ইয়াজুজ-মাজুজের সাথেই আমরা বাস করছি "জানা আছে কি ?

লিখেছেন লিখেছেন মারজান বিন ছনা ২৪ আগস্ট, ২০১৪, ০২:২৪:৩০ রাত

৮৩- আর হে মুহাম্মাদ! এরা তোমার কাছে যুলকারনাইন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। এদেরকে বলে দাও, আমি তার সম্বন্ধে কিছু কথা তোমাদের শুনাচ্ছি............ [সুরা-কাহফ] [ক]



#[ক] এখানে যে যুলকারনাইনের কথা বলা হচ্ছে তিনি কে ছিলেন, এ বিষয়ে প্রাচীন যুগ থেকে নিয়ে আজও পর্যন্ত মতবিরোধ চলে আসছে। প্রাচীন যুগের মুফাস্সিরগণ সাধারণত যুলকারনাইন বলতে আলেকজাণ্ডারকেই বুঝিয়েছেন। কিন্তু কুরআনে তাঁর যে গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে, আলেকজাণ্ডারের সাথে তার মিল খুবই কম। আধুনিক যুগে ঐতিহাসিক তথ্যাবলীর ভিত্তিতে মুফাসসিরগণের অধিকাংশ এ মত পোষণ করেন যে, তিনি ছিলেন ইরানের শাসনকর্তা খুরস তথা খসরু বা সাইরাস। এ মত তুলনামূলকভাবে বেশী যুক্তিগ্রাহ্য। তবুও এখনো পর্যন্ত সঠিক ও নিশ্চিতভাবে কোন ব্যক্তিকে যুলকারনাইন হিসেবে চিহ্নিত করা যেতে পারেনি।

কুরআন মজীতে যেভাবে তার কথা আলোচনা করেছে তা থেকে আমরা সুস্পষ্টভাবে চারটি কথা জানতে পারিঃ

এক, তার যুলকারনাইন (শাব্দিক অর্থ “দু’ শিংওয়ালা”) উপাধিটি কমপক্ষে ইহুদীদের মধ্যে, যাদের ইঙ্গিত মক্কার কাফেররা তার সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রশ্ন করেছিল, নিশ্চয়ই পরিচিত হওয়ার কথা তাই একথা জানার জন্য আমাদের ইসরাঈলী সাহিত্যের শরণাপন্ন না হয়ে উপায় থাকে না যে, তারা “দু’শিংওয়ালা” হিসেবে কোন্ ব্যক্তি বা রাষ্ট্রকে জানতো?

জুলকারণাইন কিসসা সংক্রান্ত মানচিত্র (সূরা আল কাহফ ৬২ নং টীকা)

দুই, এ ব্যক্তির অবশ্যই কোন বড় শাসক ও এমন পর্যায়ের বিজেতা হওয়ার কথা যার বিজয় অভিযান পূর্ব থেকে পশ্চিমে পরিচালিত হয়েছিল এবং অন্যদিকে উত্তর-দক্ষিণ দিকেও বিস্তৃত হয়েছিল। কুরআন নাযিলের পূর্বে এ ধরনের কৃতিত্বের অধিকারী মাত্র কয়েকজন ব্যক্তির কথাই জানা যায়। তাই অনিবার্যভাবে তাদেরই কারোর মধ্যে আমাদের তার সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য তথ্য ও বৈশিষ্ট্যও খুঁজে দেখতে হবে।

তিন, তাকে অবশ্যই এমন একজন শাসনকর্তা হতে হবে যিনি নিজের রাজ্যকে ইয়াজুজ মা’জুজের হাত থেকে বাঁচাবার জন্য কোন পার্বত্য গিরিপথে একটি মজবুত প্রাচীর নির্মাণ করেন। এ বৈশিষ্ট্যটির অনুসন্ধান করার জন্য আমাদের একথাও জানতে হবে যে, ইয়াজুজ মা’জুজ বলতে কোন্ জাতিকে বুঝানো হয়েছে এবং তারপর এও দেখতে হবে যে, তাদের এলাকার সাথে সংশ্লিষ্ট এ ধরনের কোন্ প্রাচীর দুনিয়ায় নির্মাণ করা হয়েছে এবং সেটি কে নির্মাণ করেছে? চার, তার মধ্যে উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলোসহ এ বৈশিষ্ট্যটিও উপস্থিত থাকা চাই যে, তিনি আল্লাহর প্রতি আনুগত্যশীল ও ন্যায়পরায়ণ শাসনকর্তা হবেন। কারণ কুরআন এখানে তার এ বৈশিষ্ট্যটিকেই সবচেয়ে সুস্পষ্ট করেছে।

এর মধ্যে থেকে প্রথম বৈশিষ্ট্যটি সহজেই খুরসের (বা সাইরাস) বেলায় প্রযোজ্য। কারণ বাইবেলের দানিয়েল পুস্তকে দানিয়েল নবীর যে স্বপ্নের কথা বর্ণনা করা হয়েছে তাতে তিনি ইরানীদের উত্থানের পূর্বে মিডিয়া ও পাস্যের যুক্ত সাম্রাজ্যকে একটি দু’শিংওয়ালা মেষের আকারে দেখেন। ইহুদীদের মধ্যে এ “দু’শিংধারী”র বেশ চর্চা ছিল। কারণ তার সাথে সংঘাতের ফলেই শেষ পর্যন্ত বেবিলনের সাম্রাজ্য খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে যায় এবং বনী ইসরাঈল দাসত্ব শৃংখল থেকে মুক্তি লাভ করে। (দেখুন তাফহীমুল কুরআন, সূরা বনী ইসরাঈল ৮ টীকা)

দ্বিতীয় চিহ্নটিরও বেশীর ভাগ তার সাথে খাপ খেয়ে যায় কিন্তু পুরোপুরি নয়। তার বিজয় অভিযান নিঃসন্দেহে পশ্চিমে এশিয়া মাইনর ও সিরিয়ার সমুদ্রসীমা এবং পূর্বে বখ্তর (বলখ) পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। কিন্তু উত্তরে বা দক্ষিণে তার কোন বড় আকারের অভিযানের সন্ধান এখনো পর্যন্ত ইতিহাসের পাতায় পাওয়া যায়নি। অথচ কুরআন সুস্পষ্টভাবে তার তৃতীয় একটি অভিযানের কথা বর্ণনা করছে। তবুও এ ধরনের একটি অভিযান পরিচালিত হওয়া অসম্ভব নয়। কারণ ইতিহাস থেকে দেখা যায়, খুরসের রাজ্য উত্তরে ককেশিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।

তৃতীয় চিহ্নটির ব্যাপারে বলা যায়, একথা প্রায় সুপ্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে যে, ইয়াজুজ মা’জুজ বলতে রাশিয়া ও উত্তর চীনের এমনসব উপজাতিদের বুঝানো হয়েছে যারা তাতারী, মঙ্গল, হূন ও সেথিন নামে পরিচিত এবং প্রাচীন যুগ থেকে সভ্য দেশগুলোর বিরুদ্ধে আক্রমণ পরিচালনা করে আসছিল। তাছাড়া একথাও জানা গেছে যে, তাদের আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষার জন্য ককেশাসের দক্ষিণাঞ্চলে দরবন্দ ও দারিয়ালের মাঝখানে প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু খুরসই যে, এ প্রাচীর নির্মাণ করেছিলেন তা এখনো প্রমাণিত হয়নি।

শেষ চিহ্নটি প্রাচীন যুগের একমাত্র খুরসের সাথেই সম্পৃক্ত করা যেতে পারে। কারণ তার শত্রুরাও তার ন্যায়বিচারের প্রশংসা করেছে। বাইবেলের ইষ্রা পুস্তক একথার সাক্ষ্য বহন করে যে, তিনি নিশ্চয়ই একজন আল্লাহভীরু ও আল্লাহর অনুগত বাদশাহ ছিলেন। তিনি বনী ইসরাঈলকে তাদের আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রিয়তার কারণেই বেবিলনের দাসত্বমুক্ত করছিলেন এবং এক ও লা-শরীক আল্লাহর ইবাদাতের জন্য বাইতুল মাকদিসে পুনর্বার হাইকেলে সুলাইমানী নির্মাণ করার হুকুম দিয়েছিলেন।

এ কারণে আমি একথা অবশ্যি স্বীকার করি যে, কুরআন নাযিলের পূর্বে যতজন বিশ্ববিজেতা অতিক্রান্ত হয়েছেন তাদে মধ্য থেকে একমাত্র খুরসের মধ্যেই যুলকারনাইনের আলামতগুলো বেশী পরিমাণে পাওয়া যায় কিন্তু একেবারে নিশ্চয়তা সহকারে তাকেই যুলকারনাইন বলে নির্দিষ্ট করার জন্য এখনো আরো অনেক সাক্ষ্য প্রমাণের প্রয়োজন রয়েছে। তবুও কুরআনে উপস্থাপিত আলামতগুলো যত বেশী পরিমাণে খুরসের মধ্যে বিদ্যমান, ততটা আর কোন বিজেতার মধ্যে নয়।

ঐতিহাসিক বর্ণনার জন্য এতটুকু বলাই যথেষ্ট যে, খুরস ছিলেন একজন ইরানী শাসনকর্তা। খৃস্টপূর্ব ৫৪৯ অব্দের কাছাকাছি যুগ থেকে তাঁর উত্থান শুরু হয়। কয়েক বছরের মধ্যেই তিনি মিডিয়া (আল জিবাল) এবং লিডিয়া (এশিয়া মাইনর) রাজ্য জয় করার পর ৫৩৯ খৃস্টপূর্বাদ্বে বেবিলন জয় করেন। এরপর তার পথে আর কোন রাজশক্তির বাধা ছিল না। তার বিজয় অভিযান সিন্ধু ও সুগদ (বর্তমান তুর্কিস্তান) থেকে শুরু করে একদিকে মিসর ও লিবিয়া এবং অন্যদিকে থ্রেস ও ম্যাকডোনিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। আবার উত্তর দিকে তাঁর সাম্রাজ্য বিস্তার লাভ করে ককেশিয়া ও খাওয়ারিযাম পর্যন্ত। বলতে গেলে সেকালের সমগ্র সভ্য জগত তাঁর শাসনাধীন ছিল।

৯৪- তারা বললো, “হে যুলকারনাইন! ইয়াজুজ ও মাজুজ এ দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। আমরা কি তোমাকে এ কাজের জন্য কোন কর দেবো, তুমি আমাদের ও তাদের মাঝখানে একটি প্রাচীর নির্মাণ করে দেবে?”

৯৫- সে বললো, “আমার রব আমাকে যা কিছু দিয়ে রেখেছেন তাই যথেষ্ট। তোমরা শুধু শ্রম দিয়ে আমাকে সাহায্য করো, আমি তোমাদের ও তাদের মাঝখানে প্রাচীর নির্মাণ করে দিচ্ছি।

৯৬- আমাকে লোহার পাত এনে দাও।” তারপর যখন দু’পাহাড়ের মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গা সে পূর্ণ করে দিল তখন লোকদের বললো, এবার আগুন জ্বালাও। এমনকি যখন এ (অগ্নি প্রাচীর) পুরোপুরি আগুনের মতো লাল হয়ে গেলো তখন সে বললো, “আনো, এবার আমি গলিত তামা এর উপর ঢেলে দেবো।”

৯৭- (এ প্রাচীর এমন ছিল যে) ইয়াজুজ ও মাজুজ এটা অতিক্রম করেও আসতে পারতো না এবং এর গায়ে সুড়ংগ কাটাও তাদের জন্য আরো কঠিন ছিল।

৯৮- যুলকারনাইন বললো, “এ আমার রবের অনুগ্রহ। কিন্তু যখন আমার রবের প্রতিশ্রুতির নির্দিষ্ট সময় আসবে তখন তিনি একে ধূলিস্মাত করে দেবেন আর আমার রবের প্রতিশ্রুতি সত্য।

৯৯- আর সে দিন আমি লোকদেরকে ছেড়ে দেবো, তারা (সাগর তরংগের মতো) পরস্পরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হবে আর শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে এবং আমি সব মানুষকে একত্র করবো
।[সুরা -কাহফ] [খ]

#[খ]ইয়াজুজ মা’জুজ বলতে বুঝায়, যে, এশিয়ার উত্তর পূর্ব এলাকার এমন সব জাতি যারা প্রাচীন যুগে সুসভ্য দেশগুলোর ওপর ধ্বংসাত্মক হামলা চালাতে অভ্যস্ত ছিল এবং মাঝে মধ্যে এশিয়া ও ইউরোপ উভয় দিকে সয়লাবের আকারে ধ্বংসের থাবা বিস্তার করতো। বাইবেলের আদি পুস্তক (১০ অধ্যায়) তাদেরকে হযরত নূহের (আ) পুত্র ইয়াফেসের বংশধর বলা হয়েছে। মুসলিম ঐতিহাসিকগণও এ একই কথা বলেছেন। হিযকিয়েল (যিহিষ্কেল) পুস্তিকায় (৩৮ ও ৩৯ অধ্যায়) তাদের এলাকা বলা হয়েছে রোশ (রুশ) তূবল (বর্তমান তোবলস্ক) ও মিস্ক (বর্তমান মস্কো) কে। ইসরাঈলী ঐতিহাসিক ইউসীফুস তাদেরকে সিথীন জাতি মনে করেন এবং তার ধারণা তাদের এলাকা কৃষ্ণসাগরের উত্তর ও পূর্ব দিকে অবস্থিত ছিল। জিরোম এর বর্ণনা মতে মাজুজ জাতির বসতি ছিল ককেশিয়ার উত্তরে কাস্পিয়ান সাগরের সন্নিকটে।

যদিও নিজের সামর্থ্য মোতাবেক আমি অত্যন্ত মজবুত ও সৃদৃঢ় প্রাচীর নির্মাণ করেছি তবুও এটি কোন অক্ষয় জিনিস নয়। যতদিন আল্লাহ ইচ্ছা করবেন এটি প্রতিষ্ঠিত থাকবে। তারপর এর ধ্বংসের জন্য আল্লাহ যে সময় নির্ধারিত করে রেখেছেন তা যখন এসে যাবে তখন কোন জিনিসই একে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে পারবে না। “প্রতিশ্রুতির সময়” ---এর দু’ অর্থ হয়। এর অর্থ প্রাচীরটি ধ্বংস হবার সময়ও হয় আবার প্রত্যেকটি জিনিসের মৃত্যু ও ধ্বংসের জন্য আল্লাহ যে সময়টি নির্ধারিত করে রেখেছেন সে সময়টিও হয় অর্থাৎ কিয়ামত।

যুলকারনাইন নির্মীত প্রাচীর সম্পর্কে কিছু লোকের মধ্যে ভুল ধারণা রয়েছে। তারা সুপরিচিত চীনের প্রাচীরকে যুলকারনাইনের প্রাচীর মনে করে। অথচ এ প্রাচীরটি ককেশাসের দাগিস্তান অঞ্চলের দরবন্দ ও দারিয়ালের (Darial) মাঝখানে নির্মীত হয়। ককেশীয় অঞ্চল বলতে বুঝায় কৃষ্ণ সাগর (Black sea) ও কাস্পিয়ান সাগরের (Caspian sea) মধ্যবর্তী এলাকা। এ এলাকায় কৃষ্ণ সাগর থেকে দারিয়াল পর্যন্ত রয়েছে সুউচ্চ পাহাড়। এর মাঝখানে যে সংকীর্ণ গিরিপথ রয়েছে কোন দুর্ধর্ষ হানাদার সেনাবাহিনীর পক্ষেও তা অতিক্রম করা সম্ভব নয়। তবে দরবন্দ ও দারিয়ালের মধ্যবর্তী এলাকায় পর্বত শ্রেণীও বেশী উঁচু নয় এবং সেখানকার পার্বত্য পথগুলোও যথেষ্ট চওড়া। প্রাচীন যুগে উত্তরের বর্বর জাতিরা এ দিক দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক আক্রমণ চালিয়ে হত্যা ও লুটতরাজ চালাতো। ইরানী শাসকগণ এ পথেই নিজেদের রাজ্যের ওপর উত্তরের হামলার আশঙ্কা করতেন। এ হামলাগুলো রুখবার জন্য একটি অত্যন্ত মজবুত প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছিল। এ প্রাচীর ছিল ৫০ মাইল লম্বা, ২৯০ ফুট উঁচু এবং ১০ ফুট চওড়া। এখনো পর্যন্ত ঐতিহাসিক গবেষণার মাধ্যমে নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি যে, এ প্রাচীর শুরুতে কে এবং কবে নির্মাণ করেছিল। কিন্তু মুসলমান ঐতিহাসিক ও ভূগোলবিদগণ এটিকেই যুলকারনাইনের প্রাচীর বলে অভিহিত করেছেন। কুরআন মজীদে এ প্রাচীর নির্মাণের যে প্রক্রিয়া বর্ণনা করা হয়েছে তার চিহ্নসমূহ এখনো এখানে পাওয়া যায়।

ইবনে জারীর তাবারী ও ইবনে কাসীর তাদের ইতিহাস গ্রন্থে এ ঘটনাটি লিখেছেন। ইয়াকুতী তাঁর মু’জামূল বুলদান গ্রন্থে এরই বরাত দিয়ে লিখেছেন, হযরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু যখন আজারবাইজান বিজয়ের পর ২২ হিজরীতে সুরাকাহ্ ইবনে আমরকে বাবুল আবওয়াব (দরবন্দ) অভিযানে রওয়ানা করেন। সূরাকাহ আবদুর রহমান ইব্ন রবী’আহকে নিজের অগ্রবর্তী বাহিনীর প্রধানের দায়িত্ব দিয়ে সামনের দিকে পাঠিয়ে দেন। আবদুর রহমান যখন আর্মেনীয়া এলাকায় প্রবেশ করেন তখন সেখানকার শাসক শারবরায যুদ্ধ ছাড়াই আনুগত্য স্বীকার করেন। এরপর তিনি বাবুল আবওয়াবের দিকে অগ্রসর হবার সংকল্প করেন। এ সময় শারবরায তাঁকে বলেন, আমি এক ব্যক্তিকে যুলকারনাইনের প্রাচীর পরিদর্শন এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার জন্য পাঠিয়েছিলাম। সে আপনাকে এর বিস্তারিত বিবরণ শুনাতে পারে। তদানুসারে তিনি আবদুর রহমানের সামনে সেই ব্যক্তিকে হাযির করেন। (তাবারী, ৩ খণ্ড, ২৩৫-৩৩৯ পৃঃ; আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৭ খণ্ড; ১২২-১২৫ পৃঃ এবং মু’জামুল বুলদান, বাবুল আবওয়াব প্রসঙ্গ)।

এ ঘটনার দুশো’ বছর পর আব্বাসী খলীফা ওয়াসিক বিল্লাহ (২২৭-২৩৩ হিঃ) যুলকারনাইনের প্রাচীর পরিদর্শন করার জন্য সাল্লামুত তারজুমানের নেতৃত্বে ৫০ জনের একটি অভিযাত্রী দল পাঠান। ইয়াকুত তাঁর মু’জামুল বুলদান এবং ইবনে কাসীর তার আল বিদায়া ওয়ান নিহারা গ্রন্থে এর বিস্তারিত বিবরণ লিপিবদ্ধ করেছেন। তাদের বর্ণনা মতে, এ অভিযাত্রী দলটি সামর্রাহ থেকে টিফলিস, সেখান থেকে আস্সারীর, ওখান থেকে আল্লান হয়ে দীলান শাহ এলাকায় পৌঁছে যায়। তারপর তারা খাযার (কাস্পিয়ান) দেশে প্রবেশ করেন। এরপর সেখান থেকে দরবন্দে পৌঁছে যুলকারনাইনের প্রাচীর পরিদর্শন করে। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ২ খণ্ড, ১১১ পৃঃ ; ৭ খণ্ড, ১২২-১২৫ পৃঃ, মু’জামুল বুলদান, বাবুল আবওয়াব) এ থেকে পরিষ্কার জানা যায়, হিজরী তৃতীয় শতকেও মুসলমানরা ককেশাসের এ প্রাচীরকেই যুলকারনাইনের প্রাচীর মনে করতো।

ইয়াকুত মু’জামুল বুলদানের বিভিন্ন স্থানে এ বিষয়টিকেই সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন। খাযার শিরোনামে তিনি লিখেছেনঃ

আরবী---------------------------------

“এটি তুরস্কের এলাকা। যুলকারনাইন প্রাচীরের সন্নিকটে দরবন্দ নামে খ্যাত বাবুল আবওয়াবের পেছনে এটি অবস্থিত।” এ প্রসঙ্গে তিনি খলীফা মুকতাদির বিল্লাহর দূত আহমদ ইব্ন ফুদলানের একটি রিপোর্ট উদ্ধৃত করেছেন। তাতে খাযার রাজ্যের বিস্তারিত বিবরণ দেয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, খাযার একটি রাজ্যের নাম এর রাজধানী ইতল। ইতল নদী এ শহরের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এ নদীটি রাশিয়া ও বুলগার থেকে এসে খাযার তথা কাম্পিয়ান সাগরে পড়েছে।

বাবুল আবওয়াব শিরোনামে তিনি লিখছেন, তাকে আলবাব এবং দরবন্দও বলা হয়। এটি খাযার (কাস্পিয়ান) সাগর তীরে অবস্থিত। কুফরীর রাজ্যে থেকে মুসলিম রাজ্যের দিকে আগমনকারীদের জন্য এ পথটি বড়ই দুর্গম ও বিপদ সংকুল। এক সময় এটি নওশেরেওঁয়ার রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং ইরানের বাদশাহগণ এ সীমান্ত সংরক্ষণের প্রতি অত্যাধিক গুরুত্ব দিতেন।

৯৬-এমন কি যখন ইয়াজুজ ও মাজুজকে খুলে দেয়া হবে, প্রতি উচ্চ ভূমি থেকে তারা বের হয়ে পড়বে।

৯৭-এবং সত্য ওয়াদা পুরা হবার সময় কাছে এসে যাবে তখন যারা কুফরী করেছিল হঠাৎ তাদের চক্ষু স্থির হয়ে যাবে।তারা বলবে, “হায়, আমাদের দুর্ভাগ্য। আমরা তো এ বিষয়ে গাফেল ছিলাম বরং আমরা দোষী ছিলাম।
[সুরা-আম্বিয়া] [গ]

#[গ] ইয়াজুজ মাজুজকে খুলে দেয়ার অর্থ হচ্ছে এই যে, তারা দুনিয়ার ওপর এমনভাবে ঝাঁপিয়ে পড়বে যেমন মনে হবে কোন হিংস্র পশুকে হঠাৎ খাঁচা বা বন্ধন মুক্ত করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। “সত্য ওয়াদা পুরা হবার সময় কাছে এসে যাবে” এর মধ্যে পরিষ্কার এদিকে ইশারা করা হয়েছে যে, ইয়াজুজ ও মা’জুজের এ বিশ্বব্যাপী আক্রমণ শেষ জামানায় হবে এবং এর পর দ্রুত কিয়ামত এসে যাবে। এ অর্থকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ উক্তিটিও আরো বেশী সুস্পষ্ট করে দেবে যা ইমাম মুসলিম হুযাইফা ইবনে আসীদিল গিফারী থেকে বর্ণনা করেছেন। তাতে বলা হয়েছেঃ “কিয়ামত হবে না যে পর্যন্ত না তোমরা তার মধ্য থেকে দশটি আলামত দেখে নেবেঃ ধোঁকা, দাজ্জাল, মাটির পোকা, পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয়, ঈসা ইবনে মার্‌য়ামের অবতরণ, ইয়াজুজ মাজুজের আক্রমণ, তিনটি বৃহত্তম ভূমি ধ্বস() একটি পূর্বে, অন্যটি পশ্চিমে ও তৃতীয়টি আবর উপদ্বীপে এবং সব শেষে ইয়ামন থেকে একটি ভয়াবহ আগুন উঠবে যা লোকদেরকে হাশরের ময়দানের দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাবে (অর্থাৎ এরপর কিয়ামত এসে যাবে)। অন্য এক হাদীসে ইয়াজুজমাজুজের উল্লেখ করার পর নবী ﷺ বলেন, সে সময় কিয়ামত এত বেশী নিকটবর্তী হবে যেন পূর্ণ গর্ভবতী মহিলা বলতে পারছে না কখন তার সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়ে যাবে, রাতে বাদিনে যে কোন সময় () কিন্তু কুরআন মজীদ ও হাদীসমূহে ইয়াজুজ ও মাজুজ সম্পর্কে যা কিছু বলা হয়েছে তা থেকে একথা পরিষ্কার হয় না যে, এরা দুয়ে মিলে একজোট হয়ে একসাথে দুনিয়ার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে। হতে পারে কিয়ামতের নিকটতর যুগে এরা দুয়ে পাস্পরিক লাড়াইয়ে লিপ্ত হবে এবং তারপর এদের লাড়াই একটি বিশ্বব্যাপী বিপর্যয়ের কারণ হবে।

গাফলতির মধ্যে তবুও এক ধরনের ওজর পাওয়া যায়। তাই তারা নিজেদের গাফলতি বর্ণনা করার পর আবার নিজেরাই পরিষ্কার স্বীকার করবে, নবীগণ এসে আমাদের এ দিনটি সম্পর্কে জানিয়ে দিয়েছিলেন, কাজেই মূলত আমরা গাফেল ও বেখবর ছিলাম না বরং দোষী ও অপরাধী ছিলাম।



এই অঞ্চল গুগলে দেখুন।এই অঞ্চল গুগলে দেখুন।

ইয়াজুজ-মাজুজের বিষয়ে যেসব সহিহ হাদিস এসেছে, তন্মধ্যে একটি হলো যায়নাব বিনতে জাহশ [রাঃ] থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার এখানে একদিন উৎকণ্ঠিত অবস্থায় এসে হাজির হয়েছেন এবং বলেছেন,‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আরবদের জন্য আফসোস এমন একটি অকল্যাণের জন্য যা অবশ্যই নিকটে চলে এসেছে। আজ ইয়াজুজ-মাজুজের বাঁধ এই পরিমাণ খুলে দেয়া হয়েছে। এটা বলে তিনি তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি ও তার পাশের আঙ্গুলি দ্বারা বৃত্ত তৈরি করলেন।’ যায়নাব বিনতে জাহশ [রাঃ] বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমরা কি ধ্বংস হয়ে যাব, আমাদের মধ্যে নেককার লোকেরা থাকা সত্ত্বেও? তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, যদি অপকর্ম বেড়ে যায়। [বুখারি]



উপরের লেখা গুলো তাফহিমুল কুরআন থেকে কপি করা। এখন থেকে আমার বক্তব্য।

# উপরের আয়াত ও আয়াতের ব্যাখা ও একটি হাদিস থেকেই পরিষ্কার হয় যে ইয়াজুজ মাজুজ কোন পাহাড়ের নিচে বসবাসকারী নয়, তারা অদৃশ্যও নয়, তারা মানুষ। মানুষের জীবন ধারনের স্বাভাবিক দাবী হলো আক্সিজেন থাকতে হবে। কাজেই পাহাড়ের নিচে যে কল্পনা আমরা করি ইয়াজুজ মাজুজ সম্পর্কে তা ভিত্তিহীন। আর যে দেয়াল দিয়ে তাদের আটকানো হয়েছিল তা রাসুলের [সাঃ] জীবিত সময়েই ধবংস হয়ে যায় বা ধবংসের সুত্রপাত হয়। আজকের পৃথিবীতে দুটি বৃহৎ শক্তি পরস্পরের মোকাবেলায় প্রতিযোগিতা করছে একটি আমেরিকা ও তার মিত্র ইউরোপীয় ইউনিউয়ন বিপরীতে রাশিয়া ও তার মিত্র। আমাদেরকে ধরে নিতে হবে এই দুই শক্তির মধ্যে ইয়াজুজ ও মাজুজ জাতি মিশে গিয়েছে। পৃথিবীকে একটি ভয়ংকর বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দেয়ার যুদ্ধে তারা এখন মহড়া দিচ্ছে।খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে পোশাক পরিচ্ছেদ সব কিছুতেই পরিবর্তন এনেছে এরাই। নারী-পুরুষের সমঅধিকার এরাই দাবী করে।দখলদার ইসরাইল বিষয়ে এরা দু পক্ষ বড়ই নীরব ভুমিকা পালন করে। পুরো পৃথিবী এখন তারাই নিয়ন্ত্রণ করে যেখানে মুসলিম জাতি দুর্বল অবস্থায় আছে এবং চারিদিকে মার খেয়ে যাচ্ছে এদের হাতেই।

এই বিষয়ে শায়খ ইমরান হুসেনের লেকচারও শুনতে পারেন।

https://www.youtube.com/watch?v=knKukLhJhDc

আয়াতের অনুবাদ ও ব্যাখা তাফহিমুল কুরআন থেকে

http://www.banglatafheem.com/index.php?option=com_content&view=frontpage&Itemid=1

বিষয়: বিবিধ

১২৩৬৬ বার পঠিত, ২৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

257586
২৪ আগস্ট ২০১৪ রাত ০২:২৯
বাজলবী লিখেছেন : জাযাকাল্লাহ খাইর।
২৪ আগস্ট ২০১৪ রাত ১০:০৩
201533
মারজান বিন ছনা লিখেছেন : Good Luck Good Luck Good Luck
257595
২৪ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৫:১২
মুফতি যুবায়ের খান রাহমানী। লিখেছেন : ভালো লাগলো অসংখ্য ধন্যবাদ
২৪ আগস্ট ২০১৪ রাত ১০:০৩
201534
মারজান বিন ছনা লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ
Good Luck Good Luck
257599
২৪ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৫:২৮
বুড়া মিয়া লিখেছেন : হুম, উনার বইটা ধীরে ধীরে পড়তেছি। কিছুদূর পড়ার পর মনে হয়েছে – উনি শিয়া-সূন্নী কোন আকিদা বাদ দেন নাই, সব মিলিয়ে পারিপার্শ্বিক অবস্থা মিলিয়ে ভালো একটা এ্যাসেসমেন্ট করেছে।
২৪ আগস্ট ২০১৪ রাত ১০:০৮
201540
মারজান বিন ছনা লিখেছেন : ইসলামের মূল নীতি গুলো থেকে আমাদের জ্ঞান অর্জন করা টার্গেট থাকতে হবে, কোন মাজহাবী চিন্তায় প্রথমই অন্ধ হয়ে গেলে কুরআন ও সুন্নাহ থেকে জ্ঞান লাভ সম্ভব নয়। শায়খ ইমরানের সব বক্তব্যে আমিও একমত নই। কিন্তু তিনি যে কুরআন ও সুন্নাহ থেকে অকাট্য দলিল প্রমাণ পেশ করে যুক্তি দিয়ে বক্তব্য রেখেছেন তাতে দ্বিমত পোষণ কে করবে ?

আপনাকে ধন্যবাদ Good Luck
257617
২৪ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৭:২৮
নেনাভাই লিখেছেন : সুন্দর লিখেছেন, ধন্যবাদ
২৪ আগস্ট ২০১৪ রাত ১০:১০
201541
মারজান বিন ছনা লিখেছেন : আমি শুধু কপি পেস্ট করেছি তাফসীর থেকে। তাফহিমুল কুরআনের লেখককে আল্লাহ তায়ালা উত্তম প্রতিদান দিন।

আপনাকে ধন্যবাদGood Luck Good Luck
257636
২৪ আগস্ট ২০১৪ সকাল ১০:০৫
নিশিকাব্য লিখেছেন : অজানা অনেক কিছু জানলাম।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
২৪ আগস্ট ২০১৪ রাত ১০:১০
201542
মারজান বিন ছনা লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ Good Luck Good Luck Love Struck
257650
২৪ আগস্ট ২০১৪ সকাল ১০:৪৪
ছাপোষা লিখেছেন : জাযাকাল্লাহ খাইর।চমৎকার বিশ্লেষণ...........
২৪ আগস্ট ২০১৪ রাত ১০:১১
201543
মারজান বিন ছনা লিখেছেন : Good Luck Good Luck
257653
২৪ আগস্ট ২০১৪ সকাল ১০:৪৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : চমৎকার আলোচনাটির জন্য অনেক ধন্যবাদ।
২৪ আগস্ট ২০১৪ রাত ১০:১১
201544
মারজান বিন ছনা লিখেছেন : ধন্যবাদ Good Luck Good Luck
257671
২৪ আগস্ট ২০১৪ সকাল ১১:৪৯
হতভাগা লিখেছেন : ক্বুরআন শরীফের বাংলা অনুবাদের সাথে ছোট ছোট তাফসির পড়া হয় । আয়াত গুলো কোন ঘটনার শানে নযুল তার কাহিনী সংক্ষেপে বলা থাকে ।

ইয়াজুজ মাজুজরা প্রতিদিন নাকি সেই প্রাচীর গর্ত করে , কিন্তু পরের দিন আবার তা আগের অবস্থায় ফিরে আসে । তবে যে দিন তার বলবে যে , ''ইনশা আল্লাহ, আগামী দিন আমরা বাকী গর্ত খুঁড়ে ফেলবো '' সেই দিনই তারা বের হয়ে আসবে । তারা পঙ্গপালের ন্যায় সারা দিকে ছড়িয়ে পড়বে । সাগরের পানি খেয়ে নিঃশেষ করে ফেলবে । হযরত ঈসা(আঃ) তাদেরকে শায়েস্তা করবেন কোন এক পাহাড়ে নিয়ে । পরে তাদের ঘাড়ের কাছে এক অদ্ভুত পোকার সৃষ্টি করে আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করে দেবেন ।

বর্তমানে যাদের বলছেন যে, আমেরিকা + তার মিত্র বনাম রাশিয়া + তার মিত্র, তারা মনে হয় না ইয়াজুজ মাজুজ । কারণ এদের আকৃতি বিকট হবে । কেউ অনেক লম্বা হবে , আবার কেউ বা হবে খাটো । এমনকি কানের উপর ভর করে দাড়াঁনোর কথাও বলা হয়েছে ।

এরা দুনিয়াতে অশান্তি সৃষ্টি করছে তা বলাই বাহুল্য , তবে এখনও সেটা আ'দ , সামুদ , ফের'আউনদের পর্যায়ে যায় নি । আল্লাহ তা'য়ালা ক্বুরআনে বিভিন্ন জায়গায় সমসাময়িকদের সাথে আগের আমলের কাফেরদের তুলনা করতে গিয়ে আগেরদেরকেই ইঙ্গিতে শক্তিশালী বলেছেন । শাস্তি তখনই অনিবার্য হয়ে গিয়েছিল যখন তারা সীমা অতিক্রম করে ফেলেছিল ।

ইয়াজুজ - মাজুজদের আগমন একেবারে কিয়ামতের আগ মুহূর্তের বড় লক্ষন গুলোর একটি । সাথে আছে পশ্চিম দিক থেকে উঠে আসা হলুদ রঙের প্রানী যা মুসলমান ও কাফেরদের চিন্হিত করে কপালে চিন্হ এঁকে দেবে । আরও একটা আছে সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদিত হবে ।

তবে , কিয়ামতের আসল জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর কাছেই ।
২৪ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৯:৩৩
201524
মারজান বিন ছনা লিখেছেন : তাহলে ঐ প্রাচীর বা দেয়াল কি অদৃশ্য যা এখনও মানুষ আবিষ্কার করতে পারে নি ? ইয়াজুজ মাজুজ সম্পর্কে কুরআনের সব আয়াত, হাদিস এবং বিভিন্ন মহিষীগনদের তাফসীরকে সামনে রেখেই সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ। একটি হাদিসের উপর ভিত্তি করে যে আলোচনা করেছেন সেই হাদিস আমিও পড়েছি, কিন্তু বাস্তবতার সাথে অনেক ফারাক পেয়েছি । এটা কি বিশ্বাস যোগ্য কয়েক দিনে যখন ঈসা ইবনে মারইয়াম পৃথিবীতে আসবেন আর ঠিক একই সময়ে ইয়াজুজ মাজুজ বের হয়ে ঐ সাগরের সব পানি পান করে ফেলবে ? বিশ্বাস যোগ্য ধারনা এটাই যে ইয়াজুজ মাজুজ আত্মপ্রকাশ করেছে বহু আগেই এবং সেই সাথে ইসলামের বিজয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। ইয়াজুজ মাজুজের সর্ব শেষ যে দলটি পৃথিবীতে থাকবে তারা ঈসা ইবনে মারইয়ামের সময়ে এসে পানি শূন্য অবস্থায় পাবে এবং তখন তারা বলবে এখানে পূর্বে পানি ছিল ! হাদিস থেকে জানা যায় ঈসা ইবনে মারইয়াম আগমনের পর ৪০ বছর জীবিত থাকবেন। ইয়াজুজ মাজুজ সম্পর্কে একটি হাদিস দেয়া আছে এটিও খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে রাসুল [সাঃ] কে জানিয়ে দেয়া হয়েছিল ইয়াজুজ মাজুজ জুলকারনাইনের সেই প্রাচীর ছিদ্র করে ফেলেছিল। রাসুল [সাঃ] যা আঙ্গল দিয়ে বৃত্ত করে দেখিয়েছিলেন। আরবের জন্য দুর্ভাগ্য কেন বললেন ? আজকের সময়ে আরবের অবস্থা দেখেন তারা দাড়ি ছেড়ে দিয়েছে, হাফ প্যান্ট পড়ে, খাবারে পরিবর্তন এনেছে, চিন্তা চেতনায় পরিবর্তন এনেছে, মোটকথা আরবের সংস্কৃতি আপনি আরবে এসে পাবেন না, এটা কি ভাবনার বিষয় নয় ? ইতিহাসের দিকে থাকালে দেখতে পাব প্রতেক্য ব্যাক্তি কোন না কোন ধর্মে মতবাদে বিশ্বাসী ছিল কিন্তুই আজকের পৃথিবীতে থাকিয়ে দেখুন ধর্মনিরপেক্ষ নামে নাস্তিকদের উত্তান কবে থেকে এসেছে। এটা কি ইয়াজুজ মাজুজ তথা ইউরপ,আমেরিকা-রাশিয়া থেকে আসছে না ? ইউরোপ আমেরিকার রাশিয়ার সব মানুষ ইয়াজুজ মাজুজ জাতির নয়, বরং ইয়াজুজ মাজুজ জাতি এদের মধ্যে মিশে গেয়ে পৃথিবীতে এক ফাস্যাদ সৃষ্টি করছে। আপনি এই বিষয়ে আরেকটু চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিবেন কারন আমি বিশ্বাস করি আপনি বাস্তব ভিত্তিক সিদ্ধান্ত নিবেন।
২৫ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৮:৩৭
201645
হতভাগা লিখেছেন : ''তাহলে ঐ প্রাচীর বা দেয়াল কি অদৃশ্য যা এখনও মানুষ আবিষ্কার করতে পারে নি ?''

০ দুনিয়ার সব কিছু কি মানুষ আবিষ্কার করে ফেলেছে ?

http://quraanshareef.org/index.php?sid=18&&ano;=110&&st;=90&&arabic;=
259712
৩০ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪৩
জেদ্দাবাসী লিখেছেন : আবেগি নয়, বিবেকের লেখা ।
তবে আমার মনে হয় ইংগ-র্মাকিন হচ্ছে ইয়াজুজ মাজুজ। কারন তারাই সবচেয়ে ইহুদি বান্ধব।

পোস্টে প্লাস++++++++ ধন্যবাদ
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০২:২৪
211105
মারজান বিন ছনা লিখেছেন : লেখাটা আমি তাফসীর তাফহিমুল কুরআন থেকে কপি করেছি।

Good Luck Good Luck Good Luck
১০
320714
১৮ মে ২০১৫ সকাল ০৭:২৫
কায়সার আহমেদ (কায়েস) লিখেছেন : মাসাআল্লাহ খুব সুন্দর করে আলোচনা করেছেন। ১৯১৭ সালে জেরুজালেম পতনের পর আল্লামা ইকবাল লিখেছিলেন-- "খুল গায়ী ইয়াজুজ আওর মাজুজ কি লাশকারে তামাম,চাসমে মুসলিম দেখলে তাফসীরে হারফে ইয়ানসিলুন"

"ইয়াজুজ মাজুজ বন্ধন মুক্ত হয়েছে,খুলে দেখে নাও ইয়ানসিলুন (সূরা আম্বিয়া ৯৫-৯৬) হরফের তাফসীর"

আল্লাহ আমাদেরকে বুঝার তইফিক দিন।

জাযাকাল্লাহ
০৫ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৮:৪৬
285890
মারজান বিন ছনা লিখেছেন : সিরিয়াকে ঘিরে দুই পক্ষ আজ মুখোমুখি অবস্থায় যাচ্ছে......

আল্লাহু আলম। Good Luck Good Luck
১১
344568
০৫ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৮:৪৫
মারজান বিন ছনা লিখেছেন : সিরিয়াকে ঘিরে দুই পক্ষ আজ মুখোমুখি অবস্থায় যাচ্ছে......

আল্লাহু আলম।

আপনাকে ধন্যবাদ
১২
355159
২৪ ডিসেম্বর ২০১৫ দুপুর ০১:১১
মনসুর লিখেছেন : মহান আল্লাহ আমাদর সবাইকে হেদায়েত দিয়ে দুনিয়া ও আখেরাতে নেক কামিয়াবী দান করুন, আমীন।
২৪ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:৪৬
294989
মারজান বিন ছনা লিখেছেন : Good Luck Good Luck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File