সুফিবাদ ইসলামের শত্রুদের সৃষ্টি; যার বিষে উপমহাদেশে তাওহিদে সাক্ষ্যদাতাগনের একটি অংশ শিরকে নিম্মজিত।
লিখেছেন লিখেছেন মারজান বিন ছনা ০১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০২:৫৪:০৫ রাত
ইসলামের শত্রুরা মুসলিমদের যতটুকু ক্ষতি করেছে সামনা সামনি যুদ্ধ অবস্থায় তার চেয়ে বহুগুণ ক্ষতি সাধন করে সাফল্য হয়েছে মনের ভিতর অবিশ্বাস রেখে ইসলাম গ্রহণ করে নানান বিভ্রান্তি, দল-উপদল তৈরির মাধ্যমে। সুফিবাদ হচ্ছে সেই রকম একটি ধারা ইসলামের শত্রুরা বীজ বপন করেছে। আজ সেই বীজ বিষবৃক্ষে প্রকাশিত হয়েছে উপমহাদেশে। আরবের মুসলিমদের এই শিরকি মতবাদের অস্তিত্ব নাই। কারন কুরআন আরবি ভাষায় নাযিল হয়েছে, এবং কুরআনে শিরকের ব্যাপারে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা পরিষ্কার ভাষায় ওহী নাযিল করেছেন।
[হে নবী] তোমার কাছে এবং ইতিপূর্বেকার সমস্ত নবীর কাছে এ অহী পাঠানো হয়েছে যে, যদি তুমি শির্কে লিপ্ত হও তাহলে তোমার আমল ব্যর্থ হয়ে যাবে এবং তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে। [সুরা-যুমার/ আয়াত- ৬৫]
আল্লাহ অবশ্যই শিরকের গুন্নাহ মাফ করেন না। এছাড়া অন্যান্য যত গোনাহর হোক না কেন তিনি যাকে ইচ্ছা মাফ করে দেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে আর কাউকে শরীক করেছে সেতো এক বিরাট মিথ্যা রচনা করেছে এবং কঠিন গোনাহের কাজ করেছে। [সুরা-নিসা/ আয়াত-৪৮]
সুফিবাদের কথা বলে নানান যুগে নানান পীর বলে নিজেকে দাবী করেছে আর যুগে যুগে আমাদের উপমহাদেশে তাওহীদের সাক্ষ্যদাতাগনকে বিভ্রান্ত করে চিরস্থায়ী জাহান্নামের অধিবাসির মত আমল করিয়েছে । বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের বুকে কত হাজার মাযারকে ঘিরে শিরকের আয়োজন চলছে তার ইয়াত্তা নাই। তারা মুখে সাক্ষ্য দেয় এক আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই, বন্দেগি,আশা আকাংকা পুরনের একমাত্র উপাস্য হলেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কিন্তু তারা কবরে গিয়ে কিংবা জীবিত কোন মানুষকে পীর সম্বোধন করে নিজের আশা আকাংকা পুরনের আশা করে। আখিরাতে তাদের উসিলায় জান্নাতে যাওয়ার কথা মনের ভিতরে লালন করে। তারা কুরআন পড়ে না, হাদিস পড়ে না, পীর যা বলে তা অন্ধের মত অনুকরণ করে। পীর তাদের বলে দাড়িয়ে " =ইয়া নবী সালাম ......মিলাদ পড়ো।তারা অন্ধের মত তা অনুকরণ করে কিন্তু একটি বারের জন্য সাহাবীদের যুগের আমল ঘেঁটে দেখতে ইচ্ছা পোষণ করে না এই মিলাদের অস্তিত্ব কি আদৌ ইসলামে আছে কি না ?
অশিক্ষিত,পেটের ক্ষিদায় জর্জরিত মানুষ গুলো নিজেদের ঈমান সেই সব দাজ্জাল পীরদের হাতে সপে দেয়। এর জন্য প্রধান করান শিক্ষা না থাকা, ইসলামী শিক্ষা না থাকা। ইসলাম শিক্ষা গ্রহণ ফরজ করেছে। কুরআনের প্রথম আয়াত নাযিল হয়েছিল " ইকরা- "পড়ো"। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কিংবা একজন ডাক্তার পর্যন্ত ঐ সব দাজ্জালের মুরিদ হয়, অন্ধ অনুকরণ অনুসরণ করে কিন্তু তার বিবেক একটি বারের জন্য কি প্রশ্ন করে না, যে পীরের কবরে গিয়ে মানত বা দোয়া করে সে আর কোন মুশরিক নিজের হাতে তৈরি মূর্তির সামনে গিয়ে চায়, সে এবং ঐ ব্যাক্তির অবস্থা একই !! মানুষের বিবেক এমন এক জিনিস সেই বিবেক দিয়ে এই কথা স্থির করতে পারে যে, কোন সৃষ্টি পুজনিয় হতে পারে না। সব সৃষ্টির আড়ালে যিনি আছেন বিবেক সায় দেয় সেই সত্তার কেবল পুজা, বন্দেগি করা যায়। যিনি প্রতি যুগে যুগে সৃষ্টির সেরা জীব মানুষদের ওহির মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ-আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই,মাবুদ নাই......আকাশের দিকে থাকালে বিবেক সাক্ষ্য দেয় ঐ আকাশ আমি নিজের চোখে দেখছি, ওর আড়ালে এমন কিছু আছে যা আমি দুনিয়া থেকে দেখতে পারি না, পারব না। বিবেক সাক্ষ্য দেয় মানুষকে মরে যেতে হয়। বিবেক সাক্ষ্য দেয় মরার পর দুনিয়ার কাজের হিসাবের সম্মুখীন হওয়াই বাস্তবিক, না হওয়া অবাস্তব।
যুগে যুগে প্রত্যেক নবী রাসুল এসেছে একটি দাওয়াত নিয়ে, একটি মিশন নিয়ে আর তা হলো মানুষ এক আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে মাথা নত করবে না,নিজেদের সমস্ত কাজ কর্ম কেবল এক আল্লাহ তায়ালার বিধান মোতাবেক পরিচালনা করবে,ইবাদাত করবে শুধু আল্লাহর,কেবল তার কাছেই চাইবে। মুসলিম ব্যাক্তি প্রতিদিন প্রতি ওয়াক্তে সুরা ফাতিহায় এই কথাই আল্লাহ তায়ালার নিকট পেশ করে " আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদাত করি এবং একমাত্র তোমারই নিকট সাহায্য চাই" [সুরা ফাতিহা আয়াত-৪]
যারা বাংলাদেশে কবরগুলো শিরকের আস্তানায় পরিণত করেছো, পীর দাবিদারেরা সুফিবাদের নামে শিরকবাদ লালন করে রমরমা ব্যবসা করছো তোমাদের মুখোশ তোমাদের মুরিদের নিকট উন্মোচিত হতে কেবল একটি সুরা ফাতিহা যতেষ্ট। তাই ভাই বোনেরা আমরা বিভ্রান্ত হবো না কখনোই যতক্ষণ কুরআন ও সুন্নাহ আমাদের নিকট থাকবে, শুধু আলমারিতে থাকলে হবে না, খুলে নিজের ভাষায় পড়তে হবে তবেই কুরআনের নিকট থেকে রবের কথা সরাসরি জানতে পারব এবং আমলও করতে পারব, ইনশাআল্লাহ্। কোন দাজ্জাল কুরআনের পাঠককে ঈমান হারা করতে পারবে না, এই জন্য আল্লাহর রাসুল [সাঃ] নির্দেশনা দিয়েছেন দাজ্জাল থেকে বাঁচতে সুরা কাহফের প্রথম দশ আয়াত পড়ার জন্য। সুরা কাহফের দুই আয়াত দিয়ে আমার পোষ্ট শেষ করছি, আল্লাহ তায়ালা আমাদের সিরাতুল মোস্তাকিমের পথে পরিচালিত করুন,আমীন ।
১- প্রশংসা আল্লাহরই যিনি তাঁর বান্দার প্রতি এ কিতাব নাযিল করেছেন এবং এর মধ্যে কোন বক্রতা রাখেননি।
২- একদম সোজা কথা বলার কিতাব, যাতে লোকদেরকে আল্লাহর কঠিন শাস্তি থেকে সে সাবধান করে দেয় এবং ঈমান এনে যারা সৎকাজ করে তাদেরকে সুখবর দিয়ে দেয় এ মর্মে যে, তাদের জন্য রয়েছে ভাল প্রতিদান। [সুরা-কাহফ]
বিষয়: রাজনীতি
১৫২৩ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের বুকে কত হাজার মাযারকে ঘিরে শিরকের আয়োজন চলছে তার ইয়াত্তা নাই। তারা মুখে সাক্ষ্য দেয় এক আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই, বন্দেগি,আশা আকাংকা পুরনের একমাত্র উপাস্য হলেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কিন্তু তারা কবরে গিয়ে কিংবা জীবিত কোন মানুষকে পীর সম্বোধন করে নিজের আশা আকাংকা পুরনের আশা করে। আখিরাতে তাদের উসিলায় জান্নাতে যাওয়ার কথা মনের ভিতরে লালন করে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন