বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ’র সকল ইবাদত একই দিনে (৬ষ্ঠ পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন সত্যের ২৩ জুন, ২০১৪, ১০:০৩:১৬ সকাল
১ম পর্ব
http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/6753/soter/45670 (plz click & read)
ইমাম আবু হানিফা রহ. এর বক্তব্য ও এটাই এবং তিনিই সঠিক ।
পৃথিবী একটা, চাঁদ একটা, কোরআন একটা, সমস্ত মুসলিম একজাতি, সবাই এক নবীর উম্মাত, তাহলে ঈদ কেন তিন দিনে করব ?
সন্দেহ নিরসনের জন্য বলতে হয় হানাফী মাজহাবসহ তিনটি মাজহাবের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলো: নতুন চাঁদ উদয়ের স্থানের বিভিন্নতার কোন গুরুত্ব নেই এবং সর্বপ্রথম হেলালকেই সারা বিশ্বের সকলের অনুসরণ করতে হবে ।
ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর অভিমতঃ-
১. যে কোন একটি দেশে নতুন চাঁদের উদয় প্রমানিত হলে বিশ্বের সকল মানুষের উপর তার অনুসরন জরুরী হয়ে পড়ে [উৎস: আল মুখতার ১ম খন্ড ১২৯ পৃঃ / ফতহুল কাদীর (শেরহে ফাতহুল কাদীয়সহ) ১ম খন্ডঃ পৃ ২৪৩/মারাকীন ফালাহ পৃঃ ৫৪০-৫৪১/ আল-বাহরুর রায়েক ২য় খন্ড পৃঃ ২৯০]
২. আর উদয়ের স্থান ও সময়ের বিভিন্নতার কোন গুরুত্ব নেই । (উৎসঃ কাদী খান ১ম খন্ডঃ পৃঃ ১৯৮/ মাজমাউল আনহুর ১ম খন্ড পৃঃ২৩৯ / আল মুখতার ১ম খন্ড পৃঃ ১২৯ আল-ফাতওয়া আল হিন্দিয়াহ ১ম খন্ড, পৃঃ১৯৮/ আল বাহরুর রায়েক ২য় খন্ড পৃঃ ২৯০/ ফাতহুল কাদীর ২য় খন্ড পৃঃ ২৪৩/রদ্দুল মুহতার (শামী) ২য় খন্ড পৃঃ ৩৯৩)
৩. যদি পৃথিবীর পশ্চিমাংশের বাসিন্দারা রমজান মাসের নতুন চাঁদ দেখেন তাহলে তাদের এ দেখাতেই পূর্বাংশের লোকদের উপর (রোজা ও ঈদ) ওয়াজিব হয়ে যাবে (উৎসঃ আল-বাহুরুর রায়েক ২য় খন্ড পৃঃ ২৯০ / মাজমাউল আনহুর ১ম খন্ড ২৩৯ পৃঃ আল হিন্দিয়াহ (ফাতোয়ায়ে আলমগীরী) ২য় খন্ড ১৯৮-১৯৯ পৃঃ। ফাতহুল কাদীর ২য় খন্ড ২৪৩ পৃঃ। বাজাজিয়াহ ৪/৯৫)
সুতরাং হানাফী মাযহাবের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলোঃ পৃথিবীর যে কোন দেশেই নতুন চাঁদ উদয় প্রমানিত হয়ে নির্ভরযোগ্য সূত্রে নতুন চাঁদ উদয়ের খবর দূরবর্তী কোন দেশে পৌছে তাহলে সে দেশের মুসলিমদের চাঁদের সাথে সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় উৎসবসমূহ পালন করতে হবে । উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ৯০% -এর বেশী মুসলিম হানাফী মাযহাবের অনুসারী ।
ইমাম মালিক (রহঃ) এর অভিমতঃ-
১. যখন বসরা শহরবাসী রমজানের নতুন চাঁদ দেখবে, অতঃপর তা কুফা, মদীনাও ইয়েমেনবাসীদের কাছে পৌছবে তাহলে ইমাম মালিক (রহঃ) থেকে তাঁর শিষ্যদ্বয় ইবনুল কাসিম ও ইবনে ওয়াহাবের বর্ণনামতে শেষোক্ত দেশবাসীর প্রতিও ওয়াজিব হয়ে যাবে । অথবা যদি বাদ পড়ে তবে সে রোযা কাযা করতে হবে (উৎস আল-মুনতাকা-শরাহল মুয়াত্তা ২য় খন্ড পৃঃ ৩৭)
২. এবং রোযা রাখার নির্দেশ ব্যাপকভাবে সকল দেশকে শামিল করবে । চাই সে দেশ কাছে হোক বা বহুদুরে হোক (উৎসঃ শরহুজ জুরকানী ২য় খন্ড পৃঃ ১৯২/ আশ্-শরহুছ ছগীর ২য় খন্ড পৃঃ ৪/ ফাতহুর রাহীম ১ম খন্ড পৃঃ ১৩০)
সুতরাং মালিকী মাযহাবের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলোঃ নতুন চাঁদ উদয় প্রমানিত হয়ে নির্ভরযোগ্য সূত্রে চাঁদ উদয়ের খবর দূরবর্তী কোন দেশে পৌছে তাহলে সে দেশের মুসলিমদের চাঁদের সাথে সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় উৎসব সমূহ পালন করতে হবে । উল্লেখ্য, হযরত মালিক (রাঃ) ছিলেন সাহাবী ।
ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) এর অভিমতঃ-
১. কোন একটি দেশের লোকেরা নয়া চাঁদ দেখবে সকল দেশের লোকদের উপর রোযা ফরজ হয়ে পড়ে (উৎসঃ মুঘনী পৃঃ ৭৯/ আররদুন নাদী শরহ কাফীল মরতাদী পৃঃ ১৬১/ জাদুল মুসতাকনে পৃঃ ৭৮ /আস-সালসাবীল ১ম খন্ড পৃঃ২০২ / উমদাতুল ফিকহ- পৃঃ৪৯)
২. চাই সে দেশ কাছে হোক বা দূরে হোক (উৎস: উদমাতুল ফিকহ- পৃঃ ৪৯ / মুযনী পৃঃ ৭৯)
৩. চাই চাঁদ উদয়ের স্থান ও কাল ভিন্নই হোক। (উৎসঃ উমদাতুল ফিকহে পৃঃ ৪৯)
সুতরাং হাম্বলী মাযহাবের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলোঃ নতুন চাঁদ উদয় প্রমানিত হয়ে নির্ভরযোগ্য সূত্রে চাঁদ উদয়ের খবর দূরবর্তী কোন দেশে পৌছে তাহলে সে দেশের মুসলিমদের চাঁদের সাথে সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় উৎসব সমুহ পালন করতে হবে ।
শাফেয়ী মাযহাবঃ-যদি চাঁদ কোন এক দেশে দেখা যায় অথচ অন্য দেশে দেখা গেল না, তাহলে দেশ দুটি কাছাকাছি হয় তাহলে উভয় দেশ এক দেশের মতো গন্য হবে ।
আর দূরবর্তী হয় তাহলে দুটি মত রয়েছে । তার মধ্যে শুদ্ধতর মত হলো এক্ষেত্রে অন্য দেশের লোকদের প্রতি এর হুকুম বর্তাবে না (উৎসঃ রওদাতুত্তালেবীন ২য় খন্ড পৃঃ ৩৪৮/ মাতনুল মিনহাজ মা’মুযনিল মুহতাজ ১ম খন্ড পৃঃ ৪২২। আল-মুহাজ্জাব ১ম খন্ড পৃঃ ১৭৯ শরহমুসলিম (লিন্-নব্বী) ৭ম খন্ড, ১৯৭ পৃঃ। এহইয়াউ উলুমিদ্দীন ১ম খন্ড পৃঃ ২৩২)
সুতরাং পৃথিবীর যে কোন স্থানে যে কোন ভাবে চাঁদ দেখা প্রমানিত হলে সারা বিশ্বে মুসলিমদের উপর ইসলামের বিধি-বিধান পালন করা এবং হিজরী সন গণনা করা সম্পর্কে একমাত্র
ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) ছাড়া বাকী সব ইমাম ঐক্যমত পোষন করেছেন । কিন্তু পরবর্তীতে শাফেরী মাযহাবের মুজতাহিদরা (গবেষক) এ নিয়ে গবেষণা করে বিভিন্ন ধরনের মত পোষন করেছেন ।
শাফেয়ী মাযহাবে দ্বিমত থাকায় এবং বাকী তিন মাযহাব ঐক্যমত পোষন করায় পৃথিবীর যে কোন স্থানে যে কোন ভাবে চাঁদ দেখা প্রমানিত হলে যারা বিশ্বে মুসলিমদের উপর ইসলামের বিধি-বিধান পালন করা এবং হিজরী সন গণনা করা অবশ্য করণীয় (ওয়াজিব) ।
ফিকাহ শাস্ত্রের উপরোক্ত বর্ণনা যাহেরে রেওয়ায়াতের ফতোয়া বলে উল্লেখ করা হয়েছে । কিন্তু সমস্ত ফুক্বাহায়ে কেরামের ব্যাবহারিক ক্ষেত্র তা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়নি ।
কেন তারা বাস্তবায়ন করেননি বা করতে পারেননি তার কোন ব্যাখা পাওয়া যায় না এবং বর্তমান তাদের অনুসারীরাও সঠিকভাবে জানাতে পারছেনা ।
অনেকে ধারনা করে বলে
(চলবে)
৭ম পর্ব http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/6753/soter/47942 (plz click & read)
বিষয়: বিবিধ
১২৮০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনাকে ১ম পর্ব থেকে শেষ পর্ব ধারাবাহিক পড়ার আন্তরিক অনুরোধ জানাচ্ছি ।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে!
মন্তব্য করতে লগইন করুন