সাবধান! সাবধান!! সাবধান!!! মাহে রমজান সমাগত
লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ_২ ১৭ জুন, ২০১৫, ০৭:২৫:৩৬ সকাল
আউযু বিল্লাহি মিনাশ্ শাইত্বানির রাজীম
বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহীম
সাবধান! সাবধান!! সাবধান!!!
মাহে রমজান সমাগত
যারা রমজান মাসে নাযিলকৃত ক্বোরআনের নির্দেশাবলীকে মানব সমাজে বর্ণনা না করে, অর্থাৎ গোপন করে, অনুষ্ঠান সর্বস্ব বাৎসরিক পার্বণরুপে রোজার উপবাস করে ও ঈদের উৎসব করে , তারা ভূপৃষ্ঠে নিকৃষ্টতম অভিশপ্ত জাত । প্রমাণ:
إِنَّ الَّذِينَ يَكْتُمُونَ مَا أَنزَلْنَا مِنَ الْبَيِّنَاتِ وَالْهُدَىٰ مِن بَعْدِ مَا بَيَّنَّاهُ لِلنَّاسِ فِي الْكِتَابِ ۙ أُولَٰئِكَ يَلْعَنُهُمُ اللَّهُ وَيَلْعَنُهُمُ اللَّاعِنُونَ
আল্লাহ বলেন: “ আমি গোটা মানব জাতির পথ নির্দেশ রুপে দ্ব্যর্থহীন ভাবে যা’ আল কোরআনে নাযিল করেছি , তাকে যারাই গোপন করে , তাদের সকলকে আমি আল্লাহ স্বয়ং এবং আমার সাথে আমার সৃষ্ট সকল অভিসম্পাতকারী অবশ্যই অভিসম্পাত করে ।” (বাক্বারা-১৫৯)
রমজান মাস রহমত , গুনাহ্ মাফ্ ও জাহান্নাম হতে মুক্তির মাস ।।
রমজান মাস অভিশাপ , লা’নত্ ও আল্লাহর গজবের মাস।।
রহমতের মাস তাদের জন্য-যারাঃ-
আল্লাহর বাণীতে বিশ্বাস স্থাপন করে যে, شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِّنَ الْهُدَىٰ وَالْفُرْقَانِ
* এই সেই রমজান মাস , যে মাসে কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে মানুষ মাত্রের পথ নির্দেশনার জন্য , যাতে সবিস্তার হেদায়াত রয়েছে , যা ন্যায় অন্যায় যাচাইয়ের কষ্টিপাথর।”
* আল্লাহর নির্দেশ ও রাসূল(সা এর আমল অনুযায়ী সাধনা করবে ।
* কুরআন শিখবে ও শিখাবে , অর্থ বুঝে আমল করবে ।
* না বুঝে কুরআন খতমের প্রচলন ত্যাগ করে পরিবার ও সমাজে ক্বোরআন বুঝে পড়ার প্রচলন করবে ।
* ব্যবসায়ী হলে রমজান মাসে জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধি করবে না।
* জনসাধারণ হলে রমজান মাসে কম খেয়ে বেশী এবাদতের দ্বারা সংযমের অনুশীলন করবে ।
* বেশী খেয়ে দ্রব্যমূল্য বাড়ানোর কারণ হবে না। “রমজান মাসে খাওয়ার হিসাব হয় না” এ কথা ভুল এবং এটা ধর্ম ব্যবসায়ী পরভুক শ্রেনীর বানোয়াট ।
* অফিস আদালতে রোজার মাসে বেশী খাওয়া ও ঈদের জন্য ঘুষ খাবে না ।
* হালাল খেয়ে রোজা থাকবে এবং হালাল দিয়ে ইফ্তার করবে ।
* না বুঝে “তাড়াহুড়ার তারাবী” ত্যাগ করে মধ্যরাতের পর উঠে কুরআন বুঝে পড়ে আল্লাহর সামনে সালাত বা নামাজে দাঁড়াবে , যেমন আখেরী নবী (সঃ) করতেন।
* মেয়েরা বে-পর্দা হাটে-বাজারে না ঘুরে বাড়িতে বসে কুরআন শিক্ষা ও সিয়াম সাধনায় রমজান মাস কাটাবে।
* রমজান মাসে যে সমস্ত নারী বাড়তি আয়ের জন্য স্বামীদের ঘুষ ও হারাম উপার্জন থেকে বিরত রাখবে।
* পিতা-মাতারা রমজান মাসে কুরআন শিক্ষার মাধ্যমে সন্তানদের চরিত্র গঠনের বিশেষ উদ্যোগ নিবে।
* বে-রোজদারদের ‘ইফ্তার পার্টি’তে কোন পরিস্থিতিতেই যোগ দিবে না।
* যে সমস্ত আলেম রোজার মাসে যাকাত, ফেতরার ভিক্ষায় না নেমে বিনা পারিশ্রমিকে জনগনকে রমজান ও কুরআনের শিক্ষাদানের এবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য কামনা করবে।
* সাধ্য মতো জাতি ধর্ম নির্বিশেষে গরীব মিসকিনদের হালাল মালের যাকাত সদ্ক্বাদানে সাহায্য করবে। হারাম মালের যাকাত সদ্ক্বা হয় না।
* সিয়াম সাধনার মাধ্যমে বিগত বছরের পাপ থেকে খাঁটি তওবা করে আগামী এগারো মাস পাপমুক্ত জীবন যাপনের শপথ নিবে।
* অর্থবহ সিয়াম সাধনার মাধ্যমে “শবেক্বদরের” অন্বেষা এবং এ’তেকাফের অনুশীলন করে আত্মশুদ্ধির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে এবং
* সবশেষে আল্লাহর শুকুরের জন্য রমজান পালনকারীদের সাথে এক কাতার হয়ে ঈদের নামাযান্তে ঈদের আনন্দ উদযাপন করবে। একমাত্র এদের জন্যই “খুশীর ঈদ”
গজব ও লা’নতের মাস তাদের জন্য-যারাঃ
# রোজার মাসকে লোক দেখানো ‘মুসলমান’ নামধারী সম্প্র্রদায়ের “ঐচ্ছিক উপবাসের” মাস হিসেবে গন্য করে। কুরআনের শিক্ষা, দীক্ষা ও কর্মসূচী বাস্তবায়নের অঙ্গীকার পালন না করে নিরর্থক তারাবী ও কুরআন খতমের প্রহসন করে।
# যে সমস্ত ধর্ম ব্যবসায়ী আলেম রমজান মাসে স্বীয় এবাদত না করে যাকাত ফেত্রার জন্য ফাসেক-ফাজেরদের দুয়ারে দুয়ারে ধর্ণা দেয়।
# যে সমস্ত ধর্ম ব্যবসায়ী বৈধ-অবৈধ নির্বিশেষে বিত্তবানদের নিকট কুরআন খতম ও সওয়াব বিক্রী করবে এবং তাদের ইফতার পার্টিতে যোগ দিবে।
# যে সমস্ত রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা কুরআনকে আল্লাহর দেয়া একমাত্র জীবন বিধান না মেনে জনগনের পয়সায় ইফতার পার্টি, ঈদের জামাত ও ঈদ পুনর্মিলনীর আয়োজন করে।
# যে সমস্ত রাজনৈতিক দল ও অরাজনৈতিক সংগঠন ইসলাম ও কুরআনে ঈমান রাখে না, রোজাও পালন করে না, অথচ রাজনৈতিক ও সামাজিক উদ্দেশ্যে জনগণকে প্রতারণার জন্য ইফতার পার্টি ও ঈদ পুনর্মিলনী করে।
# যে সমস্ত ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফাখোরীর জন্য দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি করে।
# যারা সংযমের মাসে অতিভোজের দ্বারা বাজারে পণ্যের চাহিদা বাড়ায় ও মূল্য বৃদ্ধির কারণ হয়।
# যে সমস্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ঈদ ও ভোগের জন্য অফিস আদালতে ঘুষের জন্য ফাইল আটকায়।
# যে সমস্ত মেয়েরা শাড়ি ও ঈদের পোশাকের জন্য পরিবার প্রধানদের অবৈধ উপার্জনে বাধ্য করে।
# যে সমস্ত মেয়েরা রোজার মাসে হাটে-বাজারে বেপর্দা হয়ে উদোম মাংস দেখিয়ে কেনাকাটা করতে বের হয়।
# যে সমস্ত নর-নারী মাহে রমজানের সিয়াম সাধনায় বিশ্বাসী নয়, পালনও করে না, অথচ ইফ্তার এবং ঈদের ভোগ ও আনন্দের প্রহসন করে।
# যে সমস্ত ধনী হালাল হারাম নির্বিচারে অর্থোপার্জন করে রোজার মাসে কুরআন খতম ও দোয়ার মজলিস করে এবং জেয়াফত ও যাকাতের কাপড় বন্টনের “শো” করে। কারণ, হারাম পথে অর্জিত সম্পদের মালিকানা হয় না, তাই তার দান-খয়রাতও অবৈধ।
# যে সমস্ত প্রচার মাধ্যম, বেতার, টেলিভিশন, সংবাদপত্র ও সিনেমা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের মালিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা প্রত্যেক্ষ বা পরোক্ষভাবে অশ্লীলতা প্রচারে লিপ্ত থাকে।
# যে সমস্ত লোকেরা ফরজ নামায পড়ে না, ফরজ রোজা রাখে না এবং কুরআন পাকের বিধি নিষেধ মানে না, অথচ ঈদের বাজারে ভীড় জমায় এবং ঈদের জামাতে প্রথম সারিতে প্রচার মাধ্যমের ক্যামেরার সামনে উপস্থিত হয়।
# সবার ঊর্ধ্বে ঐ সমস্ত আলেম ও খতীবদের উপর আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতারা ও পবিত্র আত্মাদের লা’নত ও ধিক্কার, যারা মাহে রমজানের নাযিলকৃত আল্-কুরআনের অমান্যকারী শাসক ও জনগোষ্ঠির ঈদের জামাতের ইমামতি করে, অথচ, নবী (সঃ)-এর নির্দেশ মতো ঘোষনা করে না-“যারা যথার্থ রমজান পালন করেনি, তারা আমাদের ঈদগাহর কাছেও ঘেঁষবে না। আজ যারা নতুন নতুন পোষাক পরে এসেছো, তাদের জন্য ঈদ নয়। তাঁদের জন্য আজ অভিসম্পাত। যারা সিয়াম সাধনায় উত্তীর্ণ, একমাত্র আজ তাদের জন্য ঈদ”।
হে ঈমানদার নর-নারী ! বিশ্বময় নারী পুরুষের স্বেচ্ছাচারিতার ফলে বিপন্ন মানবজাতির মুক্তি ও তার নেতৃত্ব দানের জন্য আগত মাহে রমজানে আত্মশুদ্ধির সিয়াম সাধনার শপথ নিয়ে তওবা কর। মানব মুক্তির আদি তীর্থ, পবিত্র মক্কা, মদিনাহ্ এবং বাইতুল মাক্দিস আজ এক বিশ্ব মুক্তি দাতার আগমনের প্রহর গুনছে। জেরুজালেমের মতো মক্কা মদিনাহ্ অভিশপ্ত ইয়াহুদীবাদ এবং পথভ্রষ্ঠ খৃষ্টবাদের সেবা দাসদের হাতে অবরুদ্ধ, জিম্মী। হযরত ইব্রাহীম ও হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এবং মা হাজেরা ও মা খাদিজার পবিত্র নগরী মক্কা ও মদিনার হাট-বাজারও বর্তমানে সারারাত পাপিষ্ঠ নর-নারীর পাপাচারের মেলা
অতএব, হে ইব্রাহীম, মুহাম্মদ (সঃ), বিবি হাজেরা ও বিবি খাদিজার আদর্শের সন্তানেরা, এসো, এই রমজানেই আমরা ইব্রাহীম ও মুহাম্মদী তওবা করি। কারণ,
(এক) এই রমজান মাসেই সৃষ্টির কল্যাণের পূর্ণ বিধান আল-কুরআন নাযিল হয়েছে।
(দুই) এই রমজানেই বদরের যুদ্ধের দ্বারা অন্যায় উৎখাতের সশস্ত্র জেহাদের সূচনা হয়, এবং
(তিন) এই রমজানেই ধর্মাবেসাতী কোরেশদের হাত থেকে মক্কা বিজয় ও পবিত্র হয়।
শয়তান কর্তৃক ইসলামে ইয়াহুদীবাদ, খৃস্টবাদ, শিয়া ও সুন্নিবাদের বিভক্তি, খন্ডিত রাষ্ট্রীয় সীমানা, ঘর ভাঙ্গা স্বেচ্ছাচারী নারী ও তাদের পুরুষ দালালদের স্বৈরাচার দ্বারা শোষিত ও প্রতারিত বিশ্ববাসী, এসো, আমরা এই পবিত্র মাসে তওবা ও শপথের মাধ্যমে সকল সংকট উত্তরণ, আল্লাহর রহমত্, মাগ্ফিরাত্ ও মুক্তি অর্জন করে আখেরী নবী (সঃ)-এর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী বাংলাদেশকে “বিশ্ব তৌহিদী জাগরণের উৎস” রূপ দানে ধন্য হই।
তওবা, রহমত ও মুক্তির পথে আহবানকারী
ইমামুদ্দীন মুহাম্মদ তোয়াহা ব্নি হাবীব (মোহাজেরে মক্কা ও মদিনাহ্)
২৪৮/২ দ্বিতীয় কলোনী, মাজার রোড, মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
মোবাইল: ০১৫৫২৩৩১৭৭৯
বিষয়: বিবিধ
১৬৩৬ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহ!রমজানকে আমাদের জন্য রহমতস্বরূপ করে দিন। আমিন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন