দেশকে কারা ধ্বংস করতে চায়?
লিখেছেন লিখেছেন মহি আহমেদ ১৮ নভেম্বর, ২০১৩, ০৫:১০:৪৭ সকাল
দেশকে নিয়ে আমাদের মত সাধারন মানুষ তথা আম-পাবলিককে ভাবতে দেখলে অনেকেই বলবেন দেশকে নিয়ে ভবাবার লোকের কি অভাব আছে? যারা ভাবার উপযুক্ত তারা ভাবছেন এবং এ ব্যপারে কাজ হচ্ছে চিন্তার কারণ নাই! আশা করি তাদের কথা সঠিক হউক। তবে কেন জানি বাস্তবতার দিকে লক্ষ্য করলে ভিন্ন চিত্র পরিলক্ষিত হয়।
বাংলাদেশের উপর কি মারাত্মক অভিযোগ টাইমস অফ আসামের খবর দেখুন আজ আমাদেরকে জানতে হবে তথাকথিত ইসলামী সন্ত্রাসবাদ বাংলাদেশে শুরু হওয়ার প্রচার কারা করতে চায় দেশে বিদেশে? আর এসব সন্ত্রাসী সংগঠনের এজেন্ডা কি? কে বাস্তবে এদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে আগ্রহী? আর কারা পিছনে থেকে উসকানি দিয়ে এধরনের অপকর্মকে তাদের রাজনৈতিক সুবিধা অর্জনে ব্যবহার করতে চায়? কারা এসব অপকর্মের সুবিধাভোগী এবং কারা এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়? পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে বাংলাদেশ আজ যে গভীর সংকটে পড়েছে অর্থাৎ দেশ আজ যে সামাজিক, রাজনৈতিক ক্রস রোডে এসে দাঁড়িয়ে আছে তা থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োয়জন উপরোক্ত প্রশ্নগুলার উত্তর পেতে গভীরতর গবেষণা করা। তবে সুখবর হল মানুষ এখন এসব প্রশ্নের উত্তর অন্বেষণ করতে শুরু করেছে। বাংলাদেশের প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবী ফরহাদ মাজার তার এক সাম্প্রতিক কলামে লিখেছেন, "এটা মত প্রকাশের স্বাধীনতা, বন্ধুরা! কারণ আমরা গোলামের বাচ্চা গোলাম। আমাদের বিরুদ্ধে যা খুশি তাই যে কেউ বলে যেতে পারে। আমাদের রাষ্ট্র বলে কিছু নাই, আমাদের স্বাধীনতা আত্মমর্যাদা বলে কিছু নাই। আমরা কাকে নির্বাচিত করব কাকে করব না সে সিদ্ধান্ত নেবার অধিকারও আমাদের নাই। অতএব ‘ইন্ডিয়া মাস্ট ডু অল ইট ক্যান টু সি এ ফ্রেন্ডলি রেজিম রিটার্ন টু পাওয়ার’। কলকাতার সুবীর ভৌমিক বাংলাদেশে থেকে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে চাকুরী নিয়ে বাংলাদেশের ঘাড়ে বসেই এই কথা বলেছেন। এরপরও তিনি স্বপদে থাকবেন এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দিল্লীকে উস্কানি দিয়ে যাবেন।"
বাংলাদেশের গণমাধ্যমে কলকাতাবাসী লোকদের চাকুরী পাওয়া এ সরকারের আমলে যত সহজ তা বোধ হয় আগে কখনও হয়নি। গত জানুয়ারি মাসে একদিন সোহগ পরিবহন সার্ভিসের বাসে চড়ে ঢাকা থেকে সিলেট যাচ্ছিলাম তখন আমার পাশেই এক তরুণীকে ফোনে আলাপ করতে শুনলাম বাংলাদেশ বেতারে চাকুরী হওয়ার সুসংবাদ তার আত্মীয় স্বজনকে জানাচ্ছেন। একটু পরে জানতে পারলাম সে মেয়ে অনেক আগেই সিলেট ছেড়ে কলকাতায় চলে গিয়েছিল এবং স্বামীর সঙ্গে সেখানেই থাকতেন এবং ভাল চাকুরী করতেন।। ঢাকায় এসে বাংলাদেশ বেতারে সংবাদ পড়ার চাকুরী পাওয়ায় ভীষণ খুশী। তার খুশীতে আপত্তি না হওয়ারই কথা, তা নাহলে নিজেকে সাম্প্রদায়িকতার কলংকে কালিমাযুক্ত করব। তাই নয় কি? আবার অনেকে বলেন কয়বছর ধরে দেশে রহস্যজনকহারে হিন্দু পুলিশ আফিসার নিয়োগ ও তাদের দিয়ে আলেম সমাজ এবং মুসলিদের উপর নির্যাতনের বিষয়টি যে এখন আর কারো কাছে অস্পষ্ট নয়।
ইতিহাস কি বলে?
ইতিহাস বলে, স্বাধীন বাংলার নবাব সিরাজকে পরাজিত করে তাকে গ্রেফতার করে যখন কিছু সংখ্যক ইংরেজ সৈন্য নিয়ে যাচ্ছিল তখন মাঠে-ময়দানে যে সব শত শত জনতা দেখছিল এ দৃশ্য তারাও যদি হুংকার দিয়ে উঠত তাহলে সেই সব সৈন্য সেখান থেকেই পালিয়ে যেত। কিন্তু অসচেতন জনগণ বুঝতে পারেনি সিরাজের গ্রেফতারের সাথে সাথে কি ক্ষতি তাদের হতে যাচ্ছিল। ২০০বছরের জন্য এ অঞ্চলের স্বাধীনতাই শুধু হারিয়ে যায়নি সেই সাথে হারিয়ে গিয়েছিল আমাদের বিবেক, আমাদের সাহস, হারিয়েছিলাম আমাদের কত সম্পদ, সুযোগ করে দিয়েছিলাম লুট করতে দেশের সম্পদ।
আজ যদি ইতিহাসের ১৯৪৭ ভারত ভাগ করে পূর্ব পাকিস্তান তার পর পাকিস্তান থেকে মুক্তি পাওয়া মুক্তি যুদ্ধের ফসল পূর্ব পাকিস্তানকে বাংলাদেশ করা এ সব ঐতিহাসিক ঘটনাগুলার দিকে তাকাই আর আজকের অবস্থার দিকে নজর দেই তখন কেন জানি মনে হয় এত ত্যাগ এত কষ্ট এসবই কি বৃথা গেল? আর কত রক্ত ,কত প্রাণ বলিদান করতে হবে এদেশকে একটি সভ্য অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক দেশ হিসাবে গড়ে তুলতে? এদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ হতে পারে কিন্তু অসাম্প্রদায়িক ছিল না। কয়েক বছর আগেও ইসলামের নামে তথাকথিত ইসলামী সন্ত্রাসবাদ বলে কিছু দেখে নাই। এ দেশে ধর্মীয় রাজনৈতিক দলও ছিল সেক্যুলার দলও ছিল।
আজকের তরুণ প্রজন্মের একটি বিরাট অংশকে কুলশিত করা হয়েছে অপসংস্কৃতির নেশায় তারা যেন এক গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। সেই ঘুমিয়ে পড়া জাতিকে যারা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছে তা কি সত্যি না মরীচিকা তা বুঝার সচেতনতা হারিয়ে ফেলেছে। তাই অনেককে আক্ষেপ করে বলতে দেখি, “সেই স্বপ্ন দেখা গভীর ঘুম ভাঙ্গবে করিডোর হওয়া বাংলাদেশের উপর দিয়ে ভারতীয় ট্রাকের ঝনঝনানি ও হর্নের আওয়াজে। উঠে দেখবে মরুময় এক বাংলাদেশ যা ভারতীয় ট্রাকের ধুলা ও ধোঁয়ায় অন্ধকার।”
তাই বাংলাদেশকে তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করতে কে চায় তা বুঝলেও তা থেকে মুক্তির পথ অন্বেষণে নাই কোন ইচ্ছা! নিচের ভিডিওটা দেখলে কিছু আভাস পাওয়া যায় দেশ কোন দিকে যাচ্ছে।
বিষয়: বিবিধ
১৩২৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন