জামায়াত শিবির কোন প্রতিক্রিয়াশীল সংগঠন নয়.....
লিখেছেন লিখেছেন মন্টি পাগলা ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৭:২৫:৫৪ সন্ধ্যা
মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিত রায়কে দুর্বৃত্তরা গত বৃহস্পতিবার বইমেলা প্রাঙ্গনে, টিএসসি চত্বরে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে, আহত করেছে তার স্ত্রী কে। একজন প্রগতিশীল চিন্তাধারার মানুষ হিসেবে আমি এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। যদিও অভিজিত রায় ছিল বাংলাদেশ বিরোধী, ইসলাম বিরোধী ভারতীয় সিন্ডিকেটের প্রথম সারির অন্যতম নেতা, তথাপি তার এই নৃশংস মৃত্যু কোন ভাবেই কাম্য নয়।
তবে নিন্দার বিষয় এই যে, অভিজিত রায়ের মৃত্যুতে আমাদের অনেক ইসলামিক লেখকরাই হর্ষধ্বনি দিয়ে চরম রি-একটিভ (প্রতিক্রিয়াশীল) স্ট্যাটাস প্রসব করছেন। সেই সব ভাইদের স্ট্যাটাস দেখে মনে হতে পারে, এসব নাস্তিকদের বিনা বিচারে ডাইরেক্ট কতল করে দেয়া ইসলামের এক মহান কর্ম এবং জামায়াত শিবির এসব হত্যাকান্ড ঘটিয়ে ইসলামের সেবা করছে।
কিন্তু বাস্তবতা সুদূর পরাহত।
প্রথমত, কোন নাস্তিক/অপরাধীকে বিনা বিচারে কোন সাধারন মানুষ হত্যা করুক, এটা কুরআন হাদিস সমর্থন করে না।
আর দ্বিতীয়ত, জামায়াত-শিবির একটি প্রগতিশীল, প্রো-একটিভ ইসলামিক দল। বিনা বিচারে ধরো-মারো-কাটো কখনোই জামায়াত শিবিরের আইডোলোজি নয়।
এই লিঙ্কে গিয়ে দেখুন অভিজিত হত্যার প্রতিবাদ জানিয়েছে শিবির ।
হয়তো, তদন্ত করে দেখা যাবে, আওয়ামী লীগের কোন একটি অংশের সাথে স্বার্থের টানাটানিতেই এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে যা এখন জামায়াত শিবিরের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা চলছে।
উপরের ছবিটি খেয়াল করুন...
তখনো মারা যায়নি অভিজিত। অভিজিতের স্ত্রী সাহায্যের জন্য সাধারন মানুষকে আহবান করছে। পাশেই দাড়িয়ে আছে পুলিশ। অথচ আহত অভিজিতকে কাছেই অবস্থিত ঢাকা মেডিকেল এ না নিয়ে জনগনকে সরিয়ে দিয়ে ফটোসেশন করছে তারা। এর দ্বারা স্পষ্ট হয়ে যায়, অভিজিতকে বাঁচানো নয়, তাকে মেরে ফেলে নৃশংসতা টাকে শ্যুট করে জনগনকে দেখাতে পারলেই পুলিশের লাভ। এ থেকে কিছুটা হলেও ধারনা করা যায়, কারা ঘটিয়েছে অভিজিত হত্যাকান্ড।
এই যখন বাস্তবতা, তাহলে আমরা ইসলামিস্টরাই কেন হত্যাকান্ডের দায় জামায়াত শিবিরের ঘাড়ে চাপানোর রসদ আওয়ামী লীগের হাতে তুলে দিচ্ছি...? এটা কি আদৌ কোন বুদ্ধিমত্তার কাজ....?
আমাদের কে আল্লাহ বুদ্ধি দিয়েছেন, কিন্তু এই বুদ্ধির প্রয়োগ করো আমরা ঐসব নাস্তিকদেরকে অনলাইনে কতটুকু পরাস্ত করার চেষ্টা করছি.....??? একটু বিবেকের কাছে প্রশ্ন করুন।
নাস্তিকরা ইসলাম নিয়ে ঘাটাঘাটি করে এরপর কিছু যুক্তি নিয়ে অনলাইনে হাজির হয় এবং ইসলাম বিরোধী পোস্ট দেয়া শুরু করে। তাদের কে আমরা পরাজিত করবো কি হত্যা করে নাকি গালিগালাজ করে....???
দেখা যায় বহু ইসলামিক নামধারী ফেইজবুক সেলিব্রেটিরাই নিজের জ্ঞান এবং যুক্তি দ্বারা নাস্তিকদের যুক্তি খন্ডন করার চেষ্টা না করে জ্ঞানহীনের মতো ওদেরকে গালিগালাজ করতে থাকে। যাতে নাস্তিকরা ইসলামিক নামধারীদের এই দুর্বলতা টা খুঁজে পায় এবং বগল বাজিয়ে তা সবার সামনে প্রদর্শন করে।
ভাই, গালিগালাজ বা হত্যা করে নাস্তিকদের দমন করার চেষ্টা কোন ইসলাম সম্মত কাজ নয়। আর জামায়াত শিবিরও এই ধরনের প্রতিক্রিয়াশীল (রি-একটিভ) আইডোলোজির দল নয়।
সুতরাং যারা বুদ্ধির বিচারে কিংবা রাজনীতির ময়দানে বুদ্ধি ও লেখাপড়া ভিত্তিক প্রো-একটিভ আইডোলোজি না মেনে বিপরীত মতাদর্শকে ডাইরেক্ট ধরো-মারো-কাটো আর তা না পারলে গালিগালাজ করো এই জাতীয় প্রতিক্রিয়াশীল মতাদর্শ মেনে চলেন, তাদের কে অনুরোধ আপনারা দয়া করে শিবির জামায়াতের লেবাস গায়ে লাগাবেন না। কারন আপনার এই প্রতিক্রিয়াশীল মতাদর্শ শিবির জামায়াত সমর্থন করে না।
আর যারা সত্যি ই চান নাস্তিকদের হারাতে, তাদের জন্য পরামর্শ, দয়া করে কুরআন হাদিস নিয়ে গবেষণা করুন, নাস্তিকদের হারানোর আসল অস্ত্র কুরআন হাদিসের মধ্যেই দেয়া আছে।
যাযাকাল্লাহ......
বিষয়: বিবিধ
২৮৭৬ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ ছাত্রলীগ!!
আমরাও সাথে আছি...!!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন