ঈদের সালাত ১২ তাকবীর হল কেন ?
লিখেছেন লিখেছেন সত্যের ২২ জুলাই, ২০১৫, ১২:২৮:৫০ দুপুর
ঈদ মানে খুশি । মুমিন বান্দা বেশি খুশি হবে যেদিন তাঁর রবের, সৃষ্টিকর্তার সাক্ষাত পাবে এবং বেহেস্তে প্রবেশ করবে ।
গভিরভাবে চিন্তা করে দেখুন, মেরাজে রাসুল (সাঃ) ৭ আসমান অতিক্রম করেছিলেন এবং আল্লাহ’র নিকট হতে ৫ ওয়াক্ত ফরজ সালাত বান্দার জন্য নিয়ে এসেছেন ।
এটা হতে পারে যে, ঈদের সালাতের ১ম ৭ তাকবীর একেকটি আকাশ অতিক্রমের স্মরনে করা হয়েছে এবং ২য় ৫ তাকবীর ৫ ওয়াক্ত সালাত পাওয়ার স্মরনে করা হয়েছে । (আল্লাহ ভাল জানেন)
যাই হোক না কেন
সহীহ হাদিসে ১ম রাকাতে ৭ ও ২য় রাকাতে ৫ বর্ণিত হয়েছে তাই ঈদের সালাত ১২ তাকবীর ।
১ম ৭ তাকবীর হল- ১ তাকবীরে তাহরীমা + অরিতিক্ত ৬ তাকবীর =৭ তাকবীর । বেদাতীরা তাওকবীরে তাহরীমা + অতিরক্ত ৩ বা ৭ তাকবীর দেয় ।
২য় ৫ তাকবীর হল- ১ম রাকাতের সেজদা হতে উঠে, হাত বাঁধার পর ফাতেহা, কেরাতের আগে ৫ তাকবীর । বেদাতীরা ফাতেহা, কেরাতের পরে ২য় সেজদার আগে তিন বা ৫ তাকবীর দেয় ।
সহীহ পদ্ধতী হল সকল রাকাতে ফাতেহা, কেরাতের আগে তাকবীর হবে ।
অনেকে উপরে কথার দলিল জানতে চেয়েছেন । দলিল দেখুন-
তাকবীর
আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে রাসুল (সঃ) ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার সালতে প্রথম রাকাতে সাত এবং দ্বিতীয় রাকাতে কিরাতের পুর্বে পাঁচ তাকবীর দিতেন (আবু দাউদ ১ম খন্ড ১৬৩ পৃঃ; দারা কুতনী ১ম খন্ড ১৮০ পৃঃ; তায়ালীকুল মাগানী দারা কুতনী ২য় খন্ড ৪৬ পৃঃ)
আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত ১২ তাকবীরের আরও দলিল দেখুন (তিরমিযী ১ম খন্ড ৭০ পৃঃ; ইবনে মাযাহ ১ম খন্ড ৯২ পৃঃ; সুনানে দারা কুতনী ২য় খন্ড ৪৭ পৃঃ; মুস্তাদরাকে হাকিম ১ম খন্ড ২৯৮ পৃঃ; শরহুস সুন্নাহ ইমাম বাগাবী ৪র্থ খন্ড ৩০৮ পৃঃ; তাযয়ীনুল মামালিক ১৫৫ পৃঃ; তাহাবী শরীফ ২য় খন্ড ৩৯৯ পৃঃ; মুদাওয়ানাতুল কুবরা ১ম খন্ড ১৬৯ পৃঃ; বায়হাকী ৩য় খন্ড ৪০৫ পৃঃ; মুসনাদে আহমাদ কানযুল উম্মাল সম্পাদিত ৬ষ্ঠ খন্ড ৬৫ পৃঃ; বায়হাকী সুনানুস সগীর ১ম খন্ড ২০৬ পৃঃ; বায়হাকী মা’আরিফাতুস সুনান ৫ম খন্ড ৭১ পৃঃ; সহীহ ইবনু খুযায়মা ২য় খন্ড ৩৪৬ পৃঃ)
আব্দুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুল (সঃ) বলেছেন- দুই ঈদের সালাতের তাকবীর হলো প্রথম রাকাতে সাত এবং দ্বিতীয় রাকাতে পাঁচ তাকবীর (দারাকুতনী ১ম খন্ড ১৮১ পৃঃ; তিরমিযী ১ম খন্ড ৭০ পৃঃ; নাইলুল আওতার ৩য় খন্ড ৩৬৭ পৃঃ; শরহে মায়ানীল আসার তাহাবী শরীফ ২য় খন্ড ৩৯৯ পৃঃ)
হযরত নাফে (রহঃ) বলেন আমি হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) এর সাথে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার নামায পড়েছি । তিনি উভয় নামাযে প্রথম রাকাতে কেরাতের পূর্বে সাত তাকবীর এবং দ্বিতীয় রাকাতে কেরাতের পূর্বে পাঁচ তাকবীর বলেছেন (আল মুয়াত্তা ইমাম মালেক ২/২৩২ হাঃ ৪৩৪; ইরওয়াউল গালীল ৩/১১০; তাহাবী ২য় খন্ড ৩৯৯ পৃঃ; মুদাওয়ানাতুল কুবরা ১ম খন্ড ১৬৯ পৃঃ; মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক ৩য় খন্ড ২৯২ পৃঃ; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা ২য় খন্ড ৮১ পৃঃ; ইলাদুদ দারাকুতনী ৯ম খন্ড ৪৭ পৃঃ; মুয়াত্তা মুহাম্মাদ ১৪১ পৃঃ হাঃ ২৩৯)
আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি নবী (সঃ) হতে বর্ণনা করেন যে নবী (সঃ) দু’ঈদের সালাতে ১ম রাকাতে সাত তাকবীর এবং ২য় রাকাতে কিরাতের পূর্বে পাঁচ তাকবীর দিতেন (ইলালুদ দারাকুতনী ৯ম খন্ড ৪৬ পৃঃ; আহমাদ শাকের সম্পাদিত মুসনাদে আহমাদ ১৬তম খন্ড ২৭৮ পৃঃ)
কাসীর বিন আব্দিল্লাহ হতে বর্ণিত, তিনি পিতা হতে এবং তার পিতা তার দাদা হতে বর্ণনা করেন যে আল্লাহর নবী (সঃ) দুই ঈদের সালাতে প্রথম রাকাতের পূর্বে সাত তাকবীর এবং ২য় রাকাতের পূর্বে পাঁচ তাকবীর দিতেন (তিরমিযী কুতুবখানা রাশেদিয়া ১ম খন্ড ৭০ পৃঃ; মাকতাবা আশরাফিয়া দেওবন্দ ১১৯ পৃঃ; শরহুস সুন্নাহ ৪র্থ খন্ড ৩০৮ পৃঃ; ইবনে মাযাহ ১ম খন্ড ৯১ পৃঃ; মেশকাত ১২৬ পৃঃ; সহীহ ইবনে খুযায়মা ২য় খন্ড ৩৪৬ পৃঃ; তাযয়ীনুল মামালিক ১৫৫ পৃঃ; আল আওসাত ৪র্থ খন্ড ২৭৮ পৃঃ; তাহাবী শরীফ ২য় খন্ড ৩৯৯ পৃঃ; মুদাওয়ানাতুল কুবরা ১ম খন্ড ১৬৯ পৃঃ; সুনানে কুবরা বায়হাকী ৩য় খন্ড ৪০৪ পৃঃ; ত্ববরানী কাবির ১৭তম খন্ড ১৫ পৃঃ; বায়হাকী মা’আরেফাতুস সুনান ৫ম খন্ড ৬৯-৭০ পৃঃ)
খুৎবার পূর্বে দু’রাকাত নামায, ১ম রাকাতে কেরাতের পূর্বে ৭ তাকবীর এবং ২য় রাকাতে কেরাতের পূর্বে ৫ তাকবীর (মেশকাত ১২৬ পৃঃ)
১২ তাকবীরে ঈদের নামায পড়ার হাদিস সহীহ (ফেকাহ শরাহ বেকায়া ১৫১ পৃঃ)
চার খলিফা সহ প্রায় সকল সাহাবী তাবেয়ী ও শ্রেষ্ঠ ইমামগণ ১২ তাকবীরে ঈদের নামায পড়েছে (বায়হাকী ৩য় খন্ড ২৯১ পৃঃ)
আবু ইউসুফ (রহঃ) হতে বর্ণিত তিনি ঈদের সালাতে ১২ তাকবীর দিতেন (বাদায়িউস সানায়ী ১ম খন্ড ৪২০ পৃঃ)
আবু ইউসুফ ও ইমাম মুহাম্মাদ থেকে বর্ণিত আছে যে তারা উভয়ই ১২ তাকবীরে ঈদের সালাত পড়তেন (রদ্দুল মুহতার, দুররে মুখতার শামী ৩য় খন্ড ৫০ পৃঃ)
আবু হুরায়রাহ (রাঃ) ১২ তাকবীরের উপর আমল করেছেন । এটা তার ব্যক্তিগত অভিমত নয় বরং তাহলো নবী (সঃ) এর নির্দেশ । যার উপর আমল করা অপরিহার্য কর্তব্য (আত-তালীকুল মুমাজ্জাদ ১৪১ পৃঃ; আইনী তোহফা সালাতে মোস্তফা ২য় খন্ড ১৩৯ পৃঃ)
১২ তাকবীরই হলো সর্বোত্তম এবং এটার উপরই আমল করতে হবে (আল মুগনী ৩য় খন্ড ২৭২ পৃঃ)
ঈদের সালাতের তাকবীরে মুক্তাদিরা ইমামের অনুসরণ করবে, অধিকাংশ সাহাবা (রাঃ) ও অধিকাংশ ওলামাগণ ১ম রাকাতে সাত তাকবীর এবং ২য় রাকাতে পাঁচ তাকবীর দিতেন (মাজমুয়া ফাতওয়া ইবনে তাইমিয়া ২৪তম খন্ড ২২০ পৃঃ)
১ম রাকাতে পরস্পর সাত তাকবীর দিতে হবে এবং ২য় রাকাতে পরস্পর পাঁচ তাকবীর দিতে হবে (যাদুল মায়াদ ১ম খন্ড ২৫১ পৃঃ)
ঈদের সালাতে ১২ তাকবীরের আরও দলিল দেখুন (মিশকাত-মাওলানা নুর মোহাম্মাদ আযমী ৩য় খন্ড হাঃ ১৩৪৫, ১৩৪৭; মিসকাত মাদ্রাসার পাঠ্য ২য় খন্ড হাঃ ১৩৪৫, ১৩৪৭; বাংলা অনুবাদ বুখারি মাওলানা আজীজুল হক ১ম খন্ড হাঃ ৫৩৬; সহিহ আল বুখারি আঃ প্রঃ ১ম খন্ড হাঃ ৯১৫, ৯১৮, ৯২২, ৯২৩, ৯২৪; বুখারী শরীফ ইঃ ফাঃ ২য় খন্ড হাঃ ৯১৮, ৯২২, ৯২৩, ৯২৪)
Vedio https://www.facebook.com/539232086216386/videos/vb.539232086216386/585900451549549/?type=2&theater (pls click & listen)
জানাতে পারেন
২৯) ঈদের নামাযের তাকবীর সংখ্যা ৬ টি । এর কুরআন ও সহিহ হাদিসের পূর্ণাঙ্গ দলিল লিখিত জানাবেন ।
বিষয়: বিবিধ
২০০২ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যাই হোক পোষ্টের বিষয় এটা নয় । বিষয় ১২ তাকবীর, সকল রাকাতে কেরাতের আগে, তাকবীরে তাহরীমা সহ ৭+২য় ৫।
আপনাদের আপত্তির জন্য এডিট করে দিলাম
ধন্যবাদ ।
আপনি রসুল (সা) এর নামে একটি কথা বলছেন আর সেটি সঠিক কিনা তা জাচাই না করেই প্রচার করছেন? আশ্চর্য!!
পোস্টের বিষয় আপনি যা লিখেছেন তাতে আমার কোন আপত্তি নেই। কিন্তু রসুল (সা) এর নামে যে কথা লিখেছেন অথচ আপনি যাচাই করেন নি সত্যি রসুল (সা) তা বলেছেকি না? এটাই সবথেকে বড় প্রবলেম।
রসুল (সা) বলেছেন:
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، عَنْ شُعْبَةَ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ رِبْعِيِّ بْنِ حِرَاشٍ، أَنَّهُ سَمِعَ عَلِيًّا، - رضى الله عنه - يَخْطُبُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ تَكْذِبُوا عَلَىَّ فَإِنَّهُ مَنْ يَكْذِبْ عَلَىَّ يَلِجِ النَّارَ " .
১. আবূ বকর বিন আবূ শায়বা (র)...রিবঈ বিন হিরাশ (র) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি আলী (রা)-কে খুতবার মধ্যে বলতে শুনেছেন যে, রাসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছনঃ ‘‘তোমরা আমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করো না, কেননা যে ব্যক্তি আমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করবে, সে জাহান্নামে যাবে।(সহীহ আল মুসলিম)
রাসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ " كَفَى بِالْمَرْءِ كَذِبًا أَنْ يُحَدِّثَ بِكُلِّ مَا سَمِعَ ‘‘কোন ব্যক্তির মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শুনে, তা বলে বেড়ায়।’’(সহীহ আল মুসলিম)
হাদীস অনুসারে আপনি যা শোনেন তাই বর্ণনা করেন ফলে আপনি মিথ্যাবদীর একজন। এবং আপনি সেটা স্বিকারও করেছেন এই বলে যে,"এটা প্রচলিত কথা । অধিকাংশ হানাফি আলেমরা বলে । রেফারেন্স জানা নেই বলে দেই নাই ।"
আশাকরি এরকম আর করবেন না।
আপনি আল্লাহকে ভয় করুন। মানুষকে ইসলামের দিকে ডাকবেন বেশ ভালো। তবে আগে নিজে জ্ঞান অর্জন করুন। তার পরে মানুষকে সেই জ্ঞানের দ্বারা সত্য পথে ডাকুন।
এমন করবেন না। কেননা আপনার এরকম ভুলের কারনে অনেকে সালাফেসলেহীন দের মানহাজকে ভুল ভেবে আসহাবুল হাদীসের অনুসারী হওয়াতো দুরের কথা আরো আপনাকে দেখে দুরে ভাগবে।
আর এটি আসহাবুল হাদীসের দাওয়াতের ক্ষেতেও একটি প্রতবন্ধকতা।
আমি বলবো, আপনি তওবা করে নিয়েন। আর এর পরে রসুল (সা) এর নামে কিছু বলতে গেলে আগে যাচাই করবেন যে তা সঠিক এবং রসুল (সা) বলেছেন।
আল্লাহ আপনার জ্ঞানকে বৃদ্ধিকরুন, সালাফদের কে অনুসরণ করার তাওফিক দিন, হাদীসের জ্ঞান আল্লাহ আপনার আরোও মজবুত করুন আমীন।
জাজাকাল্লাহু খায়র।
"মুমিন বান্দার মেরাজ হল সালাত" কোন হাদীস নয়। এটি বানোয়াট ভিত্তিহীন একটি কথা মাত্র।
رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا ۚ
সহমত। এগুলো জানা দরকার
রাসুল (সাঃ) বলেছেন মুমিন বান্দার মেরাজ হল সালাত ।
এইটা কোন হাদীস নয়, আল্লামা নিসাপুরী তার তাফসীর গ্রন্থে ও আল্লাামা সূয়ূতী সূনানে ইবনে মাযাহ এর ব্যখ্যায় এটিকে হাদীস হিসেবে উল্লেখ করেছেন কোন সনদ ছাড়া।
এখন আপনাকে কি বিদআতী বলতে পারি?
আমি তো প্রচলিত কথা লিখেছি ।
নিজে থেকে নতুন কোন কথা বানাই নি ।
তাহলে প্রকৃত বাদাতী কাকে বলবেন ?
মনে রাখবেন মুস্তাহিদের ভুল হলেও সয়াব পাবে ।
তবে সহীহ জানার পর মানা যাবে না ।
তাই বলে বেদাতী, গুমরাহি বলা কি ঠিক হবে ?
ধন্যবাদ
মানুষের ভুল হলে তওবা করার মানষিকতাই উত্তম মানুষের পরিচয়। তবে অনেকে আছে জানার পরেও তওবা করে না আলেমের কথাতেই আকড়ে থাকে আর সেটা শির্ক।
মন্তব্য করতে লগইন করুন