জীবনের অন্তিম লগ্নে এসে তাদের রাজনৈতিক বেশ্যা হওয়ার প্রয়োজন পড়তো না।

লিখেছেন লিখেছেন অমি হাসান ০১ জুলাই, ২০১৩, ০৩:২৫:৪৫ দুপুর

”ভুল“ শব্দটা আদি অনন্ত থেকেই মিশে আছে মানব সন্তানদের সাথে, প্রাচীনকাল থেকে একবিংশ শতাব্দীতে এসেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। মানুষ কাজ করতে পছন্দ করে, এটা মানুষের সৃষ্টি গুন, হোক তা ভাল বা মন্দ। আর কাজের মাধ্যমেই সৃষ্টি হয় ভুলের, ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়। যুগে যুগে এর প্রতিফলন লক্ষ করা যায়। আমরা সভ্যতার ধারক-বাহক নিজেদের মনে করি, সেই আমরা কি একবারও নিজের মতের ‍বা দলের ভুল গুলো স্বীকার করে তা থেকে উত্তরনের পথ বের করার চেষ্টা করি?

আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের মাঝে একটি পুরাতন বাতিক লক্ষনীয়, বিপক্ষ দলের প্রতি সন্মান-শ্রদ্ধা দেখাতে উনাদের আ‍ঁতে লাগে। রাজনৈতিক কালচারটা এখন এমন হয়েছে যে, যেই নেতা বা নেত্রী বিপক্ষ দলের বিরুদ্ধে যত বেশী অশ‍ালীন সেই নেতা বা নেত্রীর কদর তার দলে ততটাই বেশী। ৮০ দশক থেকে আমাদের দেশে শুরু হয় মেধাবীদের রাজনীতি থেকে দূরে সরে থাকার প্রবনতা, আর তাদের স্থানে রাজনীতিতে আসতে শুরু করে মেধাহীন, অযোগ্য ও সুবিধাবাদী শ্রেণী। তারই ধারাবাহিকতায় রাজনৈতিক অঙ্গন ধীরে ধীরে হয়ে পড়ে পুরোপুরী মেধা শুন্য। সেখানে ঝেঁকে বসে লম্পট, চোর, বাটপার, খুনী, মেধাহীন, অযোগ্যদের দল। অবশ্য এটাও সত্যি যে, পূর্বের সেই সকল মেধাবী যাদের জীবনের অন্তিম সময় ঘনিয়ে এসেছে এখনো রাজনীতিতে আছেন তাদের আচরন, কর্মকান্ড মেধাহীন, অযোগ্য ও সুবিধাবাদী রাজনীতিবীদগনের কর্মকান্ডের সাথে খুব একটা পার্থক্য আছে বলে মনে হয় না। সেই সকল বর্ষীয়ান রাজনীতিবীদগনের জন্য মাঝে মাঝে করুনা হয়। তাদের বিরাট একটা অংশ গাদা গাদা বই পড়ে,দর্শন পড়ে যে সকল বক্তব্য দিয়ে জাতিকে ধন্য করেন তার জন্য সত্যি অনেক বেশী করুনা হয়। তারা যদি ঘন্টার পর ঘন্টা দর্শন এর বই পড়ে সময় না কাটিয়ে সেই সময়টা মুরি-চানাচুর বিক্রি করতেন তাহলে আজ জীবনের অন্তিম লগ্নে এসে তাদের রাজনৈতিক বেশ্যা হওয়ার প্রয়োজন পড়তো না।

রাজা-বাদশাদের আমল পিছনে ফেলে আজ আমরা একবিংশ শতাব্দীর সভ্য সমাজ। বেহায়াপনা,নির্লজ্জত‍া ছিল রাজা-বাদশাদের যুগেও, সে আমলে অশিক্ষিত, মূর্খ প্রজাদের শাসনকারী র‍াজা-বাদশাগন বেহায়াপনা করতেন নিজস্ব গন্ডীর ভিতরে। যার নাম ছিল রং মহল। বাঈজী নাচানোই ছিল সেই মহলের মূল আর্কষন সাথে মদ্যপান। আমরা একবিংশ শতাব্দীর সভ্য সমাজ রাজা-বাদশাদের মত অসভ্য ভাবে চুপি-চুপি বাঈজী নাচাই না। আমরা সভ্য তাই আমাদের কর্মের মাঝেও সেই ছাপ সুস্পষ্ট। তাইতো আমরা সাংস্কৃতির মোড়কে বাঈজী নাচাই উন্মুক্ত মঞ্চে নৃত্য শিল্পী হিসেব। একটা সময় ছিল বিভিন্ন কাবিলা থেকে যুবতী মেয়েদের ধরে এনে বিক্রি করা হতো ধনাট্যদের কাছে। আজ আমরা একবিংশ শতাব্দীর সভ্য সমাজের বাসিন্দা, আমরা নিজেরাই নিজেদের বিক্রি করি কখনো তা হয় ফটো সুন্দরীর নামে কখনো বা ভিন্ন কোন নামে। তবে হ্যাঁ আমরা কিন্তু রাজা-বাদশাদের মত নই আমরা একবিংশ শতাব্দীর সভ্য সমাজ।

হয়তো সেদিন আর খুব বেশী দূরে নয়, আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম প্রশ্ন করবে আচ্ছা লজ্জা কি জিনসি?

ঢাকা ভার্সিটিতে পড়ে এক মেয়ে বন্ধু গতকাল ফোন করে চানতে চাইল আমাদের দেশে যে টিভিতে বা বিলবোর্ডে বিভিন্ন পন্যের বিজ্ঞাপন যে হয়, তার জন্য কি কোন নীতিমালা আছে? পাল্টা প্রশ্ন করলাম কেন? ও বলল দেখ বিশেষ করে ছেলের জন্য যে সকল পন্যের বিজ্ঞাপন আমরা দেখি সেখানে দেখা যায় মেয়েদের উপস্থিতি। তার প্রশ্ন ছেলেদের পন্যের বিজ্ঞাপনে মেয়েদের ব্যবহার করা যাবেনা এই ধরনের কোন নীতিমালা কি আছে? বললাম না। তারপরে চামড়া সুন্দরী প্রতিযোগিতা নিয়ে বেশ কিছু কথা হলো, এক পর্যায়ে ফ্রেন্ডটা বলল কোন সভ্য মেয়ে এ জগতে পা রাখবে না তার ধারনা। প্রশ্ন করলাম কেন আসবে না? ও ‍বলল তার কয়েকজন বান্ধবী মডেলিং করে তাদের অবস্থা দেখে তার এই ধারনা জন্মেছে। পেশাগত কারনে কিছু মডেলদের নিয়ে কাজ করতে হয়েছে সেই অভিজ্ঞতার কথা না হয় বাদ দিলাম। কিন্তু প্রশ্ন হলো আমাদের সমাজ সভ্যতার মোড়কে সাংস্কৃতির নামে চামড়া সুন্দরীদেরকে কি নিষিদ্ধ পল্লীর দিকে ঢেলে দিচ্ছে না?

বিষয়: বিবিধ

১৫২০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File