দ্র করে ঝর্ণা রানী দাসের সাথে লর্ড হার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের ছেলে সিরাজের কথাকাটাকাটি হয়। এ সময় মন্দিরের পুরোহিত বাধা দিলে তিনি চলে যান। এরপর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আওয়ামী লীগ নেতা আলী ব্যাপারীর নেতৃত্বে সিরাজ, মোসারেফ, মোবারক, রিয়াজ, সানাউল্লাহ, লোকমান, কামরুল ও গালপোড়া অনুসহ একদল সন্ত্রাসী মন্দিরের ভিতর ঢুকে প্রতিমা ভাঙচুর করে। এ সময় বাধা দিতে গেলে সন্ত্রাসীরা কিরণ চন্দ্র দাস, ঝর্ণা রানী দাস, বিরঙ্গী বৈশ্য, ববিতা রানী দাসকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে।
সত্যতা যাচাইয়ে এখানে ক্লিক করুন
এবার দেখবো হিন্দুদের উপর হামলার গত কয়েক বছরের আরো কিছু চিত্র :
ফলোআপ-১
গত বছর বাশখালিতে হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনায় ও জামায়াত শিবিরকে দ্বায়ী করে কতিপয় মিডিয়া। পরের দিন আমারদেশ পত্রিকা সত্য ঘটনা প্রকাশ করে।
"বাঁশখালীতে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলায় নেতৃত্ব দেয় আ.লীগের বিদ্রোহী গ্রুপ: পুলিশের ভূমিকা ছিল রহস্যজনক! মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে টাকা কামাচ্ছে সরকারদলীয়রা।" এই শিরোনামে রিপোর্ট করে আমার দেশ পত্রিকার অনলাইন ভার্সন।
খবরে বলা হয় চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে গত সপ্তাহে বিক্ষুব্ধ জনতার ওপর পুলিশের গুলির পর আওয়ামী লীগ নেতাদের উস্কানি ও অংশগ্রহণে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও মন্দিরে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করা হয়। আর এই নাশকতার জন্য পরিকল্পিতভাবে বেছে নেয়া হয় বাঁশখালীর দরিদ্র সংখ্যালঘু পরিবার ও তাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে।"
দেখুন এখানে ক্লিক করে
ফলোআপ-২
আওয়ামী লীগের নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে সংখ্যালঘুরা থানায় : চাঁদা দাবি, বৌ ঝিকে উঠিয়ে নেয়ার হুমকি!
টাঙ্গাইলের গোপালপুর পৌরসভার চন্দবাড়ি গ্রামের সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা আওয়ামী সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজের হাতে এখন জিম্মি। সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে নানা অত্যাচার-নির্যাতনের পর এখন তাদের গ্রামছাড়া করার পাঁয়তারা করছে। সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা গতকাল সন্ধ্যায় দলবেধে থানায় হাজির হয়ে জানমালের নিরাপত্তা চেয়ে এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবিতে লিখিত অভিযোগ করে। লিখিত পিটিশনে গ্রামের সংখ্যালঘু নেতা রংলাল চন্দ্র পাল অভিযোগ করেন, পার্শ্ববর্তী হাটবৈরাণ গ্রামের মৃত হাবিবের ছেলে ফারুখ, মৃত আছর আলীর ছেলে মনির এবং চন্দবাড়ী গ্রামের মৃত ইবরাহিমের ছেলে লতিফ এবং ফজর আলীর শরীফ সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কাছ থেকে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা আদায় করে আসছে। চাঁদা না দেয়ায় এরআগে তারা বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে কয়েক দফা ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। বেশকজনকে মারপিটও করে। গত শনিবার সন্ত্রাসীরা পাড়ায় চড়াও হয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি এবং ১০ ঘণ্টার মধ্যে তা পরিশোধ না করলে সবাইকে গ্রামছাড়া এবং বউ-ঝিদের উঠিয়ে নেয়ার হুমকি দিয়ে যায়। গ্রামের বাসিন্দা সুশীল চন্দ্র পাল জানান, মাটির পাত্রের চাহিদা না থাকায় এবং বিকিকিনি কমে যাওয়ায় এমনিতেই তাদের দিন ভালো যাচ্ছে না। তদুপরি চাঁদার দাবিতে গ্রামছাড়া অথবা প্রাণনাশের হুমকিতে সবাই ভীত হয়ে পড়েছেন। পৌর কাউন্সিলর এবং আওয়ামী লীগ নেতা কিতাব আলী বলেন, ‘ওরা আমাগোর দলেরই ছাওয়াল পাওয়াল। তবে ওরা বেশি বাড় বাইড়া গেছে। নেতাগো কথা হুনতে চায় না। এজন্য সংখ্যালঘু পরিবারের লোকজনের সাথে থানায় আইছি।’ উপজেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সুরুজ বলেন, দলের নাম ভাঙিয়ে কেউ সংঘ্যালঘু নির্যাতনে নামলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। গোপালপুর থানার ওসি মমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নিউজ দেখতে এখানে ক্লিক করুন
ফলোআপ-৩
গত বছরের ৫ই জানুয়ারী ইংরেজী দৈনিক 'নিউ এজ' Woman, raped and threatened, goes into hiding শিরোনামে একটী সংবাদ প্রকাশ করে। যেখানে এক আওয়ামীলীগ নেতা দ্বারা এক সংখ্যালঘু মহিলাকে ধর্ষন ও তার উপর পাশবিক নির্যাতনের কথা উল্লেখ করা হয়। রিপোর্টে বলা হয়ঃ
Mahfuzur, also convener of the Kachua unit Awami League, is reported to have raped the woman in her house at night on December 19 at Charkati in the upazila. Her husband, who owns a pharmacy, was not at home at the time.
Local people alleged that Mahfuzur had threatened lives of her and her husband if they did not leave the country.
The woman, along with her husband and a minor son, went into hiding early December 21.
Muktijoddha Sangsad and Puja Udjapan Parishad of the district went on demonstrations, rallying for the removal of Mahfuzur as upazila chairman and his early arrest.
এই লিংক এ ক্লিক করে পড়ুন 'নিউ এজ' এ প্রকাশিত পুরো নিউজ
ফলোআপ-৪
রামুতে বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা করেছিলো আ.লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাই। যা নিয়ে সারা বিশ্বে হুলুস্থুল কান্ড ঘটেছিলো!
বিস্তারিত খবরে জানা যায় ,মত্স্যজীবী লীগের নেতা ভূট্টো বিতর্কিত ছবিটি কেন সে ফেসবুকে শেয়ার করেছে জানতে চাইলে উত্তম বড়ুয়া উল্টো তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে আনছারুল হক ভূট্টো ‘তুমি দাঁড়াও, আমি আসছি’ বলে মোবাইল রেখে দেন।
সূত্রগুলোর মতে, মোবাইল রাখার পরপরই মত্স্যজীবী লীগ নেতা আনছারুল হক ভূট্টো তার দলীয় ছেলেদের খবর দেন। পরে রাত ১০টার দিকে প্রথম মিছিলটি বের করেন তিনিই। ওই মিছিল থেকে বিতর্কিত ছবি ট্যাগকারী উত্তম বড়ুয়ার শাস্তি দাবি করা হয়। ওই মিছিলে আনছারুল হক ভূট্টো ছাড়া জেলা ছাত্রলীগ সদস্য সাদ্দাম হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন সভাপতি আজিজুল হক, যুবলীগ নেতা সাব্বিরের ভাই হাফেজ মোহাম্মদসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাই ছিলেন।
ফলোআপ-৫
বৃটেনের ডেইলি টেলিগ্রাফ এ নিভৃতিচারী নামের একজন ও বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা নিয়ে একটি কলাম প্রকাশ করে। যেখানে দেখা যাচ্ছে গত কয়েক বছর ধরে আওয়ামীলীগের লোকজন দ্বারাই সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা ঘটছে।
দেখুনঃ http://my.telegraph.co.uk/nivritchari/nivritchari/31/minorities-are-no-longer-safer-under-awami-leagues-rule/
মিডিয়ার নির্লজ্জ মিথ্যাচারঃ
মিডিয়া হলো সমাজের আয়নার মত। কিন্তু বর্তমান সময়ে মিডিয়া আয়নার মত কাজ না করে কিভাবে মিডিয়ার নিজস্ব মতাদর্শের বাহিরের লোকজনকে হেনেস্তা করা যায় তা নিয়েই বেশির ভাগ সময় কাজ করছে। দেশে যেই কোনো হামলা , হিন্দুদের উপর নির্যাতন , কোনো রকম তদন্ত ছাড়াই জামায়াত শিবিরকে দোষারোপ করে যাচ্ছে মিডিয়া। এই যেন এক মুখস্ত বুলি। তবে এই সব মিডিয়া যে ১৮০ এঙ্গেলে উল্টে যায় তা দেখাবো আপনাদের এখন :
পাবনায় গত বছর ৪ ই নভেম্বর হিন্দুদের উপর হামলা হয়। কোনো তদন্ত ছাড়াই দেখা যায় জনকন্ঠ সহ অনেকগুলো পত্রিকা জামায়াত শিবিরকে দায়ী করে রিপোর্ট করে। জনকন্ঠের রিপোর্টে বলা হয় :
মিডিয়া হলো সমাজের আয়নার মত। কিন্তু বর্তমান সময়ে মিডিয়া আয়নার মত কাজ না করে কিভাবে মিডিয়ার নিজস্ব মতাদর্শের বাহিরের লোকজনকে হেনেস্তা করা যায় তা নিয়েই বেশির ভাগ সময় কাজ করছে। দেশে যেই কোনো হামলা , হিন্দুদের উপর নির্যাতন , কোনো রকম তদন্ত ছাড়াই জামায়াত শিবিরকে দোষারোপ করে যাচ্ছে মিডিয়া। এই যেন এক মুখস্ত বুলি। তবে এই সব মিডিয়া যে ১৮০ এঙ্গেলে উল্টে যায় তা দেখাবো আপনাদের এখন :
পাবনায় গত বছর ৪ ই নভেম্বর হিন্দুদের উপর হামলা হয়। কোনো তদন্ত ছাড়াই দেখা যায় জনকন্ঠ সহ অনেকগুলো পত্রিকা জামায়াত শিবিরকে দায়ী করে রিপোর্ট করে। জনকন্ঠের রিপোর্টে বলা হয় :
"কক্সবাজারের রামুর সংখ্যালঘু নির্যাতনের ভয়াবহতার পর শনিবার একই কায়দায় পরিকল্পিতভাবে ফেসবুকে মহানবীকে কটূক্তির খবর ছড়িয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর নির্বাচনী এলাকা পাবনার সাঁথিয়ায়। নিজামীর বিচারের কার্যক্রম এগিয়ে যাওয়ার মুখেই যেখানে গুজব ছড়িয়ে সংখ্যালঘুদের বাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও মন্দিরে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুরসহ তা-ব চালানো হয়েছে।"
পরের দিন ডেইলি ষ্টার পত্রিকা ১৮০ এঙ্গেলে পাল্টে গিয়ে রিপোর্ট করে : Some attackers seen with Tuku ( টুকুর সাথে আক্রমন কারীদের দেখা গেছে )
বিস্তারিত খবরে বলা হয় : Some of the alleged culprits of Saturday’s attack on Hindu community in Pabna were yesterday seen with State Minister for Home Shamsul Hoque Tuku and two lawmakers in the affected Bonogram village.
With Tuku, Disaster Management and Relief Minister Abul Hasan Mahmud Ali and State minister for LGRD Jahangir Kabir Nanak visited Bonogram yesterday, four days after vandalism and looting of over 100 Hindu houses had taken place in Sahapara and Ghoshpara areas.
লিংকঃ http://archive.thedailystar.net/beta2/news/some-attackers-seen-with-tuku/
পরের আওয়ামীলীগের নেতা আবু সায়ীদ সংবাদ সম্মেলন করে হামলাকারীদের সাথে টুকুর সম্পৃক্ততা আছে বলে দাবি করেন। তিনি বলেন হিন্দু পল্লীতে হামলার জন্য স্বরাস্ট্রমন্ত্রী দ্বায়ী।
সূত্র : http://www.amadershomoybd.com/content/2013/11/09/news0472.htm#.Un2DEzZZJpo.facebook
পরে যখন আরো তদন্ত হলো দেখা গেল শুধু টুকু না , তার বেয়াই ও এই ঘটনায় জড়িত ও দায়ী বেয়াইকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পরে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও সেখানে তদন্ত চালায়। তারা ও বলেন পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায় সরকারি দলের ছত্রচ্ছায়ায় পূর্বপরিকল্পিতভাবে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারি দলের কর্মীদের চাঁদা দিতে অস্বীকার করার কারণেই ঘটনাটি ঘটেছে। এতে সংখ্যালঘুদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে।
প্রথম আলোর নিউজ লিঙ্কঃ http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/77128/%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%B2%E0%A6%BE_%E0%A6%B9%E0%A6%AF%E0%A6%BC_%E0%A6%B8%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF_%E0%A6%A6%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%B0_%E0%A6%9B%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%9B%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC
এই হচ্ছে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার প্রকৃত চিত্র ও উদ্দেশ্য! আসুন ইসলাম ও দেশের স্বার্থে সঠিক তথ্য জানি ও অন্যদের জানাই। আজ এ পর্যন্তই। আল্লাহ্ হাফিজ।
বিষয়: বিবিধ
৯৪৬৬ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আশা করি আরো বেশি তথ্য ও প্রমান লিঙ্ক দিবেন এবং আগামীদিনের জন্য প্রস্তুত থাকবেন এবং পর্ব আকারে প্রকাশ করবেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন