রেমিটেন্স হরতাল !!!
লিখেছেন লিখেছেন ডব্লিওজামান ০১ নভেম্বর, ২০১৪, ০৫:৫৮:৪৬ বিকাল
রেমিটেন্স হরতাল !!!
হাঁটি হাঁটি পা, শৈশব পেড়িয়ে আজ পূর্ণ যৌবনে বাংলাদেশ । বয়স ৪৫ । ৪৭’র পরই পৌরত্বের ভাঁড়ে নুজ্য হবে এ দেশ, যা চিরাচরিত আইনেই বর্তায় । সেই ১৯৭১ থেকে শুরু করে অদ্যাবধি ।
মানবিক রায় বিবেচনায় পূর্ণত্ব প্রাপ্তির পর বার্ধক্যের দিকে নুজ্য প্রায় । স্বাধীনতার পূর্বকালে আমাদের দেশের জনসাধারণ বহির্মুখী হওয়া ছিল ভাবনাতীত এবং অপ্রয়োজনীয় । গোয়াল ভরা গরু, গোলা ভরা ধান, পুকুর ভরা মাছ ছিল আমাদের গৃহস্তের গৌরব । সেই গৃহস্তের সন্তান কিবা প্রয়োজন হবে পরবাসী হবার ?! মৌলিক প্রয়োজনের তাগিদ তাকে পীড়িত করত না । কালের আবর্তে স্বাধীনতা অর্জনের পর মুখ বাড়ার পাশাপাশি ক্ষুধা, দৈন্য, দারিদ্র এবং প্রাকৃতিক বিষয় সমূহ যেন পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পেতে থাকলো । পরিস্থিতির মোকাবেলায় মৌলিক অধিকার পূরণের নেশায় হন্য হয়ে দেশীয় শিক্ষিত মানুষেরা বহির্মুখী হওয়ার স্বপ্ন দেখল । কালক্রমে আজ আর শুধুমাত্র শিক্ষিত সম্প্রদায়ই বহির্মুখী হচ্ছে না বরং অশিক্ষিত,অর্ধশিক্ষিত এবং নামমাত্র শিক্ষিত সংখ্যাই সিংহভাগ । সে ক্ষেত্রে হরষের বিষয় একটি, তাহলো বেকারত্বের দায়ভার সরকারী খাতা পত্রে নিন্মগামী । অপভ্রংশে দেশীয় অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে এ সব খেটে খাওয়া প্রবাসীর ঘর্মার্জিত অর্থ রেমিটেন্সের সোনার হরিণ নামে যত্রতত্র বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছে । মূল্যস্ফীতিকে অতিমাত্রায় শাণিত করছে বিলাস বাসন এবং খাদ্য অপচয়ের মাত্রা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে । এ কথা আজ সর্বজন স্বীকৃত । রাস্তার এবং শহর উপশহরের অলিতে গলিতে গড়ে উঠেছে মানুষের রূপ চর্চা সহকারে অপেক্ষাকৃত কম প্রয়োজনীয় বিলাসী সব প্রতিষ্ঠান সমূহ । যে সবের প্রয়োজনীয়তা গৃহস্তের সময় ছিল ভাবনাতীত । অপর দিকে রাষ্ট্রীয় যন্ত্রের হাতে ( প্রশাসন, র্যাব, পুলিশ.............) ও সন্ত্রাসীদের জমজমাট ব্যবসা মুক্তিপণ ; অনাদায়ে বা দিতে ব্যর্থ হলে হত্যা, খুন, পঙ্গুত্ব ................. ! সেই সঙ্গে তাদের পাঠানো সোনার হরিণ রেমিটেন্স আধিক্য ঘটাচ্ছে ভূসম্পত্তির মূল্যমান । দ্বিগুণ থেকে চতুর্গুণ । প্রতিবেশী এমনকি রক্ত সম্পর্কীয় নিকটাত্বীয়দের সঙ্গে মামলা ব্যয় পূরণে । ( মুরগীর ঠ্যাং ভেঙ্গে গেছে , দে মামলা দিয়ে ) !!!
যা কিনা নিতান্তই অপ্রজনীয়ই শুধু নয়, কাজীর কিতাবে মামলার দীর্ঘসূত্রিতা সহকারে মামলা জট তৈরি করছে ; বিচার বিভাগকে অথৈ সাগরে খাওয়াচ্ছে হাবুডুবু। যদি রেমিটেন্সের প্রয়োগ নয়, অপপ্রয়োগের ফিরিস্তি তুলে ধরি তাহলে পাঠকবর্গ আমাকে অর্বাচীনই বিবেচনায় আনবেন । আমি সেই অপবাদের গ্লানি স্বেচ্ছায় কেন কাঁধে তুলে নেব ? আজ দেশীয় আয়ের সিংহ ভাগ তথা দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রবাসীদের ঘর্মার্জিত কানাকড়ি । নাম সর্বস্ব দেশীয় পরিচালকবর্গ নিষ্ঠাবান দায়িত্ব পালনের আভিধানিক ব্যাখ্যায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাড়ীই নয় ; যত্রতত্র গাড়ীবহর ও দৃশ্যমান । ঘাম ঝরা পোশাক শ্রমিকরা মুখ থুবড়ে পড়ছে, রক্ত পানি করা ন্যায্য দাবি আদায় করতে লাশ হয়ে ফিরছে । যদি বা কোন সুসন্তান বিরোধীতার নামে অধিকার আদায়ের কথা বলে পরিণত হচ্ছে আমিনুল হকে ; (গার্মেন্টস নেতা) যাদের প্রতিকৃত । এই তালিকা এক্ষেত্রে নব্য সংযোজন কালক্ষেপণ আমার উদ্দেশ্যে নয় বিধায় পরিত্যাজ্য ।
হে রেমিটেন্স প্রেরণকারী ভাই-বোন, বন্ধু-স্বজনেরা ----- আমার, আপনাদের অদম্য উৎসাহ কর্ম তৎপরতাকে আমি বিনম্র শ্রদ্ধা করি । আমি অভাজন, আপনাদেরইএকজন । দেশীয় বিদ্যা পীঠের সর্বোচ্চ ডিগ্রী অর্জনের পর নামি শ্রমিকের কাতারে । যখন যেখানে যতটুকু পেরেছি মজদুরি করে পাঠিয়ে আসছি দেশে । আমিও আজ ৩০ ঊর্ধ্ব যুবকই বলবো । নিজ জীবনের কথা ভাবা হয়ে উঠেনি । প্রসঙ্গত বলবো আমি এমন আরো অনেক ভাইকে চিনি - জানি দেশীয় বিদ্যা পীঠের সর্বোচ্চ ডিগ্রী নিয়ে মজদুরি করছে প্রতিনিয়ত । নিজ মজদুরিতে আমার দুঃখ হয়না । কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া জ্যৈষ্ঠ যে সব ভাইদেরকে আমি চিনতাম - জানতাম, তাদের মজদুরিতে আমাকে ব্যথিত করে। পীড়িত করে । দেশে যারা আছেন , জানিনা রেমিটেন্সের সোনার হরিণ যারা গোলায় তুলেন, তাদের কখনো কষ্ট -দু:খ এবং জীবনের অপ্রাপ্তি মূল্যায়নে আনেন কিনা ? মানুষকে ঠকানোর একটা মাত্রা থাকে । রাজনৈতিক ও ধূর্তরা সব সময় আমাদের মত আমজনতাকে ঠকিয়ে থাকেন । এমন ঠকবাজদের হটকারিতার পরিণতি যারা বিবেচনায় নেন না তাদের বুদ্ধি বৃত্তিক প্রবৃত্তি নৈতিকতার নামাবলীতে আচ্ছাদিত ঘোল , মোহবিস্ট । তাই আমাদের রেমিটেন্স প্রেরণ করে দেশীয় চালিকা শক্তিকে সচল রাখার মূল প্রাণকে করছেন প্রতিনিয়ত অপদস্থ । বিদেশী দূতাবাসগুলোতে আছেন যারা বসে উপবিষ্ট নামমাত্র প্রয়োজনে রেমিটেন্স দাতারা অফিসিয়াল কোন প্রয়োজনে গেলে ভৃত্যসুলভ আচরণে হন মোহমুক্ত । বেঁচে থাকার আশা হারায় । অর্ধ শিক্ষিতরা ভাবে আসলে ভৃত্য কারা ? আমরা না চেয়ারে উপবিষ্ট ব্যক্তিরা ? আর মূর্খ তো ভেবেই নেয়, আমরা দাসানুদাস । কিন্তু চেয়ারে উপবিষ্ট ব্যক্তিটি নিশ্চয় জানে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব যে শপথ বাক্য পাঠের মাধ্যমে তিনি এ ভৃত্যগুলোর দায়িত্ব পালনে আজ্ঞাবহ দাসে মনোনীত হয়েছেন, তা তিনি ভুলে যান । অবলীলাক্রমে যা তাকে স্মরণ করিয়ে দেয়ার দায়িত্ব আমাদের মত খাকছারের নয় , স্বয়ং রাষ্ট্র পরিচালকদের । বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন তারা স্ব-স্ব অবস্থান থেকে শপথের কতটুকু বাস্তবায়ন করছেন বা করতে পারছেন ?
আমি অর্থনীতিবিদ কিংবা রাজনৈতিক বিশ্লেষক নই কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় বৈতরণী পারের কারণে যৎসামান্য হাল পরিস্থিতি বুঝি মাত্র । আমি পথিকৃৎ নই। নতুন পথের উদ্ভাবক কিংবা স্রষ্টাও দাবি করিনা নিজেকে । ইদানিং কেবলই ভাবনা জগতে আন্দোলিত হচ্ছে, আচ্ছা একসঙ্গে (আমরা) যারা রেমিটেন্স পাঠায় , যদি সবাই রেমিটেন্স হরতাল করে ! যদি সারা বিশ্বে ছড়ানো ছিটানো প্রায় ১ কোটি লোক, তারা যদি দেশের স্বার্থে , মাতৃকার কল্যাণে ঐক্যমতে পৌঁছানোর নিমিত্তে রেমিটেন্স প্রবাহে ভাটা সৃষ্টি করি । যা কিনা বর্তমানে জাজ্বল্যমান দেশের অর্থনীতিতে । এই ভাটা প্রবাহে স্রোতের বিপরীতে আরো বাঁধ গড়ে তুলে ; পরিণাম কি ভয়াবহ হবে না ? ক্ষতি হবে কাদের ? আমার, আপনার, আপনাদের, সর্বোপরি দেশের। আমরা, প্রবাসীরা এমনটি করবো বলছি নে , কিন্তু ভাবনা জগতে যেহেতু এ অধমের এমন চিন্তার উদ্বেগ হয়েছে । তাই অনতিবিলম্বে প্রথিতযশা ব্যক্তিবর্গের মস্তিষ্কে বা লিখনী থেকে এ আহবান আসবে না তার নিশ্চয়তা আমরা দেই কি করে।
ভবিতব্য, ভবিতব্যই । যা নির্দিষ্ট কোন গাণিতিক মতবাদ অনুসরণ করে না । তাই গাণিতিকনীতি রাজনীতির ক্ষেত্রে বড় বেশী হাইপথিটিক্যাল । আমার এ ভাবনা যদি পাঠকবর্গের কিংবা রেমিটেন্স প্রেরণকারীদের ভাবনা জগত দখল করে নেয়, তাহলে দেশের পরিচালকদের অনধিক শত ব্যক্তি কোন অবস্থাতেই সেই চলমান জাহাজের গতিরোধ করতে সক্ষম হবেন, তা বিশ্বাস করবে কেবলমাত্র বোকার স্বর্গের বাসিন্দাবৃন্দ । এখনো ভাবনার চতুষ্কোণে উম্মুক্ত সময় এসেছে, কালক্ষেপণ ব্যতিরেকে কেবলমাত্র রেমিটেন্সের প্রায়োগিক দিক বিশ্লেষণ এবং বিনিয়োগের । যদি অর্থনীতির প্রথিতযশা ব্যক্তি এবং স্বনামধন্য রাজনীতি আদর্শের যুগপৎ আন্দোলনই আমাদের এই ৪৫ বছরের পৌরত্বকে ঠেলে আনতে পারবে ১৯/২০ বছরের টগবগে যুবকে । আমরা দেখে যেতে পারবো কিনা জানিনা, কিন্তু অনাগত উত্তরসূরীদের জন্য এমন ভাবনা রেখে যাওয়া সময়ের দাবি ।
আরেকটু বলি,
দেশের পদ পদবী অনুযায়ী বিদেশে কাজ পাওয়া লোকের হার নিতান্তই সামান্য । বলতে গেলে শূন্যের কোঠায় । এ ক্ষেত্রে ভাষা সবচেয়ে বড় বাঁধা । প্রায় ৬ বছরের বিদেশ ( ইউরোপ ) জীবনে আমার মনে হয় , দেশের বাইরে আমাদের বৈধভাবে কাজ করাটাই মর্যাদার বিষয় । কাজের ক্ষেত্রে ডিগ্রী বংশ বা ঐতিহ্যের মর্যাদা গৌণ । বিশেষকরে ইউরোপে । এখানে কাজই ধর্ম । কর্মচারীর সম্মানে বাঁধে এমন কাজ যা সে করতে চায়না, মালিক নিজে সে কাজ করে, এ উদাহরণের ভুঁড়িভুঁড়ি জ্বলন্ত সাক্ষী আমি নিজে । এখানে বাংলাদেশী কমিউনিটির মধ্যে দেখেছি মালিক মূর্খ আর কর্মচারী দেশীয় শিক্ষায় সর্বোচ্চ শিক্ষিত ।
বিদেশে টাকা আয় করা দেশের মত অত্ত সহজ নয় । এখানে মাথার ঘাম পায়ে না পড়লে মজুরি মেলা দায় । এটাও আবার অনেকে করে উঠতে পারে না । বৈধতার জন্য । আর তাদের দেয়া এই রেমিটেন্স ব্যয় হয় মুক্তিপণ আদায়ে, গার্মেন্টস, পাট , শিল্প কারখানা, ………. … . ও দেশীয় উৎপাদন ব্যবস্থা ধ্বংস করতে । প্রবাসীদের ঘর্মার্জিত টাকা দেশে গেলেই কাগজে পরিণত হয় !!
সুমন দাস এক উচ্ছল,উজ্জ্বল তরুণের নাম ছিল। ছিল বলছি, কারণ সে এখন আর নেই।একবুক আশা আর স্বপ্ন নিয়ে সুমন পাড়ি দিয়েছিল ইউরোপে। দেশের সেরা বিদ্যাপীঠ থেকে ডিগ্রী নিয়েও অভিমানে চলে যেতে হয় না-ফেরার দেশে... অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে যাচ্ছিলও সেদিকে।কিন্তু বড্ড অভিমানী ছেলেটি! চাকুরি আর বৈধতার সার্টিফিকেট না পেয়ে যে হতাশা থাকে ঘিরে ধরেছিল তা থেকে যেন বেরোতেই পারলনা।অকালেই নিভিয়ে দিল নিজের জীবন প্রদীপকে নিজেই।চলে গেল না ফেরার দেশে।রেখে গেল অনেক স্মৃতি আর ভালবাসা।প্রখর মেধাবী ছিল সে- তার বন্ধুমহল থেকে এমন তথ্যই জানা যায় ।যাই হউক।সুমন এখন লাশ !
গত ঈদের দিন ২৮ জুলাই ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বহুতল ভবন থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেন সুমন দাস (৩৫) । ২০০৫ সালে ইউরোপে পাড়ি জমিয়েছিলেন। তিনি মাদারীপুর শহরের জনতা ক্লাব এলাকার মৃত গৌরাঙ্গ দাসের ছেলে।
হতাশার কারণে তার এ আত্মহত্যা বলে জানা গেছে।
প্যারিসের ক্যাথসিমায় অবস্থান করে আসা নিহতের রুমমেট উত্তম কুমার জানান, ইউরোপে বৈধ হতে না পারা এবং চাকরি না পাওয়ার হতাশা থেকে এর আগেও দুই বার সে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছিল।
সুমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেয়ার পর ইউরোপ এসেছিলেন। প্রথমে আইসল্যান্ড এরপর প্যারিস।
স্বাধীনতার ৪৩ বছরের ভেতরেও আমাদের সুজলা-সুফলা বাংলার অপরূপ রূপে আমরা বাংলা মায়ের সন্তানেরা ইচ্ছেমত অবগাহন করতে পারি না। আমাদের অধিকার কেড়ে নিয়ে চোর-ডাকাতেরা তাদের সন্তানদেরকে বিদেশের মাটিতে রেখে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে, বিলাসিতার মধ্যে রেখে পড়া-লেখা করায় । দেশে কর্মসংস্থান না করে বিদেশের বিভিন্ন ব্যাংকে টাকা পাচারের পাশবিক খেলায় মেতে উঠে প্রতিনিয়ত । আর তারই ফলশ্রুতিতে আমার বন্ধু সুমনের মত নিরীহ ছেলেদেরকে জীবন দিতে হয় বলে জানান তার আরেক বন্ধু জহির ।
গত ৯ অক্টোবর দুর্ভাগ্যের এ কাতারে যুক্ত হন ন্যাদারল্যান্ডে বাস করে আসা ঢাকা,নবাবগঞ্জ, সংকরখালীর রাসেল মৃধা ।
মনটা বড়ই বিষণ্ণতায় ভরে গেলো--- কেন এমন হলো ???
দেশের মানুষের কাছে আমার প্রশ্ন আমরা বিদেশ থেকে টাকা পাঠিয়ে দেশের বৈদেশিক মূদ্রার রিজার্ভ বাড়াবো । আর আপনারা সেই টাকা দিয়ে দেশে শিল্প-কারখানা না করে যা আছে তাও বন্ধ করে দিয়ে সারাজীবন আমাদেরকে দেশের বাইরে থাকার গ্যারান্টি, গ্যারান্টেড করে বিদেশে টাকা পাচার করবেন!!! আর রাসেল মৃধা, সুমনের মত ছেলেরা হতাশায় জীবন দিবে, তাই না !!! ??? আপনাদেরতো কোন চিন্তা নেই । আপনাদের সন্তানদেরতো আর বিদেশের মাটিতে কাজ করতে হয় না টাকার জন্য । দেশের উন্নতি না করে সেই টাকার বারোটা বাঁজিয়ে আমাদের ভাগ্যকে শিঁকেয় তুলে আপনারা নগ্ন-নৃত্য করবেন!!! বাহ! বাহ!! বাহ!!! ভালো--- খুব ভালো--- তবে আমিও বলে রাখি--- শেষ বিচারের দিনে কিন্তু আপনাদের বিরুদ্ধে প্রভুর কাছে নালিশ জানাবো---
আমাদের দেশের যেই পরিমাণ টাকা চুরি করা হয়েছে, সেটা না হলে আমাদের দেশেও অনেক বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠতো । কলকারখানা গড়ে উঠতো , ব্যবসা-বাণিজ্যের অপার সম্ভাবনা-সুযোগ তৈরি হত । বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আসনের অভাবে মানুষ তার পছন্দের বিষয়ে পড়তে পারবে না ; এমনটা হতো না । আর কত জ্বালাবেন আমাদেরকে ??? এবার একটু ক্ষান্তি দেন আল্লাহ'র ওয়াস্তে!!! আল্লাহ'র দোহাই লাগে--- এবার একটু ক্ষান্তি দেন দয়া করে ---
পলিসি মেকারদের পায়ে ধরি--- দয়া করে দেখেন, আর কোন হতাশ রাসেল মৃধা, সুমনের নাম যেন আমাদের জাতীয় জীবনে যোগ না হয় ।
সব শেষে বলবো দেশকে নিয়ে প্রবাসীদের মতো যদি দেশের প্রতিটি নাগরিক দেশকে নিয়ে ভাবতো তাহলে বাংলাদেশ এতদিনে উন্নত বিশ্বের জন্য মডেল হিসেবে আবির্ভূত হতো। কিন্তু দুঃখের বিষয় প্রবাসীদের মতো করে দেশ কেন্দ্রিক বা দেশ প্রেমিকের চিন্তা নিয়ে কেউ বাংলাদেশকে ভাবে না/ কাজ করে না ।
কুয়োর তলায় চাপা পড়ে যায় আর্তনাদ.!!
কোটি টাকার গাড়িতে যারা চড়ে,
ছেলের জন্য বউয়ের জন্য
আলাদা আলাদা গাড়ি,
তাদের জন্যও অনেকটা যানজট
তারাই আবার জ্যামে পড়ে তাকায় কটমট !
ঢাকায় তিন-তিনটা প্রশস্ত বাড়ি
এক বাড়িতে বছরে অন্তত দু’বার সিঁড়ি ভেঙে নিত্য-নতুন ডিজাইনে সিঁড়ি বানিয়ে পা রাখে ,কাহারো কাহারো বাথরুমের টাইলসও ছ’মাসে বদলাতে হয়,
চিকিৎসা-সেবা নিতে ব্যাংকক-সিঙ্গাপুর যেতে হয়, ছুটি কাটানোর জন্য খুঁজে নেয় স্বপ্নপুর !
তারা এত পয়সা কোথায় পায় ?
এই উদ্বৃত্ত টাকা যাদের ঘামে আসে
তারাও তা জানে
ধিকি ধিকি বেঁচে থাকা প্রাণে,
পাঁচমাইল-ছ’মাইল হেঁটে কারখানায় ছোটে
পয়সা নেই উঠতে হবে পাবলিক বাসে !
যে মেয়েটি উঠতি বয়সি স্বপ্ন দেখার তাপে
নিজেকে ভরিয়ে তুলতে চাইছে
সে-ও বন্দি হয়েছে শ্রমের খাপে !
কখনো কখনো অসুখ ও অনাহারে
খুপড়িতে অসহায় হয়ে কাঁপে !
আবার যখন চিত্তদাহ নিয়ে তারা রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে
দেনা-পাওনার হিসেবটা মাপে
শেষের নিঃশ্বাস বাঁচাতে হাঁসফাঁস অবস্থা থেকে খানিকটা নড়ে
তখন ষড়যন্ত্রের কটুগন্ধ কারো কারো নাকে এসে লাগে !
মনে হয় শৃগালেরা তখন এক-রা করে জাগে
পোশাকের স্তূপ থেকে ধূপ জ্বালিয়ে জ্বালিয়ে
শিল্প তৈরি হয় !
বৈদেশিক মুদ্রার চকচকে এপিঠ-ওপিঠ দেখে
বাহবা দেয় সরকারের কর্তাব্যক্তি ও অর্থনীতিকেরা
আহলাদী ভাষায় এইসব দেশী প্রবাসী শ্রমজীবীদের ‘সোনার টুকরো’ বলা হয়,
কিন্তু তারা কি জানেনা
কার কতটুকু হাড়ের ক্ষয় ?
কার অশ্রুপাত ?
কার কষ্টরাত ?
কার জন্য তৈরি হয় মৃত্যুফাঁদ ?
কুয়ার তলায় চলে যায় কার আর্তনাদ ?
বিষয়: বিবিধ
১৫৭৫ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
This is my own, my native land
...............
মন্তব্য করতে লগইন করুন