বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ’র সকল ইবাদত একই দিনে (৭ম পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন সত্যের ২৪ জুন, ২০১৪, ০৮:২৬:৪৬ সকাল
১ম পর্ব
http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/6753/soter/45670 (plz click & read)
ফিকাহ শাস্ত্রের উপরোক্ত বর্ণনা যাহেরে রেওয়ায়াতের ফতোয়া বলে উল্লেখ করা হয়েছে । কিন্তু সমস্ত ফুক্বাহায়ে কেরামের ব্যাবহারিক ক্ষেত্র তা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়নি ।
কেন তারা বাস্তবায়ন করেননি বা করতে পারেননি তার কোন ব্যাখা পাওয়া যায় না এবং বর্তমান তাদের অনুসারীরাও সঠিকভাবে জানাতে পারছেনা ।
অনেকে ধারনা করে বলে
মতভেদ ছিল অর্থাৎ এর বিপরীত মতের দলিলও ছিল অথবা সমগ্র বিশ্বের সাথে দ্রুত যোগাযোগের ব্যবস্থা ছিল না চাঁদ দেখার সংবাদ পৌছানোর জন্য ইত্যাদি ।
তৎকালীন সময়ে মানুষের বাহন ছিল ঘোড়া, গাধা, উট, পদযুগল ইত্যাদি ।
আল্লাহর রাসুল (সঃ) তাঁর যুগে দূরবর্তী স্থানের লোকদের চাঁদ দেখার সংবাদ পাঠানোর জন্য ‘ঘোড়সওয়ার’ এর ব্যবস্থা করেছিলেন ।
তার পরবর্তী ইসলামি রাস্ট্রের খলিফাগণ চাঁদ দেখে বা স্বাক্ষী পেয়ে যেটি করত, তা হল মুসলমানরা বিভিন্ন পাহাড়ের উপরে মশাল বা আগুন জ্বালানোর ব্যবস্থা করতো । যেই এলাকায় প্রথম চাঁদ দেখা যেত, সেই এলাকার পাহাড়ের উপরে মশাল বা আগুন জ্বালানো হতো । সেই আগুন দেখে দূরবর্তি পাহাড়ও আগুন জ্বালানো হতো । এভাবে ধীরে ধীরে সকল এলাকায়, সব মুসলমান আগুন জ্বালানো দেখে চাঁদ দেখার খবর পেত ।
কোন খিলাফাহ এর সময়, যে কোনো অঞ্চলে চাঁদ দেখা গেলে ঘোড়া ছুটিয়ে কিংবা আরও উন্নত যোগাযোগ মাধ্যম পরবর্তী সময়ের কোনো বিশেষ বাতি জ্বালিয়ে বা শব্দ শুনিয়ে সবাইকে জানিয়ে দেয়া হতো যে নতুন মাসের চাঁদ দেখা গিয়েছে । সে সময়ে সমুদ্রবক্ষে জাহাজের নিরাপদে দিক চিনে চলাচলের সুবিধার্তে যে সকল লাইট হাউস বা বাতিঘর ছিল, আকাশে চাঁদ দেখা গেলে সেগুলিতে আলো জ্বালিয়ে দেওয়া হত । একটি লাইট হাউসে আলো জ্বললে সে খবর যখন অন্যটিতে পৌঁছাত, তখন অন্যটিতেও আলো জ্বালিয়ে দেওয়া হত । এভাবে জনতা আলো জ্বলতে দেখে চাঁদ দেখার ব্যাপারটি বুঝতে পারত । এ প্রক্রিয়ায় যে সকল এলাকার মানুষ চাঁদ দেখার ব্যাপারটি বুঝতে পারত, সে সকল এলাকার মানুষেরা রোজা, ঈদ একসাথে পালন করত ।
এখান আমরা একটু লক্ষ্য করলে বুঝতে পারব যে, আকাশে চাঁদ দেখা গেছে, এ সংবাদটি পায়ে হেটে অন্যদেরকে জানানো, ঘোড়ায় চড়ে জানানো, লাইট হাউসের মাধ্যমে জানানোর মধ্যে বিষয়ভিত্তিক কোনো পার্থক্য নেই বরং প্রযুক্তিগত পার্থক্য রয়েছে, যা প্রথম যুগ থেকেই গ্রহন করা হয়েছে ।
বেশী সংখ্যক মানুষকে দ্রুততার সাথে জানানোর জন্যে এ মাধ্যমগুলি প্রযুক্তি বিশেষ, যা সময়ের প্রেক্ষিতে পরিবর্তিত হয়েছে । এখানে উক্ত প্রযুক্তির একটিই উদ্দেশ্য ছিল, তা হলো-দ্রুততার সাথে অন্যদেরকে চাঁদ দেখার সংবাদটি জানানো ।
এভাবে পবিত্র ইসলাম ধর্মের ১৪৪১ বৎসরের ইতিহাসে অত্র মাসয়ালার উপরে কুরআন, সুন্নাহ্ এবং ফিকহের ইজমা বা ঐক্যমত থাকা সত্বেও তাৎক্ষনিক সংবাদ দেওয়া-নেওয়ার কোন ব্যবস্থা না থাকায় তারা পারিপার্শিক অবস্থার প্রেক্ষিতে
যতদূর পর্যন্ত সংবাদ পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে ততদূর এলাকায় আমল করেছেন । তাদের এ আমল সমসাময়িক পরিস্থিতিতে ছহীহ ও যুক্তিপূর্ণ ছিল ।
অপর দিকে বর্তমানে সে ওজর বা সমস্যা না থাকায় এবং তাৎক্ষনিক সংবাদ দেয়া-নেয়ার ব্যবস্থা থাকায়
আমাদেরকে অবশ্যই মূল মাসয়ালা অনুযায়ী আমল করতে হবে । এটাই ফিকহের সিদ্ধান্ত এবং বিবেক ও সময়ের দাবী ।
আল্লাহপাক বলেন-
‘প্রত্যেক সংবাদের নির্দিষ্ট সময় রয়েছে প্রকাশের জন্য’ (৬:৬৭)
বর্তমান কালে স্যাটেলাইট টেলিভিশন, ইন্টারনেটের কল্যানে চাঁদকে পৃথিবীর সকল এলাকাবাসীর সামনে সরাসরি উপস্থাপন করা যায় ।
আধুনিক প্রচার মাধ্যম (টিভি, রেডিও, ইন্টারনেট, মোবাইল…) কে আমরা যাতে কাজে লাগাতে পারি তা বহু আগেই আল্লাহপাক নির্ধারণ করে দিয়েছেন ।
আল্লাহপাক বলেন,
‘আমি বাতাসকে দিয়েছি তোমাদের সুসংবাদ বহনের জন্য’ (সূরা আল ফোরআন-৪৮, নমল-৬৩, রুম-৪৭)
আজকের এই প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সময়ে যদি কেউ এক এলাকাতে চাঁদ দেখতে পায় এবং তা অন্য এলাকার লোকদেরকে টেলিফোনে, ইন্টারনেটে, টেলিভিশনে, রেডিওর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়, তাহলে তা পূর্ববর্তী সময়ের পায়ে হাটা, ঘোড়ায় চড়া, লাইট হাউসের মাধ্যমে ঘটিত প্রচারণার সমপর্যায়েরই হবে । কারণ, এখানে উদ্দেশ্য একই ।
বর্তমান সময়ের জ্ঞানীরাও এ বিষয় নিয়ে গবেষণা করছেন কিভাবে সকল ইবাদত বিশ্ব মুসলিম এক হয়ে পালন করা যায় । অনেকে আধুনিক প্রচার মাধ্যম ব্যবহার করে এ বিষয়ে লেকচার, বইয়ের মাহ্যমে প্রচারনা চালাচ্ছে।
সকলের প্রচারনায় দেখায় যায়-
সউদির চাঁদ দেখার খবরের সাথে মিলিয়ে এক করতে চান ! কেন ?
(চলবে)
৮ম পর্ব http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/6753/soter/48018 (plz click & read)
বিষয়: বিবিধ
১২৬৫ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আর কুরআন, হাদিসে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে শুধু জানাতে ।
মানানোর বিষয় বান্দার নয়, একমাত্র স্রষ্টার ।
ধন্যবাদ ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন