নূরানি কায়দা থেকে বুখারী শরীফ !!
লিখেছেন লিখেছেন Mujahid Billah ২৭ এপ্রিল, ২০১৭, ০৯:০৫:৫৮ রাত
নূরানি কায়দা থেকে বুখারী শরীফ
তখন আমি খুব ছোট। ঠিক মত বুঝতেও শিখিনি সব কিছু।কথা বলার সময়ও মাঝে মাঝে আটকে যায় মুখে।সকালবেলা রেহাল হাতে বাবার সাথে মক্তবের দিকে ছুটতেও পায়ে পা মিলিয়ে হাঁটতে পারিনা।বারবার পিছনে পড়ে যাই।আবার বেশ খানিকটা দৌড়ে গিয়ে ধরতে হয় বাবাকে।
.
এভাবেই শুরু হয়েছিল ইলমে ওহী শেখার প্রথম দিনটি।আলিফ যবর 'আ' বা যবর 'বা' এর ধ্বনি দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলাম সেই দিনের। এরপর সেই সূচনার শুরু থেকে চলতে চলতে কেটে গেল অনেকটা সময়।এক বছর দু বছর করে করে কেটে গেল প্রায় বার চৌদ্দটি বছর।পুরো সময়ের সমষ্টির দিকে তাকালে মনে হয় কত দীর্ঘ সময়,অথচ সৃতির পাতায় - এই তো সেদিন !
.
শুধু যে বছর আর সময়ের পরিবর্তন ঘটে গেছে এই দীর্ঘ সময়ে তা না, পরিবর্তন হয়েছে আরো অনেক কিছুর।সেই ছোট বালক আমি তো তখন কিছুই পারতাম না। নূরানি কায়দার পেছনের পৃষ্ঠাগুলো উল্টালেও তো কত কঠিন মনে হত লেখাগুলি। ভাবতাম এত কঠিন পড়াগুলো মানুষ কিভাবে শেখে? অথচ সময়ের ব্যবধানে সেই কঠিন বিষয়গুলোও আজ কত সহজ হয়ে ধরা দিয়েছে আমার কাছে।
কতগুলো বিষয় পড়ে ফেললাম এই সময়টার ভেতরে! উর্দু,ফারসি,আরবি, নাহু, ছরফ,বালাগাত, সাহিত্য, আদব,মানতেক, ফিকাহ,উসূল,তাফসীর সর্বশেষ- ক্বালা রাসূলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামে ধ্বনি দিয়ে হাদীসে নববীর শেষ পরযন্ত কত বিসৃত সময় ধরে ইলমে ওহীর ছায়াতলে কাটালাম।কিন্তু চোখ বন্ধ করে সেই ছোট্ট আমি'র দিকে তাকালে বিশ্বাসই হতে চায়না যে সেই ছোট্ট বাচ্চাটি আজ এতকিছু শিখে ফেলেছ ! তখন ভেতর আওয়াজ আসে ----
আরে,,, এগুলো তো তুই নিজের যোহ্যতাবলে শিখতে পারিসনি রে গাঁধা । কেউ একজন শিখিয়েছে তোকে,,,,!
তখন দু চোখ বন্ধ হয়ে আসে।মনের গহীন থেকে শুকরিয়া জেগে ওঠে সেই রবের প্রতি যিনি নিজ কুদরত দিয়ে এই পরযন্ত পৌঁছে দিয়েছেন আমাকে রাহনুমায়ি করে।মাথা ঝুকে যায় তাঁর দরবারে।মিশে যেতে ইচ্ছে করে তার শুকরিয়া আদায়ার্থে তাঁর নূরের মাঝে।কিন্তু তাঁর কৃতজ্ঞতা আদায় করা কি তবুও কখনো সম্ভব? সম্ভব কি কখনো তাঁর শুকরিয়া আদায় করা....?
.
মালিক, আপনি আমাকে মাফ করে দিন
বিদায়ী ক্লাস ২৬/০৪/২০১৭ ঈঃ
বিষয়: বিবিধ
১২১৮ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন