আশুরা কেন এবং কিভাবে পালন করবেন ?
লিখেছেন লিখেছেন সত্যের ২০ অক্টোবর, ২০১৫, ০৭:৩৩:৩৯ সন্ধ্যা
এ মাসে পৃথিবীর বহু ঐতিহাসিক ঘটনা সংঘটিত হয়েছে । এদিনে আল্লাহ তাআলা তাঁর কুদরত প্রকাশ করেছেন ।
প্রথম ঘটনা :
গোত্রসহ মুসা আলাইহিস সালামের পরিত্রাণ ও সদলবলে ফেরাউনের পতন :
ইমাম বুখারী ও মুসলিম রহ. আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহুমার উদ্ধৃতি দিয়ে বর্ণনা করেন,
لَمَّا قَدِمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ المَدِينَةَ وَجَدَ اليَهُودَ يَصُومُونَ عَاشُورَاءَ، فَسُئِلُوا عَنْ ذَلِكَ، فَقَالُوا: هَذَا اليَوْمُ الَّذِي أَظْفَرَ اللَّهُ فِيهِ مُوسَى، وَبَنِي إِسْرَائِيلَ عَلَى فِرْعَوْنَ، وَنَحْنُ نَصُومُهُ تَعْظِيمًا لَهُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «نَحْنُ أَوْلَى بِمُوسَى مِنْكُمْ، ثُمَّ أَمَرَ بِصَوْمِهِ»
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় আগমন করে দেখলেন স্থানীয় ইহুদীরা আশুরা দিবসে রোযা পালন করছে । ফলে তাদেরকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলো । তারা উত্তর দিল এ এমন এক দিবস যাতে আল্লাহ তা‘আলা মুসা আলাইহিস সালামকে বিজয়ী করেছিলেন এবং বানী ইসরাঈলকে ফেরাউনের ওপর আধিপত্য দান করেছেন । এ দিনে সম্মানার্থে আমরা সিয়াম পালন করি । এতদশ্রবণে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, ‘তাহলে তো এ দিন রোযা রাখার ব্যাপারে আমরাই অধিক হকদার । অতপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দিবসে রোযা রোযা পালনের নির্দেশ দেন । (বুখারী : ৩৯৪৩; মুসলিম : ১১৩০) আরো দেখুন-সহীহ বুখারী ১/৪৮১
<***>আশুরার প্রসিদ্ধতার একমাত্র সহীহ প্রমান এটাই---
<***>রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দিন রোযা রাখতে বলেছেন, মুসা আলাইহিস সালামের মুক্তি ও ফেরাউনের ভরাডুবির শুকরিয়া হিসেবে।<***>
ইমাম আহমাদ সামান্য বর্ধিতাকারে বর্ণনা করেছেন,
«وهو اليوم الذي استوت فيه السفينة على الجودي فصامه نوح شكراً»
“এটি সেই দিন যাতে নূহ আলাইহিস সালাম-এর কিশতি জুদি পর্বতে স্থির হয়েছিল, তাই নূহ আলাইহিস সালাম আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ার্থে সেদিন সাওম রেখেছিলেন”। মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং ৮৭১৭, তবে এর সনদ দুর্বল ।
ফজিলতঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«صيام يوم عاشوراء، إني أحتسب على الله أن يكفر السنة التي قبله»
“আশুরার দিনের সাওমের ব্যাপারে আমি আল্লাহর কাছে আশা করি,তিনি পূর্ববর্তী এক বছরের পাপ ক্ষমা করে দিবেন”। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৯৭৬
<***>সহীহ হাদিছ দ্বারা স্পষ্ট প্রমাণিত হল যে, মহররম মাসে ফরজ ইবাদত ব্যতীত সাওম পালন ছাড়া আর কোন বিশেষ আমল নেই । আপনারা এ মাসে বেশি বেশি করে নফল সাওম পালন করতে পারেন । যেমন প্রতি সোমবার, বৃস্পতিবারে সাওম, আশুরার সাওম, আইয়ামে বীজের সাওম...ইত্যাদি যত খুশি নফল সাওম, জিকির, তাওবা করুন <***>
আশুরার সাওম তিন পদ্ধতিতে রাখা যায়
১ম পদ্ধতিঃ
মহররম মাসের ৯ম ও ১০ম তারিখে ।
এ বছরে ২২/১০/১৫ইং দিবাগত রাতে ৯ই মহররম এবং ২৩/১০/১৫ দিবাগত রাতে ১০ই মহররম শুরু । তাই বৃস্পতিবার ও শুক্রবার রাতে সেহেরী খেতে হবে ।
‘আশুরার সাথে তাসু‘আর সাওমও মুস্তাহাব
আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বর্ণনা করেন,
«حِينَ صَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ عَاشُورَاءَ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّهُ يَوْمٌ تُعَظِّمُهُ الْيَهُودُ وَالنَّصَارَى، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: "فَإِذَا كَانَ الْعَامُ الْمُقْبِلُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ صُمْنَا الْيَوْمَ التَّاسِعَ". قَالَ فَلَمْ يَأْتِ الْعَامُ الْمُقْبِلُ حَتَّى تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ».
“যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশুরার সাওম রাখলেন এবং (অন্যদেরকে) সাওম রাখার নির্দেশ দিলেন । লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল ! এটিতো এমন দিন, যাকে ইয়াহূদী ও খ্রিষ্টানরা বড় জ্ঞান করে, সম্মান জানায় । তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আগামী বছর এদিন আসলে আমরা নবম দিনও সাওম রাখব ইনশাআল্লাহ । বর্ণনাকারী বলছেন,আগামী বছর আসার পূর্বেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাত হয়ে গিয়েছে” । সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৯১৪৬; আরো দেখুন সহীহ মুসলিম ১/৩৫৯
২য় পদ্ধতিঃ
শুধু ১০ই মহররম তারিখে সাওম রাখা । এ বছর শুক্রবার রাতে সেহেরী খেতে হবে । এর দলিল প্রমান লেখার শুরুতে বর্ণিত হয়েছে ।
৩য় পদ্ধতিঃ
মহররমের ১০ ও ১১ তারিখে সাওম রাখা । এ বছর শুক্রবার ও শনিবার রাতে সেহেরী খেতে হবে ।
আশুরার রোযা সম্পর্কে এক হাদীসে আছে যে, ‘তোমরা আশুরার রোযা রাখ এবং ইহুদীদের সাদৃশ্য পরিত্যাগ করে; আশুরার আগে বা পরে আরো একদিন রোযা রাখ।’
صوموا عاشوراء وخالفوا فيه اليهود، صوموا قبله يوما أو بعده يوما
-মুসনাদে আহমদ ১/২৪১
<***>আরো একটি বেদাতী পদ্ধতি নামে ৪র্থ পদ্ধতি অনেকে বলে থাকে তাহল মহররমের ৯, ১০, ১১ তারিখে তিনটি সাওম রাখা ।
আপনারা হাদিসের শব্দগুল খেয়াল করে দেখুন স্পষ্ট লেখা আছে আশুরার আগে বা পরে ১টি । তাহলে আশুরা+আগের ১টি=২ট । হাদিসে বা/অথবা শব্দ উল্লেখ করে পরে লেখা আছে । তাহলে অথবা/বা আশুরা+পরের ১টি=২টি ।
<***>একযোগে ৩টি সাওম বর্ণিত হয় নাই । এটা নিয়ম মনে করে বললে/পালন করলে বেদাত হবে<***>
যদি আপনি নিয়ম মনে না করে নফল হিসাবে ১/২/৩/৪/৫ সাওম পালন করেন তাহলে বেদাত হবে না ।
যারা শুধু আশুরা পালন করেন তাদের জন্য ১ম পদ্ধতিই উত্তম ।
দ্বিতীয় ঘটনা :
নবী দৌহিত্র হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহুর শাহাদাত বরণ:
ইরাকের কারবালা প্রান্তরে মর্মবিদারক এ ঘটনাটি ঘটেছিল ৬১ হিজরির পবিত্র জুমাবারে।[আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া : ১১/৫৬৯] এটি ছিল উম্মতের ওপর নেমে আসা সবচে বড় বিপদগুলোর একটি। আল্লামা ইবনু তাইমিয়া রহ. বলেন, ‘হুসাইনের রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহু শাহাদতের ঘটনাটি মহা বিপদগুলোর একটি। কারণ, হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহু এবং তাঁর আগে উসমান রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহু-এর শহীদ হওয়ার ঘটনার মধ্য দিয়েই পরবর্তীতে উম্মতের ওপর নেমে এসেছে অনেক মহা দুর্যোগ। আর তাঁদের শহীদ করেছে আল্লাহর নিকৃষ্ট বান্দারা। [মাজমু‘ ফাতাওয়া ৩/৪১১]
<***>দ্বিতীয় ঘটনার সাথে আশুরা আমলের সম্পিক্ততার কোন সহীহ দলিল পাওয়া যায় না । তবে আমরা শুধু আশুরা নয় সবসময়ই এ ঘটনার আলোচনা করে শিক্ষা নিতে পারি । ইসলামে হুসাইন (রাঃ) সহ সকল শহীদদের জন্য দোয়া করতে পারি । তবে এ ঘটনা নিয়ে শিয়া প্রচলিত অনৈসলামিক কাজ থেকে বিরত থাকাই সওয়াবের কাজ । ইসলামে শোক পালন ইহজগত ত্যাগের দিন হতে স্বামী/স্ত্রী ছাড়া অন্যান্যদের জন্য নির্ধারিত সীমা ৩দিন ছাড়া বার্ষিকি পালন করার কথা কোন সহীহ সনদে বর্ণিত হয় নাই । কিছু দলিল দেখুন-
আল্লাহর বাণী فَلا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنْفُسَكُمْ .........“তোমরা এতে নিজেদের উপর কোনো জুলুম করো না” [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত:৩৬]
আবু বাকরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন,
«السَّنَةُ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ: ثَلاثَةٌ مُتَوَالِيَاتٌ ذُو الْقَعْدَةِ وَذُو الْحِجَّةِ وَالْمُحَرَّمُ، وَرَجَبُ مُضَرَ الَّذِي بَيْنَ جُمَادَى وَشَعْبَانَ».
“বছর হলো বারোটি মাসের সমষ্টি, তার মধ্যে চারটি অতি সম্মানিত। তিনটি পর পর লাগোয়া জিলকদ, যিলহজ ও মুহররম আর (চতুর্থটি হলো) জুমাদাস সানি ও শাবানের মধ্যবর্তী রজব”।
তন্মধ্যে মুহররমকে মুহররম বলে অভিহিত করা হয়েছে কারণ এটি অতি সম্মানিত ।
ইমাম বুখারী এবং মুসলিম রহ. আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«لَيْسَ مِنَّا مَنْ لَطَمَ الخُدُودَ، وَشَقَّ الجُيُوبَ، وَدَعَا بِدَعْوَى الجَاهِلِيَّةِ»
‘সে আমাদের উম্মতভুক্ত নয় যে গালে আঘাত করে, বুকের কাপড় ছেঁড়ে এবং জাহেলী কথাবার্তা বলে। [বুখারী : ১২৯৪, মুসলিম : ১০৩]
বুখারী ও মুসলিম রহ. আবূ মূসা আশআরী রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন,
أَنَا بَرِيءٌ مِمَّا بَرِئَ مِنْهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، «فَإِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَرِئَ مِنَ الصَّالِقَةِ، وَالْحَالِقَةِ، وَالشَّاقَّةِ»
‘আমি তাদের থেকে মুক্ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাদের থেকে মুক্ত। আর সাল্লাল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (শোকে) মাথা মুণ্ডনকারিণী, বিলাপকারিণী এবং বুক বিদীর্ণকারিণী থেকে মুক্ত। [বুখারী : ১২৩৪, মুসলিম : ১০৪]
তেমনি আবূ মালেক আশআরী রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
« أَرْبَعٌ فِي أُمَّتِي مِنْ أَمْرِ الْجَاهِلِيَّةِ، لَا يَتْرُكُونَهُنَّ: الْفَخْرُ فِي الْأَحْسَابِ، وَالطَّعْنُ فِي الْأَنْسَابِ، وَالْاسْتِسْقَاءُ بِالنُّجُومِ، وَالنِّيَاحَةُ » وَقَالَ: «النَّائِحَةُ إِذَا لَمْ تَتُبْ قَبْلَ مَوْتِهَا، تُقَامُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَعَلَيْهَا سِرْبَالٌ مِنْ قَطِرَانٍ، وَدِرْعٌ مِنْ جَرَبٍ»
‘আমার উম্মত জাহেলী যুগের চারটি স্বভাব সহজে ছাড়তে পারবে না। বংশ নিয়ে গর্ব, বংশ তুলে গালি দেয়া, তারকা দেখে বৃষ্টি চাওয়া এবং মৃত ব্যক্তির ওপর বিলাপ করা। তিনি বলেন, বিলাপকারিণী যদি মৃত্যুর আগে তওবা না করে তাহলে কেয়ামতের দিন তাকে এমনভাবে উঠানো হবে যে, তার সর্বাঙ্গ খোস-পাঁচড়া ও আলকাতরায় ভরা থাকবে। [মুসলিম : ৯৩৪]
শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়া রহ. বলেন, ‘এমনিতেই এসব কাজের নিন্দায় অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে, তার সঙ্গে যদি মুসলমানের ওপর জুলুম করা, তাদের অভিশাপ দেয়া ও গাল-মন্দ করা এবং তাদের মাঝে অনৈক্য ও ধর্মহীনতার বীজ বপনকারীদের সাহায্য করার মতো অপরাধ যোগ এতে হয় তাহলে তা কত বড় গুনার কাজ বলে গণ্য হবে তা তো বলাই বাহুল্য।
হে আল্লাহ, আপনি স্বীয় হাবিবের সঙ্গী ও পরিবারবর্গের ওপর সন্তুষ্ট হোন এবং তাদেরকেও সন্তুষ্ট করে দিন। করুণাময়, আপনি আমাদেরকে সেসব লোকের মাঝে অন্তর্ভুক্ত করুন যারা তাঁদের সম্মান করেছেন। আমাদের হাশর করুন আপনি তাঁদের সঙ্গে।
বিষয়: বিবিধ
১১৪৭ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহর বাণী فَلا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنْفُسَكُمْ .........“তোমরা এতে নিজেদের উপর কোনো জুলুম করো না” [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত:৩৬]
চাকু চালালো জুলুম নয় কি?
সময়ের কথা, উপকারী বটে
"..স্মরণ করাও, আর স্মরণ করানোটা মুমিনদের জন্য কল্যানকর হয়ে থাকে ||"
জাযাকাল্লাহ..
মন্তব্য করতে লগইন করুন