দশ ও দেশের জন্য যদি অণুপরিমাণও ভাবনা না জাগায় ; তাহলে আমাকে ক্রসফায়ার করুন !!!
লিখেছেন লিখেছেন ডব্লিওজামান ০৬ জুলাই, ২০১৬, ০৪:০০:২৩ রাত
-----+--+ -------- +++++***------------
এতদিন সন্ত্রাসী হামলা, টার্গেট কিলিং, ভিন্ন ধর্মাবলম্বী ও বিদেশি খুনের জন্য বিএনিপ-জামায়াত বিশেষ করে মাদ্রাসা পড়ুয়াদের দায়ি করা হচ্ছিলো। গুলশান ঘটনা আসলে সমালোকদের মুখে চুনকালি মেখে দিয়েছে। ভাগ্য ভাল, ওখানে ধনীর দুলাল আর ইংরেজি মাধ্যম ও নামি - দামি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের অপারেশন হয়েছে। নইলে হয়তো এতদিন সারাদেশে কোরআন-হাদীস নিয়ে গবেষণা হওয়া মাদ্রাসাগুলোতে শকুনের থাবা হামলে পড়তো, যেমনিভাবে এসপি পত্নীর মার্ডারের পর সারাদেশে বিনএপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের ধরপাকড় ও ক্রসফায়ারের নামে হত্যা করা হয়েছে ।
এখন তারা বলতে চাচ্ছে, সংস্কৃতি চর্চার অভাব, ফ্যামিলি বান্ডিংয়ের অভাব, বাবা-মায়ের নিয়মিত খোঁজখবর না নেয়া আরো কত কি!!!
কিন্তু তারা কিছুতেই গোড়ায় হাত দেন না।
জঙ্গি নিব্রাস ইসলাম তো শ্রদ্ধা কাপুরের আঁচল ধরে নাচানাচি করেছিল। বাকিরাও স্কলাস্টিকার সিঁড়িতে বান্ধবী নিয়ে কম আড্ডা দেন নি। টার্কি স্কুল আর নর্থসাউথের ফ্লোরে উন্নত ও দেশি-বিদেশি সংস্কৃতির ছোঁয়া তারা কম পান নি।
তাদের মাদ্রাসার অনাথ (!) ছাত্রদের মত অভাব-অনটনে দিন কাটে নি যে, জীবনের মমতা থাকবে না!!!
তাহলে?
তাহলে, মূলত: গোড়ায় হাত দিতে হবে। চেতনাজীবী এবং ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা এই সরকার তা দিচ্ছে না।
সরকার ৮ বছরে একটি শূন্যতা তৈরি করেছে সবক্ষেত্রে।
ধরুন, রাজনীতি। প্রতিপক্ষ রাখেনি আ'লীগ। মার্কসের ডায়ালেকটিক্যাল মেথডে দুইপক্ষ লাগবেই। সমাজ ও রাজনীতির উন্নতি, সমৃদ্ধি, অগ্রগতি হয় এই মেথডে। এখন অপর পক্ষ নেই আ'লীগের। স্বভাবতই স্থান শূন্য থাকে না। বিএনপি-জামায়াত চুপ। তাই সে জায়গা দখল করে নিয়েছে জঙ্গিরা।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বারবার আ'লীগকে সতর্ক করেছিল এ ব্যাপারে। কিন্তু ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে তা আমলে নেয়নি ডিজিটাল এ বাকশালীরা।
উন্নত সংস্কৃতির প্রতিভুরা জঙ্গি হওয়ার পরও তারা বহুত্ববাদী এই সমাজের বৃহৎ অংশ মুসলমানদের সংস্কৃতি বাদ দিয়ে প্রতিবেশি দেশ থেকে আমদানি করা সংস্কৃতি চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে। কিন্তু গুলশান ঘটনা কি প্রমান করলো !?!
সংস্কৃতির ক্ষেত্রে সরকারের সৃষ্ট এই শূন্যতা সমাজের তরুণ সমাজের ক্ষতি করছে।
মনে রাখতে হবে, সমাজের বা একটা স্কুলের সবাই হিন্দি বা ইংরেজি সংস্কৃতি নেবে না। সবার রুচি শত চেষ্টা করেও অভিন্ন করা যাবে না।
এদের মধ্যে যারা ইসলামী অনুশাসন মেনে চলতে চাইবে, তাদের সেই সুযোগ করে দিতে হবে।
সর্বোপরি, আমার দেশে এভাবে আত্মঘাতি জঙ্গি তৈরি হবে ; তা আমাদের ভাবনার মধ্যেও ছিল না। এমন অবস্থার জন্য দায়ী নিশ্চয়ই এ সরকার। এটা বাকশালি আচরণের কুফল। এটা শাসনতান্ত্রিক সমস্যা। আমাদের প্রত্যাশা, আ'লীগ তার শাসনপদ্ধতি পুনর্বিবেচনা করবে। গণতান্ত্রিক হবে। সবাইকে গণতন্ত্র ও তাদের মতামত চর্চার সুযোগ দেবে। ইসলামকে সঠিকভাবে জানার পথ রুদ্ধ করবে না। কেউ ইসলামি সংস্কৃতি চর্চা করতে চাইলে অবাধে করতে দেবে।
বিএনপি'র চেয়ারপারসন জাতীয় ঐক্যের কথা বলেছেন। সরকার এ আহ্বানে সাড়া দেবে আশা করি । একদিন বাদে ঈদ। এই ঈদ উপলক্ষেই সব দলকে নিয়ে সরকার এক টেবিলে বসে সেমাই - ফিরনি খেয়ে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে। ওইদিনই জাতীয় সংলাপের একটি তারিখ ঘোষণা করবে।
সরকারকে মনে রাখতে হবে যে, এটা প্রতিটা দেশপ্রেমিক নাগরিকের একান্ত চাওয়া।
সরকার জনগণের মনের ভাষা বুঝতে না চাইলে বড় ধরনের মাসুল দিতে হবে। আর তাতে আ'লীগের চেয়ে হয়তো এ দেশের সাধারণ মানুষকেই বেশি ভুগতে হবে।
আ'লীগ দল হিসেবে এই দেশ এবং দেশের মানুষকে কতটা ভালবাসে, সেই পরীক্ষা দেবার সময় এখন। দয়া করে গায়ে-গতরে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষদের আর কষ্ট দিবেন না।
বিষয়: বিবিধ
১২৬৪ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনাকে ধন্যবাদ যে আপনি দশ ও দেশের জন্য ভেবেছেন এবং লিখনীর মাধ্যমে অন্যদের ও ভাবনা জাগাতে চেষ্টা করেছেন। ইসলাম বিদ্বেষী স্যেকুলার ও ইসলামের শত্রুরা ও তাই চেয়েছে এবং চাইছে। আপনি আমি আমরা যত বেশী দেশপ্রেমিক হব, দশ ও দেশের জন্য জান কোরবান করবো - যত বেশী স্যেকুলার জ্ঞানের আলোকে আশে পাশের ঘটনা বিচার বিশ্লেষন করতে অভ্যস্থ হব, যত বেশী সিএনএন, আলজাজিরা, বিবিসি, চ্যানেল আই ও প্রথম আলো টাইপের এ্যানালাইসিস এ অভ্যস্থ হব, বাঁতচিত করবো - ততই যারা বাংলাদেশকে আলটিমেইট কেওয়াস তথা সিরিয়া, লিবিয়া কিংবা মিশর, তার্কির মত (আগামীতে আরো যোগ হবে ইনশাল্লাহ) কেওয়াস টাইপ কিছু বানাতে চাইছে তারা সাফল্যের মুখ দেখবে। (যদিও পৃথিবীর কোন শক্তি নেই তাদেরকে থামাবার যারা বাংলাদেশকে আর একটি কেওয়াস এর ক্ষেত্র বানাতে চাইছে)।
কিন্তু আপনি যদি আপনার ধর্মকে ভালবাসেন, আপনার প্রভুকে ভয় পান, আপনার ও আপনার ভাইবোনদের শুভ কামনা করেন তবে উদ্ভুত বিষয়াবলীকে কোরান ও হাদীস দিয়ে এ্যানালাইসিস করার চেষ্টা করুন, এ নিয়ে কোরান ও হাদীসের রেফারেন্স বের করুন। যদি কোরান ও হাদীসে ঐ নিয়ে কোন কিছু না পান তবে তার উল্লেখ করুন এবং তারপর প্রয়োজনে,
'মার্কসের ডায়ালেকটিক্যাল মেথডে'র দুইপক্ষের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি অবতারনা করুন। এবং আপনার যুক্তি তুলে ধরে বলুন কেন স্রষ্টার এক পক্ষের, এক স্বত্তার লিডারশীপ এর পরিবর্তে দুইপক্ষের তথা ইয়াজুজ ও মাজুজ টাইপ অমন দুই পক্ষিয় ব্যবস্থাটি উত্তম এবং দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য স্বার্থক।
প্রমান করে দেখান, 'সমাজ ও রাজনীতির উন্নতি, সমৃদ্ধি, অগ্রগতি যে এই মেথডে হয় - তা কিভাবে হিস্টিরিক্যালী ও ফ্যাক্টচুয়ালী সঠিক - কোন তথ্য ও উপাত্ত তা প্রমান করে।
দেখুন আখেরাতের সাফল্য আগে বিবেচনা করুন আর তার জন্য দুনিয়াকে কাজে লাগান ঠিক যেভাবে তা আসবে বলে ডিভাইন সোর্স সমূহে বলা আছে - যেখানে আপনাকে ও আমাকে অনন্তকাল থাকতে হবে। দশ ও দেশের সাফল্য ও ভাল ভাবনায় মানুষ্য সৃষ্ট কোন মতবাদ এমন ভাবে সামনে আনবেন না - যা আপনাকে আমাকে এবং আমাদেরকে প্রতারনায় প্রতারিত করে।
মনে রাখবেন ইব্রাহীম আঃ মারা যাবার লিটারালী ৪০০০/৫০০০ বছরের মধ্যে আরবের কাবা ঘরের কাস্টডিয়ান প্রতিটা মানুষ মূর্তিপূজায় অভ্যস্থ হয়েছিল নিজের বিবেকবিবেচনাকে সামনে এনে। বনী ইসরাইলী রা মুসা আঃ এর ৪০দিনের ট্রিপ কালীন সময়ে গরু পূজা শুরু করেছিল, ঈসা আঃ এর অন্তর্ধানের শত বছর আগেই তার অনুসারী মানুষরা তাকে স্রষ্টা সাব্যস্ত করতে শুরু করেছে এবং এ সবই হয়েছে শুধু মাত্র সমাজের কিছু মার্কস, এ্যারিস্টোটল, প্ল্যাটো ইত্যাদির তাড়নায়।
সো চলুন আমাদের ভাবনার প্যারামিটার সমূহকে নতুন করে বিশ্লেষন করি এবং বুঝার চেষ্টা করি,
১। কে আমাদেরকে কোরান ও হাদীসের আগে স্যেকুলার পড়ালিখায় অভ্যস্ত হতে বাধ্য করছে।
২। কে আমাদেরকে আরবী শিখতে অনুসাহিত করছে কিন্তু ইংরেজী শিখতে উৎসাহিত করছে এবং বাহাবা দিচ্ছে।
৩। কে আমাদেরকে ক্লিন শেভ হতে, হিজাব হীন হতে, মডেল হতে, ম্যাকডোনাল্ডস খেতে, জিন্স পরতে পুশ করছে।
৪। কে আমাদেরকে ইসলামের নামে কিংবা ইসলামকে এড়িয়ে সুদ, মদ, জুয়া, বেশ্যবৃত্তি ইত্যাদিকে এক্সেপ্ট করতে বাধ্য করছে।
৫। কে আমাদেরকে আল্লাহর পরিবর্তে মানুষের আইন তথা শির্ক করতে বাধ্য করছে।
৬। কে আপনার শ্রম ও মেধাকে নিঃড়ে চুষে নিচ্ছে এবং আপনাকে ও আপনার ভাইদেরকে এ্যানস্লেইভ বানিয়ে ফেলছে - সো আপনি,আমি আমরা সবাই গাধার মত সকাল হতে রাত অবধি খাটছি এবং সন্মিলিতভাবে সে শ্রমের মেজর বেনিফিট ড্রোন বানানে ওয়ালাদের কাছে তুলে দিচ্ছি যাতে তারা ড্রোন এ্যাটাক করার ক্ষেত্র তৈরী করতে পারে এবং তারপর সেই ড্রোন এ্যাটাক করে আপনার আমার আমাদের মত স্যেকুলার ঈমানদারদের ঈমানকে ছিনিয়ে নিতে পারে।
স্যরি আপনার আহ্বানে সাড়া দিতে গিয়ে আপনার লিখার মত লম্বা লিখা হয়ে গেল।
এ্যানী ওয়ে ধন্যবাদ। এবং ঈদ মোবারক।
মন্তব্য করতে লগইন করুন