ইসলাম ও গনতন্ত্র জান্নাত ও জাহান্নামের পথ
লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ_২ ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৯:৪০:০৬ রাত
আউযু বিল্লাহি মিনাশ্ শাইতানির রাজীম
আল্লাহ সকল সৃষ্টির স্রষ্টা , লালন কর্তা, মেহেরবান ও দয়াময়। ইবলিস শয়তান মানুষের সৃষ্টিলগ্ন থেকে ঘোষিত শত্রু। পৃথিবীময় মানুষে মানুষে মারামরি, কাটাকাটি, হিংসা বিদ্বেষ ও মানুষে মানুষে বৈষম্য সৃষ্টি, সকল শয়তানের কাজ।
“ওয়াল্ আসর ইন্নাল্ ইনসানা লাফি খুসর্।” “যুগের কসম, মানবজাতি নিশ্চিত বিপন্ন।”
বিশ্বময় মানবজাতি আজ ধ্বংসের মুখোমুখি।
*** *** ***
বিশ্বের দরিদ্রতম ঘনবসতিপূর্ন বাংলাদশ শয়তান ও তার সৃষ্ট রাজনৈতিক বাটপারদের “পাতানো খেলে” আজ এক মহা ধ্বংসযজ্ঞের ও মুখোমুখি। কে¦য়ামতের পূর্বে পার্থিব ক্বেয়ামতের দ্বারপ্রান্তে । জন্মের লগ্ন থেকে ভুলের পর ভুলে জাতি জাহান্নামের কিনারে দন্ডায়মান। আর একটি মাত্র ভুল, দুঃস্বপ্নময় পরিনাম ডেকে আনবে।
*** ***
স্রষ্টা ও সৃষ্টির বিধানে কোথাও গনতন্ত্র , ভোটাভুটি বা “অল্পের উপর অধিকাংশের ” নিয়ন্ত্রন বা শাসন নাই, স্রষ্টা এক, সৃষ্টি অসংখ্য। স্রষ্টার বিধানে সৃষ্টি চলে। সৃষ্টির বিধানে নয়। মানবদেহে মাথার ওজন মাত্র দুই তিন কেজি, দেহের ওজন পঞ্চাশ কেজি। দুই কেজি মাথার দ্বারা যদি দেহ নিয়ন্ত্রিত হয়, তাহলে মানুষ সুস্থ। আর যদি পঞ্চাশ কেজি দেহ দ্বারা মাথা চালিত হয়, তাহলে মানুষ উন্মাদ ও পাগল। নরনারীর বিবাহ, একক নর কর্তৃক নারী ও নারী কর্তৃক নরের পছন্দের মাধ্যমে হয়। জনগনের ভোটাভুটিতে হয় না। নারীপুরুষের মিলন ও সন্তানের জন্ম, তাও গনসমাবেশ ও গনভোটে হয়না। পরিবারে মাতাপিতা দু’জন। সন্তান অনেক , সন্তানদের ভোটে পরিবার চলে না। বরং পিতামাতার মধ্যেও একজনের কর্তৃত্ব ও অন্য সকলের আনুগত্বে সংসার “আদর্শ স্বর্গীয় সংসার” হয়।
*** *** *** ***
গনতন্ত্র ও ভোটাভোটি ইবলিস শয়তানের Brain child বা শয়তানী মস্তিষ্কের অবাধ্যতার ফল। স্রষ্টার আজ্ঞা মানুষ সৃষ্টির লগ্নে “ ওস্তাদ শয়তান ” তার ফেরেস্তা শাগরেদ দের নিয়ে ছাত্র রাজনীতির আন্দোলন করে মানুষ সৃষ্টিতে বাধা দিয়েছিল। (হাদিছ মতে ইবলিস মোয়াল্লিমুল মালাইকা বা ফেরশতাদের ওস্তাদ বা শিক্ষক ছিল) কিন্তু আল্লাহ গনতন্ত্রী সংখ্যাগুরুদের বললেন “ আমি যা জানি তোমরা তা জান না।”
তারপর তিনি আমাদের সৃষ্টি করে পৃথিবীতে তার খলিফা বা প্রতিনিধি করে পাঠান। ফেরেশতারা আল্লাহর ইচ্ছা ও বিধান মেনে মানুষের সাহায্যকারী। ইবলিস শয়তান , চ্যালেঞ্জ করে অভিশপ্ত হয়ে মানুষের সর্বনাশ লিপ্ত।
*** *** *** ***
আল্লাহ রাহমান মানুষকে পৃথিবীতে কল্যান ও আখরাতে জান্নাতের দিকে পরিচালিত করে ঈমান ও আমলের দ্বারা। নারী তার পেছনে, “কল্যানীয়া” সহধর্র্মিনী। ইবলিশ শয়তান মানুষকে পৃথিবীতে যৌনবিকৃতি ও পরকাল জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। নারী তার সামনে, “কামসহচরী”, ধর্ম নষ্টকারিনী। আমরা কোন পক্ষে যাব ? আল্লাহর না শয়তানের?
*** *** *** ***
বাংলাদেশ পৃথিবীর দারিদ্রপীড়িত এক অশান্ত জনবহুল ক্ষুদ্রদেশ। এজাতিই আল্লাহর রহমতের আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য “পাকিস্তান ” নামের পবিত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। কিন্তু পার্থিব স্বার্থের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে মন কষা কষির সময় শয়তান ফাঁকে ঢুকে পড়ে দুই মুসলমান ভাইদের মধ্যে খুনাখুনি আরম্ভ করে দেয়। একদিকে পাঞ্জাবী বিহারী, অপরদিকে বাঙ্গালী। কেউ আর মুসলমান রইল না।আল্লাহ শেষ নবী সঃ বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে এমন এক সময় আসবে যখন তোমরা পরস্পর হত্যায় লিপ্ত হবে। তাতে হত্যাকারী ও নিহতরা জাহান্নামী হবে।” তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো , ইয়া রাসুলুল্লাহ , হত্যাকারী হয়তো হত্যার জন্য জাহান্নাম যাবে, নিহত ব্যক্তি কেন জাহান্নামী হবে? উত্তওে রসুল সঃ বলেছেন, কারণ , নিহত ব্যক্তিও সুযোগ পেলে হত্যাকারীকে হত্যা করতো।”
*** *** *** ***
হত্যাযজ্ঞ ও খুনাখুনি যে জাতি ও রাষ্ট্রের স্রষ্টা , যে জাতি তওবা করে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পন না করলে “এক মহা হত্যাযজ্ঞের ” মাধ্যমে সে জাতি বিলুপ্ত হয়। বাংলাদেশ আজ সে ক্রান্তি লগ্নে।” আল্লাহ কোন জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করেন না, যে পর্যন্ত না স জাতি তার অন্তর পরিবর্তন করে।” (আল কোরআনঃ রাদ ১১)
*** *** ***
আল্লাহ তাঁর রহমত দিয়ে নরনারীকে স্বামী স্ত্রী , সন্তান সন্তুতি ভাইবোন ও আত্মীয় স্বজন রুপে এক , ঐক্যবদ্ধ ও মিল মোহাব্বতে সুখে দুঃখে পরস্পরকে বেঁধে মানব সমাজকে “একপরিবারে” রুপান্তরিত করেন। অভিশপ্ত শয়তান স্বামী স্ত্রীতে ফাটল ধরায়। তারপর মানব সন্তানদের একের পর এক রক্তে, বর্ণে,ভাষায়, পেশায় ও ভৌগোলিক সীমায় বিভক্ত কওে রাষ্ট্র, জাতি ও প্রজাতিতে শতধা বিভক্তির পর বিভক্ত করে পরস্পরকে গোষ্ঠীগত কলহ ও দ্বন্দে লিপ্ত করে। শান্তির সমাজ , স্বার্থদ্বন্ধের মানব সমাজের নরকের রুপ নেয়।
*** *** *** ***
وَاعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللَّهِ جَمِيعًا وَلَا تَفَرَّقُوا “আল্লাহর রশিকে সবে মিলে সর্বশক্তি দিয়ে ধারন করো, কখনো বিভক্ত হয়ো না,” ঈমানদার জনগোষ্ঠীর জন্য আল্লাহর নির্দেশ। এক ঘরে দশ ভাই, সমাজসেবী, চিকিৎসাবিদ, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিক্ষক, ধর্মগুরু, ব্যবসায়ী, কর্মচারী, কৃষক ও শ্রমজীবী। এরা প্রত্যেকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে পরিবারের পরস্পরের সহায়ক হলে পরিবারটি কেমন হয়? আর যদি প্রত্যেকে নিজ নিজ পেশাভিত্তিক সংগঠনের সদস্য হয়ে স্বীয় স্বার্থের পূজারী হয়ে দ্বন্ধে লিপ্ত হয়, তা হলেই বা পরিবার টি কিরুপ হয়?
প্রথমটি আল্লাহর রহমতের বন্ধনে তৈরী স্বর্গীয় পরিবার। দ্বিতীয়টি শয়তানী বিভক্তির অভিশপ্ত পরিবার।
*** *** ***
বর্তমানের রাজনৈতিক দলসমূহ, ছাত্রদলসমূহ, শিক্ষক সমিতি, মহিলা পরিষদ, চিকিৎসক সমিতি, সরকারী কর্মচারী সমিতি, বেসরকারী কর্মচারী সমিতি, শ্রমিক দল, ইত্যাকার সকল গোষ্ঠী-বিভক্তি, আল্লাহর কসম, শয়তানের নারকীয় নৈরাজ্য, যার নাম বর্তমান রাজনীতি।
এ সকল দলাদলি ও সংঘাত নির্মূল করে মানুষে মানুষে ভাই, নর ও নারীতে “ঘর ও বাহির”, শ্রমিক ও মালিকে পিতা পুত্র, শাসক ও শাসিতে “ইমাম ও মুক্তাদী”, পিতা ও পুত্রে গুরু ও শিষ্য ও সর্বোপরি, বিশ্বের মানব জাতিকে “নেক ও এক” করার “আসমানী সংগ্রাম”ই ঈমান, জিহাদ ও আল্লাহর এবাদত, বেহেশত ও মুক্তির চাবি।
এর বাইরে, সকল মত ও পথ, শয়তান-সৃষ্ট কুফর ও কাফেরীর, “মাথা-গোনা” গনতন্ত্রের । যার পরিণাম, এজন্মে সংঘাত ও “সাফাকুদ্দিমা” বা রক্তক্ষয়ী খুনখারাবী; পরজন্মে জাহান্নাম।
হে মানুষ, কোন্ পথ তোমার, শয়তানের, না “রাহমানের”?
বিষয়: বিবিধ
১০৯১ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সমস্যার সমাধান কি? সামাধানের উপায়ইবা কি? আল্লাহর দীন কায়েমের দায়িত্ব নিয়ে কেউ ময়দানে নাই কেন? আপনার কোন পরিকল্পনা আছে কিনা বা একজন জ্ঞানী লোক হিসেবে জাহেলিয়াতকে উৎখাত করার ব্যাপারে আপনি কি ভাবছেন বা করছেন?
অধিকাংশের মতের ভিত্তিতে কিন্তু অনেক কাজই হয়। বদরের যুদ্ধের পর অধিকাংশের মত গ্রহণ করে রাসূল (সঃ) বন্ধীদের হত্যা করেন নি। অথচ ওমর (রাঃ) মত ছিল সেটাই এবং আল্লাহর কাছেও সেটাই বেশী পছন্দনীয় ছিল।
কারো যদি কোন মেয়েকে পছন্দ হয় আর সে মেয়ে যত দীনদার পরহেজগার মোত্তাকিই হোকনা কেন পরিবারের সকলের মতামত উপেক্ষা করে নিজের মতে কিন্তু বিয়ে করা যায়না।
মসজিদে একজন ইমাম রাখা হবে। সভাপতি যাকে পছন্দ করেছে সার্বিক বিবেচনায় সেই যোগ্য কিন্তু সেক্রেটারী সহ অন্য সদস্যরা মত দিয়েছে অন্যজনের প্রতি সেখানে কিন্তু বাধ্য হয়েই সভাপতিকে মতের কুরবানি দিতে হয়। কমিটিকে অস্বিকারের সুযোগ নাই। যদি তাই করা হয় তাহলে আমীর আর জামায়াতের ধারনা ইসলামে থাকত না।
শুরার অর্থ কি?
হ্যা প্রচলিত গণতন্ত্র অবশ্যই হারাম কিন্তু কুর’আন হাদিসকে আইনের উৎস বিবেচনায় শুরা পদ্ধতিই গণতন্ত্র, আর সেটা প্রতিষ্ঠার জন্যই ইসলামী জামায়াত গুলো কাজ করে যাচ্ছে।
হজ্জ্বে যেতে হলে বর্তমানে বিমানে করে যেতে হয়, যে বিমানের সেবিকারা বেপর্দা বেশরম ভাবে হাজিদের সামনে আসে যা কোন ভাবেই কাম্য নয়। সমাধান কি? হারাম বলে হজ্জ পালন থেকে বিরত থাকা, নাকি পরিবর্তনের পরিকল্পনা করা এবং সে আলোকে প্রচেষ্টা করা এবং হজ্জ অব্যাহত রাখা।
ভারত সহ পৃথিবীর অনেক দেশের পাসপোর্টেই মূর্তির ছবি আছে, আল্লাহর রাসূল (সঃ) যে কাবা শরীফকে মূর্তি থাকে পবিত্র করেছিলেন আমাদের মুসলিম ভাইরা সেই মূর্তির ছবি বুকে ঝুলিয়ে (পাস্পোর্ট ছোট্ট ব্যাগে করে বুকে ঝুলিয়ে) হজ্জ করছে! যারা এটা করছে তাদের নিয়ত কিন্তু আল্লহর হুকুম পালন করা। অমান্য করা না কিন্তু প্রকাশ্যা আমরা কি দেখছি? দেখছি, হারাম মূর্তির ছবি বুকে ধারণ করে কতগুলো লোক আল্লাহর ঘর তাওয়াফ করছে অথচ কেউ বাঁধা দিচ্ছেনা! এমতাবস্থায় হারামের ফতোয়া কার্যকর করতে গেলে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশের মানুষই হজ্জ করতে পারবেনা।
মুসলিম মহিলাদের জন্য মাহাররাম ছাড়া হজ্জে আসে নাজায়েজ। মূল উদ্দেশ্য কি? কোন মহিলাই যেন মাহাররাম ছাড়া ছফর না করে? দুই মুসলিম দেশের সাথে গৃহপরিচারিকা পাঠানর ব্যাপারে চুক্তি হয়েছে, যেখানে মহিলার সাথে কোন মাহাররাম আত্মীয় থাকবেনা। বিদেশে বিভূঁইয়ে মহিলাকে অন্যের গৃহে বছরের পর বছর কাজ করতে হবে! এটা কি হারাম না? কিন্তু কোন মুফতিইতো এ ব্যাপারে ফতোয়া দিচ্ছেনা!
কোন কোন ভালো চিন্তাও অনেক সময় সমাজকে বিভ্রান্ত করে, এজন্য রাসূল (সঃ) মুয়াজ (রা)কে ঈমানের হাদিস নর্ণনা করতে নিষেধ করেছিলেন যাতে মানুষেরা শুধু ঈমান এনেই বাকী কাজ করা থেকে আবার বিরত না থাকে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন