মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের বাবা অভিভক্ত ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের কাছে লেখা চিঠি-২।

লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ_২ ০৯ মে, ২০১৫, ০৭:২৫:০৯ সকাল

পৃথিবী তার পরিনামের দিকে দ্রুত গুটিয়ে আসছে। শেষ নবী মুহাম্মদ হানিফের সত্যিকারের অনুসারীদের নেতৃত্বে গোটা বিশ্বে ইব্রাহিম হানিফের ইমামত্ নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হবে, এটাই আল্লাহর ইচ্ছা ও ওয়াদা।

বর্তমানের অভিশপ্ত ইহুদীবাদ, পথভ্রষ্ট খৃষ্টবাদ ও আত্মপ্রবঞ্চক নাম সর্বস্ব মুসলমানদের দিন ফুরিয়ে আসছে। এ তিন প্রতারক্ পাপীষ্ঠ চক্রকে আল্লাহ্ তাঁর মহাপরিকল্পনা অনুযায়ি মধ্যপ্রাচ্যে বর্ণবাদী ইহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে একিভুত করেছেন। ওখানে বিবাদমান ইহুদি, খৃষ্টান ও আরব, এরা কেউ, ইব্রাহীম, মুসা, ঈসা ও মুহাম্মদ সঃ দের অনুসারি নয়। এরা তিনটি সম্প্রদায়ই সমান পথভ্রষ্ট, imposter, প্রতারক। মূলতঃ বর্তমানে বিশ্বময় প্রচলিত ইহুদিবাদ, খৃষ্টবাদ, সুন্নিবাদ ও শিয়াবাদ আদৌ কোন ধর্ম নয়। তিনটিই সাম্প্রদায়িকতা, যাকে আরবিতে “মাযহাব” বলা হয়। আল্লাহর সৃষ্টির জন্য বিশ্বময় একমাত্র ধর্ম, জীবন বিধান, ইসলাম। “ইন্নাদ্ দ্বীনা ইন্দাল্লাহি আল্ ইসলাম,” আল্লাহর নিকট একমাত্র ধর্ম ইসলাম। “ওয়ামাই ইয়াবতাগী গাইরাল ইসলামি দ্বীনান , ফালাই ইউকবালা মিনহ্” যে বা যারা ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম গ্রহন করবে, তা কখ্খনো গ্রহন যোগ্য হবে না। এ দুটি ঘোষনাই আল্লাহ দিয়েছেন আল “কোরআনের” ইমরানের পরিবার” নামের সূরায়। আয়াত নং যথাক্রমে ১৯ ও ৮৫।

“ইমরান” হযরত মুসা আঃ এর পিতা এবং হযরত ঈসার নানা ও বিবি মারইয়ামের পিতার নাম। বাবা আদম, নূহ্, ইব্রাহীম, মূসা, ঈসা ও মুহাম্মাদ, অর্থাৎ সকল নবী সঃ রা একমাত্র ইসলামের অনুসারী ছিলেন । কারন, আল্লাহ একমাত্র দ্বীন “ইসলাম”। অতএব ইব্রাহীম, মুসা ,ঈসা ও সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদ সঃ রা সবাই মুসলিম ছিলেন। হজরত ইব্রাহীম হানিফ এদের পুরোধা । একমাত্র তাঁকেই ইসলামের নবী ও মুসলিম জাতির পিতা বলে স্বয়ং আল্লাহ্ আল্ কুরআনে নামকরণ করেছেন। তিনি বাদে সকল “জাতির পিতা” অসত্য ও অশুদ্ধ , ভুল ও মিথ্যা । আমাদের একমাত্র জাতির পিতা ইব্রাহীম হানিফের নাতী হযরত ইয়াকুবের অপরনাম ছিল ঈস্রাঈল। তা থেকেই বনি ইসরাঈল বা ইসরাঈলী সম্প্রদায় । একাগ্রচিত্ত ইব্রাহীম ও ইয়াকুব হানিফদের মৃত্যুর পর শয়তানের প্ররোচনায় তাঁদের কুলাঙ্গার বংশধর ইসরাঈলীয়রা হযরত ইব্রাহীমের প্রতিষ্ঠিত ইসলাম ত্যাগ করে দু’টি মায্হাবের উৎপত্তি করে তার অনুসারী হয়ে যায় । এ “মাযহাব” দুটিই হলো ইহুদীবাদ ও খৃষ্টবাদ । “ইব্রাহীম আঃ ইহুদী ছিলেন না, খৃষ্টানও ছিলেন না, শুধুমাত্র হানিফ মুসলিম ছিলেন । ( সুরা ইমরান পরিবার , আয়াত ৬৮) আল কোরআনে হযরত ইব্রাহীমকে আল্লাহ সাতবার “হানিফ ” বলে উল্লেখ করেছেন

ইসলামকে ইহুদীবাদ ও খৃষ্টবাদের “মায্হাবের” বিভক্ত করার অপরাদে আল্লাহ ইস্রাঈলী সম্প্রদায়কে তার দু‘নবী হযরত দাউদ ও ঈসা আঃ কে দিয়ে ,তাঁদেও ভাষায় জনসমক্ষে লা‘নত্ বা অভিসম্পাত করিয়েছেন। (সুরায়ে মাঈদা -৭৮)

ইহুদী ও খৃষ্টান সম্প্রদায়দ্বয় কে ইসলাম ত্যাগ করার অপরাধে আল্লাহ তাঁর দ্বীনের দায়িত্ব থেকে চিরতরে বহিস্কার করেন । তারপর ইব্রাহীম হানিফের প্রথম পুত্র ইসমাইলের বংশোদ্ভুত আরবদের মধ্যে থেকে শৈশবে পিতামাতা হারা মরু রাখাল মুহাম্মদ সঃকে শেষ নবী রূপে পাঠিয়ে ইহুদীদের র্কতৃক বিভক্ত ইব্রাহীমের দ্বীনকে পুনঃ একত্র করে তাকে চুড়ান্ত রূপে র্নিবাচন করে “সীলমোহর” করেছেন । তাই আল্লাহর তাঁর নবীকে “খাতামুন নবীঈন ” বা সীল মোহর মারা নবী বলে নামকরণ করেন ।

শেষ নবী সাঃ বিদায়ের পূর্বে “নওমুসলিম” আরবদের কঠোর ভাষায় সতর্ক করে যান এ বলে যে, “আমার ভয় হয় যে, তোমরা আমার মৃত্যুর পর ইহুদী খৃষ্টানদের মতো আল্লাহর দ্বীনকে বিভক্ত করে তোমরাও বিভক্ত হয়ে যাবে। তা হলে কিন্তু তোমাদেরকে (আরবদের) ইহুদী খৃষ্টানদের মতো বাদ দিয়ে আল্লাহ্ অন্য জনগোষ্ঠীকে তাঁর দ্বীনের নেতৃত্ব দান করবেন। অতঃপর তারা তোমাদের মতো হবেনা। (সূরায়ে মুহাম্মদ, আয়াত-৩৮)। আখেরী নবী সঃ বিদায়ের পর আবুবকর ও উমরের পর ক্রমে সম্পূর্ণ জাহিলিয়্যাতে প্রত্যাবর্তন করে উমাইয়া ও আব্বাসীরা রোমান ও পারসিকদের অনুকরনে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইসলামকে সম্পূর্ণ রুপে ত্যাগ করে । তারা প্রথমে শেষ নবী সঃ এর পুনঃ প্রতিষ্ঠিত ইসলামকে ইহুদী খৃষ্টবাদের মতো সুন্নী ও শিয়া মতবাদ বা মায্হাবে বিভক্ত করে। তারপর ঠিক ইহুদী খৃষ্টানদের মতো অর্থডক্স, সাবাতিষ্ট, ক্যাথলিক, প্রটেষ্টান্ট, মেথডিষ্ট ও এডভ্যানটিষ্ট প্রভৃতির অনুকরনে হানাফী, শাফেয়ী, মালেকী ও হাম্বলী মায্হাবের সৃষ্টি করে ইহুদী খৃষ্টানদের মতো শতধা বিভক্ত হয়ে বর্তমানে মধ্য প্রাচ্যে ইহুদী খৃষ্টানদের সাথে সমানে সমান অভিশপ্ত হয়ে সত্য ও মিথ্যার পার্থিব মহা বিচার ‘‘আর্মাগেডডানের”(Armageddon) দিন গুনছে, যা বাইবেল, তৌরাত ও শেষ নবী সঃ এর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী বর্তমান ইস্রাঈলে ঘটবে।

আল্লাহ্তে যেমন বিভক্তি নেই, তদ্রুপ তাঁর একমাত্র দ্বীন্ ইসলামেও কোন বিভক্তি নেই। “ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্, আল্লাহ্ ব্যাতীত কোন ইলাহ্ নেই” বলে, মনে প্রাণে বিশ্বাস স্থাপন করে সকল নবীদের সমানভাবে গ্রহণ, ও সকল ঐশী গ্রন্থের সার সংকলন, হিসাবে আল্ ক্বোরআন মেনে চললেই মানুষ মুসলিম হয়।

আল ক্বোরআনে বর্ণিত বিধানের বাইরে কোন হাদীস, ফিক্হ্ও মায্হাব্ বা কোন র্ধম বিধান নেই । আল্লাহ্ তা’আলা একমাত্র ক্বোরআনকেই ক্বোরআনে অনুন্য বিশ্ জায়গায় “হাদিস্” বলে উল্লেখ করেছেন। আল্লাহর কালামের বাইরে নবী রাসূলসহ সকল মানুষের কথাকে আল্লাহ্ “ক্বাউল্” বা “আক্বাওয়ীল, ” অর্থাৎ বাক্য ও বাচ্য বলে নামকরণ করেছেন। নবীরা আল্লাহর সাথে যে কথোপকথন করেছেন, তাকেও মাত্র দু’এক জায়গায় “হাদীস্” বলে ক্বোরআনে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু নবী রাসূল সঃ গন ধর্ম সংক্রান্ত মানুষের সাথে যতো আলাপ আলোচনা করেছেন, তাকে কখনো হাদীস বলে ক্বোরআনে কোথাও উল্লেখ করা হয়নি। রাসূল সঃও স্বয়ং কখনো তাঁর আপন বাণী ও ভাষণকে “হাদীস্” বলেন্নি। “মাক্বালা” বলেছেন, যার অর্থ দাঁড়ায়, “কথা,” বা “কথন”।

“আল কুরআন” আল্লাহর সে বাণী, যার ভাষা, বাচন ভঙ্গি, বাক্য গঠন প্রণালী ও বাক্ধারা এমন অনন্য যে তার সাথে রাসূল সঃ এর বাণী ও ভাষা, সাহাবীদের বাক্ধারা ও কোন আরবী সাহিত্য ও সাহিত্যিকদের ভাষা ও রচনার কোন মিল ও সাদৃশ্য নেই। অথচ সবই আরবী ভাষা ! তাই আল্ ক্বোরআনে বারবার চ্যালেঞ্জ করা সত্বেও আরবরা সবাই মিলে ক্বোরআনের সদৃশ রচনা করতে সক্ষম হয়নি। এবং ক্বেয়ামত পর্যন্ত মানুষ তা পারবে না। (বনী ইসরাঈল-৮৮)

আল ক্বোরআনে আল্লাহ যা বলেছেন, যা “অহীর” মাধ্যমে জীবরাঈল কর্তৃক রাসূল সঃ এর উপর আল্লাহ্ অবতীর্ণ করেছেন। তার বাইরে একটি বাক্যাংশও বলার সাধ্য ও অধিকার স্বয়ং রাসূলে করীম সঃ এরও ছিলনা। আল্লাহ্ তায়ালা বলেছেন,“রাসূল যদি একটি বাক্যাংশও আমার নামে বানিয়ে নিজে বলতো, তাহলে আমি ডান হাতে তার ঘাড় ধরে মটকিয়ে তার ঘাড়ের রগ কেটে দিতাম, তোমরা কেউ তাকে রক্ষা করতে পারতে না”। (সূরা আল হাক্কাহ্ঃ ৪৪-৪৭)

আখেরী নবী সাঃ তাঁর বিদায়ের পূর্বে তাঁর “নও মুসলিম” আরবদের নির্বিশেষে বারবার তাকিদ করে বলে গিয়েছেন, “তোমরা কখনও আমার ব্যাপারে কুরআন ছাড়া অন্য কিছু বলবেও না লিখবেও না। কেউ যদি কিছু লিখে থাক, তা অবশ্যই মুছে ফেলবে”। (মুসলিম, বর্ণনা, আবু হুরাইরা)

কিন্তু হায়, “স্বভাব যায়না মাইলে ”। সত্য প্রত্যাখ্যানকারী রূঢ় মরুচারী আরব বেদুঈনজাত ও তাদের শহরবাসী আরবরা রাসুল সঃ এর মৃত্যুর পর তাই করল,যা তিনি নিষেধ করেছিলেন।

তাই আল্লাহ স্বয়ং আল কুরআনে আরবজাতির বংশ-স্বভাব পরিচিতি দিচ্ছেন এ বলে যে “বেদুঈন আরবজাত কুফরী ও কপটতায় জঘন্য,এরা আল্লাহর রাসুলের উপর নাযিলকৃত দীক্ষা গ্রহণ ও তার শিক্ষা সীমা রক্ষার অযোগ্য, বস্তুতঃ আল্লাহই সর্বজ্ঞানী গুনী” । (সুরা তৌবা-আয়াত-৯৮) স্বয়ং আল্লাহর ক্বোরআনে চিত্রিত চরিত্রের আরবজাতি রাসূল সঃ এর মৃত্যুর পর তাঁর ঘনিষ্ট একনিষ্ট সহচরদের একেরপর এক হত্য করে র্নিমূল করে দেয়। দশ হাজার মদীনা বাসীকে হত্য করে ,প্রায় ৪০ জন বদরী সাহাবাকে ক্বতল করে,রাসুল সঃ এর মদীনায় এক সপ্তাহ কাল লুটতরাজ ও নির্বিচার র্ধষণ করে একহাজারের অধিক কুমারীদের গর্ভবতী করে, মদীনায় রাসূল সঃ এর রওজা ও মস্জিদকে ঘোড়ার আস্তাবল বানায়, এবং কাবা ঘরে অগ্নী সংযোগ করে।

এভাবে ইসলামী ইমামত্ ও খেলাফত্কে নির্মূল করে আরবরা রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে তার উপর খেলাফতের আলখেল্লা জড়ায়। ইতিহাসের এ জঘন্যতম পাপকে ঢাকার জন্য পাপীষ্ঠরা আল্লাহর শেষ নবী রাহমাতুল্লিল আলামীনের নামে মিথ্যা ভবিষ্যদ্বানী ও উক্তি তৈরী করে তাকে “হাদীস্” নামকরণ করে প্রচারাভিযান চালায়।

দৃষ্টান্ত স্বরুপঃ

১। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে বিশেষ বংশে, গোত্রে ও বর্ণে কুক্ষিগত করার জন্য হাদীস বানালো, “রাসূলের পর ইমাম ও নেতা হবে শুধু ক্বোরাইশ বংশ থেকে। আল্ আইম্মাতু মিন্ ক্বোরাইশ্।

২। “আমার পর ত্রিশ বছর পর্যন্ত খেলাফত্ চলবে, তার পর, তা রাজতন্ত্রে পরিণত হবে”।

৩। শুধুমাত্র ক্বোরাইশ বংশ থেকে বেছে দশ জনকে তাদের জীবদ্দশায় বেহেশ্তের সুসংবাদ বানায়।

মদীনার আনসাররা, যারা মক্কার ক্বোরাইশ কর্তৃক, রাসূল বিতাড়িত হলে সারা আরব বিশ্বের শত্রুতার ঝুকি নিয়ে তাঁকে জানমাল উৎসর্গ করে গ্রহণ করে,তারা কেউ তাতে স্থান পায়নি। মক্কার নির্যাতিত কৃতদাস বেলাল, আম্মার, সুহাইব, আব্দুল্লাহ্ ইব্ন্ মাস্উদ্ গংরাও কেউ তাতে স্থান পায়নি। অথচ, আল্লাহ্ ক্বোরআনে দ্ব্যর্থহীন ভাবে ঘোষণা করেছেন “আমি পৃথিবীর নির্যাতিতদের উপর বিশেষ দানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আমি তাদের সমাজের নেতা ও উত্তারাধিকারী বানাবো, এবং সমাজের ফেরাউনী শক্তি , তার পারিষদ ও সেনা সামন্তদের নির্মূল করে তাদের স্থলে নিপীড়িতদের পৃথিবীতে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করবো, এবং স্বৈরাচারীদের আমার সতর্কবাণী অমান্য করার পরিণাম দেখাবো । (সূরায়ে ক্বসাস আয়াত-৫-৬)

আল্লাহ তাঁর শেষ নবী সঃ এর দ্বারা তাঁর কৃত ওয়াদা পূরনের নমুনা দেখিয়েছেন। মক্কার সামন্ত স্বৈরাচারী ক্বেরাইশী ধর্মবেসাতীদের স্বদেশ থেকে বিতাড়িত নবী মুহাম্মদ হানিফ সঃ তাঁর নির্যাতিত কৃতদাস বেলাল, আম্মার, সুহাইব,ইব্ন্ মাস্উদ্ ও অজগ্রাম, মদীনাবাসী বিশ্বাসী সঙ্গিদের হাতে মক্কা বিজয়ের মাধ্যমে উৎখাত ও পরাজিত করে।

নবী সঃ এর মৃত্যুর পর আল্লাহর পরীক্ষায় আবু বকর, ওমর ও আলী রাঃ দের মতো কতিপয় হানিফ্ বাদে বাকীরা অধিকাংশ পুনঃ গোত্রপূজারী উমাইয়া মুশ্রিক্দের চক্রান্তে নবী সঃ এর আদর্শ তৌহিদ্ থেকে বিভ্রান্ত হয়ে নিজেদের মধ্যে অন্ধকার যুগের প্রাক্তন খুনাখুনীর রাজনীতি পুনঃ আরম্ভ করে দেয়। পূর্বেও খুনাখুনী ছিল কাফের ও মুশ্রিক্ রুপে, পরের খুনাখুনী চলতে থাকে ধর্মের ছদ্মাবরনে।

চার খলিফার মধ্যে তিনজনকেই হত্যা করার পর উমাইয়ারা ইস্লামী খেলাফত্ ছিন্তাই করে নিয়ে যায়। তার পর উমাইয়া রাজবংশ প্রতিষ্ঠার জন্য পথের সম্ভাব্য বাধা দূর করার জন্য ইসলামের তিন আদর্শ খলিফা, আবু বকর, ওমর ও আলী রাঃদের যোগ্য সন্তানদেরও উমাইয়া ঘাতকরা নৃশংসভাবে হত্যা করে নির্মূল করে।

নবী সঃ এর কলিজার টুকরা হাসানকে বিষ প্রয়োগ করে হত্যা করে । হুসাইনকে সপরিবারে কারবালায় নির্মূল করে ইয়াযিদ ভরা দরবারে ঘোষণা করে, “নবীর নিকট থেকে বদরের প্রতিশোধ নিলাম”। কারণ, বদরের যুদ্ধে ইয়াযিদের পিতা মোয়াবিয়ার নানা, মামা, ভাই ও চাচা নিহত হয়। ইয়াযিদের দাদী হিন্দা উহুদের যুদ্ধে হযরত হাম্যা নিহত হলে তাঁর বুক চিরে কলিজা চিবিয়ে খায়। হযরত আবু বকরের ছেলে মুহাম্মদ ইব্ন্ আবি বকর মোয়াবিয়ার স্থলে হয্রত আলীকে সমর্থন করায় মোয়াবিয়া তাকে জীবন্ত অবস্থায় হাত পা বেঁধে একটি মৃত গাধার পেট ফেড়ে তাতে ঢুকিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। হযরত ওমরের ছেলে আব্দুল্লাহ্ ইব্ন্ ওমরকে ঘাতক দিয়ে নামাজে সিজ্দারত অবস্থায় র্বশা দিয়ে আহত করে পচিয়ে পচিয়ে হত্যা করেছে ।

রাসুল সঃ দু‘ঘনিষ্ঠ সাহাবী ,তাঁর আপন ভায়রা ,হযরত আবু বকরের জামাতা ,হযরত তালহা ও যুবাইরকে মোয়াবিয়া চত্রের শিখন্ডী মারওয়ান ঘাতক দিয়ে হত্যা করেছে । এ মারওয়ানই মোয়াবিয়ার পৌত্র , ইয়াযিদের ছেলে ,দ্বিতীয় মোয়াবিয়া,তার বাপ-দাদার পাপের প্রতিবাদে খলিফা হতে অস্বীকৃতি জানালে হতভাগা মুসলমানদের খলিফা হয় তার ছেলে আব্দুল মালিক ,মারওয়ানের পর রাজা হয়ে রাসুল সঃ এর মদিনায় হিজরতের পর মোহাযেরদের সর্বপ্রথম সন্তান, রাসুল সঃ এর শালীর ছেলে, হযরত আবু বকরের দৌহিত্র আব্দুল্লাহ্ ইবনে যুবাইরকে ক্বাবা ঘরে হত্য করে তার লাশ দু‘দিন র্পযন্ত কাবার চত্বরে ঝুলিয়ে রাখে।

বস্তুত উমাইয়া ঘাতকদের হাত থেকে হযরত ওসমানের সন্তানরা ব্যতীত রাসুল সঃ এর কোন একনিষ্ঠ সাহাবী ও হানিফ অনুসারী রক্ষা পায়নি । ওসামা যেহেতু উমাইয়্যা বংশের ছিলেন তার সরলতা ও র্দুবলতার সুযোগ নিয়ে উমাইয়া ঘাতকরা ইসলামী খেলাফতের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে ষড়যন্ত্রে দ্বারা ওসমানকে হত্যার মাধ্যমে ক্ষমতা ছিনতাই করে। বনু উমাইয়ার শয়তানরা খুব ভালোকরে জানতো যে , হযরত ওসমনের হাত থেকে শান্তির্পূণভাবে খেলাফত হযরত আলীর হাতে হস্তান্তরীত হলে মুসলিম উম্মার খেলাফত পুনঃ সর্ম্পূণ রূপে আখেরী নবী সঃ এর আর্দশের উপর পুনঃ প্রতিষ্ঠিত হবে , এবং তারপর আর আরব র্ববরতা ও জাহিলিয়্যাত কখনো মুসলিম সমাজে মাথা উঠাতে পারবেনা। চিরতরে নিশ্চি‎হ্ন হয়ে যাবে।

তাই আরব জাহিলিইয়্যাতের ধারক বাহকরা,সরল হযরত ওসমানকে তাদের ষড়যন্ত্রের “বলির পাঠা”বানিয়ে তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং খেলাফতকে রাসুল সঃ এর মদীনা থেকে দামেশকে স্থানান্তরিত করে রোমান রাজতন্ত্রের অনুকরনে আরবী রাজতন্ত্রের পত্তন করে। মোয়াবিয়া ক্ষমতায় বসে ঘোষনা করে ,আমি আরবী সিজার “আনা ক্বাইসারাল আরব”

অথচ আল্লাহর রাসূল সঃ দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষনা করে গিয়েছেন যে “ইসলাম প্রতিষ্ঠার পর রোমান “সিজার”ও পারস্যের “খসরূর” পতন হবে । তারপর আর পৃথিবীতে সিজার ও খসরুর রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে না । উমাইয়া রাজতন্ত্র ও রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা মোয়াবিয়া শুধু নিজেই আরবী সিজার হয়ে ক্ষান্ত হয়নি, তার ছেলে ইয়াযিদকে “রাজার ছেলে রাজা” বানিয়ে যায় ।

ইসলামের পরে এ কুফরীর পুনঃ প্রতিষ্ঠার পথে যে সমসÍ হানিফ সাহাবীরা বাধা দিয়েছে, তাদেও কারো জানমাল ও মান ইজ্জত উমাইয়া দুর্র্র্র্বৃত্তদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি।

চলবে.....।

বিষয়: বিবিধ

২১০০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File