জীবন সায়ান্থে নবজীবনের সন্ধান
লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ_২ ৩০ অক্টোবর, ২০১৩, ০৬:১৭:৪৭ সকাল
জনাব বদরুদ্দীন ওমর
শুভেচ্ছা নিন
১৯৬১ সালে আপনার পিতার সাথে আমার প্রথম সাক্ষাত হয়। তখন সবে মাত্র আপনার পিতা আইউব খাঁর আশীর্বাদে “ইসলামী একডেমী” নামে একটি ধর্মের নাম ফলকে মানুষকে বিভ্রান্ত করার আখড়া গড়েন। সেটিই আজ ইসলামিক ফাউন্ডেশন নামে ধর্মপ্রান মানুষকে “ঘুমের বড়ি” সরবরাহ করছে, এবং তন্দ্রাচ্ছন্ন মানুষকে রাজনৈতিক বাটপার ও ধর্মবেসাতীরা ধর্মের নামে শোষণ করছে। সুবিধাবাদী বর্গীদের “ডানপন্থী” আখ্যা দিয়ে আপনারা কল্পনাবিলাসীরা যে “বামের” ধারা বহাতে সচেষ্ট, তার প্রতি বিধি বাম। নাস্তিকতার প্রেতাত্মা সৃষ্টিজীবে চমক ও আকর্ষণ সৃষ্টি করতে পারে না। মানবের ইহলৌকিক জীবনে প্রাপ্তির আশার চমক চাই। পরকালেও মুক্তির দিশা চাই।
স্রষ্টার সৃষ্টি চমৎকার। শয়তানের প্রতিক্রিয়া কদাকার। ডান-বামের আলাপ চারিতা ইবলিসের দ্বিচক্রযানের দু’চাকা। এতে মানবজনতা পিষ্ঠ। সড়কের দু’পার্শ্বে গভীর খাদ সৃষ্টি করা চাকা দু’টির এক্সেলের মাঝপথে পায়ে হেটে চলা মানুষেরা রুটি বেলা বেলুনের নিচে চাপা পড়ে চ্যাপ্টা হয়ে, পিষ্ট হয়ে রুটি হচ্ছে। যানে আরোহী ডান-বামের পিশাচেরা পিষ্ঠ জনতাকে ভাগ করে খাচ্ছে।
সরল পথে জনতাকে বাঁচাতে সে দ্বিচক্রযানের এক্সেল বা অক্ষদন্ড ভাঙ্গতে আমি আদিষ্ট। তা’ না হলে ভূ-পৃষ্ঠের মহাসড়কে মহাকালের যাত্রী মানব প্রজন্ম পিষ্ট হয়ে পিষ্টক হতেই থাকবে, এবং নারকীয় ডান-বামের পিশাচরা তাদের এভাবে পৈশাচিক উল্লাসে নিঃশেষ করে যাবে।
সত্য, সততাই জীবন ও জীবনের প্রবাহ। এ জীবন প্রবাহই ধর্ম। এ ধর্মের বিধায়ক বিধাতা। মানুষ নয়।
মিথ্যা কপটতা। কপট জীবন নরক। অধর্ম। এর প্রবর্তক নারকীয় শয়তান। প্রতারক শ্রেণীই শয়তানের প্রজন্ম। ডান-বাম এদের জীবন চক্র। এর কোনো বিধাতা বিধায়ক নেই। যেমন অবৈধের কোনো পিতৃ স্বীকৃতি হয় না।
আপনার পিতার দ্বিচারী চরিত্রে আমি তাকে এক পথ বেছে নিতে বলেছিলাম। তাতে তিনি অপারগ হলে তাকে আমি ১৯৪৪ সালে তার প্রতি আমার পিতার সাবধান বানী স্মরণ করিয়ে দিই। তাতেও তিনি পথ মত পরিবর্তনে অস্বীকৃতি জানালে সত্য ও জনমানবতার স্বার্থে আমি পত্র-পত্রিকায় আইউব, মোনেম, সবুর, ফজলুল রহমান সহ আবুল হাশেম চক্র নিয়ে বলিষ্ঠ বক্তব্য তুলে ধরি। এ নিয়ে খাজা নাজিমুদ্দীন ও ফজলুর রহমান সহ আপনার পিতার সাথে একটি আলোচনা বৈঠকও হয়। তাতেও আমি মুসলমান জাতীয়তাবাদের মুনাফেকী ও পাকিস্তানী জিন্নাহবাদী মিথ্যাচার ও পাকিস্তানের পরিণাম পরিনতি সম্পর্কে চরম সতর্কবানী তুলে ধরি। তখন বয়সে এদের সামনে এক তৃতীয়াংশ ছিলাম বলা চলে। কিন্তু সত্যের স্বাক্ষ্যে আমি বাবা আদমের সনাতনী অঙ্গিকারে অনড় থাকি। ফলে এক পর্যায়ে আপনার পিতা আমার হাত ধরে বলে উঠেন “আমার দৃষ্টিশক্তি থাকলে আমি চোখ ভরে তোমাকে দেখতাম। ১৯৪৪ সালে তোমার বাবা-যা শুনিয়েছিলেন, আজ দু’দশক পরে তুমি তা শোনালে। তোমার মতো যুবক সম্ভবতঃ প্রথম পেলাম। তুমি তোমার পিতার স্বাক্ষ্য। আমার বড়ছেলের নাম রেখেছিলাম বদরুদ্দীন ওমর। সে আমার আক্ষরিক মেধা পেয়েছে। ধর্মীয় দর্শন পায়নি। আমার স্বভাব দোষও পায়নি। কিন্তু আমার ছোটছেলে আমার পান্ডিত্য পায়নি। কিন্তু চারিত্রিক বৈচিত্র তার মাঝে পরিলক্ষিত। জানিনা পরিনামে কার অবস্থান কোথায় দাঁড়ায়”। আপনার চাচা বাসেত সাহেব সে বৈঠকে আপনার অন্ধ পিতার সঙ্গী ছিলেন।
আজ প্রায় দীর্ঘ অর্ধ শতাব্দী পরে আমার এ পত্র লিখা আপনাকে কোনো হারানো বা অজানা পথের সন্ধান দিবে কিনা জানিনা। তবে আপনার মঙ্গলের আশা নিয়েই লিখলাম।
বিশ্ব আজ সত্য থেকে নিঃস্ব। এক বাচনিক সত্য বলার কেউ নেই। সত্য বলায় আমি একা। যেমন আমার স্রষ্টা একা। তাই আমি নির্ভীক সত্য বলায় আনন্দ পাই।
নাস্তিক রাশিয়া ধর্মের দুয়ারে শান্তি ভিক্ষার হাত বাড়িয়েছে, চীনও ঘুরঘুর করছে। ভারত হিন্দুত্ববাদের ত্রিশুল উঁচিয়ে। বুশ যীশুর নব অবতার। শ্যারনরা ঈশ্বরের একমাত্র বৈধ সন্তানদের জাত ও জাতি?! খৃষ্টানরা ওদের মতে ব্যভিচারীনীর জারজ সন্তানের অনুসারী। বদরুদ্দীনরা হলো ইবরাহীমের কাজের বুয়া, বাঁদি হাজেরার পুত্র, ইশ্মাইলের বংশোদ্ভুত মুহাম্মাদের অনুসারী অস্পৃশ্য জাতি। এ মুসলমানদের কি হবে? বাঙ্গালী, বাংলাদেশীদেরই বা ভবিষ্যত কী?
মানব সন্তান তার বাপদাদার চরিত্রে প্রভাবান্য ধর্মাবলম্বী হয়। বাপদাদা ধর্মাচরণে কপট হলে সন্তানরা ধর্মদ্রোহী হয়। আলোচনা প্রসঙ্গে আপনার পিতা তার জমিদার পরিবারের সে নষ্টামীর বর্ননা দিয়েছিলেন, তাতে আপনার মতো সাত্ত্বিক সন্তানের পিতৃধর্ম বিরোধী হওয়াই স্বাভাবিক। আমার বাপদাদাও পূর্বপুরুষ ধর্মে নিষ্ঠাবান না হলে আমিও হয়তো চরম ধর্মদ্রোহী হতাম।
আপনি কি আহমদ শরীফের ন্যায় মৃত্যুর পর আপনার মরদেহ কাটাছেড়ার জন্য শকুন কুকুরকে দান করতে পারবেন? না কমরেড ফরহাদের মতো আপনার জানাযা কুলখানী হবে? আমার মনে হয়, তার চেয়ে বেশী হবে। ইসলামে বংশ বৈষম্য নেই। বংশ বৈশিষ্ট ও ঐতিহ্য আছে। আপনার তা’ আছে বলে মনে করি।
আরব বেদুঈনরা আল্লাহর পূর্ন নবীর চরিত্র বিকৃত করে বর্ণবাদী ইয়াহুদীদের চেয়েও অভিশপ্ত। মধ্যপ্রাচ্যে বর্ণবাদী ইয়াহুদী ও বর্ণবাদী বর্বর আরব স্বৈরাচারী শাসক শোষকদের ক্বেয়ামত আরম্ভ হয়েছে। ওতেই ওদের মরুভূমিতে কবর হবে।
এখন ভারতবর্ষ থেকে বদরূদ্দীন ও বদরুদ্দোজাদের সত্যের পথে চমকপ্রদ তওবার মাধ্যমে বিস্ময়কর চমক সৃষ্টি করে গন মানুষের কাফেলায় ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। জন সাধারণ চমক চায় । সত্যের চমক “মোজেযা”। মিথ্যার চমক নর-নারীর অবাধ পাশবতার হাটবাজার ও মঞ্চমেলা। পর্নোগ্রাফী।
বর্তমান বাংলাদেশ দু’ ঘর ভাঙ্গা নারীর দেবর-ভাসুরদের “আদম-হাওয়া” ভবন। এ প্রসঙ্গে বদরুদ্দোজা কামাল হোসেনদের নিয়ে লেখা পত্রের অনুলিপি পাঠালাম।
অপর মেরুতে বিশ্ব মানবের জন্য আল্লাহর প্রেরীত শেষ নবী, মরু রাখাল মুহাম্মাদ সা: এর মূল আদর্শ তুলে লেখা বইয়ের এক কপি পাঠালাম। বাংলাদেশে ধর্মবেসাতি রাজনীতিকদের ধর্মও নেই চরিত্রেও নেই। এরা নাকি “ডানপন্থী”! কথিত বামপন্থীদের তুলনামূলক চরিত্র আছে। ধর্ম নেই। চরিত্রবানদের সত্যধর্মের মুখ দেখাতে আমার এ পত্র। তবেই হাসিনা খালেদার অভিশাপ দূর হবে।
আর খন্ডিত রাম মোহন রায়, লালন শাহ, রবি ঠাকুর ও গান্ধিবাদী “ঈশ্বর ও আল্লাহর” জপতপ নয়। সরাসরি বিশ্ব সত্যের এক স্রষ্টা, এক বিশ্ব ও এক অভিন্ন মানবতার বিশ্বায়নের চমক ও তার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বাংল সূর্যসম থেকে উদিত হতে হবে। তবেই বিশ্বে চারবার “নষ্ট” বলে ঘৃনিত বাংলাদেশ, মক্কা, মদীনা ও আকসার বিস্ময় অর্জন করবে।
আপনার জন্মদাতা পিতার মুখ থেকে শোনা ও কখনো সখনো পত্র পত্রিকায় আপনার লেখার শিরোনামা পড়া ব্যতীত আপনাকে আমি কখনো দেখিনি। আমার লেখা তিন কাল দর্শনের। আÍিক অতীত, দৈহিক বর্তমান ও পরকালিন ভবিষ্যতের জবানবন্দী আমার লেখা। পড়ার পর কোন মিল হলে সাক্ষাৎ কাম্য। আমার পক্ষ থেকে আপনি আমন্ত্রিত। শেষ কথা “শেষ ভালো যার, সব ভালো তার”।
* সৃষ্টিগত ভাবেই মানুষ ধর্মপ্রাণ। ঘুষ, সুদ ও কালো টাকায় জন্মানো, কুশিক্ষিত কিছু শহুরে হারামজাদা ব্যতীত বাংলার মানুষ ধর্মপ্রান। বাংলার আল্লাহপ্রদত্ত উর্বর মাটিতে ফলা ধানের শীষের ন্যায় বাঙ্গালীর নাড়ীর সম্পর্ক আল্লাহর সাথে। তারা খাঁটি ধার্মিকের সরকার-শাসন চায়। খাঁটি ঈমানদার না পেয়ে অগত্যা প্রতারনাচ্ছলে “বিসমিল্লাহ”,“আল্লাহ মহান” বলা দু’বেহায়া মহিলার দালালদের জনগন ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসাচ্ছে। এরাও তাদের প্রতারনার দোসর রূপে দাড়ি টুপি ওয়ালা অতিরিক্ত পশম সম্পন্ন কিছু নরপশুর সাথেও জোট বাঁধছে। নবী আদর্শের মূর্ত প্রতীক দাড়ি পাগড়ী ওয়ালা সিংহ পুরুষদের কোনো দল পেলেই বিশ্বময় স্রষ্টা ধর্মের মানবজাতী তাদের বিশ্ব শাষনের সিংহাসনে অভিষিক্ত করবে।
* দাড়িমোচ কামানো আধা পুরুষ আধা নারী নপুংসক নাস্তিক ধর্মহীনদের প্রতি নারীপুরুষ কারোরই আস্থা নেই। তুলনা মূলক ত্যাগী বাম পন্থীদের মধ্যে আমি বহু লোককে জানি যারা দেহ-যোনির সেচ্ছাচারী বউদের মোটা বেতনে বহুজাতিক এনজিও দের কাছে ভাড়া খাটায় । ওদের পয়সায় ও মুরোদহীন মরদগুলো প্রগতিবাদী (?) রাজনীতি করে। জনগন তাদের পাতে ভাত দেয়না, কখনো দিবেনা।
ভিনদেশী পর পুরুষের দামী গাড়ি ও এসি অফিসে অভিসার শেষে উষ্ণ হওয়া ও বহু ক্ষেত্রেবীজ নেওয়া ম্যাডামরা ঘরে ফিরে তাদের মাংস দাবানো ও ওদের পেটে জন্মানো সন্তাদের পিতৃ পরিচয় দেয়ার জন্য ওরা ওদের প্রগতীবাদী দুঃস্থ নরদের সাথে এক বিছানায় রাত কাটায়। এটা আসলে পশুপাশবীর “লিভ টুগেদার”। মানব স্বামী স্ত্রীর সংসার নয়। বাম হাতে ভিক্ষা চাইলে যেমন লোকে ভিক্ষাও দেয়না, তেমন বামপন্থীদের কখনো জনগণ ভোট দিবেনা। ভোট চাইলেও ডান হাতে ভোট ভিক্ষা চাইতে হবে।
* দেশে মানুষ গড়ার কোনো শিক্ষা ব্যবস্থা সকল বৈধতা হারিয়েছে। পান বিড়ির দোকানের মতো রাস্তা ঘাটে ইউনিভার্সিটির সাইনবোর্ড ছেয়ে যাচ্ছে । সরকারী বিদ্যালয় সমূহের শিক্ষক নামের ইতররা কোচিং সেন্টার খুলে মাসে লাখ টাকা লুটছে।
* এ অবস্থায় করনীয় হচ্ছে নগরের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লুটেরা শিক্ষকদের হাতে ছেড়ে দেয়া। সরকার শুধুমাত্র মান নিয়ন্ত্রক পরীক্ষা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রন করবে। যেমন দ্রব্য সামগ্রীর মান নিয়ন্ত্রক টেস্টিং ল্যাবোরেটোরি থাকে।
* অপর দিকে নগর উন্নয়ন সম্পূর্ন বন্ধ করে পল্লী গ্রামে গ্রামীণ অভিভাবকদের কঠোর নিয়ন্ত্রনে পিতা মাতা ও গুরু ভিত্তিক সহ দেশসেবার গনশিক্ষা প্রবর্তন করতে হবে। সে জন্য বদরুদ্দীন ওমরদের গ্রামে হিজরত করতে হবে প্রকৃত ধার্মিক হয়ে। আরও বহু অমূল্য উপদেশ। যদি সাক্ষাত হয়.....।
শেষ প্রহরের মুয়াযযিন।
বিষয়: বিবিধ
১২৪৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন