বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ’র সকল ইবাদত একই দিনে (৩য় পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন সত্যের ০২ জুন, ২০১৪, ০৯:০০:০৯ সকাল
১ম পর্ব
http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/6753/soter/45670 (plz click & read)
দেশ অনুযায়ী হিজরী সন গণণা পদ্ধতির ভিন্নতা রয়েছে । যেমন:
* দেশের রাজনৈতিক সীমার মধ্যস্হ স্হলভাগে খালি চোখে নতুন চাঁদ দেখার খবর প্রচার করে দেশে হিজরী সনের মাস শুরু করা । যেমন: বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, ওমান, মরক্কো এবং ত্রিনিদাদ-টোবাগো ।
* সৌদি আরবের ঘোষনা অনুসরন করা । যেমন: কাতার, কুয়েত, আরব আমিরাত, বাহরাইন, ইয়েমেন, আফগানিস্তান, ফিলিস্তিন ।
* পাশবর্তী দেশ হতে মাস শুরু করার খবর সংগ্রহ করা । যেমন: নিউজিল্যান্ড অস্ট্রেলিয়া হতে, মালদ্বীপ শ্রীলন্কা হতে খবর সংগ্রহ করে রোজা ও ঈদ করে ।
* বিশ্বে প্রথম মাস শুরুর ঘোষক দেশের অনুসরন করা । যেমন: ওয়েস্ট ইন্ডিজের দেশগুলো, জ্যামাইকা, বার্বাডোস
* নিজস্ব ভুখন্ডে ফজরের আগে চাঁদের জন্ম বিবেচনা করে মাস শুরু করা । যেমন: লিবিয়া
* চাঁদের বয়স ৮ ঘন্টা, উচ্চতা ২ ডিগ্রী, কৌনিক ব্যবধান ৩ ডিগ্রী এর বেশী হলে মাস শুরু করা । যেমন: মালয়েশিয়া, ব্রুনাই, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর
* আগেই পাটীগণিতের সুত্র দিয়ে অগ্রীম পন্জিকা বানানো । যেমন: ইসমাইলিয়া ও কাদিয়ানী ।
* আন্তজার্তিক ক্ষেত্রে পরিচিত দুরর্বতী দেশকে অনুসরন । যেমন: মালয়েশিয়াকে জাপান, তাইওয়ান, কোরিয়া, পালাউ অনুসরন করে
* বিশ্বের কোথাও সর্বপ্রথম নতুন চাঁদ দেখার বা তার সম্ভাবনাকে বিবেচনা করা । যেমন: লেবানন
* ৪৮০ মাইল দূরত্বকে নতুন চাঁদ দেখার ভিন্ন উদয় অঞ্চল বিবেচনা করে খালি চোখে নতুন চাঁদ দেখে একই দেশে দুই দিন মাস শুরু করা । যেমন: ভারতের পশ্চিম বাংলা, ত্রিপুরা, মনিপুর, গুজরাট সহ বিভিন্ন প্রদেশ
* বিশ্বের কোথাও সর্বপ্রথম চাঁদের জন্ম এবং মক্কার সূর্যাস্তের পর চাঁদের অস্ত যাওয়ার মাধ্যমে মাস শুরু করার ঘোষনা করা । এ পদ্ধতিতে বিশ্বের কোথাও না কোথাও নতুন চাঁদ দেখার সম্ভাবনাকে বিবেচনা করা হয় তা খালি চোখেই হোক বা শক্তিশালী দুরবীন দিয়েই হোক । যেমন: আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ইসলামী আইনবিদ পরিষদ এবং ইউরোপিয়ান কাউন্সিল অব ফাতওয়া এন্ড রিচার্সের নিয়ন্ত্রনাধীন এলাকা ও দেশসমূহ ।
(দেখুন: http://www.moonsighting.com/methods.html )
এধরনের ভিন্ন ভিন্ন মানদ্বন্দের ভিত্তিতে মাস শুরুর করায় মুসলিম বিশ্বে বিচ্ছিন্নতা এবং ধর্মীয় উৎসবগুলো সার্বজনীনতা ও ধর্মীয় তাৎপর্য হারাচ্ছে ।
* রাসুল (সাঃ) এর মক্কা থেকে মদিনায় হিযরতের দিন ১ হিজরী সাল ধরে ১ তারিখ নির্ধারণ করে ১২ মাসে বছর এভাবে হিজরী সাল গণনা হয় ।
***বিভিন্ন মানদ্বন্দে চাঁদ দেখা বা স্বাক্ষীর জন্য হিজরী সাল তারিখের গড়মিল হয়েছে ***
* কুরআন নাযিল হয়েছে লাইতুল ক্বদরে (বাকারা-১৮৫; ক্বদর-১) ।
হযরত আয়েশা (রাজিঃ) বলেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, রমযানের শেষ দশ তারিখের বেজড় রাতসমুহে লাইলাতুল কদরকে তালাশ কর-সহিহ আল বুখারী ২/২৮৪ হাদিস নং ১৮৭৪
***কোন দেশের ক্বদরের তারিখে কুআন নাযিল হয়েছে !!***
***এক দেশে জোড় অন্য দেশে বিজোড় !!! কাদের তারিখ অনুযায়ী লাইতুল ক্বদর হঠিক হবে !!! ***
* ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম-হযরত আবু উবাইদা (রাজিঃ) বলেন, আমি হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রাজিঃ) এর সাথে ঈদের নামাজ আদায় করেছি । তিনি বলছেন, এ দুই দিনের রোযা রাখা থেকে নবী (সাঃ) নিষেধ করেছেন । প্রথম দিন হলো, যখন তোমরা রোযা শেষ কর, আর দ্বিতীয় দিন হলো, যখন তোমরা কোরবানীর গোস্ত খাবে-সহিহ আল বুখারী ২/২৭২ হাদিস নং ১৮৫১
*আবু সাঈদ খুদরী রা: থেকে বর্নীত, রাসুল (সাঃ) রোযার ঈদের দিন এবং কুরবানীর ঈদের দিন রোযা রাখতে নিষেধ করেছেন (সূত্র: সহীহ সহীহ বুখারী ৩য় খন্ড/১৮৬৭, ১৮৬৮ ও সহীহ মুসলিম ৩য় খন্ড/২৫৩৭-২৫৪২)
***একই দিনে এক দেশে ঈদ অন্য দেশে রোজা রাখে !! কে হারাম কাজ করে ?!! ***
* আরাফা (জিলহজ্ব মাসের নয় তারিখ) ও আশুরার (দশই মুহাররাম) তারিখের ফযিলত- হযরত আবু কাতাদাহ (রাজিঃ) বলেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, আরাফার রোযা আগের পরের দু’বৎসরের গুনাহ মাফ করে দেয় এবং আশুরার রোযা বিগত এক বৎসরের গুনাহ সমুহ ক্ষমা করে দেয়-আহমাদ, আবুদাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, মুসলিম শরীফ ৪/১২৬ হাদিস নং ২৬১৪
***আরাফা ও আশুরার তারিখ কোন দেশেরটা সঠিক !!***
* জিলহজ্বের ১০ তারিখে (সউদীর চাঁদের উপর নির্ভর করে) হাজিগণ কুরবানী করেন ।
* হাদীস অনুযায়ী কিয়ামত হবে ১০ই মুহাররমের শুক্রবার ।
***কিয়ামত পৃথিবীতে কয়দিন হবে !!***
উপরের বিষয়গুলোর তারিখ যা চাঁদের উদয়ের উপর নির্ভর করে নির্ধারণ করা হয় । যার যার
নিজ দেশের চাঁদ উদয়ের উপর নির্ভর করে উক্ত তারিখ গণনা করলে সমগ্র বিশ্বে ভিন্ন ভিন্ন দিন হয় ।
আবার কোন দেশে ২৯ বা ৩০ দিনে মাস শেষ অন্য দেশে আর ১ দিন বা ২ দিন পরে মাস শেষ হয় । অর্থাৎ উক্ত দুই দেশে একত্র করলে মাসের দিন হয় ৩০ বা
***৩১/৩২ যা শরীয়ায় কোন দলিল পাওয়া যায় না ।***
সর্বজন স্বীকৃত যে উক্ত দিন (তারিখ) পৃথিবীতে একটাই হবে এবং আরবী মাস ২৯ বা ৩০ দিনে ।
অতএব উক্ত দিনের তারিখ সঠিক না হলে গুনাহ্গার বা ফযিলত থেকে বঞ্চিত হতে হবে ।
একথা সকলেরই জানা, শবে ক্বদর, আরাফা, পবিত্র ঈদুল আযহা, আশুরা, ঈদ-ই-মিলাদুন নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম, পবিত্র শব-ই-মিরাজ, শব-ই-বরাত পালনের দিন তারিখ বেশ কিছু দিন পূর্বেই সংবাদ পাওয়া যায় । যা বিশ্বে একই দিনে পালন করা সম্ভব ।
রমযান মাসের ১ম (যে কোন মাসের ১ম) তারিখ নির্ধারন এবং বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছানোর উপর নির্ভর করে ১ম রোজা এবং ঈদুল ফিতর (পরবর্তী মাস) ।
***প্রত্যেক মাসের ১ম তারিখ নির্ধারনে বিশ্ব মুসলিম উম্মা এক হলেই সকল ইবাদত একই দিনে পালন করা সম্ভব হবে ।***
আমরা অনেকে মাযহাবের (ফেকাহ শাস্ত্রের) অনুসরণ করি । এবার দেখুন ফেকাহ শাস্ত্রের দলিলঃ-
(চলবে)
৪র্থ পর্ব
http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/6753/soter/46767 (plz click & read)
বিষয়: বিবিধ
২০৩১ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
******************
***বিভিন্ন মানদ্বন্দে চাঁদ দেখা বা স্বাক্ষীর জন্য হিজরী সাল তারিখের গড়মিল হয়েছে ***
***কোন দেশের ক্বদরের তারিখে কুআন নাযিল হয়েছে !!***
***একই দিনে এক দেশে ঈদ অন্য দেশে রোজা রাখে !! কে হারাম কাজ করে ?!! ***
***আরাফা ও আশুরার তারিখ কোন দেশেরটা সঠিক !!***
***কিয়ামত পৃথিবীতে কয়দিন হবে !!***
***প্রত্যেক মাসের ১ম তারিখ নির্ধারনে বিশ্ব মুসলিম উম্মা এক হলেই সকল ইবাদত একই দিনে পালন করা সম্ভব হবে ।***
*************
অতি উৎসাহী গবেষণা কখনো ভাল বা সঠিক ফল বয়ে আনে না ,
আপনার এই ধারনা যদি সঠিক হয় তবে আরব দেশ ছাড়া দুনিয়ার বাকি দেশগুলি ১৪৩৫ / ১৪৩৬ বছর যাবত ১ টি করে রোজা কম রেখেছে, প্রতি বছর ২ টি হারাম রোজা রেখেছে , মানে কোটি কোটি কবিরা গুনা করেছে ,
আবার জিবনে কোনদিন লাইলাতুল কদরের সৌভাগ্য অর্জন করে নি ,
অর্থাৎ দিনের নির্দেশনা শুধু আরবের জন্য সঠিক ছিল,
আর তামাম দুনিয়ার জন্য ভুল ???
তাহলে তো পরিপূর্ণ দিন হতে আমরা কোটি কোটি মানুষ বঞ্চিত ,
তাহলে তো কোরান পরিপূর্ণ জীবন বিধান শুধু আরবের জন্য তাই না ???
তার মানে আল্লাহ্ ও তার রসুল সঠিক ও পরিপূর্ণ কথা বলে নাই ,
নাউজুবিল্লাহ ,
মানে আপনারা এখন গবেষণা করে দিনের পূর্ণতা বের করেছেন !
ভেবে খুব অবাক হই আল্লাহ্ ও তার রাসুল কুরআনে বা হাদিসে এত বড় গুনার কথা বলে নাই , যা আপনারা গবেষণা করে বের করেছেন ,
আপনারাতো মহানবী (সাঃ) হতেও সতর্ক এবং জ্ঞানী ,
তাই তো আপনারা সঠিক দিন পালনের দিক নির্দেশনা আবিষ্কার করে কোটি কোটি মুসলমানের কবিরা গুনা হতে মুক্তির দিক নির্দেশক ,
ভাই আপনারা যদি এত মূল্যবান গবেষণা না করতেন তবে তো আমরা সবাই জাহান্নামে জলতাম , আর এই বিষয়ে আল্লাহ্ বেখবর ,
নাউজুবিল্লাহ ,
“” তোমরা যা কর সে বিষয়ে আল্লাহ্কে বে খবর মনে করো না --- আলকুরআন ””
অথছ ১৪৩৫ বছর যাবত আল্লাহ্ বেখবর তাইতো আপনাদের এত গবেষণা করে বের করতে হল ,
নাউজুবিল্লাহ ,
আমি এই ভেবে অবাক হই যদের গবেষণায় আল্লাহও রাসুলের ভুল বা উদাসীনতা বের হয় ,
যাদের গবেষণায় কুরআনের আয়াতের অপূর্ণতা প্রকাশ পায় তারা কত বড় আলেমে দ্বীন !!!
তারতো রাসুলের চাইতেও বেশি উম্মতের বেপারে চিন্তাশীল,
নাউজুবিল্লাহ
চলবে ............
@ আল্লহর সন্তুষ্টি আপনার উপরের কথার ১টা প্রমান দিন ।
আপনি কি ১ম পর্ব থেকে ধারাবাহিকভাবে পড়েছেন । না পড়ে থাকলে পড়ার জন্য আন্তরিক অনুরোধ জানাচ্ছি ।
সম্পূর্ণ পর্ব মনযোগসহ পড়লে কুরআন, হাদিস, মাযহাব, ফেকাশাস্ত্রের এমনকি উল্লেখযোগ্য মুস্তাহিদ, মুহাদ্দীস, উলামায়ে কেরামদের.।.।.।.।.।.সাথে মিল পাবেন । ইনশা-আল্লাহ!
সত্যের লিখেছেন : ৫ম পর্যন্ত চলছে আপনাকে পড়ার আমন্ত্রণ এবং প্রত্যেক পর্বে মতামত জানানোর অনুরোধ রইল ।
*******
ইনশা আল্লাহ্
আমি সেই চেষ্টাই করব
মন্তব্য করতে লগইন করুন