প্রত্যেক ব্যক্তির (স্বা-বালক, স্বা-বালিকার) কুরবানী করা উচিৎ
লিখেছেন লিখেছেন সত্যের ৩১ আগস্ট, ২০১৭, ০৮:৫৩:১৫ সকাল
ইবরাহীম (আঃ) আল্লাহর হুকুম পালনের জন্য যখন নিষ্পাপ ছেলেকে কুরবানীর জন্য শায়িত করলেন তখন আল্লাহ তার পরিবর্তে যবেহ করার জন্য এক মহান জন্তু প্রদান করেন ।
এখানে আল্লাহ তার বান্দার প্রতি অত্যন্ত দয়াশীল হয়েছেন ।
এই জন্য আমরা মুসলমানেরা প্রতি বছরে একবার পশু কুরবানী করে থাকি ।
আমি আপনি যে পশু কুরবানী করি সে পশু কি আমাদের পার্থিব জীবনে কোন ক্ষতি করে ? উত্তরঃ ‘না’ ।
বরং এ গৃহপালিত পশু আমাদের নানা ধরনের উপকার করে ।
তাহলে এই উপকারি পশুটিকে নির্দয় নির্মমভাবে জল্লাদের মত হত্যা করা কি ঠিক হয় ? পার্থিব জ্ঞানের আলোকে উত্তর হবে ‘না’ ।
মানুষ মাছি এমনকি কোন ক্ষুদ্র প্রাণীও সৃষ্টি করতে পারে না । তাহলে প্রতিবছর কেন এই নিঃশংস পশু হত্যাকান্ড করা হয় ?
এখানে মুসলমানেরা আল্লাহর বাণীর আলোকে উত্তর জানাবে, এটা আমাদের রবের/সৃষ্টিকর্তার হুকুম পালনের জন্য করি ।
অতএব দুনিয়ার সমস্ত লোক ইহুদী, খ্রীষ্টান, হিন্দু, বৌদ্ধ তাদের অনুসারী নামধারী মুসলমান যত যুক্তি তর্কের মাধ্যমে যে কোন বিষয়ে যত কঠিন প্রশ্ন করুক না কেন দুনিয়ার জ্ঞানের আলোকে উত্তর তাদের পক্ষে হলেও বা উত্তর না দিতে পারলেও
প্রকৃত মুসলমান কুরআনে বর্ণিত আল্লাহর হুকুমের বিপরিত কোন কাজ করবে না ।
শরী’আতের হুকুমের গোপন রহস্য ও হিকমাত পরিপূর্ণভাবে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না । সুতরাং
শরী’আতের কোন হুকুমের রহস্য ও হিকমাত কারো বুঝে আসুক বা না আসুক তা যে মহান আল্লাহর হুকুম এজন্য বিনা দ্বিধায় অবশ্যই পালন করতে হবে ।
তাহলেই আমরা নিজেদের প্রকৃত মুসলমান বলে দাবী করতে পারব ।
ইবরাহীম (আঃ) আল্লাহর আদেশ মান্য করার জন্য তাঁর নিষ্পাপ ছেলেকে কুরবানী করতেছিল অথচ
আমাদের আহাল (পরিবার, ছেলে-মেয়ে ও আপনার অনুগত অন্যান্যরা) হাজারো গুনাহর কাজে লিপ্ত (নামায পড়ে না, রোজা রাখে না, পর্দা মানে না, গান-বাজনা, বেহায়াপনা নাচ, কল্পকাহিনী নাটক সিনেমায় ব্যস্ত, মদ-জুয়া, তামাক, চুরী-ছিন্তাই ইত্যাদি হারাম কাজে লিপ্ত, জেনা-ব্যভিচারে লিপ্ত, সুদের আদান-প্রদানে করে ইত্যাদি নানা শরীয়া বিরোধী কাজে জড়িত)
এসব ব্যাপারে আপনি পরিবারের অভিবাবক হিসাবে দ্বীনের জন্য কি কুরবানী করেন, কি দায়িত্ব পালন করেন ? !
পশু কোরবানীর সাথে পশুত্বের কোরবানী করতে হবে:
আমরা মানুষ । আমাদের মধ্যে যেমন ফেরেশতার স্বভাব আছে তেমনি পশুর স্বভাবও আছে ।
মানুষের মধ্যে যত ভালো গুণ রয়েছে, সেগুলো হলো-ফেরেশতার স্বভাব । আর আল্লাহ’র ইবাদত না করা, হিংসা, বিদ্বেষ, ঘৃণা, অন্যায়ভাবে কারো উপর আক্রমণ করা, মানুষের ধন-সম্পদ অবৈধভাবে দখল করা, কারো অধিকার কেড়ে নেয়া, হারাম পরিহার না করা, জেনা ব্যভিচার করা, সুদ দেওয়া-নেওয়া, পুরুষ/নারীর পর্দার বিধান মেনে না চলা ইত্যাদি হলো পশুর স্বভাব ।
পবিত্র কোরবানী ঈদে আমরা পশু কোরবানী করে থাকি ।
কুরবানীর মূল ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে এই উপলক্ষে অর্জিত তাকওয়া বা আল্লাহভীতি দ্বারা নিজের
পশু স্বভাবকে কোরবানী করি না ।
শরিয়তের কোন বিধান মানব আর কোন বিধান আমাদের যুক্তিতে মানা সম্ভব নয় এটা ভাবলে, করলে আমাদের পশু কুরবানী এমনকি কোন ইবাদতই আল্লাহ কবুল করবে না ।
শুধু নামায, রোজা, হজ্জ, যাকাতের নাম ইসলাম না । এগুল পালনের পাশাপাশি আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে যত হুকুম করেছেন আর রাসুল (সাঃ) যে নিয়মে করতে বলেছেন, সবগুল পরিপূর্ণভাবে পালন করার নাম ইসলাম ।
যদি পশু কোরবানীর সাথে সাথে আমরা নিজেদের
পশু স্বভাবকেও কোরবানী করতে পারি,
তবেই আমাদের সমাজ হবে সুখময়, শান্তিময় ও আনন্দময় ।
আসুন আমরা সকলে এই বছরের পশু কুরবানীর সাথে নিজের ভিতরের ও আহালের (পরিবার, ছেলে-মেয়ে ও অধিনস্থ অন্যান্য) সকলের
পশু স্বভাবও কুরবানি করি ।
সূরা আল হজ্বের ৩৭ নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন,
‘এ কুরবানীর রক্ত ও গোশত আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না বরং তার কাছে পৌঁছে তোমাদের মনের অবস্থা বা তাকওয়া' ।
এই কুরবানীতে সকলের চতুষ্পদ জন্তু কুরবানী করার সামর্থ না থাকলে, পশু চরিত্রের কুরবানী করে আল্লাহ’র খাঁটি বান্দা হতে পারেন ।
আসুন আমরা খাঁটি তাওবা করে পশু স্বভাবকে করবানী করে গুনাহ’র কাজ থেকে বিরত থাকি ।
হে আল্লাহ আমাদের তাওবা কবুল কর । আমীণ!
বিষয়: বিবিধ
১০৪৩ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এখানে সকলকে পশু কুরবানী করতে হবে বলা হয়নি
পশু স্বভাবের কুরবানীর প্রতি আহবান করা হয়েছে যা করতে কোন অর্থ সম্পদের দরকার হয় না
মন্তব্য করতে লগইন করুন