জীবনে ভালো থাকার জন্য যা করতে হবে
লিখেছেন লিখেছেন রাজনৈতিক ভূতুড়ে ডাইরি ২২ জুলাই, ২০১৩, ০৭:৩৫:৩২ সন্ধ্যা
জীবন কতনা অদ্ভূত! কখনও কতইনা সুন্দর আর আনন্দময়, আর কখনও কত কষ্টকর! আমাদের জীবনটাই যে এমন! কেউ তো জানিনা আমার যতি চিহ্ন কোথায়… কী নিয়ে দুঃখ করবো আমি? আজ হয়ত আমি অনেক সুখী, যদি আজই চলে যেতে হয় এই জগত ছেড়ে, তবে আমি কি প্রস্তুত যাওয়ার জন্য? আমি যতটুকু সুখে আছি, অনেকেই তো তার চাইতে খারাপ আছেন, তাইনা? জীবনটাই তো এমন! অনেক পাওয়া আর না পাওয়া দিয়ে ঘেরা… অনেক তৃপ্তি আর অতৃপ্তি মাখানো… তাকে তো আপন করে নিলে চলেনা! তাকে সাথে করে চলতে হতে হয়। এলোমেলো হয়ে গেলেও প্রস্তুত হতে হবে আখিরাতের জন্য… সেটাতে ভুলে গেলে চলবেই না!
একটা কথা শুনেছিলাম :
জীবনে যা ঘটেছে, তা ভালো হয়েছে। যা হচ্ছে, তা-ও ভালো হচ্ছে। আর ভবিষ্যতে যা ঘটবে, তা-ও ভালোই হবে।
কীভাবে ভালো থাকা যায় সে বিষয়ে কিছু কথা, কীভাবে মনটাকে ভালো রাখা যাবে সে বিষয়ে কিছু কথা…
১ - নিজেকে কখনও অন্যের সাথে তুলনা করবেন না।
২- নেগেটিভ চিন্তা ভাবনা থেকে বিরত থাকুন। সবকিছুকে পজেটিভ ভাবে গ্রহন করতে চেষ্টা করুন।
৩- নিজেকে নিয়ে এবং কাছের মানুষদেরকে নিয়ে অনর্থক বেশি দুঃচিন্তা করবেন না। মনে রাখবেন, দুঃশ্চিন্তা কখনোই সমস্যার সমাধান করবেনা।
৪- নিছক আড্ডা দিয়ে সময়ের অপচয় করবেন না।
৫- শত্রুতা এবং অন্যের প্রতি ঘৃণা বজায় রাখবেন না। এতে কেবল দুঃশ্চিন্তা বাড়ে এবং মানসিক শান্তি নষ্ট হয়, যা আপনার স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
৬- নিজের এবং অন্যের অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিন, শিক্ষাকে মনে রাখুন, ভুলকে ভুলে যান। অতীতের ভুল নিয়ে অতিরিক্ত ঘাটাঘাটি করে তিক্ততা বাড়িয়ে বর্তমানের সুন্দর সময়কে নষ্ট করবেন না।
৭- মনে রাখবেন, জীবন একটি বিদ্যালয় যেখানে আপনি শিখতে এসেছেন। জীবনের যত সমস্যা তা এই বিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত, এ নিয়ে তাই চিন্তা না করে বীজগণিতের মত সমাধানের চেষ্টা করুন।
৮- প্রচুর পরিমাণে হাসুন এবং সবসময় হাসিখুশী থাকার অভ্যাস করুন। সেই সাথে অন্যদেরকেও হাসিখুশী রাখতে চেষ্টা করুন।
৯- জীবনের সব ক্ষেত্রে জয় লাভ করা অসম্ভব। তাই হার মেনে নিতে প্রস্তুত থাকুন। এটাও আপনার একটা মানসিক বিজয়।
১০- অন্যের দোষ-ত্রুটি ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার চেষ্টা করুন।
১১-অন্যেরা আপনাকে নিয়ে কি ভাববে তা নিয়ে চিন্তিত হবার কিছু নেই। নিজের কাজ করে যান আত্মবিশ্বাস নিয়ে।
১২- সময়ের কাজ সময়ে করুন, কিছুতেই এখনকার কাজ পরে করার জন্যে ফেলে রাখবেন না।
১৩- যেসব জিনিস চিত্তাকর্ষক ও আকর্ষণীয়, কিন্তু ও উপকারী নয়, তা থেকে দূরে থাকুন।
১৪- সুসময় বা দুঃসময় যাই হোক না কেন, সবই বদলাবে, এটাই চিরন্তন নিয়ম, তাই কোনো কিছুতেই অতিরিক্ত উৎফুল্ল বা অতিরিক্ত দুঃখিত হবেন না।
অনেক তো শুনলাম… এবার শুধু একটা কথা বলতে চাই… মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে বলেছেনঃ
তোমরা ধৈর্য্য ও সালাতের সাহায্যে আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্য্যশীলদের সাথে আছেন। (সূরা বাকারা: ১৫৩)
আর আরেকটা কথা বলেই শেষ করতে চাই আজকের মতন… এটাও পবিত্র কুরআন থেকে নেয়া। আমরা মানুষ। একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ চেষ্টার পর আর কিছুই করার থাকেনা আমাদের… হৃদয়ে একটা শূণ্যতা সৃষ্টি হয় চাওয়া-পাওয়া নিয়ে। মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা সেই জায়গায় কত সুন্দর করে তার অভিভাবকত্বের নিশ্চয়তা প্রদান করেছেন!
… এতদ্দ্বারা যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে, তাকে উপদেশ দেয়া হচ্ছে। আর যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্যে নিস্কৃতির পথ করে দেবেন। (সূরা তালাক: ২)
এই স্বল্প সময়ের পৃথিবীতে যেন আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করে বিদায় নিতে পারি সেই প্রার্থনা আমার সবার জন্য রইলো। আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন, সঠিক পথ প্রদর্শন করুন। সঠিক পথ তো সে-ই পায়, যে তার জন্য স্বপ্ন দেখে, চেষ্টা করে, হৃদয় যার লালায়িত থাকে মুক্তির প্রত্যাশায়……
বিষয়: বিবিধ
১০৮৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন