নিষিদ্ধ নগরীর বীভৎস প্রথা
লিখেছেন লিখেছেন কাঁচের বালি ০৩ এপ্রিল, ২০১৫, ০৮:৩৪:৪০ সকাল
পৃথিবীর নিষিদ্ধ নগরী তিব্বতে এমন একটি অদ্ভুত ও বীভৎস প্রথা আছে যা দেশে আমাদের সভ্য সমাজের মানুষ শিউরে উঠবে। আমাদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী আমরা মৃত ব্যক্তিকে মাটিচাপা দিয়ে দাফন করি। আর তিব্বতে মৃত ব্যক্তিকে টুকরে টুকরো করে শকুনকে খাওয়ানো হয়।
মৃতদেহ সৎকারের জন্য তিব্বতে বৌদ্ধস্তুপ সমাধি (stupid burial) ও আকাশ সমাধি (sky burial) নামে দুটি প্রথা প্রচলিত আছে। প্রথম প্রথা শুধু উচ্চ স্তরে ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব বা লামাদের জন্য প্রযোজ্য। আর দ্বিতীয় প্রথাটি সাধারণ মানুষের জন্য। তবে ১৮ বছরের কম বয়সের শিশু, গর্ভবতী নারী বা দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া মানুষের ক্ষেত্রে এ রীতি পালন করা হয় না
দ্বিতীয় প্রথা বা আকাশ সমাধির কাহিনী হলো তিব্বতিরা শকুনদেরকে চেনে ‘ডাকিনিস’ হিসেবে। তিব্বতীয়দের মতে ডাকিনিসরা হলো দেবদূত। ডাকিনিসের অর্থ হচ্ছে আকাশের নৃত্যশিল্পী। তিব্বতীয়দের বিশ্বাস ডাকিনীরা মৃতের আত্মাকে স্বর্দে নিয়ে যায়। এটা হচ্ছে শান্তিময় এক স্থান যেখানে আত্মাদেরকে পুনর্জন্মের পূর্ব পর্যন্ত রাখা হয়। এছাড়া শুকুনদেরকে মৃতদেহ ভক্ষণ করতে দেয়া হলে পুণ্য হয় বলে মনে করা হয়। কারণ এতে জীবের প্রতি দয়া দেখানো হয়।
মৃতদেহকে তিন দিন পর্যন্ত কেউ স্পর্শ করে না। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা মৃতদেহের চারপাশে ঘুরে ঘুরে ধর্মীয় বাণী পাঠ করতে থাকেন। সমাধির আগের দিন মৃতদেহকে পরিষ্কার করা হয় ও সাদা কাপড়ে মুড়ে দেয়া হয়। সৎকার প্রক্রিয়া ভোর শুরু হওয়ার সাথে সাথে শুরু হয়। সৎকার স্থানে পৌছানোর পর পর মৃত দেহের উপর জড়ানো কাপড় খুলে ফেলা হয় এবং মৃতদেহটিকে পেছন দিক থেকে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলা হয়। এরপর দেহের হাড়গুলোকে চুর্ণ-বিচুর্ণ করা হয়। এই কাজের জন্য বিশেষ মানুষ আছে। মৃতদেহ টুকরো করা শেষ হলে ছড়িয়ে দেয়া হয়, যেন শকুনর খেতে পারে।
সবশেষে মৃত ব্যক্তির হাড়ের টুকরো গুলো পড়ে থাকে মাটির এখানে সেখানে। শুধুমাত্র মৃতের আত্মীয়-পরিবারকে এই দৃশ্যটি দেখার অনুমতি দেয়া হয়।
বিষয়: বিবিধ
১৪২৫ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন