জীবন যেখানে যেমন
লিখেছেন লিখেছেন Mujahid Billah ০৭ মে, ২০১৭, ১২:৫৬:২৩ রাত
গতকাল রাত ১১ টার দিকে বাসায় ফিরছিলাম, বাস থেকে নামার পর একটু সামনে এগুতেই দেখি এক ৮০-৯০ বছরের বৃদ্ধা ওয়াকার নিয়ে হাটছে। যেটা দেখে মনটা খারাপ লাগছিলো মহিলাটির মাথা নুয়ে পড়েছিলো ঠিক হাটের কাছে পুরো বাকা হয়ে অত রাতে একলা রাস্তায় যাচ্ছে কোথায় যেন, ভাবছিলাম কি জীবন?? আজ আবার যখন বাসায় ফিরছিলাম রাত সাড়ে ১০ টা বাজে, ঠিক একই রাস্তায় আবার সেই বৃদ্ধা ঠিক একইভাবে শরীর পুরো ৯০ ডিগ্রি বেকে হেটে হেটে সামনে এগুচ্ছে। আজ দেখে অন্যরকম মনে হলো, যে জীবন এখানে এমনি, সবাই নিজের পায়ে চলাকেই হয়ত সন্মানজনক মনে করে। এখানেই সবাই জীবনকে এভাবেই মেনে নিয়েছে। তাই হয়ত বৃদ্ধাশ্রমে গিয়েও হয়ত অনেকের মনেহয় এটাই স্বাভাবিক। আমি আগে যে ল্যাবে থিসিস করছিলাম, ওখানে এক মিশরীয় ভদ্রলোক ছিলেন, উনার এক ছেলে। ছেলের যখন বিয়ে হলো তখন ছেলে আলাদা বাসায় উঠলো। ওকে জিজ্ঞেস করছিলাম, তোমার তো একটাই ছেলে বড় বাসায় একসাথে থাকলেই তো পারো, তোমাদের দেখাশোনার জন্য ভালো হতো।
ও তখন জবাব দিয়েছিলো, সে এখন বড় হয়েছে তার আলাদা বাসায় থাকাটাই স্বাভাবিক।
জীবন এক রকম হলেও, জীবনের উপাদান গুলো ভিন্ন। জীবনের রং, জীবনের এই ঘটনাগুলো এমনই কোথাও যেটি স্বাভাবিক ঠিক সেটি ই অন্য কোথাও অস্বাভাবিক। জীবনের সংজ্ঞাও তাই মানুষভেদে, শ্রেনী ভেদে ভিন্ন রকম।
জীবনের বাহ্যিকতা দেখে অনেক সময় মুগ্ধ হয়ে পড়ে, বাস্তবতা হলো জীবনের ভালো-মন্দ রূপ দুটি সব খানেই বিদ্যমান।
জীবন ধারনের উপকরন গুলোর সহজলভ্যতার হয়ত পার্থক্য থাকে, শারীরিক পুষ্টির অভাব জায়গা ভেদে ভিন্ন থাকতে পারে তবে মানসিক পুষ্টির অভাবটা কমবেশি সব খানেই বিদ্যমান।
আমরা শারীরিক পুষ্টির জন্য যুদ্ধ করলেও মানসিক পুষ্টির জন্য সামান্য কষ্ট করতেও প্রস্তুত নই, তাই সম্পদ ভরা এই দুনিয়ায় বড় বড় অট্টলিকা, বিশাল বিশাল বাগান তৈরী হলেও শান্তিময় সমাজ বিনির্মান তাই এখনো অধরা।
সুন্দর সমাজ, সুন্দর পৃথিবীর জন্য দরকার সুন্দর মানসিক সৌন্দর্য্যের মানুষ। সবার মন সৃষ্টিকর্তার দেয়া রংয়ে রঞ্জিত হোক এই কামনা করি।
বিষয়: বিবিধ
৯০৮ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
খুব দামি কথা বলেছেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন