কোরবানি করবো, নাকি বন্যার্তদের সাহায্য করবো ? { অনেকের মতামতের সমন্বয়ে পোস্টটি }

লিখেছেন লিখেছেন ডব্লিওজামান ২১ আগস্ট, ২০১৭, ০৯:৫৮:২৮ রাত



ক.

বেশ কিছুদিন আগের ঘটনা। কথা হচ্ছিল দেশের বিখ্যাত এক সুশীলের সাথে। এমনিই গল্প আর আড্ডা। হটাৎ কথা প্রসঙ্গে উনি বললেন, “দেশে অনেক মানুষ গৃহহীন, রাতে খোলা আকাশের নিচে ঘুমায়। আমরা যদি কিছুটা উদার হয়ে মসজিদগুলো ওদের রাত কাটানোর জন্য খুলে দিতাম তাহলে কত ভালো হত। তাছাড়া ইসলাম তো মানবতার কথাই বলে, না-কি”?

কথা শুনে বেশ স্তম্ভিত হয়ে গেলাম; ইদানীং কালের ভাষায় স্পীকার হয়ে যাওয়া বোধহয় এটাকেই বলে। তবে তা কিছুক্ষণের জন্য। জানি এসব সুশীলদের ধর্মীয় স্বাধীনতা, পবিত্রতা কিংবা অন্য কোন যুক্তিতেই কাজ হবে না, কৈফিয়ত মানবে না; বরং শুধু মানবতার কথাই বলবে। অথচ নিজ ধর্মের সংরক্ষণও যে মানবতার দাবী তা এদের কাছে বোধগম্য নয়। এজন্য একটু কড়া করেই বললাম-

হ্যাঁ, আপনার কথা বেশ যুক্তিযুক্ত। মানুষের কথা (!!) ভাবেন বলেই এসব চিন্তা আসে আপনাদের মাথায়। আচ্ছা একটা উত্তর কি দেবেন, এত কিছু থাকতে আপনার মাথায় কেন শুধু মসজিদের কথা আসল ? আমার কাছে তো, এর চাইতেও ভালো জায়গা আছে। যেমন স্কুল-কলেজ আর ভার্সিটি। এসব জায়গার কথা বললে সম্ভবত সব দিক থেকেই ভালো হত। অন্তত গরীবদের জন্য। যেমন,

প্রথমত, স্কুল-কলেজে গরীবগণ একটু বেশি সময় থাকতে পারত। একেবারে বিকেল থেকে ন্যূনতম পরদিন সকাল ৮.০০ টা পর্যন্ত। অথচ মসজিদে ইশার নামাজ হয়, তারপর অনেকে আমল করেন। ফলে তাদের অপেক্ষা করতে হত অন্তত ১০.০০ পর্যন্ত। অনেকে আবার শেষ রাতেও ইবাদাত করেন। সেক্ষেত্রে আরো বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা। তারপর আবার ফজরের আযানের আগেই উঠতে হত। এবার বলেন, কোনটা ভালো? কোনটাতে তাঁদের সুবিধা?

দ্বিতীয়ত, মসজিদে থাকলে মাটিতে শুতে হত। স্কুল-কলেজে তো আর সে অসুবিধা নেই, দুটা বেঞ্চ একসাথে করলে বেশ আরামেই খাট বানিয়ে শুতে পারত।

তৃতীয়ত, স্কুল-কলেজে থাকলে তো শিক্ষার প্রতি কিছুটা হলেও আগ্রহ বাড়ত। আপনাদের কাছে তো আবার শিক্ষার গুরুত্ব সর্বাগ্রে। ধর্মের প্রতি অনুরাগী না হয়ে শিক্ষার প্রতি হলে তো আপনাদের খুশি হওয়ারই কথা।

চতুর্থত, মসজিদে পবিত্রতার একটা বিষয় আছে। স্কুল-কলেজে তার প্রয়োজন তুলনামূলকভাবে কম। সেক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতা আর পবিত্রতার খরচাপাতির হিসাবও মাথায় নেওয়া উচিত, কি বলেন?

তাছাড়া- ১. মসজিদে মুসাফিরদের তো থাকার অনুমতি আছেই। আমাদের রাষ্ট্র ব্যবস্থা ইসলামী নয় বলেই এমন হয় না।

২. চুরির ভয় থাকে বলে অনেকে মসজিদ লাগিয়ে রাখেন। অথচ দেশে আইনের শাসন আছে বলে জানি না। চুরির দণ্ড থাকায় সৌদি আরবে যা সহজেই উপলব্ধি করা যায়।

৩. ইসলামী সমাজ নেই বলেই মেহমান হিসেবে অপরিচিত কাউকে নিজ ঘরে স্থান দেওয়ার কথা আমরা চিন্তাও করি না।

তারপর মহোদয় চুপ। অন্য প্রসঙ্গে চলে গেলেন। ভাবলাম, কৈফিয়ত না দিয়ে পাল্টা আঘাত করাতেই বোধহয় কাজ হলো। এটাই আমাদের সুশীলদের অবস্থা। কিছু হলেই ইসলাম ধরে টানাটানি।

খ.

ইদানিং শুরু হয়েছে, কুরবানির টাকা দিয়ে বন্যার্তদের সাহায্য দেওয়ার ধান্দা। কয়েক বছর ধরেই কুরবানি এলেই নানা ইস্যু উঠে আসে। এটা কি গরুর মায়ায় নাকি ইসলামের বিরোধিতায় বুঝতে বেশ কষ্ট হয়।

প্রথম কথা, বন্যার্তদের সাহায্য-সহায়তা করা আমাদের কর্তব্য।সরকারীভাবে হয়ত এত বড় দুর্যোগ মুকাবিলা করা সম্ভব নয়। দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদেরও এগিয়ে আসা উচিত। তাছাড়া মুসলিম হিসেবে এটা আমাদের ঈমানী কর্তব্যও বটে। আমরা আরাম করব আর আমারই এক ভাই একবুক পানিতে দাঁড়িয়ে আমাদের পানে চেয়ে থাকবে এটা তো কল্পনাই করা যায় না। সাধ্যমত সব মুসলিমেরই এই ত্রাণকার্যে অংশগ্রহণ করা ঈমানের দাবী, ইসলামেরই নির্দেশ।

হ্যাঁ, তাই বলে কুরবানির টাকা কেন? এটা স্পষ্টতই গোমরাহী কিংবা ইসলাম বিদ্বেষ। আমার বুঝে আসে না, কেন বা কোন যুক্তিতে আমরা এসব বলছি।

১. যিনি কুরবানি দিচ্ছেন তিনি নিশ্চয়ই নিসাব পরিমাণ অর্থের মালিক। কুরবানি তো দিচ্ছেন মাত্র কিছু টাকার। তার বাকী টাকা কই গেল, কিংবা স্বর্ণ? সেগুলো থেকে কি সাহায্য করা যায় না?

২. হ্যাঁ, অনেকে নফল কুরবানি করেন, মৃতের নামে কুরবানি করেন। এসবের চাইতে বন্যার্তদের দান করা উত্তমই হবার কথা। কিন্তু ওয়াজিব কুরবানির টাকা নয়। কেননা এটা ইসলামের বিধান। এটা নির্ধারিত খাতেই ব্যয় করতে হবে। আর সাহায্য করার বিধান মানুষের জন্য এক্ষেত্রে বাড়তি। অর্থাৎ কুরবানি করতে হবে, সাহয্যও করতে হবে।

৩. টাকা নেই, ভাল কথা। তাহলে কুরবানি ওয়াজিব কীভাবে হল? নাকি সামাজিক স্ট্যাটাস রক্ষার জন্য কুরবানি দেন? এমন অবস্থায় এই কুরবানির কি লাভ?

৪. টাকা বাঁচানোর জন্য কুরবানি বাদ দেওয়ার কথা তুলেছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত বলতে শুনলাম না, আমি ঈদের কেনাকাটা করব না। কিংবা বিলাসব্যসনে যা খরচ তা বন্যা শেষ না হওয়া পর্যন্ত করব না। অথবা বাইরে বেড়াতে যাওয়া বা খাওয়া-দাওয়া বাদ দিলাম। নতুবা বন্যা শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিজের আবশ্যকীয় খরচ ছাড়া সব সঞ্চয় করে দান করব। ইসলামের শিক্ষা কিন্তু এমনই। সব নাগরিক ভাল খেতে পারে না বলে খলীফা নিজেও শুকনো আর নিম্নমানের খাদ্যই গ্রহণ করতেন।

আমরা হচ্ছি পুরো উল্টো। আমাদের সব আদর্শ আর ভালোবাসা গিয়ে দাঁড়াচ্ছে কুরবানির বিরুদ্ধে। অথচ সত্যি হচ্ছে, কুরবানির বেনিফশিয়ারী গরীবরাই। তাদের হিসেবে এক গরীব মেরে অন্য গরীব বাঁচানো। মাছের তেলে মাছ ভাজার মত। নিজের কোন লোকসান নেই, বরং সাপও মরল লাঠিও ভাঙ্গল। সুন্দর, দূরদর্শী চিন্তা ভাবনা !!! এত বুদ্ধি থাকতে জাতি হিসেবে আমরা এত পিছনে কেন বুঝতে পারছি না।

৫. অন্যবছর কুরবানি দেন লক্ষ টাকার গরু। এবার না হয় ছোটই দিলেন, পঞ্চাশ হাজার বা ষাট হাজারের। বাকী টাকা তো বন্যার্তদের দেওয়া যায়। নাকি ছোট গরু দিয়ে স্ট্যাটাস খোয়ানোর ভয় কাজ করে? মানবতার কথাই যদি বলি, তাহলে নিজের স্ট্যাটাস কিছুটা কমলই বা।

নাকি এখানেও লাভের চিন্তা ভাবনা? কুরবানি দিলে লাখ টাকা খরচ, আর না দিয়ে বন্যার্তদের দিলে তো পঞ্চাশ হাজার দিলেই চলবে। পঞ্চাশ হাজারই লাভ!!

৬. দানের চিন্তা ভাবনা যদি মিডিয়াতে জনপ্রিয়তা বাড়ানোর জন্য হয়ে থাকে, তাহলে হিদায়াতের দু‘আ করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। মুর্খের চেয়ে জ্ঞানপাপীই আমার কাছে বেশি ভয়ংকর।

৭. একটা বিষয় স্পষ্ট করা ভালো, যারা এধরণের (কুরবানির বদলে দান) চিন্তা ভাবনা করেন, তাদের উচিত কুরবানির আগে নিজের নিয়ত যাচাই করা। এমন মনোভাব থাকলে কুরবানি কবুল হওয়ার কথা না। কেননা কুরবানি একটা ইবাদাত; এর বেনিফিশিয়ারী আমরাই, দুনিয়াতে- আখিরাতেও। এজন্য দরকার শুদ্ধ নিয়ত। এখন নিয়তেও গণ্ডগোল করে ফেললে শুধু মাংসই খাওয়া হবে, লাভের লাভ আর কিছু হবে না।

গ.

ইসলামের নানা ইস্যুতে এমন উচ্চারণ প্রতি যুগেই ছিল, থাকবেও, বরং এখন একটু বেশিই হবে। তাই যারা এসব বলছেন তাদের নিয়ে আমার কোন মাথাব্যথা নেই। চিন্তা শুধু মুসলিমদের নিয়ে, ইসলামকে ভালোবেসেও যদি আমরা এসব বাহ্যত মিষ্টি কথায় ধোঁকা খাই, তাহলে তো সবই হারালাম। আল্লাহ্‌ তা‘আলা সবাইকে হিদায়াত করুন, হিফাজত করুন।

Mustafa Monjur

বানে ভাসিয়া যায় প্রাণ, দেশ

আর আমি গাহি ক্ষমতা,আইন-আদালত,রায়,নির্বাচন,সেলফি, পিশাচী যত গান .........

" কাদেরকে দানখয়রাত করে আপনারা বিরাট বাহাদুর দয়ালু সাজতে চান? যাদের টাকা লুট করে বিদেশে লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছেন তাদের? যাদের টাকা পাচার করে সুইস ব্যাংকে রাখেন তাদের? যাদের চার হাজার কোটি টাকা চুরি হলে অর্থমন্ত্রী বলে এ টাকা কিছুই না তাদের? যাদের টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক হ্যাকার লুটে নিলেও কারও কিছু হয় না তাদের? তাদের টাকায় আপনাদের ভাস্কর্য হয়, তাদের টাকায় আপনারা বাড়িগাড়ি কেনেন, তাদের টাকা আপনারা হানিমুন করেন, তাদের টাকায় আপনাদের পে স্কেল হয়, তাদের টাকায় বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি খরচ করে রাস্তা-ফ্লাইওভার সেতু তৈরি হয়। তাদেরই আজ আপনারা ত্রাণ খয়রাত দেবেন? এতই যদি আপনারা মানবতাবাদী হলে তাদের ভাগটা বুঝিয়ে দিতে বলুন, যদি সামান্য কানাকড়িও পায়, তাদেরকে দান করতে হবে না, নিজের টাকায় তারা ভালোমতো বন্যার বিপদ কাটাতে পারবে।" Wzaman

ওলামায়ে কেরামদের মতে, কুরবানি করা ওয়াজিব। এটি ইসলামি শরীয়ার বিধান। জিলহজ্জ মাসের ১০-১২ তারিখ সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সাড়ে ৭ তোলা স্বর্ণ অথবা সাড়ে ৫২ তোলা রৌপ্যের সমপরিমান সম্পদের মালিক হয় তবে তাকে কোরবানি করতে হবে। সহজ বিষয় হল, কুরবানি হচ্ছে পশু জবেহ্ করা।কেউ যদি সমপরিমাণ অর্থ কোন ভাল কাজে দান করে তবে সেটা দান হিসেবে গণ্য হবে, কুরবানি হিসেবে নয়।মনে রাখতে হবে, মানবিক সাহায্য ও কুরবানি উভয়টি সওয়াবের কাজ সত্ত্বেও একটি অন্যটির বিকল্প নয়। তবে কথা আছে কেউ যদি কুরবানির সময়ে মুসাফির অবস্থায় থাকেন, তবে সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানি না দিলে গুনাহ হবে না। তখন তিনি চাইলে সে পরিমাণ টাকা বন্যার্তদের সাহায্য বা অন্য যে কোন ভাল কাজে ব্যয় করতে পারবেন।কারঙ, মুসাফিরের উপর কোরবানি ওয়াজিব নয়..। Mahmudur Rahman

সত্যিই আজব !

মাত্র ২ দিন আগেই বিরিয়ানির মহাযজ্ঞ হলো কিন্তু মহাযজ্ঞের আগে কেউ বললো না, শোক-বিরিয়ানির টাকা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের দেয়া হোক/উচিত।

কিন্তু মহাযজ্ঞের ১ দিন পরেই সবার মনে হলো, আহারে, দেশে বন্যা চলছে। এই দলে শতভাগ 'চেতনা' তো আছেই, সাথে জাতীয়তাবাদী পোশাকের চেতনাও আছে।

যে মুন্নি(পড়ুন চুন্নি) সাহা ২ দিন আগে বললো, তেমন কিছু না, স্বাভাবিক বন্যা, সেও টক-শো করবে, 'কোরবানির টাকা বন্যার্তদের দিন' শিরোনাম দিয়ে।

যদি বলি, গরু কোরবানি (ওদের কাছে জবাই) বন্ধ করতেই ভারত এই সময়ে পানি ছেড়ে বন্যার সৃষ্টি করেছে?

'কোরবানির টাকা বন্যার্তদের দিন' বাক্যটিও তাদের সরবরাহ বলেই আমার ধারণা।

আমি যেমন মনে করেছি, তেমনটাই ব্যক্ত করেছি। এখন কেউ যদি আমার গায়ে মৌলবাদী-রাজাকার-অমানবিক ট্যাগ লাগাতে চান, স্বাগতম। Riaz Sharif

কোরবানি না দিয়ে ওই টাকা বন্যার্ত দিয়ে দেওয়া ও এক্টুকরা অতীত ইতিহাসঃ

প্রখ্যাত সাহিত্যিক সৈয়দ আলী আহসান লিখেছেন-

''মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি ঈদুল ফিতর উদযাপন করলাম কলকাতায় এবং ঈদুল আযহা উদযাপন করলাম স্বাধীন বাংলাদেশে। এ সময় ধর্মনিরপেক্ষতার স্বপক্ষে নানাবিধ বিবৃতিদাতার উদ্ভব হলো। একটি বিবৃতি ছিল সে বছর কোরবানির বিরুদ্ধে। বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, মুক্তিযুদ্ধে যেহেতু বহু প্রাণহানি ঘটেছে, সে আত্মত্যাগই কোরবানীর শামিল। সুতরাং নতুন করে কোরবানীর নামে প্রাণী হত্যা করা সমীচীন নয়। আমারও অনুরূপ মনে হয়েছিল। পত্রিকায় এ বিবৃতি দেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইসহাক আমার সাথে দেখা করে বললেন,আলী আহসান সাহেব, কোরবানীর কোন বিকল্প নেই। যার উপর কোরবানী ফরজ (ওয়াজিব) তাকে কোরবানী দিতেই হবে। দেশের জন্য মানুষের যে আত্মত্যাগ, সেটার সম্মান আল্লাহ তায়ালা করবেন, আত্মত্যাগকে কোরবানীর বিকল্প হিসেবে কখনই ধরা যাবেনা। ইসহাক সাহেবের কথায় আমার চৈতন্যোদয় হলো। আমি সে বছর কোরবানী দিয়েছিলাম।

(ধর্মনিরপেক্ষতা এবংআমি,আমার সাক্ষ্য,ঝিঙেফুল ২০০৩, পৃ. ৩৬)''

ইসলাম বিদ্বেষী সমাজে এভাবেই মুসলিম সমাজে ভ্রান্তির বীজ বপন করে কৌশলে। তারপর ইসলামের মৌলিক শেয়ারগুলো নিয়ে ছুড়ে দেয়া সরাসরি চ্যালেঞ্জ।আমি মনে করি, আপনি দান করতে- করতে- করতে-করতে যদি ১০ ই জিলহজ এর চাঁদ উঠার আগে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক আর না থাকেন তাহলেই কেবল কুরবানি করার হাত থেকে বেঁচে যাবেন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে ক্ষমা করুন শয়তানের এমন চক্রান্ত থেকে। সুতারাং সাবধান এইসব সেকুলার-সুশীল হতে, এরা যুগে যুগে এই প্রতারণা করেই যাবে, আল্লাহ্‌ পাক আমাদের হেফাজত করুক -আমিন। Sheikh Moynul Karim

চমৎকার হিসাব!

ধরুন, ৩০০ জন সংসদসদস্য ২ লাখ টাকা করে দিলে হবে ৬ কোটি টাকা,

৫০ জন মহিলা সংসদসদস্য ১ লাখ টাকা করে দিলে হবে ৫০ লাখ টাকা,

৩০টি ব্যাংক ২ লাখ টাকা করে দিলে হবে ৬০ লাখ টাকা,

৩০টি শীর্ষস্থানীয় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ৫ লাখ টাকা করে দিলে হবে দেড় কোটি টাকা,

আরো ৩০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ২ লাখ টাকা করে দিলে হবে ৬০ লাখ টাকা,

১০০টি হাসপাতাল ৫ লাখ টাকা করে দিলে হবে ৫ কোটি টাকা,

২৫ জন ক্রিকেটার ২ লাখ টাকা করে দিলে হবে ৫০ লাখ টাকা,

২৫ জন নায়ক নায়িকা ২ লাখ টাকা করে দিলে হবে ৫০ লাখ টাকা,

২৫ জন গায়ক গায়িকা ১ লাখ টাকা করে দিলে হবে ২৫ লাখ টাকা,

৩০ টা মাজার ৩ লাখ টাকা করে দিলে হবে ৯০ লাখ টাকা।

এত টাকা দিয়ে কী হবে?

দাঁড়ান, আগে যোগ করি।

যোগ করলাম।

মোট হলো- ষোল কোটি পঁয়ত্রিশ লাখ টাকা মাত্র।

হ্যাঁ, এবার এই টাকাগুলো বন্যাক্রান্ত অসহায় লোকগুলোকে সহায়তা হিসেবে দিই। তাদের জন্য বড্ড উপকার হবে। আর যাদের কাছ থেকে নেওয়ার কথা বলেছি তাদের জন্যও খুব একটা চাপ বা বোঝা হবে না।

এর বাইরে ১৬ কোটি লোকের ৫ কোটি লোকও যদি মাত্র ২০ টাকা করে দেয় তাহলে আরো ১০ কোটি টাকা জোগাড় হবে।

উদ্যোগটা কে নেবে সেটাই বড়কথা!

- Nazim Khan

কোরবানির বদলির কথা বলা অযৌক্তিক

উপস্থাপক, সংগঠক আব্দূন নূর তুষার এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, কোরবানী মুসলিমদের একটি ইবাদত বা উপাসনা। এটা যাদের কোরবানি দেবার সংগতি আছে, তাদের জন্য বাধ্যতামূলক। তাই এটার কোন বদলি বা এটার পরিবর্তে আসুন টাকাটা অন্য কোথাও দেই এধরনের কথা বলা অযৌক্তিক এবং অবিমৃষ্যকারিতা।

আপনি বন্যার্তদের টাকা দিতে চাইলে সেটা আলাদাভাবে দান করতে হবে। কোরবানি না দিয়ে টাকাটা বন্যার্তদের দেই, এটা বলার কোন সুযোগ নাই। দান করতে চাইলে দান করতেই পারেন। সেটা করতে হবে চিকেন ফ্রাইয়ের টাকা বাঁচিয়ে, ফাইভ স্টারের ডিনারের টাকার বদলে..অথবা আপনার উদ্বৃত্ত থেকে। মনে করেন, বন্যা যদি কোরবানির আগে না হয়ে পরে হতো। তখন কোন পয়সা বাঁচিয়ে দান করতেন? অন্যান্য বছর যখন বন্যা হয়েছে তখন আমরা কোন পয়সা থেকে দান করেছি? তখন যেখান থেকে করেছি, সেখান থেকেই দান করতে হবে। মুসলিমদের ইবাদত না করে সেটা দান করার কোন সুযোগ নাই। প্রকৃত মুসলিম দুটোই করবেন। ইবাদতও করবেন, দানও করবেন। এটা তাকে শেখাতে হয় না।

আমার এক বন্ধু চাকরী করে বাংলাদেশের প্রথম সারির মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীতে। সে জানানো প্রতিমাসে সে একটি ক্লাবে ৩০/৩৫ লক্ষ টাকা মালিকের ছেলে মেয়ে ও তার বন্ধুদের মদের বিল দেয়।

বনানীতে কি করে মন্ত্রী এমপি ও ধনীর সন্তানরা আমরা কম বেশি জেনেছি সম্প্রতি।

সুইস ব্যাংকে দেশের গরিব মানুষের হক্বের কত হাজার কোটি টাকা জমা আছে আমরা জানি।

তারপরও কিছু চুশিল সম্প্রদায় কুরবানী বন্ধ করে সেই টাকা বন্যার্তদের সাহায্যে দেয়ার অনুরোধ করছেন।

তাদের কাছে আমার প্রশ্নঃ

আপনারা একমাসের মদের বিল,নারীর বিল বন্যার্তদের দিবেন তো?

আপনারা কুরবানী না দিয়ে সেই টাকা বন্যার্তদের দিবেন বলে প্রচার করছেন।

আপনারা হাজার কোটি টাকা থেকে কত ভাগ বন্যার্তদের দেবেন জানতে চাই।

বাংলাদেশের মুসলমানদের কুরবানী বন্ধে একটি গোষ্টির কয়েক বছরের চেষ্টা আমরা দেখছি।

আজ যদি বলি,বন্যাকবলিত অঞ্চলের মানুষদের গরু ছাগল ন্যয্য দাম দিয়ে কিনে এনে আপনারা কুরবানী দিয়ে তাদের সাহায্য করুন। তখন এরা চুপ হয়ে যাবে।

অথচ গরু ছাগল বন্যার পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছে সেই দিকে তাদের খেয়াল নেই।

এই সব দুষ্ট ভন্ডদের প্ররোচনায় কেউ পা দিবেন না।

এরা সমাজে প্রকাশিত নিজের সুন্দর মুখের আড়ালে একেকটা ভয়ঙ্কর নোংড়া কুৎসিত চরিত্র। Masum Mahbu

https://www.jagonews24.com/opinion/news/327766

বন্যার্তদের সহায়তা কখনই কোরবানির বিকল্প নয়

আমি জানি, কিছু লোক আমায় গালমন্দ করবে। করেও সব সময়। অন্যের নিন্দে করা স্বভাব যাদের, তার বাইরে বেরুবে কী করে তারা? কিন্তু আমার সব সময়ই মনে হয়েছে, মনে হয় সব সময়, যা সত্য তা লিখি। যা সত্য তা বলি। সঠিক তথ্যটি দিই। সত্য নয় যা, সঠিক নয় যা, তা বলে, লিখে লাভ কী? অন্যকে মিথ্যে বলে, ভুল বলে, খুশি করবার মধ্যে কোন আনন্দ নেই। আমার আনন্দ সত্য বলায়, লেখায়, তা কারো ভালো লাগুক কী না লাগুক।

দেশে বন্যা চলছে। ভয়াবহ বন্যা। অনেক দিন পর মানুষ এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে। এ দেশে যে কোন দুর্যোগে মানুষ দাঁড়িয়েছে, মানুষের পাশে। ভাঙা মানুষ ওঠে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে স্বপ্ন দেখেছে, নতুন দিনের। হারতে হারতে জীবনের কাছে জিতে যাওয়া মানুষ আমরা। এবারও আমরা বন্যা মোকাবেলা করতে পারবো। মানুষের পাশে দাঁড়াব, এমন প্রত্যাশা আমার- বেশি কিছু নয়।

মানুষ কোরবানিও করবে, দানও করবে, ত্রাণও দেবে। ত্রাণ দেয়া অবশ্যই কোরবানি বন্ধ করে নয়

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেখলাম, কিছু লোক বন্যায় সহায়তাকে কোরবানির বিকল্প হিসেবে দাঁড় করাচ্ছেন। কেউ কেউ স্ট্যাটাস দিচ্ছেন, বলছেন, বলবার চেষ্টা করছেন- কোরবানি না দিয়ে সেই টাকা বন্যার্তদের দিন। কোন এক তারকা দম্পতি স্ট্যাটাস দিয়েছেন, তারা এবার কোরবানি দেবেন না, কোরবানির টাকা বন্যার্তদের দান করবেন। এই স্ট্যাটাসটি আরো অনেককে একই ধরনের স্ট্যাটাস দিতে, ভাবনা ভাবতে সহায়তা করছে।

আমি কাউকে ছোট করতে চাচ্ছি না, কাউকে খাটো করা আমার উদ্দেশ্য নয়। সকলের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, যারা এমন স্ট্যাটাস দিচ্ছেন, বন্যার্তদের প্রতি দানকে, কোরবানির বিকল্প হিসেবে দাঁড় করাচ্ছেন, তারা কি ধর্মের বিধান বা নিদের্শনা সম্পর্কে অবগত আছেন? ধর্মে কি বলা হয়েছে, তারা কি জানেন? উত্তরটি যতদূর সম্ভব ‘না’ বোধকই হবে। ধর্ম সম্পর্কে, ধর্মীয় বিধান সম্পর্কে জানলে কেউ এমন কথা বলবেন না, এ আমি নিশ্চিত।

জেনে রাখা ভালো, কোরবানি মুসলমানদের জন্য একটি ইবাদত বা উপাসনা। যাদের সঙ্গতি রয়েছে কোরবানি দেবার, তাদের জন্য বাধ্যতামূলক কোরবানি। কোরবানিকে বিকল্প বা ‘অল্টারনেট’ করার কোন সুযোগ নেই, সামর্থবানদের জন্য। সুতরাং যারা এই বার্তাটি দিচ্ছেন, তারা খুব ভুলের মধ্যে বসবাস করছেন, বলতে বাধ্য হচ্ছি।

নবী করিম মোহাম্মদ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি সঙ্গতি থাকা সত্ত্বেও কোরবানি করলো না সে যেন আমার ঈদগাহে না আসে। ধর্ম ও ধর্মীয় বিধান আসলে নির্দিষ্ট রীতি ও পদ্ধতি অনুযায়ী চলে। আমি বিশ্বাস করি কি না করি, পালন করি কি না করি, ধর্মের বিধানকে ধর্মের রীতি অনুযায়ীই পালন করতে হবে, কোন বিকল্প নেই। তাই এটার পরিবর্তে আসুন টাকাটা অন্য কোথাও দেই, অমনটি বলা অবিমৃষ্যকারিতা, অযৌক্তিকও বটে।

বন্যার্তদের দান, কোরবানির বিকল্প হতে পারে না কখনও। এটি কোরবানি না করার, ধর্ম পালন না করার অজুহাত মাত্র। যে প্রকৃত মানবিক, প্রকৃত মুসলিম সে ‘অল্টারনেট’ খুঁজবে না কখনও। হয়তো তার সীমিত সামর্থ্য, সে তার মধ্যেই সমন্বয় করবে। কোরবানি বাদ দেবে না। আর আসল কথা হচ্ছে, যে দেবার নয়, সহযোগিতা করার মানসিকতা যার নেই অন্যকে, সে বিকল্প খুঁজবেই। অন্যান্য বছরও তো বন্যা হয়েছে, তখন আমরা দান করেছি কোথা থেকে? তখন যেখান থেকে করেছি, এখনও করতে হবে সেখান থেকেই।

ইচ্ছেই বড়, যে কোন কাজের। বন্ধুরা মিলে মাস্তি, হ্যাং আউট, ফাইভ স্টারে ডিনার, ক্লাবপার্টি এসব বাদ দিতে বলছি না, বলছি কোরবানি বাদ দাও- এ কেমন কথা? খবরে প্রকাশ, ঢাকায় আসছেন এক সময়ের সাড়া জাগানো পর্নো তারকা সানি লিওন। সানি লিওনের রগড় সামনে থেকে দেখার সর্বনিন্ম টিকিট মূল্য ১৫ হাজার টাকা। এসব বাহুল্য, নিন্ম রুচির বিনোদন তো বাদ দেবার কথা কারো মুখে ভুলেও শুনছি না।

আমি জানি, ‘তথাকথিত’ প্রগতিশীলরা আমায় ‘অপ্রগতিশীল’ বলবেন। বলবেন, আমি মানবতাবাদী নই। তাদের জন্য বলছি, ভুল ব্যাখ্যা করবেন না, ভুল পড়বেন না আমাকে। আমি বলতে চাইছি, মানুষ কোরবানিও করবে, দানও করবে, ত্রাণও দেবে। ত্রাণ দেয়া অবশ্যই কোরবানি বন্ধ করে নয়। জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার মধ্যে, না জানার মধ্যে কোন মুক্তচিন্তা নেই। মূর্খতায় চারপাশ উপচে পড়ছে। নিজেদের নিজেরাই মুক্তচিন্তার প্রগতিশীল বলে দাবি করছে। এই প্রগতিশীলরা না জানে বিজ্ঞান, না জানে ধর্ম। আর মনে রাখতে হবে, অজ্ঞতার মধ্যে আর যাই থাকুক, প্রগতিশীলতা নেই।

পুনশ্চ: আমার অগ্রজ আব্দুন নূর তুষারের ফেসবুক স্ট্যাটাস আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে, লেখাটি লিখতে। আমার অনেক লেখারই অনুপ্রেরণা তিনি। মেধাবীজন, আলোকিত মানুষ। যে আমাকে বরাবরই পড়তে, জানতে উৎসাহিত করে, কখনও কখনও বাধ্যও করে। তার প্রতি ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা।

লেখক : সম্পাদক, আজ সারাবেলা। ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, মিডিয়াওয়াচ। পরিচালক, বাংলাদেশ সেন্টার ফর ডেভলপমেন্ট জার্নালিজম অ্যান্ড কমিউনিকেশন। সদস্য, ফেমিনিস্ট ডটকম, যুক্তরাষ্ট্র।

কোরবানী করবেন না বন্যাত্রদের সাহায্য করবেন এইটাও ঘোষণা দিয়া করা লাগে! এইটা আবার গণমাধ্যমে ফলাও কইরা প্রচার লাগে! পুরা সমাজ একটা বিজ্ঞাপনের চাদরে ঢেকে যাচ্ছে! এখন বিজ্ঞাপন অসহায় বানভাসি মানুষদের পাশে দাঁড়ানর নামে চলছে ফেইসবুকের পাতায় পাতায় ওমুকে দিয়েছেন এতটাকা সাথে তার ছবি! বড় কাগজে নায়ক নায়িকার ছবি... Robin Ahsan

বিষয়: বিবিধ

১২৮৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

383831
২২ আগস্ট ২০১৭ সকাল ১০:৩২
হতভাগা লিখেছেন : বাংলাদেশে কিছু মুসলমান নামধারী কুলাঙ্গার আছে যারা পশ্চিমা দেশের উচ্ছিষ্ট খেতে , দাদাবাবুদের ঝোল খেতে মুখিয়ে থাকে । এসবের জন্য সবচেয়ে সহজ যে কাজ , যে কাজে পশ্চিমারা ও দাদাবাবুরা তুষ্ট বা পুলকিত হবেন - সেটা হল নামে মুসলমান হয়ে ইসলামকে নানাভাবে পঁচানোর চেষ্টা করা ।

কুরবানী আবশ্যক অংশ হিসেবে যে পশু জবাই হয় এর চেয়েও নৃশংসভাবে উনাদের প্রভুরা পশু বলি দেন (ছবি আছে , ছবি দিলে ভয় পাবে কেউ কেউ)সেটা নিয়ে উনাদের মাথা ব্যথা নেই । বছরের অন্য সময়ে কনসার্টের নামে যে কোটি কোটি টাকার মচ্ছব করা হয় সেটা নিয়ে উনাদের রা নেই । ৬০০০০ কোটি / ৮৫০০ কোটি / ৪০০০ কোটি যে লুট হয়ে গেলে এসব নিয়েও উনারা মাতম করেন না।

উনাদের সুশীলগিরি ব্যাপক মাত্রা পায় কুরবানীর সময় এলে । গত বছর তো এমন ছবিও এসছিল ফেসবুকে যে ঢাকার রাস্তায় রক্তের বন্যা বয়ে যাচ্ছে ! ( কুরবানির দিনে বৃষ্টি হয়েছিল। এমনটা আল্লাহর তরফ থেকেই হয় যাতে ময়লা জিনিস ধুয়ে চলে যায়)।

ইসলাম ও মুসলমান নিয়ে যতই হিংসাহিংসি করুক না কেন দেখা যাবে যে দুই ঈদের সময় এরাই বেশী ভোজ করে । গরুর গোসত এরা না খেয়ে থাকতে পারবে না।
২২ আগস্ট ২০১৭ সন্ধ্যা ০৬:৫০
316733
ডব্লিওজামান লিখেছেন : স্বাভাবিক ! যুগে যুগে এমন ছিল, আছে এবং থাকবে। অন্যদের জন্য পরীক্ষা স্বরূপ .।.।.।.।.।.।।।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File