'ব' তে বাংলাদেশ, 'ব' তে বাঙ্গালী
লিখেছেন লিখেছেন Mujahid Billah ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০২:২৫:২৯ রাত
বাংলাদেশ। একটি ইতিহাসের ফসল।
১৯৭১ একটি ইতিহাস, সেই অমর ইতিহাস অতঃপর আমরা পেয়েছি চির সবুজ পবিত্র জন্মভূমি।
আমি আমাদের প্রাণের স্বদেশের কথা বলছি।
আজ থেকে ৪২বছর আগে পরাধীনতার কবল থেকে মুক্ত হয়ে বাংলাদেশের জন্ম। এই দেশ এখন যেন ৪২ বছরের তরুণ। এই ৪২ বছরেই অনেক বদলে গেছে আমাদের দেশ।
আমরা স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি। আমাদের দেখা স্বপ্নই আমাদের আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।
স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণ হয়েছিল ৩০ লক্ষ তাজা প্রাণের সাগর লাল রক্তের বিনিময়ে। আজ আমরা এ দেশের গর্বিত নাগরিক। সামনে আসছে সুদিন। বাংলার জয়গান আজ বিশ্বময়, সে গানের সুর আমাদের কণ্ঠে আজ গর্ব নিয়ে ধ্বনিত। বিশ্বের দরবারে আমরা আজ প্রশংসিত।
আমাদের দেখা স্বপ্ন প্রবাহিত হবে আমাদের আগামীতে।
আচ্ছা, এ দেশে জন্মগ্রহণ করে আমাদের গর্বের শেষ নেই, তবে দেশকে আমরা কতটুকু গর্বিত করতে পারছি? দেশের কাছ থেকে তো আমরা শুধু নিয়েই যাচ্ছি, দিচ্ছি কতটুকু? “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি”- তবে কতটুকু ? শুধু গান গেয়েই কি দেশের প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করা যায়? ২৬শে মার্চ বা ১৬ই ডিসেম্বর আসলেই শহীদদের অর্জন ও আত্মত্যাগের মহিমায় আমরা আবেগাপ্লুত হই। ২১শে ফেব্রুয়ারি ভোরবেলা নগ্ন পায়ে রাস্তায় নেমে পড়ি। “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্র“য়ারী... আমি কি ভুলিতে পারি?” এই গানটি গেয়ে অমর ভাষা শহীদদের স্মরণ করি। কিন্তু দিনটি ২২শে ফেব্রুয়ারিতে পরিণত হয়ে গেলেই সেই চিরাচরিত জীবন-যাপনে ফিরে যাই। অন্তর থেকে থেকে ভাষা শহীদদের কতবার স্মরণ করি? গুণে বলা যাবে নিশ্চয়ই! ভাষা দিবস চলে গেলেই আমাদের মুখে বাংলার চেয়ে বেশি ইংরেজি আর হিন্দীই বেশি ঠাই পায়। এটাই কি আমাদের মাতৃভাষার প্রতি মমত্ববোধ? পহেলা বৈশাখ আসলেই দেশের সংস্কৃতি রক্ষার তাগিদে লাল-সাদা শাড়ি, পাঞ্জাবি ইত্যাদি পড়ে, পান্তা-ইলিশ খেয়ে নিজেদের ধন্য মনে করি। পরদিনই নিজের স্বকীয়তাকে জলাঞ্জলি দিয়ে পশ্চিমাদের অনুকরণে নিজেকে সাঁজাই। ইংরেজি মুভি, হিন্দী সিরিয়াল দেখে ঘণ্টার ঘণ্টা কাটিয়ে দিলেও মেধাবী বাংলাদেশিদের নির্মিত মানসম্মত নাটক, ছবি দেখতে আমাদের রুচিতে বাঁধে। এটাই কি আমাদের সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা? আমরা এভাবে প্রতিনিয়ত দেশকে নিলামে তুলছি আর দেশবিক্রির মূল্য দিয়ে নিজের তথাকথিত লোকদেখালো মূল্য বৃদ্ধি করছি। এখন সময় এসেছে দেশকে তার প্রাপ্য মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার। আমাদের এই প্রজন্মই পারে দেশের সেই মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে। দেশের স্বাধীনতা, দেশের ভাষা, দেশের সংস্কৃতি রক্ষার জন্য আমাদের সবাইকে একত্রে এগিয়ে আসতে হবে। অন্যকে অনুকরণের নামে গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিলে কিছু তো পাওয়া যাবেই না, বরং নিজের স্বকীয়তাটিকেও হারাতে হবে। কেন আমরা অন্যের ভাষা, অন্যের সংস্কৃতি, অন্যের শিল্প-সাহিত্যকে বরণ করব, যেখানে আমাদেরই এই ভান্ডারগুলো স্বয়ংসম্পূর্ণ? আমরা যদি আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতিতে মনোনিবেশ করি, তবে বাংলাদেশ যে পৃথিবীর বুকে কতটা মর্যাদার স্থান দখল করবে, সেটা আমাদের কল্পনাতীত। তাই আর অপেক্ষা না করে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশের জন্য কাজে নেমে পড়তে হবে। অন্যথায় অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ নামের দেশটির কোনো আলাদা সংস্কৃতি খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর হয়ে পড়বে।
চলুন বদলে দেই বাংলাদেশ। সুন্দর করি আমাদের আগামী। আপনি, আমি, আমরা সবাই মিলে। এই স্বদেশ আমাদের। মানসিকতার উন্নয়ন এনে দিবে আমাদের সফলতা। আমাদের উচিত সোচ্চার হওয়া, দেশকে নিয়ে ভাবা। আগামীর অনাগতদের মুখে কথার খই ফুটুক, 'ব' তে বাংলাদেশ, 'ব' তে বাঙ্গালী।
বিষয়: বিবিধ
১১৮৩ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন