কল্পণা করুন, আপনার আপন বোনকে যদি তা করা হতো_ ফাতিমা…!
লিখেছেন লিখেছেন Mujahid Billah ০৯ জানুয়ারি, ২০১৪, ১১:২৮:০১ রাত
সে ছিলো ভীষণ লাজুক। কৈশোর সবে পেরিয়েছে। ঘর
থেকে একা বেরুত না। ঘর-কন্যার সামান্য ব্যাপারেই
লজ্জায় মায়ের কোলে মাথা গুঁজে দিত। বাবা আর ভাই
ছাড়া কোন পুরুষ মানুষকে সে ভালো করে জানতো না। তার
বয়স এমন হয়ে গিয়েছিল যে, বাবার আদর আর ভাইয়ের
প্রশ্রয় ছাড়াও স্বামী ব্যাপারটি সম্পর্কেও
সে জেনে ফেলেছিল আর মনে মনে নিজেকে প্রস্তুত
করছিল। বাবা-মা আর ভাইটি তাকে তাদের জীবনের চেয়েও
বেশী ভালোবাসতো। আজন্মা লাজুক এ মেয়েটির জন্য
তারা ভালো একটি ছেলে খুঁজছিলো। কন্যা আর বোনের
আসন্ন বিদায়ের বেদনায় নিকষ কালো রাতে সবার
অজান্তে বাবা আর ভাইটি গোপনে অশ্রু ঝরাতো……
{ফাতিমার ঘরের বাইরেও প্রচন্ড শব্দ হতো, এবং প্রায়
প্রতিদিনই। শব্দগুলো ছিলো বোমা আর বুলেটের। তার
বাসাটা ছিলো বাগদাদে }
সে রাতটিও ছিলো নিকষ কালো রাত। বোনটি স্বামীর
ঘরে চলে যাবে এটা ভেবেই ভাইটির চোখ বেয়ে নিরব
অশ্রুপাত হচ্ছিলো। বাসার বাইরে কি কোন শব্দ হলো?
গাড়ী থামার শব্দ? গুলি আর বোমার ভেতরে তাদের বসবাস,
কিন্তু এটা তো অন্য শব্দ। এবার বাসার বাইরে থেকেই
গুলির শব্দ পাওয়া গেলো। ফাতিমাদের ছোট্ট এই
পরিবারের সবাই জেগে উঠলো। চোখের
পলকে দরজা ভেঙে গেলো আর হুড়মুড়
করে ঘরে ধুকে পড়লো একদল আমেরিকান সেনা। ফাতিমার
পরিবারের অন্যদের কি অবস্থা হয়েছিল তা জানা যায়নি,
তবে তার বাবা-মা-ভাইটি এমন
ছিলোনা যে তারা বেঁচে থাকতে ফাতিমাকে উঠিয়ে নিয়ে যেতে
বে। যে ফাতিমা বাবা বা ভাইকে ছাড়া একা কোথাও সফর
করেনি, সেই ফাতিমাকে নিয়েই আমেরিকান
হামফ্রে জিপটি রাতের বোমার আওয়াজ
ছাপিয়ে এগিয়ে চলল আবু গারিব কারাগারের দিকে।
আহ, ফাতিমা…!!!
সে কি আমার আপনার বোনটি নয়? কি করা হলো তার
সাথে?
একদিন, দুদিন, তিনদিন… সময় চলে যায় কিন্তু তার কোন
খবর আসেনা। তবে কি তার ভাগ্যে তাই
হলো যা আরো অসংখ্য বোনের হয়েছিলো, যারা চিরতরেই
হারিয়ে গিয়েছিলো সবার কাছ থেকে?
কয়েকদিন পর একটি গোপন চিঠি এলো আবু গারিব
থেকে… এতো ফাতিমার চিঠি!!! কি লিখেছে সে???
আসুন দেখি……………
[{( "বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয়
চাইছি। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু
করছি- ক্বুল হু ওয়াল্লাহু আহাদ (বল আল্লাহ এক),
আল্লাহুস সমাদ (আল্লাহ অমুখাপেক্ষী), লাম ইয়ালিদ
(তিনি কাউকে জন্ম দেননি), ওয়ালাম ইউলাদ
(না তাঁকে কেউ জন্ম দিয়েছে), ওয়ালাম ইয়া কুল্লাহু
কুফুওয়ান আহাদ (তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই) –
[সুরা ইখলাসঃ ১-৪]
আমি শুরুতে এই সুরার উদ্ধৃতি দিলাম,
কেননা আমি মনে করি মহান আল্লাহর পরিচয় তুলে ধরার
জন্য এই সুরাটিই সবচেয়ে ভালো, আর মুমিনদের
অন্তরে এই সুরাটি দৃঢ়ভাবে গেঁথে আছে।
আল্লাহর পথে লড়াইরত আমার ইরাকী মুজাহিদ ভাইয়েরা,
আপনাদের কাছে আমার কিইবা বলার আছে? শুধু এতটুকুই
বলি, আমার মতো এমন অসংখ্য ইরাকী বোনের
গর্ভে এখন মার্কিন সেনারূপী পশুদের বাচ্চা। এরা আমদের
অসংখ্যবার ধর্ষণ করেছে। তারা আমাদের শরীরকে নষ্ট
করে দিয়েছে, আমাদের মুখে থুথু ফেলেছে আর
যে কুরআনকে আমরা গলায় ঝুলিয়ে রাখি,
সে কুরআনকে তারা ছিঁড়ে ফেলেছে। আল্লাহু আকবার,
আল্লাহু আকবার।
আপনারা কি আমাদের অবস্থা উপলব্ধি করতে পারছেন না?
আপনারা কি এখানকার অবস্থা সম্পর্কে জাননে না?
আমরা আপনাদের মুসলিম বোন, আমরা আপনাদের মুসলিম
বোন। আল্লাহ কাল এ ব্যাপারে আপনাদের কাছ
থেকে হিসাব নেবেন!
আল্লাহর শপথ, আমরা এমন কোন রাত কাটাইনি,
যে রাতে পশুরূপী মার্কন সেনারা আমাদেরকে ধর্ষণ করার
জন্য আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েনি। আমরা হচ্ছি তারা,
যারা আল্লাহর ভয়ে নিজেদের
সতীত্বকে রক্ষা করে চলতাম!
আল্লাহকে ভয় করুন! ও ভাই, আল্লাহকে ভয় করুন!
আমাদের সহ তাদেরকে মেরে ফেলুন। আমাদের সহ
তাদেরকে ধ্বংস করে ফেলুন। আমাদের
এখানে এভাবে ফেলে রাখবেন না। আমাদের
এখানে এভাবে ফেলে রাখবেন না, যাতে তারা আমাদের
ধর্ষণ করে আনন্দে থাকতে পারে। এটা আপনাদের জন্য
আল্লাহর সান্নিধ্য পাবার একটা পথ হবে! আমাদের
ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করুন। মার্কিনদের ট্যাংক ও
বিমানকে উপেক্ষা করুন। আবু গারিবে আমাদের
কাছে আসুন। আবু গারিবে বন্দীদের কাছে আসুন।
আমি আপনাদের মুসলিম বোন ফাতিমা। আমি আপনাদের
মুসলিম বোন ফাতিমা। একদিন তারা আমাকে নয়বারেরও
বেশী ধর্ষণ করেছে। নয়বারেরও বেশী………………
আপনারা কি উপলব্ধি করতে পারেন না? ও ভাই,
আপনারা কি উপলব্ধি করতে পারেন না?
কল্পণা করুন, আপনার আপন
বোনকে যদি তা করা হতো………!!!
আপনারা কেন আমাকে বোন হিসাবে নিচ্ছেন না?
আমি আপনাদের বোন, আপনারা কেন আমাকে বোন
হিসাবে নিচ্ছেন না?
আমার মত এখানে আরো তেরোজন মেয়ে আছে, সবাই
অবিবাহিতা। সবাইকেই প্রত্যেকের সামনে ধর্ষণ
করা হয়েছে। তারা আমাদেরকে নামাজ পড়তে দেয় না।
তারা আমাদের কাপড় কেড়ে নিয়েছে এবং আমাদের পোষাক
পড়তে দেয় না!
আমি যখন এই চিঠি লিখছি, তখন
একটি মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। তাকে বর্বরভাবে ধর্ষণ
করা হয়েছিলো। একজন সৈন্য তাকে ধর্ষণ করার পর তার
বুক ও উরুতে আঘাত করে। সেই
সৈন্যটি তাকে অবিশ্বাস্যভাবে নির্যাতন করে।
মেয়েটি এরপর দেয়ালের সাথে মাথা ঠুকতে শুরু করে।
দেয়ালের সাথে মাথা ঠুকতে থাকে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত……… সে আর সহ্য
করতে পারছিলো না!
যদিও আত্মহত্যা করা ইসলামে হারাম,
আমি তাকে ক্ষমা করে দিয়েছি, আমি আশা করি আল্লাহও
তাকে ক্ষমা করে দেবেন কারণ তিনি হলেন সর্বোত্তম
ক্ষমাশীল!
মুসলিম ভাইয়েরা, আমি আপনাদের আবার বলি-
আল্লাহকে ভয় করুন। আমাদের সহ তাদের মেরে ফেলুন
যাতে আমরা শান্তি পেতে পারি…
আবু গারিব কারাগার থেকে আপনাদের বোন ফাতিমা…!”)}]
পরিশিষ্টঃ
ফাতিমার চিঠি পাবার পর প্রায় একশ মুজাহিদ আবু গারিব
কারাগারে হামলা চালায়। সামান্য রসদের এই অসামান্য
দলটি আমেরিকান সেনাদের হাই ভোল্টেজ
সিকিউরিটি সত্ত্বেও কারাগারের একটি দেয়াল
ধ্বসিয়ে দিতে সক্ষম হয়। ইরাকী মুসলিম মুজাহিদদের
একটি ওয়েব সাইটে ফাতিমার চিঠির জবাব
দেয়া হয়েছে এভাবে- “দুঃখিত বোন, আমরা সত্যিকার
অর্থে মানুষই নই। সত্যিই যদি মানুষ হতাম তাহলে তোমার
চিঠি পাবার পর আবু গারিব কারাগার ধুলায় মিশিয়ে দিতাম।
বিষয়: বিবিধ
১৮০৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন