ডাক্তার না হয়ে মানুষ হলাম কেন....?
লিখেছেন লিখেছেন মন্টি পাগলা ০৩ জুলাই, ২০১৩, ১১:২৯:৩৭ রাত
রফিক এলাকার সবচেয়ে ভালো ছেলেদের একজন । প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ জামায়াতে পড়ে, কুরআন-হাদিস অধ্যয়ন করে, ইসলামী আন্দোলনেরও একজন সক্রিয় কর্মী সে । অন্যায়ের প্রতিবাদ করে, ন্যায়ের কথা, সত্যের বানী প্রচার করে নির্ভীকভাবে ।
যার ফলে এলাকার মুসল্লিরা তাকে ভাল ছেলে হিসেবেই গন্য করে ।
কিন্তু তবু রফিকের মনে অনেক দুঃখ, কারন তার পিতা খুরশেদ সাহেব তাকে নিয়ে চরম হতাশ ।
কি হতে পারে কারন ?
হ্যা, একটাই কারন, রফিক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ইতিহাস বিভাগে অধ্যয়ন করে ।
তার পিতার স্বপ্ন ছিল রফিক মেডিকেলে পড়বে । কিন্তু এইচ.এস.সি তে জিপিএ ৩.৮০ পাওয়ার কারনে সে মেডিকেলের ভর্তি পরিক্ষাই দেয়নি, চান্স হবেনা বলে । কিন্তু সে অনেক পরিশ্রম করে বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছে । কিন্তু তাতে রফিকের বাবা বা বড় ভাই মোটেই খুশি নয়, তাদের কথা ইতিহাস পড়ে কি করবি জীবনে, কত টাকা কামাতে পারবি ?
তাই রংপুরে থাকা বাবা-মায়ের কাছ থেকে দুরে রাজশাহীতে থাকা রফিক বছরে মাত্র ২ বার বাড়ী যায়, কারন তার বাবা তাকে নিয়ে হতাশ । চোখের সামনে গেলেই হয়তো একরাশ নৈরাশ্যবাদী কথা শুনিয়ে দেবেন তাকে।
তাই শ্রেফ মেডিকেলে চান্স পায়নি এই অপরাধে একরকম একাকীত্বের জীবনই যাপন করে রফিক ।
সে সিগারেট খায়না, নেশা করেনা, নারীদের সাথে মেলামেশা করেনা, কোন বাজে অভ্যাসই নেই তার । বলতে গেলে একটা মানুষের মতো মানুষ সে.....।
তবু বাবা তাকে নিয়ে একটুও গর্ব করেনা, গর্ব করে বলেনা, “আমার রফিক ডাক্তার না হলে কি হয়েছে, মানুষের মতো মানুষ হয়েছে....” ।
দুঃখভারাক্রান্ত মন নিয়ে রফিক একটি কথাই ভাবে, “ডাক্তার না হয়ে মানুষ হলাম কেন....?”
(চরিত্রগুলো কাল্পনিক, তবে এই ঘটনাগুলো আজ বাংলাদেশের ঘরে ঘরে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া ঘটনার একটি, আজকাল বাবা-মায়েরা শুধু ভাল রেজাল্ট চায়, ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার বানাতে চায় ছেলেমেয়েকে, অথচ মানুষের মতো মানুষ বানানোর দিকে কি তাদের আদৌ খেয়াল আছে......?)
বিষয়: বিবিধ
১১১১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন