শিক্ষিত ফকির / ভিক্ষুক চিনেন কি ?!

লিখেছেন লিখেছেন সত্যের ১৮ নভেম্বর, ২০১৫, ০১:০৭:৪৭ দুপুর

ভিক্ষুক বা ফকির শব্দটির সাথে সকলেই পরিচিত । যা পড়া বা শোনা মাত্রই সকলের মনে একজন হতদরিদ্র মানুষ যার এক বেলা খাবারের যোগার নেই । মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে প্রতি বেলার অন্ন সংগ্রহ করতে হয় । এ রকম মানুষের ছবি ভেসে উঠে । এরাও ফকির বা ভিক্ষুক । তবে এখানে আমি ভিন্ন ধরনের ভিক্ষুকের পরিচয় তুলে ধরব ।

ভিক্ষুক কত প্রকার?

আমার মতে ভিক্ষুক দুই প্রকারঃ ১, অশিক্ষিত ভিক্ষুক ও

২, শিক্ষিত ভিক্ষুক ।

১,১ অশিক্ষিত ভিক্ষূকঃ

এরাই মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে জিবিকা অর্জন করে । যে যা দেয় তাই গ্রহন করে । অতিরিক্ত কিছু দাবি করে না । এদেরকে ভিক্ষা দিলে ধর্মীয় মতে অনেক কল্যান, ছওয়াব পাওয়া যায় । এদেরকে দান করলে ইসলামিক নিয়মে দান করনে ওয়ালার ধন বাড়বে । এদেরকে বেশি করে যাকাত দিবেন । আমরা বাংলাদেশের সকল সচ্ছল ব্যক্তি এদের দিকে সু-নজর দিলে তাদের অভাব পূর্ণ হয়ে যাবে । আমরা ধনীরা যদি আমাদের যাকাতকে যথাযথ শরিয়া নিয়মে দেই তাহলে এমন এক সময় আসবে যেখানে দেখা যাবে দান খয়রাত করার মত কোন অশিক্ষিত ভিক্ষুক আর খুজে পাওয়া যাবে না ।

২,১ শিক্ষিত ভিক্ষুকঃ

অশিক্ষিত ভিক্ষুককে সকলেই বুঝতে পারলেন । কিন্তু সকলের মনে আগ্রহ শিক্ষিত ভিক্ষুক আবার কে? অনেক শিক্ষিত লোক আবার মনোক্ষুন্ন হতে পারেন । তাই বিষয়টি ভালো করে পড়ার ও বুঝার জন্য অনুরোধ করছি ।

আসলে শিক্ষিত হয়ে বিভিন্ন বিপর্যয়ের কারনে মানুষ একে অপরের কাছে হাত বাড়াতে পারে । এ ধরনের শিক্ষিত ফকির ও ভাল । তাদেরকেও সাহায্যার্থে দেশ বাসির এগিয়ে আসাও কল্যান ও ছওয়াবের কাজ ।

অনেক শিক্ষিত লোক যাদের কোন সমস্যা নেই । তারা যদি জনগনের জন্য, সমাজের জন্য মানুষের কাছে হাত বাড়ায় তারাও ভাল । এ ধরনের কর্মকান্ডে সকল নাগরিকের শরিক হওয়া অত্যন্ত কল্যান ও ছওয়াবের কাজ ।

আরো অনেক ভালো শিক্ষিত লোক আছে যারা ব্যক্তির জন্য, সমাজের জন্য, দেশের জন্য, জনগণের জন্য ভালো । যাদের দারা সকলেরই কম বেশি উপকার হবে ।

ভালোর বর্ণনা আর বিস্তারিত লেখলাম না । যাহোক শিক্ষিত লোক মনোক্ষুন্ন হবেন না । আপনারা যে যে অবস্থানে আছেন সকলেই ভালো বুঝেন ।

দুধকে আমরা আদর্শ খাদ্য জানি । এই আদর্শের মধ্যে যদি এক বিন্দু টক মিশানো হয় । তার আসল রুপ বা আদর্শ গুন থাকে না ।

আমি এখন খারাপ শিক্ষিত ভিক্ষুক বা ফকির এর বিবরণ উল্লেখ করবো ।

আমরা শিক্ষিত লোক অনেকেই ব্যক্তিগত, বেসরকারি, সরকারি ইত্যাদি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকি । আমরা ব্যক্তিগত আয় বা বেতন যা পাই তা দিয়ে জীবিকা অর্জন করি ।

এমন অনেক লোক আছে যাদের ব্যয়ের চেয়ে আয় বেশি । তারপরও তারা ভিক্ষুক সেজে বসে থাকেন । তাদের অভাব যেন কোন দিনই পূর্ণ হচ্ছে না । এতক্ষণে আমি আকার ইঙ্গিতে যে খারাপ শিক্ষিত ভিক্ষুকের কথা বলছি তা অনেকে হয়তো অনুধাবন করতে পারছেন ।

আমি ঐ সমস্ত শিক্ষিত লোকের কথা বলছি যারা বিভিন্ন ধরনের কাজের বিনিময়ে অবৈধ ভাবে টাকা দাবি করে । অর্থাৎ ঘুষ চায় ।

ঘুষ নেয়া ও দেয়া উভয়ই অপরাধ । এ ধরনের কাজ থেকে আমরা বিরত থাকার চেষ্টা করবো ।

যারা ঘুষ নেয় তারা বলে অনেকে আমাকে ইচ্ছায় খুশি মনে দেয় ।

আসলে আপনি বাহ্যিক দৃষ্টিতে বলেন । অন্তর দৃষ্টিতে অনুধাবন করুন যে কাজের জন্য আপনাকে মাসিক বেতন দেয়া হয় সে কাজ কেউ ঘুষ দ্বারা করে নিয়ে খুশি হতে পারে কি ?

জরিপ করে দেখুন ঘুষ দিলে কেউ খুশি হয় এ রকম একজনও খুজে পাবেন না । বরং আপনার অগোচরে খারাপ মন্তব্য করে ।

যে অবৈধ ভাবে অর্থ সম্পদ অর্জন করবে তার মনে শান্তি থাকবে না । নানান ধরনের রোগ, শোক, টেনশন লেগেই থাকবে ।

এ ধরনের শিক্ষিত ভিক্ষুক কে ঘুষ বা ভিক্ষা দিলে কারোর কোন উপকার হবে না ।

অনেকে বলে আমরা অনেক ক্ষেত্রে পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে পড়ি ।

না দিয়ে পারি না ।

তাদের উদ্দেশে বলি-এ অবস্থায় দিলে আপনার কোন অপকার হবে না ।

যে নিবে তারই ক্ষতি হবে, তার মনের শান্তি দুরিভূত হবে, সে নানা ধরনের পেরেশানীর মধ্যে থাকবে ।

তবে যারা পরিস্থিতির স্বীকার এ রকম ক্ষেত্রে শুধু নিরবে সহ্য করলে হবে না । আপনার সামর্থ অনুযায়ী প্রতিহত করার চেষ্টা করতে হবে ।

সুযোগ বুঝে উচিৎ শিক্ষা দিতে হবে ।

আর এ কথা সকলেরই মনে রাখতে হবে ঘুষ নেয়া ও দেয়া উভয়ই অপরাধ ।

আসুন, আমরা যারা ঘুষের আশায় থাকি সকলেই নিজের শান্তির জন্য, সমাজের শান্তির জন্য, দেশের শান্তির জন্য, সর্বোপরি জনগণের শান্তির জন্য তা পরিহার করার দৃঢ় অঙ্গিকার ব্যক্ত করি ।

অনুরুপ ভাবেঃ

শয়তান দুই প্রকার

১; ধর্ম বিরোধি শয়তানঃ

যার কাজ ধর্মের নির্দেশের বিপরীত করা ।

২; ভালো শয়তানঃ

যার কাজ ধর্মের নির্দেশে সংযোজন করা বা বিয়োজন করা অর্থাৎ বেদআত তৈরী করা ।

বর্তমানে ভালো শয়তানের প্রভাব বেশী । এর নির্দেশে সকলের সতর্ক থাকতে হবে । অনেকে বেখেয়ালী ভাবে এর ধোকায় পড়ে যায় ।

এই দুই প্রকার শয়তানই ক্ষতিকর ।

চোরও দুই প্রকার

১; অশিক্ষিত চোরঃ

যারা গোপনে মানুষের মালামাল চুরি করে ।

ধরা পড়লে ছাড় নাই গণ পিটানি মাফ নাই ।

২; শিক্ষীত চোরঃ

যারা সুকৌশলে বিভিন্ন পণ্যে ভেজাল করে বা কম বেশি করে । বিভিন্ন কর্মকান্ডে যা ব্যয় হয় তার চেয়ে হিসাবে বেশি দেখায় ।

এরা ধরা ছোয়ার বাইরে । দুই একজন ধরা পড়লেও

***আলোর কনার মত কোন ফাক দিয়ে বের হয়ে যায় অনেকে টের পায় না ।

এই দুই প্রকার চোরও জনগণের জন্য ক্ষতিকর ।

বিষয়: বিবিধ

১৩১৪ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

350214
১৮ নভেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৪৫
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ঘুষখোর দের ভিক্ষুক বলা উচিত নয়। রাস্তার বেশিরভাগ ভিক্ষুকই সমস্যায় পরেই ভিক্ষা করে।
350221
১৮ নভেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৫৬
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : ভিক্ষুক, চোর এবং শয়তানের নতুন প্রকারভেদ পড়ে ভাল লাগল.. অনেক ধন্যবাদ
350223
১৮ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:০৩
আফরা লিখেছেন : ঘুষখোর দের ভিক্ষুক বলা উচিত নয় কারন অভাবের তাড়নায় ভিক্ষাবৃত্তি হালাল । ঘুষ কোন অবস্থায় ই জায়েজ নয় ।
১৯ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০১:৫৮
290804
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : একমত।
350243
১৮ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:৫৯
শেখের পোলা লিখেছেন : অন্য ভাবে বললে হয় অভাবী ভিক্ষুক আর স্বভাবী বা সচ্ছল ভিক্ষুক৷বাংলাদেশে সর্বত্রই এখন স্বভাবী ভিক্ষুক গিজ গিজ করছে৷ধন্যবাধ৷
350271
১৮ নভেম্বর ২০১৫ রাত ১১:১০
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : ভালো বিশ্লেষন। ১০০ তে ৯০ পেয়েছেন।
350380
১৯ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০১:৫৮
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : সুন্দর লেখা।
350401
১৯ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০৩:৫৪
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File