বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ’র সকল ইবাদত একই দিনে (১ম পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন সত্যের ২২ মে, ২০১৪, ১১:১৫:০৩ সকাল
সকল প্রশংসা জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহ তা‘আলার জন্য, যিনি পরিপূর্ণ দ্বীন হিসাবে আমাদেরকে ইসলাম দান করেছেন, যে দ্বীনে মানুষের পক্ষ থেকে কোন সংযোজন বা বিয়োজনের প্রয়োজন হয় না ৷ সালাত ও সালাম তাঁরই রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি, যিনি আল্লাহর দ্বীনের রিসালাতের দায়িত্ব পূর্ণাঙ্গভাবে আদায় করেছেন, কোথাও কোন কার্পণ্য করেননি ৷ দ্বীন হিসাবে যা কিছু এসেছে তিনি তা উম্মতের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন ও নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করে গেছেন ৷ তার সাহাবায়ে কিরামের প্রতি আল্লাহর রাহমাত বর্ষিত হোক, যারা ছিলেন উম্মতে মুহাম্মাদীর আদর্শ ও আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহ পালনে সকলের চেয়ে অগ্রগামী ৷
পবিত্র কুরআনের সূরা তাওবার ৩৬ নং আয়াতে বলা হয়েছে-
“নিশ্চয় আল্লাহর বিধান ও গণনায় মাস ১২টি, আসমানগুলো ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে । তার মধ্যে চারটি সম্মানিত । এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান । সূতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না”
সূরা ইউনুসের ৫ম আয়াতে বলা হয়েছে-
“তিনি (আল্লাহ), যিনি সূর্যকে দীপ্তিমান এবং চন্দ্রকে আলোকময় বানিয়েছেন এবং ওর (গতির) জন্য মঞ্জিলসমূহ নির্ধারণ করেছেন যাতে তোমরা বছরসমূহের সংখ্যা হিসাব জানতে পার
পৃথিবীতে দিন বলতে (রাত্র+দিবা অথবা রাত্র+রাত্র) সময় ২৪ ঘন্টাকে বুঝানো হয় ।
কোন জনগোষ্ঠীর দিন শুরু হয় রাত্র ১২ টা হতে পরবর্তী রাত্র ১২ টা পর্যন্ত । তাদের মাস ফেব্রুয়ারী ব্যতিত সকল মাস ৩০ বা ৩১ দিনে, ১২ মাসে এক বছর এবং বছর ৩৬৫ বা ৩৬৬ দিনে হয় ।
বিশ্বের সকল মুসলিম উম্মার দিন শুরু হয় সূর্যাস্ত হতে পরবর্তী সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত । মাস ২৯ বা ৩০ দিনে, ১২ মাসে এক বছর এবং বছরের দিন নির্দিষ্ট নয় (কারন চাঁদের উদয়ের উপর নির্ভরশীল)
সূর্য পূর্ব দিকে উদিত হয় । সমগ্র বিশ্বে (সকল ধর্মে) সময় নির্ধারিত হয় সূর্যের সাথে সম্পর্ক করে । তাই পৃথিবীর পূর্ব হতে ক্রমান্বয়ে পশ্চিম দিকে সূর্যদ্বয় এবং সূর্যাস্তের সময়ের পার্থক্য দেখা যায় সর্বোচ্চ ১২ ঘন্টা ।
অতএব মুসলিমদের জন্য কোন দেশে রাত্র (দিন শুরু) আবার কোন দেশে দিবা (দিনের অর্ধাংশ) অর্থাৎ একই দিন ।
পাঁচ ওয়াক্ত নামায
নামাজের সময় পৃথিবী-সূর্যের আবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সময়ের পার্থক্যের সাথে সম্পৃক্ত । আল্লাহ তায়ালা বলেন:
‘নিশ্চয় নামাজ মুসলিমদের উপর ফরজ নির্ধারিত ও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে’ (সুরা-আন-নিসা: ১০৩)
আপনার পালন কর্তার সপ্রশংসা পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষনা করুন সূর্যদ্বয়ের পূর্বে সূর্যাস্তের পূর্বে এবং পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষনা করুন রাত্রির কিছু অংশ ও দিবা ভাগে (ত্বোয়া হাঃ আয়াত ১৩০)
অতএব তোমরা আল্লাহর পবিত্রতা স্বরণ কর সন্ধ্যায় ও সকালে এবং অপরাহ্নে ও মধ্যাহ্নে (আর রুমঃ আয়াত ১৭, ১৮)
আর দিনের দুই প্রান্তেই নামায ঠিক রাখবে এবং রাতে ও প্রান্ত ভাগে (হুদঃ আয়াত ১১৪)
সূর্য্য ঢলে পরার সময় থেকে রাত্রির অন্ধকার পর্যন্ত নামায কায়েম করুন (বণী ইসরাঈলঃ আয়াত ৭৮)
ফজরঃ-(সূর্য দ্বয়ের পূর্বে-ত্বোয়া-হা/১৩০; প্রান্ত ভাগে-হুদ/১১৪) সূর্যদ্বয়ের আগ পর্যন্ত । রাসুল (সঃ) ফজরের নামায এমন গালছে পড়তেন যে, নামায শেষে মুসল্লিরা একে অপরকে চিনতে পারতেন না (বুখারী, মুসলিম, মেশকাত ৬০ পৃঃ)
যোহরঃ-(মধ্যাহ্নে-রুম/১৭, ১৮; দিবা ভাগে-ত্বোয়া হা/১৩০) সূর্য মাথার উপর হেলে যাওয়ার পর হতে কোন কাঠি বা মানুষের ছায়া তার সমান দীর্ঘ না হওয়া পর্যন্ত (মুসলিম, আবু দাউদ, ইবনে মাযাহ, মেশকাত হাঃ নং ৫৮১)
আছরঃ-(অপরাহ্নে-রুম/১৭, ১৮) বস্তুর মুল ছায়া একগুন হওয়ার পর থেকে হলুদ রং হওয়া পর্যন্ত বাকি থাকে (মুসলিম, মেশকাত, হাঃ নং ৫৩৪)
মাগরীবঃ-(সূর্যাস্তের পূর্বে-ত্বোয়া হা/১৩০; সুর্য্য ঢলে পরার সময় থেকে… ইসরাঈল/৭৮) সূর্যাস্তের পর থেকে পশ্চিম আকাশে লাল আভা দূর না হওয়া পর্যন্ত থাকে (বুখারী, মুসলিম, মেশকাত ৫০ পৃঃ)
এশাঃ-(রাত্রির কিছু অংশ-ত্বোয়া হা/১৩০; রাতে-হুদ/১১৪) মাগরীবের পর হতে অর্ধ রাত্র পর্যন্ত (মুসলিম, মেশকাত ৫৯ পৃঃ)
জুমআঃ-প্রতি শুক্রবার যোহর নামাজের ওয়াক্তে । সাহাবী সাহল বিন সাআদ (রাযিঃ) বলেন, আমরা জুমুআর নামাজের আগে দুপুরের বিশ্রামও করতাম না এবং দুপুরের খাবারও খেতাম না বরং পরে করতাম (বুখারী মুসলিম, মেশকাত আলবানী ১/৪৪১ পৃঃ)
উপরের আল্লাহর বাণী এবং হাদিসের আলোকে দেখা যায় আমরা বিশ্বের সকল মুসলিমরা একই দিনে সূর্যের সাথে সম্পর্ক করে (শরিয়া অনুযায়ী) ভিন্ন ভিন্ন সময়ে নামায আদায় করি ।
এছাড়া কিছু কিছু এলাকাতে (মেরু এলাকাতে) ৬ মাস দিন এবং ৬ মাস রাত হয় । নরওয়েতে কখনই রাত বা সন্ধ্যা হয়না এবং ইউরোপের কয়েয়কটি দেশে কখনও কখনও দিন ২৩ ঘন্টা পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হয়ে থাকে।
তাদের বলা হয়েছে-
পার্শ্ববর্তী দেশের সময়ের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে দিনের বেলায় সেহেরি খাবে, দিনের বেলায় ইফতার করবে । আবার যখন ৬ মাস রাত্রি তখন রাতে সেহেরি খাবে আবার রাতেই ইফতার করবে । নামাজ আদায়ের জন্যও একই নির্দেশ (বুখারি)
যাকাত
পবিত্র কুরআন বলে-তোমাদের বন্ধুতো একমাত্র আল্লাহ তাঁর রাসুল এবং মুমিন বান্দা যারা নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং বিনম্র (সুরা মায়েদার আয়াত ৫৫)
যাকাতের কোন সমষ্টিগত নির্ধারিত কোন সময় দিন নেই । এটা যার যার ব্যক্তিগত সময় দিন সম্পদের উপর নির্ধারিত । যে দিন হতে কোন ব্যক্তি নিসাব পরিমান (৫২.৫০ তোলা খাঁটি রুপা বা ৭.৫০ তোলা খাঁটি সোনা বা রুপা/সোনার যে কোন একটির নিসাব পরিমান নগদ টাকা ইত্যাদি)সম্পদের মালিক হবে তার পরবর্তী এক বছরের মধ্যে শতকরা২.৫% হারে যাকাত দিতে হবে (বুখারী হাদিস নং ১৩৮৮) ।
এটা এক এক জনের বছরের যে কোন দিন হতে পারে ।
চাঁদের উদয়ের উপর নির্ভরশীল ইবাদতঃ-
(চলবে)
২য় পর্ব
http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/6753/soter/46177 (plz click & read)
বিষয়: বিবিধ
২৩৬৭ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
দেখাযাক কি হয়?
http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/6753/soter/48447 (প্লিজ ক্লিক )
মন্তব্য করতে লগইন করুন