ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্দা নিষিদ্ধের পিছনে উপাচার্য আইনুন নিশাতের কিছু খোড়া যুক্তি এবং একজন সাধারন মুসলিম হিসেবে তার খন্ডন..
লিখেছেন লিখেছেন মন্টি পাগলা ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ১০:১১:০০ রাত
নিঃসন্দেহে ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্দা নিষিদ্ধকরন, বাংলাদেশের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান থেকে ইসলাম নির্মুলের প্রথম পদক্ষেপ, তাতে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই ।
উল্লেখ্য, ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয় ব্রাক নামক এনজিও’র অর্থায়নে এবং ব্রাক এনজিওটি পরিচালিত হয় বিদেশী অর্থায়নে । সেই বিদেশী অর্থদাতা কারা তা জানতে না পারলেও উইকিপিডিয়াতে দেখলাম ব্রাকের সাথে ইহুদীদের পরিচালিত প্রতিষ্ঠান ‘Nike Foundation’ এর ১ টা চুক্তি আছে ।
এথেকে সহজেই অনুমেয় যে, ইহুদীরা অর্থ যোগাচ্ছে ব্রাকের জন্য । আর ইহুদীরা যাদের অর্থ সরবরাহ করে তাদের কাছে ১ টি শর্তই সবচেয়ে বড় করে প্রাধান্য পায় যে, “প্রতিষ্ঠানটি হবে শতভাগ ইসলাম বিদ্বেষী”
ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বা সিন্ডিকেট মেম্বাররাও নিশ্চয়ই ইহুদীদের খেয়ে মুসলিমদের জয়গান গাইতে আসবে না ।
আর তাই, নিজেদের বেতনের উৎসের (!) প্রতি শতভাগ সততা দেখিয়েছেন ভিসি আইনুন নিশাত এবং রেজিস্ট্রার ইসফাক ইলাহী চৌধুরী । তবে বিনা যুক্তিতে তো আর ইসলাম ধর্মে নারীদের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ফরজ পর্দা নিষিদ্ধ করা যায় না । “লাম-ছাম” কিছু একটা যুক্তি তো দেখাতে হবে । তাই আইনুন নিশাত সাহেব আর কষ্ট না করে ফ্রান্সের হিজাব নিষিদ্ধের যুক্তি বাংলাদেশে খাটিয়ে দিলেন ।
কিন্তু আইনুন নিশাত সাহেব, আপনি কি দেশের এই প্রজন্মকে “ইংলিশ মিডিয়াম” এর “ফার্মের মুরগী” প্রজন্ম ভেবেছেন....?
আমি একজন সাধারন (পাবলিক) বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা “ফকিন্নির পুত” হয়েই আপনার প্রতিটি যুক্তির খন্ডন করছি ।
*আইনুন স্যারের যুক্তিঃ
আইনুন নিশাত বলেছেন, “ড্রেসকোডের ব্যাপারটি পিওরলি সিকিউরিটির পয়েন্ট অব ভিউ থেকে করা হয়েছে । যেটা আমরা প্রধান্য দিচ্ছি সেটা হচ্ছে নিরাপত্তা । ড্রেসকোডে আমরা বলতে চেয়েছি, সবার পরিচয় যেন চেক করা যায় । বোরকার ব্যাপারে আপত্তি নেই, কিন্তু একজন যদি কালো একটা জোব্বা পরে আসে সেটা কেমন হয়?”
তার ভাষ্যমতে, “মুখ থেকে পর্দাটা সরিয়ে দিলেই হয় । এখন ঘটনাটা হচ্ছে, একটা মেয়েকে নিয়ে যার চোখ পর্যন্ত দেখা যায় না, চোখের পেছনেও কাল কুচকুচে কাপড় । তাকে অনেকদিন ধরে বলা হচ্ছে তুমি এগুলো পরিবর্তন করো, কারণ ওই জোব্বার পেছনে কে আছে আমি বুঝবো কেমন করে?”
*খন্ডনঃ
প্রথমত বলতে চাই, আপনি ইসলাম ধর্মের সবচেয়ে পবিত্র ও ফরজ পোশাক বোরখা-কে জোব্বা বলে অপমান করেছেন এবং এর দ্বারা আপনার ইসলাম বিদ্বেষী মনোভাব ফাঁস করে দিয়েছেন ।
এরপর, আপনি সিকিউরিটি বা নিরাপত্তার দোহাই দিয়েছেন । বলেছেন, জোব্বার পিছনে কে আছে তা বুঝবো ক্যামনে....? আচ্ছা ভার্সিটিতে কি মেয়েরা পড়তে যাবে না জনে জনে চেহারা দেখিয়ে বেড়াতে যাবে ?
যদি নিরাপত্তার বিষয়টি বলেন, তবে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর ভার্সিটিতে যদি বোরখা পড়ে মেয়েরা ক্লাস করতে পারে তবে আপনিার বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্যাটা কোথায় ?
আপনার বর্নিত এই সমস্যাটার একবাক্যে সমাধান দেয়া যায় আর তা হলো, গেটে পুরুষ নিরাপত্তারক্ষীর সাথে একজন নারী নিরাপত্তারক্ষী বসানো, পুরুষ ও নারীদের জন্য আলাদা প্রবেশের ব্যবস্থা করা । যেখান দিয়ে মেয়েরা ঢুকবে সেখানে নারী নিরাপত্তারক্ষী প্রয়োজনে কোন পর্দানশীল মেয়ের মুখ খুলে চেক করবে, এরপর মেয়েটিকে ঢুকতে দিবে ।
ক্যাম্পাসের সবাই জানার কি দরকার যে ‘জোব্বার’ পিছনে কে আছে....?
নাকি আপনি চাচ্ছেন চেহারা দেখিয়ে ছাত্রীরা স্যারদের মনোরঞ্জোন করুক....!
আর ১ টা বিষয়, ১টা বোরখা পড়া মেয়ে কয়েকদিন ক্লাস করলেই স্যাররা ঐ মেয়েকে চিনে ফেলেন । এরপর ঐ মেয়ের কন্ঠ শুনে কিংবা চোখ দেখেই যেকোন স্যার বা সহপাঠীরা বুঝে ফেলে যে বোরখার পিছনের মেয়েটাই সেই পর্দানশীল ভদ্র মেয়েটি । আপনার পরিবারে হয়তো পর্দানশীল কেউ নেই তাই এই অভিজ্ঞতাটি আপনার হয়নি ।
জনাব নিশাত, আপনি কি একবার ও খোঁজ নিয়ে দেখেছেন, আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের টয়লেটে ঘটে যাওয়া “অসামাজিক কার্যকলাপ” এর ভিডিও পর্নো ওয়েবসাইট গুলোতে শোভা পাচ্ছে ।
আপনি দেখেন না, আপনার শত শত ছাত্রী বুকের “ক্লিভেজ” বের করে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়িয়ে ক্যাম্পাসের পরিবেশ দুষিত করছে । কই আপনি তো এসব ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিলেন না, বরং একটা খাটি মুসলিম নারীকে আপনি আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের নোংরা মন মানসিকতার ছাত্রীদের পর্যায়ে টেনে নামানোর চেষ্টা করছেন ।
এটাই কি একজন শিক্ষাগুরুর দায়িত্ব ?
শিক্ষাগুরু তো বাবার সমান, আপনি কি পারবেন বাবা হয়ে আপনার মেয়ের শরীরের কাপড় টেনে খুলে ফেলতে....?
তাহলে, কেন অন্য এক বাবার মেয়েকে বেপর্দা করার চেষ্টা করছেন.....?
আপনি আপনার বক্তব্যে নিজেই বলেছেন, “এখন ৩০ থেকে ৪০ পার্সেন্ট মেয়ে বোরকা পরে” ।
তাহলে কেন আপনি এই বিশাল সংখ্যক মেয়েকে ঐসব বেপর্দা ক্লিভেজ দেখানো মেয়েদের কাতারে শামিল করতে চাইছেন ?
আপনার এই দ্বিমুখী নীতিই প্রমান করে আপনি আপনার প্রভূদের খুশি করার জন্য এই পদক্ষেপ নিয়েছেন, আর সেই পদক্ষেপ বাস্তবায়নের টেস্ট কেস হিসেবে আপনি হাফসা ইসলামকে বহিস্কার করে দেখলেন যে কেমন প্রতিক্রিয়া হয় ।
স্যার, ৯৫% মুসলিমদের এই দেশে আপনি কি করে একটি ইসলামবিরোধী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ঝুকি নিতে গেলেন ? আপনার মনে হওয়া উচিত ছিল, নাস্তিকদের বিরুদ্ধে কিভাবে গর্জে উঠেছিল এই তৌহিদী জনতা....!!!
তাই, আইনুন নিশাত স্যার সহ ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক ও সিন্ডিকেট মেম্বারদের অনুরোধ করছি, এই জনতা আপনাদের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামার আগেই সাবধান হোন, সিদ্ধান্ত বাতিল করুন, নয়তো জনতা ক্ষেপে গেলে কিন্তু বিদেশী প্রভূরা আপনাদের বাঁচাতে আসবে না ।
(আইনুন নিশাতের বক্তব্যের লিঙ্ক
(লেখকের ফেইজবুক লিঙ্ক..)
বিষয়: বিবিধ
৫১৩৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন