যে অতীত প্রেরণা জোগায়
লিখেছেন লিখেছেন সাম্প্রদায়িক ২৫ জুলাই, ২০১৩, ০৭:২৫:৩৯ সন্ধ্যা
সপ্তম শতাব্দীর তখন শেষ। খলিফা মুয়াবিয়া(রাঃ)-এর শাসনকাল। তার ছেলে ইয়াজিদ সেনাপতি। রোমান সাম্রাজ্যের রাজধানী ইস্তাম্বুল তখন ‘কনস্ট্যান্টিনোপল’। বিজয়ের জন্যে ইয়াজিদের নেতৃত্বে এক সৈন্যবাহিনী পাঠানো হয়। সে বাহিনীতে শামিল ছিলেন ছিয়াশি বছর বয়স্ক আবু আইয়ুব আনসারী(রাঃ)। দীর্ঘ এক বছর অবরোধ করে রেখেও ইস্তাম্বুল জয়ে ব্যর্থ হয় মুসলিম বাহিনী। এ সময় মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন বৃদ্ধ আবু আইয়ুব আনসারী(রাঃ)। মৃত্যু আসন্ন হয়ে উঠে তার। শুনে বাহিনীর সেনাধ্যক্ষ্ ইয়াজিদ ছুটে গেলেন বুজুর্গ সাহাবী আবু আইয়ুব আনসারীর শয্যাপাশে। পরম শ্রদ্ধাভরে তার কাছে তার শেষ ইচ্ছা জানতে চাইলেন। বললেন, বলুন চাচাজান, আপনি কি চান? খলিফার সাথে আলাপ করে ইনশাআল্লাহ তার ব্যবস্থা করব। আবু আইয়ুব আনসারী(রাঃ) বললেন, বলে লাভ কি, যা চাই তা দিতে পারবে না। ইয়াজিদ বুজুর্গ সাহাবীর শেষ ইচ্ছা জানার জন্যে নাছোড়বান্দা। বললেন, বলুন মেহেরবানী করে, আমি আপ্রাণ চেষ্টা করব। মুমূর্ষু মুজাহিদ বুজুর্গ সাহাবী আবেগরুদ্ধ কণ্ঠে বললেন, আমি চাই আমার মৃত্যুর পর আগামীকাল কনস্ট্যান্টিনোপলের প্রবেশ পথের ওপর আমাকে কবর দিয়ে আসবে। শেষ ইচ্ছা শুনে হতবাক ইয়াজিদ জানতে চাইলেন, তার এই শেষ ইচ্ছার কারণ কি! আবু আইয়ুব আনসারী(রাঃ) জানালেন, কনস্ট্যান্টিনোপলের বিজয় একদিন আসবেই। আমি চাই, সে বিজয়ের দিনে বিজয়ী মুসলিম সৈনিকরা যেন আমার কবরের ওপর দিয়ে ঘোড়া ছুটিয়ে রোমান রাজধানীতে প্রবেশ করে। তার মৃত্যুর পর ইয়াজিদ রোমক সেনাপতিকে অনুরোধ করে রোমক সৈন্যের ব্যুহের ওপারে ইস্তাম্বুলে প্রবেশকারী সড়কের ওপর তাকে দাফন করেন। এই ঘটনার সাড়ে সাতশ’ বছর পর এই সড়কের ওপর দিয়েই ওসমানীয় খলিফা দ্বিতীয় মুহাম্মদের বিজয়ী বাহিনী ইস্তাম্বুলে প্রবেশ করেছিল।
বিষয়: বিবিধ
১৪৬৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন