বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ’র সকল ইবাদত একই দিনে(১ম-৮ম পর্যন্ত)
লিখেছেন লিখেছেন সত্যের ২১ জুন, ২০১৫, ০১:৫৯:৫৬ দুপুর
বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ’র সকল ইবাদত একই দিনে(১ম)
সকল প্রশংসা জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহ তা‘আলার জন্য, যিনি পরিপূর্ণ দ্বীন হিসাবে আমাদেরকে ইসলাম দান করেছেন, যে দ্বীনে মানুষের পক্ষ থেকে কোন সংযোজন বা বিয়োজনের প্রয়োজন হয় না ৷ সালাত ও সালাম তাঁরই রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি ৷ তার সাহাবায়ে কিরামের প্রতি আল্লাহর রাহমাত বর্ষিত হোক ৷
পবিত্র কুরআনের সূরা তাওবার ৩৬ নং আয়াতে বলা হয়েছে- “নিশ্চয় আল্লাহর বিধান ও গণনায় মাস ১২টি, আসমানগুলো ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে ।
সূরা ইউনুসের ৫ম আয়াতে বলা হয়েছে- “তিনি (আল্লাহ), যিনি সূর্যকে দীপ্তিমান এবং চন্দ্রকে আলোকময় বানিয়েছেন এবং ওর (গতির) জন্য মঞ্জিলসমূহ নির্ধারণ করেছেন যাতে তোমরা বছরসমূহের সংখ্যা হিসাব জানতে পার
পৃথিবীতে দিন বলতে (রাত্র+দিবা অথবা রাত্র+রাত্র) সময় ২৪ ঘন্টাকে বুঝানো হয় ।
কোন জনগোষ্ঠীর দিন শুরু হয় রাত্র ১২ টা হতে পরবর্তী রাত্র ১২ টা পর্যন্ত । তাদের মাস ফেব্রুয়ারী ব্যতিত সকল মাস ৩০ বা ৩১ দিনে ।
বিশ্বের সকল মুসলিম উম্মার দিন শুরু হয় সূর্যাস্ত হতে পরবর্তী সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত । মাস ২৯ বা ৩০ দিনে, বছরের দিন নির্দিষ্ট নয় (কারন চাঁদের উদয়ের উপর নির্ভরশীল)
সূর্য পূর্ব দিকে উদিত হয় । তাই পৃথিবীর পূর্ব হতে ক্রমান্বয়ে পশ্চিম দিকে সূর্যদ্বয় এবং সূর্যাস্তের সময়ের পার্থক্য দেখা যায় সর্বোচ্চ প্রায় ১২ ঘন্টা ।
অতএব মুসলিমদের জন্য কোন দেশে রাত্র (দিন শুরু) আবার কোন দেশে দিবা (দিনের অর্ধাংশ) অর্থাৎ একই দিন ।
পাঁচ ওয়াক্ত নামায
নামাজের সময় পৃথিবী-সূর্যের আবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সময়ের পার্থক্যের সাথে সম্পৃক্ত । আল্লাহ তায়ালা বলেন:
আপনার পালন কর্তার সপ্রশংসা পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষনা করুন সূর্যদ্বয়ের পূর্বে (ফজর) সূর্যাস্তের পূর্বে (মাগরীব) এবং পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষনা করুন রাত্রির কিছু অংশ (এশা/তাহাজ্জুদ) ও দিবা ভাগে (যোহর/আছর) (ত্বোয়া হাঃ আয়াত ১৩০)
অতএব তোমরা আল্লাহর পবিত্রতা স্বরণ কর সন্ধ্যায় (মাগরীব) ও সকালে (এশরাক) এবং অপরাহ্নে (আছর) ও মধ্যাহ্নে (যোহর) (আর রুমঃ আয়াত ১৭, ১৮)
আর দিনের দুই প্রান্তেই নামায ঠিক রাখবে এবং রাতে (এশা) ও প্রান্ত ভাগে (ফজর) (হুদঃ আয়াত ১১৪)
সূর্য্য ঢলে পরার সময় থেকে রাত্রির অন্ধকার পর্যন্ত (যোহর, আছর, মাগরীব) নামায কায়েম করুন (বণী ইসরাঈলঃ আয়াত ৭৮)
ফজরঃ-রাসুল (সঃ) ফজরের নামায এমন গালছে পড়তেন যে, নামায শেষে মুসল্লিরা একে অপরকে চিনতে পারতেন না (বুখারী, মুসলিম, মেশকাত ৬০ পৃঃ)
যোহরঃ-সূর্য্য মাথার উপর হেলে যাওয়ার পর হতে কোন কাঠি বা মানুষের ছায়া তার সমান দীর্ঘ না হওয়া পর্যন্ত (মুসলিম, আবু দাউদ, ইবনে মাযাহ, মেশকাত হাঃ নং ৫৮১)
আছরঃ-বস্তুর মুল ছায়া একগুন হওয়ার পর থেকে হলুদ রং হওয়া পর্যন্ত বাকি থাকে (মুসলিম, মেশকাত, হাঃ নং ৫৩৪)
মাগরীবঃ-সূর্যাস্তের পর থেকে পশ্চিম আকাশে লাল আভা দূর না হওয়া পর্যন্ত থাকে (বুখারী, মুসলিম, মেশকাত ৫০ পৃঃ)
এশাঃ-মাগরীবের পর হতে অর্ধ রাত্র পর্যন্ত (মুসলিম, মেশকাত ৫৯ পৃঃ)
জুমআঃ-সাহাবী সাহল বিন সাআদ (রাযিঃ) বলেন, আমরা জুমুআর নামাজের আগে দুপুরের বিশ্রামও করতাম না এবং দুপুরের খাবারও খেতাম না বরং পরে করতাম (বুখারী মুসলিম, মেশকাত আলবানী ১/৪৪১ পৃঃ)
উপরের আল্লাহর বাণী এবং হাদিসের আলোকে দেখা যায় আমরা বিশ্বের সকল মুসলিমরা একই দিনে সূর্যের সাথে সম্পর্ক করে (শরিয়া অনুযায়ী) ভিন্ন ভিন্ন সময়ে নামায আদায় করি ।
খুব গভীরভাবে চিন্তা করে দেখুন একই দিনেই, যার যার দেশের সূর্যের সাথে সম্পর্ক করে, আবারও বলছি একই দিনেই ভিন্ন ভিন্ন সময়ে, ফজর, যোহর, আছর, মাগরীব, এশা এমনকি জুমআ সালাতের আওয়াল ওয়াক্ত শুরু হয় ।
সলাতের সঠিক সময় জানার জন্য নীচের লিঙ্ক ক্লিক করে
কম্পিউটার/মোবাইল সফটওয়ার ডাউনলোড করে ইন্সটল করে নিন
http://www.islamicfinder.org/download/index.php
বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ’র সকল ইবাদত একই দিনে (২য়)
চাঁদের উদয়ের উপর নির্ভরশীল ইবাদত
রমযান মাসই হল সে মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন,...... । কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোযা রাখবে । আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে, সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করবে ।...... - আল বাকারা আয়াত ১৮৫
পৃথিবীর সকল জীবিত লোকই এ মাস পাবে । তথাপী উক্ত আয়াতে “যে লোক এ মাসটি পাবে” কেন বলা হল ?
আয়াতে অসুস্থ, মুসাফির ব্যক্তির কথাও আছে । অর্থাৎ দেশের সকলে রমযানের চাঁদ দেখে মাস পেয়ে রোজা রাখলেও অসুস্থ, মুসাফির অন্য মাসে সুস্থ, মুক্বীম অবস্থায় রোজা রাখতে পারবে ।
অর্থাৎ সামগ্রীকভাবে বলা যারা এ মাসে রোজা রাখতে পারবে তারা এ মাস পেল আর যারা রোজা রাখতে পারল না (অসুস্থ, মসাফির) তারা এ মাস পেল না ।
ইসলামে মাসের শুরুর তারিখ নির্ধারিত হয় নতুন চাঁদের উদয়ের উপর নির্ভর করে ।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন-
তোমার নিকট তারা জিজ্ঞেস করে নতুন চাঁদের বিষয়ে । বলে দাও যে এটি মানুষের জন্য (মাসের) সময় (তারিখ) নির্ধারণ এবং হজ্বের সময় (তারিখ) ঠিক করার মাধ্যম (সূরাহ আল বাকারাহ- ১৮৯)
চাঁদ দেখা
*রসূল সা: বলেন, তোমরা রোজা রাখবে না, যে পর্যন্ত না চাঁদ দেখতে পাও । একইভাবে তোমরা রোজা ভঙ্গ (ঈদ) করবে না, যে পর্যন্ত না শাওয়ালের চাঁদ দেখতে পাও । তবে যদি মেঘের কারনে তা তোমাদের কাছে গোপন থাকে, তবে শাবান মাস পূর্ণ করবে ত্রিশ দিনে (সূত্র: সহীহ বুখারী-৩য় খন্ড, ১৭৮৫-১৭৯০, সহীহ মুসলিম-৩য় খন্ড, ২৩৬৭-২৩৯৪)
মুহাম্মদ (সাঃ) আরো বলেছেন, “ঐ রোযা আরম্ভ হবে যেদিন সকলে রোযা রাখবে, রোযা ভাঙ্গতে হবে ঐ দিন যেদিন সবাই রোযা ভাঙ্গে আর কুরবানী করতে হবে ঐ দিন যে দিন সকলে কুরবানী করে” (তিরমিযী, হাদিস নং ৬৯৭)
উপরের হাদিসে কি বুঝা যায়ঃ-
১) শা’বানের (যে কোন মাসের) ২৯ তারিখের দিবাগত রাত্রে চাঁদ দেখা না গেলে মাস ৩০ দিনে শেষ হবে এবং ৩০ তারিখের দিবাগত রাত্র থেকে (পরবর্তী মাস) রমযান মাসের শুরু হবে (চাঁদ না দেখা গেলেও)
২) “তোমরা, না চাঁদ দেখতে পাও” কথা দ্বারা বুঝা যায় পৃথিবীর সকল মানুষ যারা স্বচক্ষে চাঁদ না দেখবে, রোজা রাখবে না, ঈদ করবে না; যারা দেখবে রোজা রাখবে, ঈদ করবে (এমন নয়) ।
রাসুল (সাঃ) এর সমাধান করে গেছেন নিম্নের হাদিস দ্বারা
এক জন মুসলমানের স্বাক্ষীর উপর রোযা শুরু করা যেতে পারে ।
হযরত ইবনে উমর (রাজিঃ) বলেন, লোকেরা চাঁদ দেখেছে আমি নবী করীম (সাঃ) কে বললাম, আমিও চাঁদ দেখেছি, তখন নবী (সাঃ) নিজেও রোযা রাখলেন এবং লোকজনকেও রোযা রাখার আদেশ দিলেন-সহিহু সুনানি আবিদাউদ ২/৫৫ হাদিস নং ২৩৪২; আবু দাউদ ৩য় খন্ড/২৩৩৫, দারেমী
*এটাও দেখুন আবু দাউদ ৩য় খন্ড/২৩৩৩, ২৩৩৪, তিরমিযী,নাসাঈ, ইবনে মাজাহ,দারেমী)
দুই জন মুসলমানের স্বাক্ষীর উপর রোজা শেষ করা যেতে পারে ।
* “রসূল সা: আমাদের প্রতি নির্দেশ প্রদান করেন যে, আমরা যেন শাওয়ালের চাঁদ দেখাকে ইবাদত হিসেবে গুরুত্ব দেই । আর আমরা স্বচক্ষে যদি তা না দেখি তবে দুজন ন্যায় পরায়ন লোক এ ব্যাপারে স্বাক্ষ্য প্রদান করলে তখন আমরা যেন তাদের সাক্ষ্যের ওপর নির্ভর করি (সূত্র: আবু দাউদ-৩য় খন্ড/২৩৩১, ২৩৩২)
*আরোও দেখুন আবু দাউদ ৩য় খন্ড/২৩৩৩, ২৩৩৪)
সুতরাং অধিকাংশ আলেম বলেন যে রোযা রাখার জন্য একজন দর্শক হলেই চলবে তবে রোযা ভঙ্গ করার জন্য দুইজন দর্শক প্রয়োজন ।
বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ’র সকল ইবাদত একই দিনে(৩ম)
চাঁদ দেখার স্বাক্ষী নিজ দেশের লোক, পার্শ্ববতী দেশের লোক, পৃথিবীর যে কোন দেশের লোক, কোথাকার হবে অর্থাৎ “তোমরা” “সবাই” “সকলে” বলতে কাদের বুঝিয়েছেন ?
১) আলোচিত বিষয়ে ফিকহ গ্রন্থ ফাতওয়া-ই-শামী-এর সিদ্ধান্ত হচ্ছে-
প্রথম দিনের দেখার দ্বারাই সমগ্র পৃথিবীতে এক কেন্দ্রিক তারিখ গণনা করে, একই দিনে একই তারিখে আমল করতে হবে । এটাই আমাদের হানাফী মাযহাবের সিদ্ধান্ত । মালেকী এবং হাম্বলী মাযহাবের মতও এটা । তাদের দলীল হচ্ছে আয়াত ও হাদীসে চাঁদ দেখার সম্বোধন সকলের জন্য আম বা সার্বজনীন যা নামাজের ওয়াক্তের সম্বোধন থেকে আলাদা-(ফাতওয়া-ই-শামী, খন্ড-২, পৃঃ-১০৫)
(২) ফাতওয়া-ই-আলমগীরির সিদ্ধান্ত হলো- অর্থাৎ ফিকহের প্রতিষ্ঠিত বর্ণনানুযায়ী চাঁদ ঊদয়ের বিভিন্নতা গ্রহণীয় নয় । ফতুয়াই কাযী খানের ফাতওয়াও অনুরুপ । ফকীহ আবু লাইছও এমনটাই বলেছেন । শামছুল আইম্মা হোলওয়ানী সিদ্ধান্ত দিয়েছেন যে, যদি পাশ্চাত্যবাসী রমযানের চাঁদ দেখে তবে সে দেখার দ্বারা প্রাচ্য বাসীর জন্য রোযা ওয়াজিব হবে । এমনটাই আছে খোলাছা নামক কিতাবে-(ফাতওয়া-ই- আলমগিরী, খন্ড-১, পৃঃ-১৯৮)
(৩) চার মাযহাবের সমন্বিত ফিকহ গ্রন্থ আল ফিকহ আলা মাযাহিবিল আরবায়া নামক গ্রন্থের ভাষ্য হচ্ছে-অর্থাৎ পৃথিবীর কোন এক প্রান্তে চাঁদ দেখা প্রমাণিত হলে সকল স্থানেই উক্ত দেখার দ্বারা রোযা ফরয হবে । চাই চাঁদ নিকটবর্তী দেশে দেখা যাক বা দূরবর্তী দেশে দেখা যাক এতে কোন পার্থক্য নেই । তবে চাঁদ দেখার সংবাদ গ্রহণযোগ্য পদ্ধতিতে অন্যদের নিকট পৌছতে হবে । তিন ইমাম তথা ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম মালেক (রাহঃ) এবং ইমাম আহমদ ইবনু হাম্বল (রাহঃ)-এর মতে চাঁদের উদয়স্থলের ভিন্নতা গ্রহণীয় নয় । অর্থাৎ প্রথম দিনের দেখার দ্বারাই সর্বত্র আমল ফরয হয়ে যাবে(আল ফিকহ আলা মাযাহিবিল আরবায়া, খন্ড-১, পৃঃ-৪৪৩)
(৪) ফিকহ গ্রন্থ আল ফিকহুস্ সুন্নাহ এর সিদ্ধান্ত হচ্ছে-অর্থাৎ জমহুর ফুকাহা গনের সিদ্ধান্ত অতএব যখনই কোন দেশে চাঁদ দেখা প্রমাণিত হবে তখনই অন্য সকল দেশে রোযা ফরয হয়ে যাবে । কেননা রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম এরশাদ করেছেন “চাঁদ দেখার প্রমাণ সাপেক্ষে তোমরা রোযা রাখ এবং চাঁদ দেখার প্রমাণ সাপেক্ষে তোমরা রোযা ছাড়, ঈদ কর”। এখানে তোমরা বলে সম্বোধন দেশ মহাদেশ নির্বিশেষে সকল উম্মতের জন্য عام ব্যাপক অর্থবোধক । অতএব উম্মতের মধ্য থেকে যে কেউ যে কোন স্থান থেকে চাঁদ দেখুক উক্ত দেখাই সকল উম্মতের জন্য দলীল হবে । এ মত পোষণ করেছেন হযরত ইকরামা, কাসেম ইবনে মুহাম্মাদ, সালেম এবং ইসহাক রহমাতুল্লাহি আলাইহিম । হানাফী ফকীহগণের এটাই বিশুদ্ধমত- (আল-ফিকহুস্ সুন্নাহ, খন্ড-১, পৃঃ-৩০৭)
(৫) ফিকহ্ গ্রন্থ “মুগনী”-এর সিদ্ধান্ত হচ্ছে-অর্থাৎ কোন এক দেশের মানুষ চাঁদ দেখলে সকল দেশের মানুষের জন্যে রোযা রাখা জরুরী হবে (আল-মুগনী, খন্ড-৪, পৃঃ-১২২)
(৬) গ্রন্থ “তাবয়ীনুল হাকায়েক”-এর ভাষ্য হচ্ছে- যদি এক দেশের অধিবাসীরা নুতন চাঁদ দেখেন এবং অন্য দেশের অধিবাসীরা না দেখেন তবে প্রথম দেশবাসীর দেখা দ্বারাই অন্য দেশবাসীদের জন্য রোযা রাখা ফরয হবে । অধিকাংশ মাশাইখ-ই এমত পোষণ করেছেন । এমনকি এক দেশের মানুষ ৩০টি রোযা রাখল, অন্য দেশের মানুষ রোযা রাখল ২৯টি, তাহলে অন্যদেরকে একটি রোযা কাযা করতে হবে (তাবয়ীনুল হাকায়েক, খন্ড-২, পৃঃ-১৬৪/১৬৫)
***অতএব চাঁদের উদয়স্থলের ভিন্নতা গ্রহণীয় নয় । প্রথম দিনের দেখার দ্বারাই সমগ্র পৃথিবীতে এক কেন্দ্রিক তারিখ গণনা করে, একই দিনে একই তারিখে আমল করতে হবে । এমনিভাবে বিভিন্ন জন তাদের ভাষায় বলেছেন, দলিল দেওয়া হল কিতাবগুলো খুলে দেখুন-
(ফতহুল কাদির, খন্ড-২, পৃঃ-৩১৮) (বাহরুর রায়েক, খন্ড-২, পৃঃ-৪৭১) (কাযীখান, খন্ড-১, পৃঃ-৯৫) (হাশিয়া-ই-তাহতাবী শরীফ, পৃঃ-৩৫৯) (মায়ারিফুস্ সুনান, খন্ড-৫, পৃঃ-৩৩৭) (ফাতওয়ায়ে ইবনু তাইমিয়্যা, খন্ড-২৫, পৃঃ-১০৭) (ফাতওয়া-ই-দারুল উলুম দেওবন্দ, খন্ড-৬, পৃঃ-৩৯৮) (মায়ারিফুল মাদানিয়্যাহ, খন্ড-৩, পৃঃ-২৩) (মিফতাহুন্ নাজ্জাহ, খন্ড-১, পৃঃ-৪৩২) (তানযীমুল আশ্তাত, খন্ড-১, পৃঃ-৪১) (ফাতওয়া-ই-রশিদিয়া, পৃঃ-৪৩৭) (বেহেশসি- জেওর, খন্ড-১১, পৃঃ-৫১০) (ফাতওয়া-ই-রাজাবিয়্যাহ্, খন্ড-৪,পৃঃ-৫৬৭) (তরিকুল ইসলাম, খন্ড-২, পৃঃ-১৮৮) বাজ্জাজিয়া, খন্ড ৪, পৃঃ ৯৫; তাতারখানিয়া, খন্ড ১ পৃঃ ৩৬৯; নুরুল ইযাহ, পৃঃ ১২৭; আল কাফী, খন্ড ১ পৃঃ ৪৬৮; বজলুল মাযহুদ ফি হল্লি আবি দাউদ, খন্ড ১১ পৃঃ ১০৭; শাইখ তুসী তাহযীব খন্ড ৪ পৃঃ ১৫৫; মিলাযুল আখবার, আল্লামা মাজলেসী খন্ড ১ পৃঃ ৬২০; তাহযীবুল আহকাম, ফয়েজ কাশানী খন্ড ৪ পৃঃ ১৫৭; ছালছাবিল আনওয়ারুল মাহমুদ খন্ড ২ পৃঃ ৭১; আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আব্দুল আ’লা সাবযাওয়ারী মুসতানাদ খন্ড ২ পৃঃ ১৩৩; আয়াতুল্লাহ খুয়ী মুসতানাদুল উরওয়া খন্ড ২ পৃঃ ১২২; ফতোয়া-ই-আযীযিয়া খন্ড ৩ পৃঃ ৪৯ (দারুল উলুম দেওবন্দ); তাফসীরে মাজেদা পৃঃ ১০৭; মারাকীহুল ফালাহ পৃঃ ২০৭; মজমুআ ফতোয়া খন্ড ১ পৃঃ ৩৮১; জরুরী মাসায়েল, মাওলানা রুহুল আমীন বর্ধমানী খন্ড ১ পৃঃ ১৪; জামেউর রমুয পৃঃ ১৫৬; নাহরুল ফায়েক মজমুআয়ে ফতোয়া খন্ড ১ পৃঃ ৩৬৯; তাহতাবী পৃঃ ৫৪০; কিতাবুল মাবছুত, আল্লামা ছারাখছী খন্ড ৩ পৃঃ ১৩৯।
***পৃথিবীর একেবারে পশ্চিম প্রান্তে চাঁদ দেখা গেছে, এই সংবাদ যদি নির্ভরযোগ্য সূত্রে পূর্ব প্রান্তের অধিবাসীদের নিকট পৌঁছে, তবে তাদের উপর এই দিনে রমযানের রোযা ফরয হবে (সূত্র: দুররুল মুখতার, ২য় জিলদ, পৃষ্ঠ-১০৮; আলগিরী, ১ম জিলদ, পৃঃ-১৯৮; বাহরুর রায়েক, ২য় জিলদ, পৃঃ-২০৭; মাজমাউল আনহুর, ১ম জিলদ, পৃঃ- ২৩৯)
বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ’র সকল ইবাদত একই দিনে(৪র্থ)
ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর বক্তব্য ও এটাই এবং তিনিই সঠিক ।
পৃথিবী একটা, চাঁদ একটা, কোরআন একটা, সমস্ত মুসলিম একজাতি,
সবাই এক নবীর উম্মাত, তাহলে ঈদ কেন তিন দিনে করব ?
সন্দেহ নিরসনের জন্য বলতে হয় হানাফী মাজহাবসহ তিনটি মাজহাবের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলো: সর্বপ্রথম হেলালকেই সারা বিশ্বের সকলের অনুসরণ করতে হবে ।
ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর অভিমতঃ-
১. যে কোন একটি দেশে নতুন চাঁদের উদয় প্রমানিত হলে বিশ্বের সকল মানুষের উপর তার অনুসরন জরুরী হয়ে পড়ে [উৎস: আল মুখতার ১ম খন্ড ১২৯ পৃঃ / ফতহুল কাদীর (শেরহে ফাতহুল কাদীয়সহ) ১ম খন্ডঃ পৃ ২৪৩/মারাকীন ফালাহ পৃঃ ৫৪০-৫৪১/ আল-বাহরুর রায়েক ২য় খন্ড পৃঃ ২৯০]
২. আর উদয়ের স্থান ও সময়ের বিভিন্নতার কোন গুরুত্ব নেই । (উৎসঃ কাদী খান ১ম খন্ডঃ পৃঃ ১৯৮/ মাজমাউল আনহুর ১ম খন্ড পৃঃ২৩৯ / আল মুখতার ১ম খন্ড পৃঃ ১২৯ আল-ফাতওয়া আল হিন্দিয়াহ ১ম খন্ড, পৃঃ১৯৮/ আল বাহরুর রায়েক ২য় খন্ড পৃঃ ২৯০/ ফাতহুল কাদীর ২য় খন্ড পৃঃ ২৪৩/রদ্দুল মুহতার (শামী) ২য় খন্ড পৃঃ ৩৯৩)
৩. যদি পৃথিবীর পশ্চিমাংশের বাসিন্দারা রমজান মাসের নতুন চাঁদ দেখেন তাহলে তাদের এ দেখাতেই পূর্বাংশের লোকদের উপর (রোজা ও ঈদ) ওয়াজিব হয়ে যাবে (উৎসঃ আল-বাহুরুর রায়েক ২য় খন্ড পৃঃ ২৯০ / মাজমাউল আনহুর ১ম খন্ড ২৩৯ পৃঃ আল হিন্দিয়াহ (ফাতোয়ায়ে আলমগীরী) ২য় খন্ড ১৯৮-১৯৯ পৃঃ। ফাতহুল কাদীর ২য় খন্ড ২৪৩ পৃঃ। বাজাজিয়াহ ৪/৯৫)
ইমাম মালিক (রহঃ) এর অভিমতঃ-
১. যখন বসরা শহরবাসী রমজানের নতুন চাঁদ দেখবে, অতঃপর তা কুফা, মদীনাও ইয়েমেনবাসীদের কাছে পৌছবে তাহলে ইমাম মালিক (রহঃ) থেকে তাঁর শিষ্যদ্বয় ইবনুল কাসিম ও ইবনে ওয়াহাবের বর্ণনামতে শেষোক্ত দেশবাসীর প্রতিও ওয়াজিব হয়ে যাবে । অথবা যদি বাদ পড়ে তবে সে রোযা কাযা করতে হবে (উৎস আল-মুনতাকা-শরাহল মুয়াত্তা ২য় খন্ড পৃঃ ৩৭)
আহমদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) এর অভিমতঃ-
১. কোন একটি দেশের লোকেরা নয়া চাঁদ দেখবে সকল দেশের লোকদের উপর রোযা ফরজ হয়ে পড়ে (উৎসঃ মুঘনী পৃঃ ৭৯/ আররদুন নাদী শরহ কাফীল মরতাদী পৃঃ ১৬১/ জাদুল মুসতাকনে পৃঃ ৭৮ /আস-সালসাবীল ১ম খন্ড পৃঃ২০২ / উমদাতুল ফিকহ- পৃঃ৪৯)
সুতরাং একমাত্র ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) ছাড়া বাকী সব ইমাম ঐক্যমত পোষন করেছেন । কিন্তু পরবর্তীতে শাফেরী মাযহাবের মুজতাহিদরা (গবেষক) এ নিয়ে গবেষণা করে বিভিন্ন ধরনের মত পোষন করেছেন ।
আল্লাহ তায়ালা বলেন-
“আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে সুদৃঢ় হস্তে ধারণ কর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না (আল-কুরআন ৩: ১০৩)
ফিকাহ শাস্ত্রের উপরোক্ত বর্ণনা যাহেরে রেওয়ায়াতের ফতোয়া বলে উল্লেখ করা হয়েছে ।
কেন তারা বাস্তবায়ন করেননি বা করতে পারেননি তার কোন ব্যাখা পাওয়া যায় না এবং বর্তমান তাদের অনুসারীরাও সঠীকভাবে জানাতে পারছেনা ।
অনেকে ধারনা করে বলে মতভেদ ছিল অর্থাৎ এর বিপরীত মতের দলিলও ছিল অথবা সমগ্র বিশ্বের সাথে দ্রুত যোগাযোগের ব্যবস্থা ছিল না, চাঁদ দেখার সংবাদ পৌছানোর জন্য ইত্যাদি । তৎকালীন সময়ে মানুষের বাহন ছিল ঘোড়া, গাধা, উট, পদযুগল ইত্যাদি ।
আল্লাহর রাসুল (সঃ) তাঁর যুগে দূরবর্তী স্থানের লোকদের চাঁদ দেখার সংবাদ পাঠানোর জন্য ‘ঘোড়সওয়ার’ এর ব্যবস্থা করেছিলেন ।
তার পরবর্তী ইসলামি রাস্ট্রের খলিফাগণ চাঁদ দেখে বা স্বাক্ষী পেয়ে যেটি করত, তা হল মুসলমানরা বিভিন্ন পাহাড়ের উপরে মশাল বা আগুন জ্বালানোর ব্যবস্থা করতো ।
কোন খিলাফাহ এর সময়, ঘোড়া ছুটিয়ে কিংবা সমুদ্রবক্ষে জাহাজের নিরাপদে দিক চিনে চলাচলের সুবিধার্তে যে সকল লাইট হাউস বা বাতিঘর ছিল, আকাশে চাঁদ দেখা গেলে সেগুলিতে আলো জ্বালিয়ে দেওয়া হত ।
উপরোক্ত প্রক্রিয়ায় যে সকল এলাকার মানুষ চাঁদ দেখার ব্যাপারটি বুঝতে পারত, সে সকল এলাকার মানুষেরা রোজা, ঈদ একসাথে পালন করত ।
এখান আমরা একটু লক্ষ্য করলে বুঝতে পারব যে, আকাশে চাঁদ দেখা গেছে, এ সংবাদটি পায়ে হেটে অন্যদেরকে জানানো, ঘোড়ায় চড়ে জানানো, লাইট হাউসের মাধ্যমে জানানোর মধ্যে বিষয়ভিত্তিক কোনো পার্থক্য নেই বরং প্রযুক্তিগত পার্থক্য রয়েছে, যা প্রথম যুগ থেকেই গ্রহন করা হয়েছে । বেশী সংখ্যক মানুষকে দ্রুততার সাথে জানানোর জন্যে এ মাধ্যমগুলি প্রযুক্তি বিশেষ, যা সময়ের প্রেক্ষিতে পরিবর্তিত হয়েছে । এখানে উক্ত প্রযুক্তির একটিই উদ্দেশ্য ছিল, তা হলো-দ্রুততার সাথে অন্যদেরকে চাঁদ দেখার সংবাদটি জানানো ।
বর্তমান কালে স্যাটেলাইট টেলিভিশন, ইন্টারনেটের কল্যানে চাঁদকে পৃথিবীর সকল এলাকাবাসীর সামনে সরাসরি উপস্থাপন করা যায় ।
আধুনিক প্রচার মাধ্যম (টিভি, রেডিও, ইন্টারনেট, মোবাইল…) কে আমরা যাতে কাজে লাগাতে পারি তা বহু আগেই আল্লাহপাক নির্ধারণ করে দিয়েছেন ।
আল্লাহপাক বলেন, ‘আমি বাতাসকে দিয়েছি তোমাদের সুসংবাদ বহনের জন্য’ (সূরা আল ফোরআন-৪৮, নমল-৬৩, রুম-৪৭)
আজকের এই প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সময়ে যদি কেউ এক এলাকাতে চাঁদ দেখতে পায় এবং তা অন্য এলাকার লোকদেরকে টেলিফোনে, ইন্টারনেটে, টেলিভিশনে, রেডিওর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়, তাহলে তা পূর্ববর্তী সময়ের পায়ে হাটা, ঘোড়ায় চড়া, লাইট হাউসের মাধ্যমে ঘটিত প্রচারণার সমপর্যায়েরই হবে । কারণ, এখানে উদ্দেশ্য একই ।
বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ’র সকল ইবাদত একই দিনে (৫ম)
ভিন্ন ভিন্ন মতবাদের ভিত্তিতে মাস শুরুর করায় মুসলিম বিশ্বে বিচ্ছিন্নতা এবং ধর্মীয় উৎসবগুলো সার্বজনীনতা ও ধর্মীয় তাৎপর্য হারাচ্ছে ।
* রাসুল (সাঃ) এর মক্কা থেকে মদিনায় হিযরতের দিন ১ হিজরী সাল ধরে ১ তারিখ নির্ধারণ করে ১২ মাসে বছর এভাবে হিজরী সাল গণনা হয় । বিভিন্ন মানদ্বন্দে চাঁদ দেখা জন্য হিজরী তারিখ একই দিনে বিশ্বে ভিন্ন হয়ে গড়মিল হয়েছে ।
* কুরআন নাযিল হয়েছে লাইতুল ক্বদরে (বাকারা-১৮৫; ক্বদর-১) ।
কোন দেশের কদরের তারিখে কুরআন নাযিল হয়েছে নাকি যার যার দেশ অনুযায়ী নাযিল হয়েছে ?
হযরত আয়েশা (রাজিঃ) বলেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, রমযানের শেষ দশ তারিখের বেজড় রাতসমুহে লাইলাতুল কদরকে তালাশ কর-সহিহ আল বুখারী ২/২৮৪ হাদিস নং ১৮৭৪
বিশ্বে ক্বদরের তারিখ একই দিনে বিভিন্ন হলে কোনটা সঠিক হবে ?
* ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম-হযরত আবু উবাইদা (রাজিঃ) বলেন, আমি হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রাজিঃ) এর সাথে ঈদের নামাজ আদায় করেছি । তিনি বলছেন, এ দুই দিনের রোযা রাখা থেকে নবী (সাঃ) নিষেধ করেছেন । প্রথম দিন হলো, যখন তোমরা রোযা শেষ কর, আর দ্বিতীয় দিন হলো, যখন তোমরা কোরবানীর গোস্ত খাবে-সহিহ আল বুখারী ২/২৭২ হাদিস নং ১৮৫১
*আরো দেখুন সূত্র: সহীহ সহীহ বুখারী ৩য় খন্ড/১৮৬৭, ১৮৬৮ ও সহীহ মুসলিম ৩য় খন্ড/২৫৩৭-২৫৪২)
একই দিনে এক দেশে ঈদ হলে, অন্য দেশে রোযা রাখে !!! কে হারাম করে ?
* আরাফা (জিলহজ্ব মাসের নয় তারিখ) ও আশুরার (দশই মুহাররাম) তারিখের ফযিলত- হযরত আবু কাতাদাহ (রাজিঃ) বলেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, আরাফার রোযা আগের পরের দু’বৎসরের গুনাহ মাফ করে দেয় এবং আশুরার রোযা বিগত এক বৎসরের গুনাহ সমুহ ক্ষমা করে দেয়-আহমাদ, আবুদাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, মুসলিম শরীফ ৪/১২৬ হাদিস নং ২৬১৪
একই দিনে আশুরা ও আরাফার তারিখ ভিন্ন হলে কোন দেশের আরাফ ও আশুরার তারিখ সঠিক ?
* জিলহজ্বের ১০ তারিখে (সউদীর চাঁদের উপর নির্ভর করে) হাজিগণ কুরবানী করেন । হাদীস অনুযায়ী কিয়ামত হবে ১০ই মুহাররমের শুক্রবার ।
পৃথিবীতে কিয়ামত একই দিনে হবে, না যার যার দেশের তারিখ অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন দিনে হবে হবে?
উপরের বিষয়গুলোর যার যার নিজ দেশের চাঁদ উদয়ের উপর নির্ভর করে উক্ত তারিখ গণনা করলে সমগ্র বিশ্বে ভিন্ন ভিন্ন দিন হয় । আবার কোন দেশে ২৯ বা ৩০ দিনে মাস শেষ অন্য দেশে আর ১ দিন বা ২ দিন পরে মাস শেষ হয় । অর্থাৎ উক্ত দুই দেশে একত্র করলে মাসের দিন হয় ৩০ বা ৩১/৩২ যা শরীয়ায় কোন দলিল পাওয়া যায় না ।
সর্বজন স্বীকৃত যে উক্ত দিন (তারিখ) পৃথিবীতে একটাই হবে এবং আরবী মাস ২৯ বা ৩০ দিনে ।
অতএব উক্ত দিনের তারিখ সঠিক না হলে গুনাহ্গার বা ফযিলত থেকে বঞ্চিত হতে হবে ।
একথা সকলেরই জানা, শবে ক্বদর, আরাফা, পবিত্র ঈদুল আযহা, আশুরার......দিন তারিখ বেশ কিছু দিন পূর্বেই সংবাদ পাওয়া যায় । যা বিশ্বে একই দিনে পালন করা সম্ভব ।
রমযান মাসের ১ম (যে কোন মাসের ১ম) তারিখ নির্ধারন এবং বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছানোর উপর নির্ভর করে ১ম রোজা এবং ঈদুল ফিতর (পরবর্তী মাস) ।
বিশ্বের যে কোন দেশের প্রথম চাঁদ দেখা অনুযায়ী সারা বিশ্ব একসাথে মাস শুরু করলেই উপরের সকল সমস্যার সমাধান হবে ।
যদি একগুয়েমী করে যার যার দেশের চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করেন, তাহলে আপনি বা আপনার জ্ঞানীর কাছে জেনে উপরের প্রশ্নের দলিল সহ জবাব দিন ??? !!!
বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ’র সকল ইবাদত একই দিনে(৬ষ্ঠ)
সমস্যাঃ-ধরুন এক দেশের সাথে পৃথিবীর অন্য যে কোন স্থানের সময়ের ব্যবধান বার ঘন্টার নিচে (ধরা যাক ১০ ঘন্টা) ।
ঐ দেশে যখন সন্ধ্যা তক্ষণাৎ ১ম চাঁদের খবর প্রচার করা হলে অন্য দেশে তখন সুবহে সাদিক হবে । রমযানের তারাবী, সেহেরী, নিয়ত অন্য দেশের লোকেরা কিভাবে করব ?
সমাধানঃ-তারাবীর জন্য-
রাসুল (সঃ) সাহাবায়ে কেরামদের নিয়ে মাত্র তিন দিন জামাতের সহীত তারাবীর নামায পড়েছেন ।
হযরত আবু যর (রাঃ) বলেন আমরা রাসুল (সঃ) এর সাথে রোযা রেখেছি, নবী (সঃ) আমাদের তারাবীর নামায পড়ালেন না, এমনকি রমযানের আর সাত দিন বাকি ছিল অর্থাৎ তেইশ তারিখ পর্যন্ত । তারপর তেইশ তারিখে রাত্রে আমাদের তারাবীর নামায পড়ালেন তৃতীয়াংশ রাত পর্যন্ত । চব্বিশ তারিখ পড়ালেন না । পঁচিশ তারিখ রাত্রে অর্ধ রাত পর্যন্ত তারাবী পড়ালেন । আমরা বললাম হে আল্লাহর রাসুল (সঃ)! কতইনা ভাল হত যদি আপনি আমাদের সারারাত নামায পড়াতেন । নবী (সঃ) বললেন যে ব্যক্তি ইমাম মসজিদ থেকে চলে আসা পর্যন্ত ইমামের সাথে জামাতে নামায পড়েছে সে সারা রাত ইবাদত করার ছওয়াব পাবে । এরপর যখন সাতাশ তারিখ হয়ে গেছে তখন আবার নামায পড়লেন এবার পরিবারবর্গ এবং মহিলাদেরকেও আহবান করলেন এবং সুবহে ছাদেক পর্যন্ত নামায পড়ালেন (তিরমিযী । নাসাঈ । ইবনে মাযাহ । সহীহু সুনানি আবি দাউদ ১/৩৭৯ হাঃ ১৩৭৫)
তারাবীর নামায ছাড়াও রোযা রাখা যায় । উপরের হাদিসটি কি বলছে ভাল করে বুঝুন, জ্ঞানীদের কাছে জিজ্ঞাসা করে জেনে নিন ?
এছাড়া উক্ত দেশের লোকেরা ব্যক্তিগতভাবে তাহাজ্জুদ নামায পড়তে পারে যা তারাবীর সমতুল্য ।
কেউ বলে কিয়ামু রমযান হলো- তাহাজ্জুদ । কিয়ামু রমাযান অর্থাৎ তারাবীহ (মুসলিম শরীফ ৩য় খন্ড অনুচ্ছেদ ১০৯ অধ্যায় সালাত পৃঃ ৮৯ ইঃ ফাঃ)
আনোয়ার শাহ কাশমিরি হানাফী (রহঃ) লিখেছেন- আমার নিকট এ দুটি নামায (তাহাজ্জুদ ও তারাবীহ) একই নামায । সাধারণ লোকেরা এটার অর্থ না বুঝে দুটো আলাদা নামায বানিয়ে দিয়েছে (ফয়জুল বারী শরাহ বুখারী ২য় খন্ড ৪২০ পৃঃ)
দেওবন্দ মাদ্রাসার প্রটিষ্ঠাতা আল্লামা কাসেম নামুতুবী (রঃ) তার কিতাবে লিখেছেন- জ্ঞানীদের নিকট এ কথা গোপন নয় যে, কেয়ামে রমযান (তারাবীহ) ও কেয়ামুল্লায়ল (তাহাজ্জুদ) আসলে এ দুটো একই নামায । যেটা মুসলমানদের সুবিধার জন্য (রমযানের) রাতের প্রথম অংশে নির্দিষ্ট করা হয়েছে । কিন্তু গুরুত্ব হচ্ছে শেষ রাত্রে আদায় করা (ফয়েজে কাসেমিয়া ১৩ পৃঃ)
সেহেরী নিয়তের জন্য-যাদের দেশে চাঁদ দেখা যায় নাই তারা ২৯ শে শা’বান দিবাগত রাত্রে সেহেরী খেয়ে রমযানের নিয়ত করতে পারেন । যদি দিবাভাগে জানতে পারেন বিশ্বে চাঁদ উদয় হয়েছে তাহলে এক সাথে হয়ে গেল ।
আর যদি চাঁদ উদয় হয় নাই জানতে পারেন তাহলে ঐ দিনের রোজা ভেঙ্গে দিবে (যারা নিয়মিত শা’বানের রোজা রাখে না তাদের জন্য)
ঠিক এমনই একটি সন্দেহযুক্ত দিনে একবার প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আম্মার ইবনে ইয়াসীর (রাঃ) এর সামনে একটি ভূনা বকরী উপস্থিত হয় এবং তখন তিঁনি (সাঃ) সকলকে বললেন-খাও । কিন্তু জনৈক ব্যক্তি দূরে সরে গিয়ে বলল-আমি রোজাদার । আম্মার ইবনে ইয়াসীর (রাঃ) বললেন-যে ব্যক্তি সন্দেহযুক্ত দিনে রোজা রাখে সে আবুল কাসিমের (রসূল সাঃ) সাথে অবাধ্য আচরণ করেছে (সূত্র: আবু দাউদ ৩য় খন্ড/২৩২৭, তিরমিযী)
নবী করীন (সাঃ) বলেছেন, তোমরা রমজান মাসের একদিন বা দুই দিন আগে থেকে রোযা রেখ না । তবে কারও যদি আগে থেকেই কোনো নির্দিষ্ট দিন রোযা রাখার অভ্যাস থাকে এবং ঘটনাক্রমে সে দিনটি ২৯ ও ৩০ শাবান হয় তাহলে সে ওইদিন রোযা রাখতে পারে (সহিহ বুখারী ১/২৫৬ হাঃ/১৯১৪)
আর যারা একেবারেই অলস অজ্ঞ গুরুত্বহীন চেষ্টা করবেন না ঘুম থেকে জেগে দেখলেন ফজর হয়ে গেছে পরে চাঁদ উদয়ের খবর পেলেন পূর্বে মনে যদি নিয়ত থাকে সম্ভব হলে এ অবস্থায় সেহারী না খেয়েও রোজা রাখতে পারেন ।
না রাখলে একই দিনে এক সঙ্গে ঈদ করে পরে একটি রোজা কাযা করে নিবেন ।
শরীয়া ক্ষেত্রে উদাসীনতার জন্য আল্লাহ’র নিকট খাঁটি তওবা করুন ।
হযরত আসমা বিনতে আবুবকর (রাজিঃ) বলেন, রাসুল (সাঃ) এর জামানায় একদিন আমরা মেঘের কারনে রোযা ইফতার করেছি, কিন্তু পরে সূর্য দেখা গেছে । [হাদিসের রাবি বলেন] আমি হিশামের কাছে জিজ্ঞাসা করলাম, মানুষদের কি কাজার আদেশ দেয়া হয়েছিল ? হিশাম বলল, কাজা ব্যতীত অন্য কোন পন্থাও তো ছিল না ।-ইবনে মাজাহ, সহিহ আল বুখারী ২/২৫৮ হাদিস নং ১৮২০
অনুরুপে বলা যায়, চাঁদ দেখার খবর সুবহে সাদেকের পূর্বে না পেলে এবং বিশেষ কারনে রোজা রাখতে না পারলে ঈদের পরে কাযা করা যাবে ।
(৬) গ্রন্থ “তাবয়ীনুল হাকায়েক”-এর ভাষ্য হচ্ছে-......এমনকি এক দেশের মানুষ ৩০টি রোযা রাখল, অন্য দেশের মানুষ রোযা রাখল ২৯টি, তাহলে অন্যদেরকে একটি রোযা কাযা করতে হবে (তাবয়ীনুল হাকায়েক, খন্ড-২, পৃঃ-১৬৪/১৬৫)
ইমাম মালিক (রহঃ) এর অভিমতঃ-
১. যখন বসরা শহরবাসী রমজানের নতুন চাঁদ দেখবে, অতঃপর তা কুফা, মদীনাও ইয়েমেনবাসীদের কাছে পৌছবে তাহলে ইমাম মালিক (রহঃ) থেকে তাঁর শিষ্যদ্বয় ইবনুল কাসিম ও ইবনে ওয়াহাবের বর্ণনামতে শেষোক্ত দেশবাসীর প্রতিও ওয়াজিব হয়ে যাবে । অথবা
যদি বাদ পড়ে তবে সে রোযা কাযা করতে হবে (উৎস আল-মুনতাকা-শরাহল মুয়াত্তা ২য় খন্ড পৃঃ ৩৭)
সমস্যাঃ-সব কিছু এক সাথে করা সম্ভব নয় । যেমন সেহেরী ও ইফতারের সময় এবং নামাযের সময় ।
সময় সূর্যের সাথে শয়ীয়া দ্বারা নির্ধারিত । সময় এক না হলেও দিন বা তারিখ (যা চাঁদের সাথে সম্পর্কযুক্ত) এক করা সম্ভব ।
যা লেখার শুরুতে দেখানো হয়েছে । কারো দেশে রাত (দিনের শুরু) কারো দেশে দিবা (দিনের অর্ধাংশ) অর্থাৎ
একই দিন, একই দিন, একই দিন, একই সময় নয় । এটাই অনেকের বুঝের অভাব ।
আল্লাহ তায়ালা বলেন-পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায় । অতঃপর রোযা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত- আল বাকারা আয়াত ১৮৭)
অতএব সেহরী, ইফতার নামায...সকল ইবাদতের সময় যার যার দেশের সূর্যের সাথে সম্পর্ক করে যার যার স্থানীয় সময়ে একই দিনে, একই দিনে, একই দিনে পালিত হবে একই সময় নয় ।
এক সময় ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ একই রাষ্ট্র ছিল । তখন ভারতের আকাশে চাঁদ দেখা গেলেই রোযা ও ঈদ পালন করা হতো । ৪৭ এর পর পাক-ভারত আলাদা হয়ে যায় । তখন থেকে দু’দেশের আকাশও আলাদা হয়ে গেল । ৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্দে বিজয় অর্জনের মাধ্যমে ‘বাংলাদেশ’ নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয় । তখন থেকে ‘বাংলাদেশের আকাশ’ নামে একটি আকাশেরও জন্ম হয়েছে । মহান আল্লাহ কি এভাবে পৃথক পৃথক রাষ্ট্রের জন্য পৃথক আকাশ তৈরি করেছেন ? নি:সন্দেহে ‘না’ ।
আমাদের পূর্বপুরুষরা কি ভুল করেছেন ?
এভাবে পবিত্র ইসলাম ধর্মের ইতিহাসে অত্র মাসয়ালার উপরে কুরআন, সুন্নাহ্ এবং ফিকহের ইজমা বা ঐক্যমত থাকা সত্বেও তাৎক্ষনিক সংবাদ দেওয়া-নেওয়ার কোন ব্যবস্থা না থাকায় তারা পারিপার্শিক অবস্থার প্রেক্ষিতে যতদূর পর্যন্ত সংবাদ পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে ততদূর এলাকায় আমল করেছেন । আমি মনে করি তাদের এ আমল সমসাময়িক পরিস্থিতিতে ছহীহ ও যুক্তিপূর্ণ ছিল (আল্লাহ ভাল জানেন)
অপর দিকে বর্তমানে সে ওজর বা সমস্যা না থাকায় এবং তাৎক্ষনিক সংবাদ দেয়া-নেয়ার ব্যবস্থা থাকায় আমাদেরকে অবশ্যই মূল মাসয়ালা অনুযায়ী আমল করতে হবে । এটাই ফিকহের সিদ্ধান্ত এবং বিবেক ও সময়ের দাবী ।
আল্লাহপাক বলেন-
‘প্রত্যেক সংবাদের নির্দিষ্ট সময় রয়েছে প্রকাশের জন্য’ (৬:৬৭)
বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ’র সকল ইবাদত একই দিনে(৭ম)
সমস্যাঃ-বর্তমান সময়ের জ্ঞানীরাও এ বিষয় নিয়ে গবেষণা করছেন কিভাবে সকল ইবাদত বিশ্ব মুসলিম এক হয়ে পালন করা যায় । অনেকে আধুনিক প্রচার মাধ্যম ব্যবহার করে এ বিষয়ে লেকচার, বইয়ের মাহ্যমে প্রচারনা চালাচ্ছে ।
সকলের প্রচারনায় দেখায় যায়-সউদির চাঁদ দেখার খবরের সাথে মিলিয়ে এক করতে চান ! কেন ?
তারিখ চাঁদের উদয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত । মাসের প্রথম দিনের চাঁদ পশ্চিম আকাশে উদিত হয় । সৌদির পশ্চিমের দেশগুলতে আগে চাঁদ দেখা যাবে । প্রথম চাঁদ যে দেশে দেখা যাবে তাদের সাথে এক হওয়া উচিত নয় কি ? তাছাড়া শরীয়ায় সৌদিকে মানদ্বন্দ করার কোন দলিল আছে কি ?
সমাধানঃ-আল্লামা শায়খ আব্দুল্লাহ বিন বায (রহ.)
একই দিনে সারাবিশ্বে ঈদের প্রবক্তাদের কেউ কেউ মক্কা শরীফে চাঁদের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ ও সাওম পালনের যে মত ব্যক্ত করেছেন । কিন্তু খোদ সৌদি আরবের সাবেক প্রধান মুফতি আল্লামা শায়খ বিন বায (রহ.) এটি নাকচ করেছেন ।
তিনি বলেন: ‘বিশেষ করে মক্কার চাঁদ দেখাকে ভিত্তি করে যারা সারা
দুনিয়ায় রামাযান ও ঈদের ফায়সালা করতে বলেন,
***তাদের এ মতের কোন ভিত্তি ও দলীল নেই ।
আর তা হলে অবস্থা এ রূপ হবে যে, মক্কায় চাঁদ দেখা না-হলে, অন্য অঞ্চলের লোকেরা চাঁদ দেখলেও তাদের উপর সাওম ফরজ হবে না’- (আল বা’সুল ইসলামী: জিলহজ্ব ১৩৯৯, সূত্র: ইসলামী মাহ, মওলানা ইয়াক‚ব ঈসমাইল দেওবন্দী, পৃ. ১৩১)
******সুতরাং স্পষ্টভাবে সহীহ সমাধান হল বিশ্বের যে দেশ থেকে প্রথম চাঁদ উদয়ের খবর পাওয়া যাবে তার ভিত্তিতেই একযোগে বিশ্বব্যাপী হিজরী মাস সুরু করতে হবে । এটাই শরিয়ার দাবী ও সময়োপযোগী বাস্তব গ্রহণযোগ্য পদক্ষেপ******
সুতরাং যারা সৌদি সাথে এক হওয়ার কথা বলেন বিষয়টি ভেবে দেখুন । মুসলিম উম্মার কেন্দ্র মক্কার ইসলামিক চিন্তাবিদেরকে বিষয়টি পর্যালোচনার দাবি রাখে ।
***মক্কা ইসলামের কেন্দ্র হিসাবে আমরা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ থেকে একজন খলিফা (যে সহিহ শরীয়া জ্ঞানের অধিকারী) মেনে তার কেন্দ্রীয় কার্যালয় সউদিতে করতে পারি । তার অধিনিস্থ বিভিন্ন দেশের গভর্ণর (প্রত্যেক দেশে একজন) বানাতে পারেন । বিশ্বের যে দেশে প্রথম চাঁদ দেখা যাবে ঐ দেশের গভর্ণর খলিফাকে জানাবে ।
খলিফা অধুনিক প্রচার যন্ত্রের মাধ্যমে প্রথম চাঁদ দেখার খবর বিশ্ব বাসীর নিকট প্রচার করবে । এভাবে মাসের শুরু সমগ্র বিশ্বে এক সাথে করা যেতে পারে । (ইন-শাআ-আল্লাহ) ।
উক্ত খলিফা শির্ক বেদাতেরও সমাধান দিবেন । যারা এতে লিপ্ত তাদের কাছ থেকে লিখিত প্রমাণ নিয়ে সহিহ শরীয়া মতে জানাবেন এটা করা যায়েজ, এটা নাযায়েজ ।
***শুধু চাঁদ দেখার খবর হলে দেশের রাষ্ট্র প্রধান বা তাঁর অধিনস্থ কর্মকর্তাও প্রচার করতে পারবে ।
আমরা যারা পূর্বে না জানার কারনে, দ্রুত প্রচার ব্যবস্থা না থাকার কারনে ভুল করেছি তাদের প্রতি অনুরোধ রইল বিষয়টি যাচাই বাছাই করে দেখুন এবং প্রয়োজনে আপনার পরিচিত শরিয়া জ্ঞানীদের নিকট লেখাটি কপি করে দিন এবং তাদের নিকট মৌখিক না জেনে কুরআন ও সহিহ হাদিসের পূর্ণাঙ্গ দলিল চেয়ে লিখিত চান কেন একই দিনে সিয়াম শুরু এবং শেষ করে ঈদ করব না ?
আল্লাহপাক বলেন- ‘জ্ঞানীরাই চিন্তা-ভাবনা করে’ (সূরা ইব্রাহীম-৫২)
আমার সংগ্রহটি গ্রহণযোগ্য হলে জন সচেনতার জন্য প্রচার করার অনুরোধ জানাচ্ছি । আল্লাহ আমাদের সঠিক পথ বুঝার তৌফিক দিন ।
**আমীণ**
বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ’র সকল ইবাদত একই দিনে(৮ম)
কিছু তথ্যঃ- এ বিশৃঙ্খল অবস্হা সম্পর্কে ১৬ অক্টোবর ২০০৬ তারিখে এক প্রেস রিলিজে ৫৭টি দেশ নিয়ে গঠিত ইসলামী সহযোগিতা সংস্হা (ও.আই.সি) এর মান্যবর মহাসচিব একমেলেদ্দীন ইহসানোগলু বলেন,
এ বছর (২০০৬) ঈদুল ফিতর উদযাপনে সময়ের পার্থক্য ৩ দিন পৌছেছে । আধুনিক বিজ্ঞান বিশেষত: জ্যোতির্বিজ্ঞানের অভাবনীয় অগ্রগতির যুগে এই অবস্হা দু:খজনক ।
ইসলামী উৎসবগুলোর বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে । এসব উৎসব বিশ্বের সব মুসলিমের হৃদয়ে ঐক্যের বার্তা পৌছে দেয় । এই ঐক্য এসব উৎসবের নির্যাস হিসেবে প্রকাশ পায় । কিন্তু এসব উৎসব বর্তমানে মুসলিমদের মধ্যে ঐক্যের বদলে অনৈক্য ও বিভেদের উপলক্ষ্য হিসেবে উপস্হিত হয়েছে । এতে মুসলিমদের ইতিবাচক ভাবমূর্তি প্রকাশ পাচ্ছে না । এটি একটি বড় ধরনের ভুল । কারণ এসব ধর্মীয় উৎসব ধর্মের বস্তুনিষ্ঠতা থেকে দূরে সরে যেয়ে একঘেয়েমি ও কুপমন্ডুকতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে ।
এ ব্যাপারে ইসলামী সম্বেলন সংস্হা (ও.আই.সি) ১৯৮০-র দশক হতে লিখিতভাবে এ বিষয় নিয়ে সোচ্চার । ও.আই.সি এ বিষয়ের উপর প্রস্তাব গ্রহণ করেছে এবং বিভিন্ন সম্বেলনে এ বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আসছে । মুসলিম দেশগুলোতে একটি একক ক্যালেন্ডার অবলম্বন করার জন্য হিজরী ক্যালেন্ডারকে ধর্মীয় ও বিজ্ঞানের মুলনীতি প্রয়োগ করে পরিমার্জিত করতে হবে । এব্যাপারে ব্যবস্হা নিতে ইসলামী আইনবিদ্যা কেন্দ্রকে অনুরোদ করছি । পরিমার্জিত এ হিজরী ক্যালেন্ডার বিশ্বের সব মুসলিমকে রোজা ও অন্যান্য উৎসবগুলোতে ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ করবে । এ বিষয়ে বিভক্তি ও অনৈক্য দুর করতে মুসলিম বিশ্বের ধর্মীয় ও নেতৃস্হানীয় কর্তাব্যক্তিদের এক সাথে কাজ করতে আহবান জানাচ্ছি । জেদ্দা: ২৮ অক্টোবর ২০০৬ দেখুন:
http://www.oci.org/oicold/press/english/2006/october%202006/hilal.htm )
বিশ্বের ৫৭টি মুসলিম দেশ এবং সকল মুসলিমের প্রতিনিধিত্বকারী বিশ্ব মুসলিম সংগঠন ও, আই, সি-এর ফিকহ একাডেমী ১৯৮৬ সনের ১১-১৬ অক্টোবর জর্ডানের রাজধানী আম্মানে অনুষ্ঠিত শীর্ষ সম্মেলনে শতাধিক শরীয়াহ্ বিশেষজ্ঞের সর্ব সম্মতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে, “বিশ্বের কোন এক দেশে চাঁদ দেখা গেলে সকল মুসলিমকে ঐ দেখার ভিত্তিতেই আমল করতে হবে”
(দেখুনঃ http://www.newmoonbd.com/oic_decision.php
সারা বিশ্বে একই দিনে ঈদ করার বিষয়ে ও.আই.সি এর বিভিন্ন প্রস্তাব এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছে । দেখুন
http://www.oic-oci.org/home.asp
1. http://www.oic-oci.org/english/conf/fm/11/11%20icfm-cultural-en.htm (RESOLUTION No. 14/11-C)
2. http://www.oic-oci.org/english/conf/fm/12/12%20icfm-cultural-en.htm (RESOLUTION NO. 8/12-C)
3. http://www.oic-oci.org/english/conf/fm/13/13%20icfm-cultural-en.htm (RESOLUTION NO. 11/13-C)
4. http://www.oic-oci.org/english/conf/fm/14/14%20icfm-cult-en.htm (RESOLUTION NO. 19/14-C)
5. http://www.oic-oci.org/english/conf/fm/15/15%20icfm-cult-en.htm (RESOLUTION NO.17/15-C)
6. http://www.oic-oci.org/english/conf/fm/16/16%20icfm-cult-en.htm (RESOLUTION NO.13/16-C)
7. http://www.oic-oci.org/english/conf/fm/17/17%20icfm-cult-en.htm (RESOLUTION NO. 16/17-C)
8. http://www.oic-oci.org/english/conf/fm/18/18%20icfm-cult-en.htm (RESOLUTION 18/18-C)
9. http://www.oic-oci.org/english/conf/fm/19/19%20icfm-cult-en.htm (RESOLUTION NO. 24/19-C)
10. ISTANBUL, REPUBLIC OF TURKEY 24-28 MUHARRAM 1412H, 4-8 AUGUST 1991
11. http://www.oic-oci.org/english/conf/fm/21/21-4th%20resolution.htm
আল-কুরআন- তোমরা দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত কর এবং তাতে অনৈক্য সৃষ্টি কর না (আশ শুরা আয়াত ১৫);
তোমাদের নিকট যে জ্ঞান পৌঁছেছে তারপরও যদি তোমরা তাদের (কুরআন-হাদিস বহির্ভূত কারো কথা) মনের ইচ্ছা ও বাসনার (দলিল বিহীন মতবাদ) অনুসরণ কর তাহলে নিশ্চিত রুপে তোমরা যালিমদের মধ্যে গণ্য হবে (বাক্বারা আয়াত ১৪৫)
বিষয়: বিবিধ
২৪৮৯ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন