গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন : আগামী নির্বাচনে ‘কিং মেকার’ হতে পারেন আল্লামা শফী

লিখেছেন লিখেছেন ইমরানখান ০১ আগস্ট, ২০১৩, ০৪:৩৮:৩৪ বিকাল



প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদপত্র গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী ‘কিং মেকার’ হতে পারেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হেফাজতে ইসলামের উত্থান প্রমাণ করছে বাংলাদেশে সেক্যুলারিজম বা ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ এখন ক্ষয়িষ্ণু। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ হেফাজতের ওপর কড়া দৃষ্টি রাখছে।

এমন সময় প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হলো, যখন আগামী নির্বাচনে হেফাজতে ইসলামের ভোটের হিসাব-নিকাশ নিয়ে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা-কল্পনা। অনেকেই বলছেন, সম্প্রতি দেশের পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শোচনীয় পরাজয়ের পেছনে দেশ পরিচালনায় দলটির চরম ব্যর্থতার পাশাপাশি হেফাজতে ইসলামও অন্যতম ফ্যাক্টর ছিল। মঙ্গলবার গার্ডিয়ানের সাপ্তাহিক প্রকাশনা গার্ডিয়ান উইকলিতে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ’স রেডিকেল মুসলিম ইউনাইটিং বিহাইন্ড হেফাজত-ই-ইসলাম (হেফাজতে ইসলামের ছায়াতলে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে বাংলাদেশের উগ্রপন্থী মুসলমানরা)’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব মন্তব্য করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১০ সালে গড়ে ওঠা হেফাজতে ইসলাম এর আগে তেমন আলোচনায় ছিল না। তবে দেশের কওমি মাদরাসার সমর্থনপুষ্ট এই সংগঠনটিকে সমর্থন করেন লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মানুষ।

রাজনৈতিক ভাষ্যকার কবি ফরহাদ মজহার বলেন, ‘এই সংগঠনটি দরিদ্র ও অল্পশিক্ষিত মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে। এর সমর্থনকারীরা মূলত গ্রামীণ জনগোষ্ঠী। তাদের শহুরে মধ্যবিত্ত শ্রেণী অবজ্ঞা করে থাকে। এই সংগঠনে কোনো সন্ত্রাসবাদী ব্যাপার-স্যাপার নেই এবং আন্তর্জাতিক কোনো সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত নয়। তবে তাদের যদি কোণঠাসা করে রাখা হয়, তাহলে তারা উগ্রপন্থা ধরতে পারে।’

তবে আল্লামা শফী বলেছেন, ‘আমরা রাজনীতিতে আগ্রহী নই। আমাদের উদ্দেশ্য মহান এবং তা বিশেষভাবে ধর্মীয়।’

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আল্লামা শফী এবং হেফাজতের মূল শক্তি চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসা। এখানে তাদের ১২ হাজারের অধিক ছাত্র রয়েছে।

হেফাজতের নেতা হাবিব উল্লাহর বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘আমাদের এখানে (হাটহাজারী মাদরাসায়) শ্রেষ্ঠ ইমাম তৈরি করা হয়। এদের এক-চতুর্থাংশই পরে উপসাগরীয় দেশগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে যায় এবং আমাদের আর্থিকভাবে সহায়তা করে।’

প্রতিবেদনে বলা হয়, শাহবাগ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৩ দফা দাবিতে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে হেফাজতে ইসলাম। ৫ মে তাদের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিকে ঘিরে অন্তত অর্ধশতাধিক লোক নিহত হয়। সংগঠনটির বহু নেতাও গ্রেফতার হন। এরপর সরকারের দমন-পীড়নের আশঙ্কায় গণমাধ্যমকেও এড়িয়ে চলছে হেফাজত।

তবে গত তিন বছরে ব্যাপক শক্তি সঞ্চয় করায় হেফাজতের ওপর কড়া দৃষ্টি রাখছে আওয়ামী লীগ সরকার।

প্রতিবেদনে বলা হয়, হেফাজতের বড় সুবিধা হলো তারা এমন কিছু সংগঠনকে একত্রিত করতে পেরেছে যারা এর আগে কখনো একত্রিত হয়নি। এদের একটি হলো হেফাজতেরই প্রতিপক্ষ জামায়াতে ইসলামী। এই দলটির নেতারা এখন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দণ্ডিত এবং বিচারাধীন।

হেফাজতের এই উত্থানে স্পষ্ট যে, বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ ক্রমক্ষয়িষ্ণু। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধানে রাষ্ট্রীয় মূলনীতির একটি ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা। কিন্তু ১৯৭৭ সালে সংবিধান সংশোধন করে এর পরিবর্তে ‘মহান আল্লাহর ওপর পূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা’ কথাটি স্থাপন করা হয়। এরপর ১৯৮৮ সালে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়েস ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিষয়ের অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘একথা বলার সময় এখনো হয়নি যে ধর্মনিরপেক্ষতা মৃত। তবে গত ৩০ বছরে ইসলামপন্থীদের উত্থান রাজনৈতিক কর্মপরিধি ও এজেন্ডা এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে সামাজিক আচরণকে প্রভাবিত করেছে।’

আলী রীয়াজের আশঙ্কা, এই ধারা চলতে থাকলে বাংলাদেশে নারীমুক্তি ব্যাহত হতে পারে এবং ধর্মীয় ও নৃ-তাত্ত্বিক সংখ্যালঘুরা নিরাপত্তাহীনতা বোধ করতে পারে। গত মার্চে হিন্দুদের মন্দিরে হামলা চালানো হয়। হিন্দু জনসংখ্যা ১৯৭৫ সালে যেখানে ছিল মোট জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ, এখন তা দাঁড়িয়েছে ১০ শতাংশেরও কম।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সরাসরি রাজনীতিকে প্রভাবিত করার কথা হেফাজতে ইসলাম অস্বীকার করলেও ২০১৪ সালে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে সংগঠনটি। ইসলামপন্থী এবং বিরোধীদের মাঝে পড়ে বেকায়দায় আছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এমনিতেই দলটির বিরুদ্ধে স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নাকচ করে জালিয়াতির মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের অভিযোগ করছে বিরোধীরা।

ঢাকার একজন শিক্ষাবিদ বলেন, পরাজয়ের আশঙ্কায় আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নাও মানতে পারে। আপনি হয়তো ইসলামপন্থীদের সমর্থন ছাড়াও জিততে পারেন; কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে গিয়ে জয়লাভ সম্ভব নয়। ফলে মাদরাসার নিরাপদ দেয়ালের মধ্যে থেকেই আল্লামা শফী আগামী নির্বাচনে ‘কিং মেকারে’র (সরকার গঠনে মূল নিয়ামক) ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারেন।প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদপত্র গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী ‘কিং মেকার’ হতে পারেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হেফাজতে ইসলামের উত্থান প্রমাণ করছে বাংলাদেশে সেক্যুলারিজম বা ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ এখন ক্ষয়িষ্ণু। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ হেফাজতের ওপর কড়া দৃষ্টি রাখছে।

এমন সময় প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হলো, যখন আগামী নির্বাচনে হেফাজতে ইসলামের ভোটের হিসাব-নিকাশ নিয়ে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা-কল্পনা। অনেকেই বলছেন, সম্প্রতি দেশের পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শোচনীয় পরাজয়ের পেছনে দেশ পরিচালনায় দলটির চরম ব্যর্থতার পাশাপাশি হেফাজতে ইসলামও অন্যতম ফ্যাক্টর ছিল। মঙ্গলবার গার্ডিয়ানের সাপ্তাহিক প্রকাশনা গার্ডিয়ান উইকলিতে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ’স রেডিকেল মুসলিম ইউনাইটিং বিহাইন্ড হেফাজত-ই-ইসলাম (হেফাজতে ইসলামের ছায়াতলে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে বাংলাদেশের উগ্রপন্থী মুসলমানরা)’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব মন্তব্য করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১০ সালে গড়ে ওঠা হেফাজতে ইসলাম এর আগে তেমন আলোচনায় ছিল না। তবে দেশের কওমি মাদরাসার সমর্থনপুষ্ট এই সংগঠনটিকে সমর্থন করেন লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মানুষ।

রাজনৈতিক ভাষ্যকার কবি ফরহাদ মজহার বলেন, ‘এই সংগঠনটি দরিদ্র ও অল্পশিক্ষিত মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে। এর সমর্থনকারীরা মূলত গ্রামীণ জনগোষ্ঠী। তাদের শহুরে মধ্যবিত্ত শ্রেণী অবজ্ঞা করে থাকে। এই সংগঠনে কোনো সন্ত্রাসবাদী ব্যাপার-স্যাপার নেই এবং আন্তর্জাতিক কোনো সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত নয়। তবে তাদের যদি কোণঠাসা করে রাখা হয়, তাহলে তারা উগ্রপন্থা ধরতে পারে।’

তবে আল্লামা শফী বলেছেন, ‘আমরা রাজনীতিতে আগ্রহী নই। আমাদের উদ্দেশ্য মহান এবং তা বিশেষভাবে ধর্মীয়।’

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আল্লামা শফী এবং হেফাজতের মূল শক্তি চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসা। এখানে তাদের ১২ হাজারের অধিক ছাত্র রয়েছে।

হেফাজতের নেতা হাবিব উল্লাহর বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘আমাদের এখানে (হাটহাজারী মাদরাসায়) শ্রেষ্ঠ ইমাম তৈরি করা হয়। এদের এক-চতুর্থাংশই পরে উপসাগরীয় দেশগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে যায় এবং আমাদের আর্থিকভাবে সহায়তা করে।’

প্রতিবেদনে বলা হয়, শাহবাগ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৩ দফা দাবিতে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে হেফাজতে ইসলাম। ৫ মে তাদের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিকে ঘিরে অন্তত অর্ধশতাধিক লোক নিহত হয়। সংগঠনটির বহু নেতাও গ্রেফতার হন। এরপর সরকারের দমন-পীড়নের আশঙ্কায় গণমাধ্যমকেও এড়িয়ে চলছে হেফাজত।

তবে গত তিন বছরে ব্যাপক শক্তি সঞ্চয় করায় হেফাজতের ওপর কড়া দৃষ্টি রাখছে আওয়ামী লীগ সরকার।

প্রতিবেদনে বলা হয়, হেফাজতের বড় সুবিধা হলো তারা এমন কিছু সংগঠনকে একত্রিত করতে পেরেছে যারা এর আগে কখনো একত্রিত হয়নি। এদের একটি হলো হেফাজতেরই প্রতিপক্ষ জামায়াতে ইসলামী। এই দলটির নেতারা এখন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দণ্ডিত এবং বিচারাধীন।

হেফাজতের এই উত্থানে স্পষ্ট যে, বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ ক্রমক্ষয়িষ্ণু। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধানে রাষ্ট্রীয় মূলনীতির একটি ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা। কিন্তু ১৯৭৭ সালে সংবিধান সংশোধন করে এর পরিবর্তে ‘মহান আল্লাহর ওপর পূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা’ কথাটি স্থাপন করা হয়। এরপর ১৯৮৮ সালে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়েস ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিষয়ের অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘একথা বলার সময় এখনো হয়নি যে ধর্মনিরপেক্ষতা মৃত। তবে গত ৩০ বছরে ইসলামপন্থীদের উত্থান রাজনৈতিক কর্মপরিধি ও এজেন্ডা এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে সামাজিক আচরণকে প্রভাবিত করেছে।’

আলী রীয়াজের আশঙ্কা, এই ধারা চলতে থাকলে বাংলাদেশে নারীমুক্তি ব্যাহত হতে পারে এবং ধর্মীয় ও নৃ-তাত্ত্বিক সংখ্যালঘুরা নিরাপত্তাহীনতা বোধ করতে পারে। গত মার্চে হিন্দুদের মন্দিরে হামলা চালানো হয়। হিন্দু জনসংখ্যা ১৯৭৫ সালে যেখানে ছিল মোট জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ, এখন তা দাঁড়িয়েছে ১০ শতাংশেরও কম।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সরাসরি রাজনীতিকে প্রভাবিত করার কথা হেফাজতে ইসলাম অস্বীকার করলেও ২০১৪ সালে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে সংগঠনটি। ইসলামপন্থী এবং বিরোধীদের মাঝে পড়ে বেকায়দায় আছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এমনিতেই দলটির বিরুদ্ধে স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নাকচ করে জালিয়াতির মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের অভিযোগ করছে বিরোধীরা।

ঢাকার একজন শিক্ষাবিদ বলেন, পরাজয়ের আশঙ্কায় আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নাও মানতে পারে। আপনি হয়তো ইসলামপন্থীদের সমর্থন ছাড়াও জিততে পারেন; কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে গিয়ে জয়লাভ সম্ভব নয়। ফলে মাদরাসার নিরাপদ দেয়ালের মধ্যে থেকেই আল্লামা শফী আগামী নির্বাচনে ‘কিং মেকারে’র (সরকার গঠনে মূল নিয়ামক) ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারেন।

বিষয়: বিবিধ

১৪৫৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File