সবাই রাজাকার ; তাইলে যুদ্ধটা করলো ক্যাডা ?
লিখেছেন লিখেছেন ডব্লিওজামান ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৩:৪৬:১১ দুপুর
...................................
**জিয়াউর রহমান পাকিস্তানি রাজাকার । আইএসআই এর এজেন্ট ছিলো।
**মুক্তিযুদ্ধের উপ-সেনাপ্রধান এ কে খন্দকার পাকিস্তানি রাজাকার । আইএসআই এর বতর্মান এজেন্ট।
**মেজর তাহের, জলিল যখন মুজিব সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য গণবাহিনী বানাইছিলো তখন তারা ছিলো চীন-পাকিস্তানের দালাল।
**তাহের,জলিল, ............. ............. ......... জিয়া ছিলেন সেক্টর কমান্ডার ।এ কে খন্দকার ছিলেন সামরিক পদবীর দিক থেকে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
** ৯ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার মেজর এম এ জলিল , ৫ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মীর শওকত আলী, স্বাধীনতার ঘোষক ১ নম্বর সেক্টর ও পরবর্তিতে ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও রংপুর অঞ্চল নিয়ে গঠিত ১১ নম্বর সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের প্রধান মেজর জিয়াউর রহমান, ৩ নম্বর সেক্টর কমান্ডার ও এস ফোর্সের প্রধান মেজর কে এম শফিউল্লাহ , বেসামরিক মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে একমাত্র বীরোত্তম বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী, মুক্তিযুদ্ধের উপ প্রধান সেনাপতি গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকার কর্ণেল অলি আহমেদ বীর বিক্রম,সাদেক হোসেন খোকা বীর প্রতীক,মেজর হাফিজ বীর প্রতীক ............. ............. ......... তারা সবাই রাজাকার ।
**তাজউদ্দীন আহমেদের মেয়ে "মুসলিম ব্রাদারহুড'র এজেন্ট। মেয়ে "মুসলিম ব্রাদারহুড" হইলে বাপেও নিশ্চয়ই আইএসআই ছিলো।
**এমএজি ওসমানীও বাকশাল গঠন করার পর পদত্যাগ করছিলেন । ভাসানী ছিলেন শেখ মুজিবের কট্টর সমালোচক ।
** মুক্তিযুদ্ধকে পুঁজি করে যারা নিজ স্বার্থ হাসিলে পারদর্শী তাদের, তাদের পরিবারের তখনকার ভূমিকা ………………. ……….. …… ??? !!!!
** স্বাধীনতার পর দেশে প্রথম ক্রসফায়ারের শিকার হন মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ শিকদার । এ কাজটি সফল করে সংসদে তখনকার জাতির পিতা ডায়লগ দিয়েছিলেন "কোথায় সিরাজ শিকদার ?"
অতএব তারাও রাজাকার।
সবাই রাজাকার । তাইলে যুদ্ধটা করলো ক্যাডা?
তিনি তো ( মুক্তিযুদ্ধের উপ-সেনাপ্রধান এ কে খন্দকার ) শেখ হাসিনার মন্ত্রী ছিলেন। ১৬ই ডিসেম্বর পাক বাহিনীর আত্মসমর্পনের সময় উপস্থিত ছিলেন। শেখ মুজিবের সময়ে 'বীরউত্তম' খেতাব পান।
এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আবদুল করিম খন্দকার যিনি এ.কে. খন্দকার নামে পরিচিত। কি এমন লিখলেন তিনি যাতে এতো আলোচনা-সমালোচনা। বই তো প্রকাশ করলো প্রথম আলোর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। এ.কে. খন্দকার কি ইতিহাসের দায় থেকে লিখেছেন ; নাকি 'রাজাকার' হয়ে গেছেন! প্রথম আলোও 'রাজাকার' হয়ে গেলো ; নাকি দায়িত্ব পালন করলো!
কিছুই বুঝবার পারিনা। আসল কথা, স্বাধীনতার অনেক পরে জন্মছি এই বঙ্গদেশে। মুক্তিযুদ্ধ তো দেখিনি। শুনেছি। ইতিহাসে পড়েছি।
বিষয়: বিবিধ
১৫০০ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আর, যুদ্ধে যারা মরে গেছে তারা হল দুর্ভাগ্যবান!
আর, যুদ্ধ না করে যারা বেঁচে গেছে তার হয়েছে ভাগ্যবান!
যুদ্ধে যারা মরেছে তাদের সন্তানদের জন্য কোন পুরষ্কার নাই।
যুদ্ধ না কইরা যারা বেঁচে আছে, তাদের নাতীরা পর্যন্ত মর্যাদাবান।
সাতই মার্চে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের শেষ শব্দ ছিল ‘জয় পাকিস্তান’ : এ.কে খন্দকার
সদ্য প্রকাশিত ‘১৯৭১: ভেতরে বাইরে’ বইটিতে মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশ বাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে খন্দকার বীর উত্তম দাবি করেছেন ঐতিহাসিক সাতই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণের
শেষ শব্দ ছিল ‘জয় পাকিস্তান’।
সাতই মার্চের ভাষণের শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘জয় পাকিস্তান’ বলেছিলেন কি না তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলে আসছিল। আওয়ামী লীগের নেতারা সবসময় বলেন বঙ্গবন্ধু এ কথা বলেননি। এ
কে খন্দকারের গ্রন্থ এই বিতর্ককে যে আরো উসকে দিল তা বলাই বাহুল। ইতোমধ্যে তা টেরও পাওয়া যাচ্ছে। এই
নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় সংসদে উত্তপ্ত আলোচনা হয়। সরকার ও বিরোধীদলের সংসদ সদস্য এ কে খন্দকারের এই গ্রন্থ বাতিল ও লেখকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগের দাবি জানিয়েছেন।
বইটির ৩১ ও ৩২ পৃষ্ঠায় এ কে খন্দকার লিখেছেন:
সাতই মার্চের ভাষণের দিন ক্যান্টনমেন্টের ভেতরের পরিস্থিতি বেশ স্বাভাবিক ছিল, সবাই ব্যস্ত ছিল নিজ নিজ কাজে। এদিন বঙ্গবন্ধু যে ভাষণটি দিলেন, তা খুবই তির্যক ছিল। ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে বাঙালিরা ভাবতে আরম্ভ করল, সত্যিই কি যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল, আমরা কি যুদ্ধে নামব, নাকি গ্রামে চলে যাব।
সাতই মার্চের ভাষণটি আমি শুনেছি। এর মধ্যে যে কথাগুলো আমার ভালো লেগেছিল, তা হলো : ‘দুর্গ গড়ে তোলো’, ‘তোমাদের যার যা কিছু আছে, তা-ই নিয়ে প্রস্তুত থাকো’, ‘শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে’, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ এ সময় সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ তার কাছ থেকে এ ধরনের কথা আশা করছিল। ওই কথাগুলো শক্তিশালী ছিল বটে, তবে তা বাস্তবে রূপ দেওয়ার পরিকল্পনা আওয়ামী লীগের নেতাদের ছিল না। বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি তাৎপর্যপূর্ণ ছিল, কিন্তু আমার মনে হয়েছে, কীভাবে স্বাধীনতা অর্জন করতে হবে, তা তিনি পরিষ্কার করেননি। তা ছাড়া জনগণকে যুদ্ধ করার জন্য যেভাবে প্রস্তুত করা প্রয়োজন, তা করা হয়নি।
ভাষণে চূড়ান্ত কোনো দিকনির্দেশনা পাওয়া গেল না।
ভাষণটির পর মানুষজন ভাবতে শুরু করল- এরপর
কী হবে? আওয়ামী লীগের পূর্বপ্রস্তুতি না থাকায় যুদ্ধ শুরু করার কথা বলাও একেবারে বোকামি হতো। সম্ভবত এ
কারণেই বঙ্গবন্ধু সাতই মার্চ সরাসরি স্বাধীনতা ঘোষণা থেকে বিরত থাকেন। তা ছাড়া ইয়াহিয়া খান নিজেও ওই
ধরনের ঘোষণা না দেওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুকে অনুরোধ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু হয়তো ঢাকায় ইয়াহিয়ার
উপস্থিতিতে একটি রাজনৈতিক সমাধানের সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণেই যে মুক্তিযুদ্ধ আরম্ভ
হয়েছিল, তা আমি মনে করি না। এই ভাষণের শেষ শব্দ ছিল ‘জয় পাকিস্তান’। তিনি যুদ্ধের ডাক দিয়ে বললেন, ‘জয় পাকিস্তান’! এটি যে যুদ্ধের ডাক বা স্বাধীনতার আহ্বান, তা প্রচণ্ডভাবে প্রশ্নবিদ্ধ এবং তর্কাতীতও নয়। যদি আওয়ামী লীগের নেতাদের কোনো যুদ্ধ-পরিকল্পনা থাকত তাহলে মার্চের শুরু থেকে জনগণ এবং সরকারি, বেসরকারি ও সামরিক কর্মকর্তাদের স্বল্প
সময়ে সঠিকভাবে সংগঠিত করা যেত। সেটা করা হলে আমার মনে হয় যুদ্ধটি হয়তো- বা খুব অল্প সময়ের মধ্যে শেষ হয়ে যেত এবং আমাদের বিজয় নিশ্চিত হতো। কিন্তু
পরিতাপের বিষয়, সেটা করা হয়নি।
ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানী বাহিনীর আত্মসমর্পণের সেই দৃশ্যে শেখ মুজিবরের উপস্থিতি কেবল মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কলঙ্কিতই করেনি, জাতিকে লজ্জিতও করেছে।
(সেই ঐতিহাসিক মুহুর্ত ১৯৭১। ১৬ ডিসেম্বর। বিকাল ৪:০৬ মিনিট)
ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানী বাহিনীর আত্মসমর্পণের দিন শেখ মুজিব ছিলেন পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী। অথচ মুজিবনগরে স্থপিত মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক মনুমেন্টে রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানী বাহিনীর আত্মসমর্পণের সেই দৃশ্যে শেখ মুজিবরের উপস্থিতি দেখানো হয়েছে। এ কোন নিকৃষ্টতম জালিয়াতি? শেখ মুজিবের উপস্থিতি ঘটিয়ে আওয়ামী লীগ কী বোঝাতে চায়? জাতি অবাক হল! লজ্জা পেল! হায়রে আওয়ামী লীগ! তাদের দ্বারা সব কিছুই সম্ভব!
এক কে খন্দকার সত্য প্রকাশ করায় সংসদের মত পবিত্র জায়গায় তিরস্কৃত করা হল- সেই ঐতিহাসিক মুহুর্তে উপস্থিত থাকা সম্প্রতি প্রকাশিত ‘১৯৭১: ভেতরে বাইরে’ বইয়ের লেখক এ কে খন্দকার বীরউত্তম’কে
* জিয়াউর রহমানই স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়েছিলেন- এ কে খন্দকার
* এ কে খন্দকার আরও লিখেছেন, স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে শেখ মজিবের নামে আওয়ামীলীগ যা কিছু দাবী করে, তা সব মিথ্যা। “যুদ্ধকালে মুজিব প্রকাশ্যে কাউকে কিছু বলেননি বলেই আমি জানি।
Published Now: NCP Information & Research Cell
http://www.ncp-bnp.org
Shaheen Chowdhury with Habib Un Nabi Khan and 31 others
আওয়ামী লীগ কর্তৃক মহান মুক্তিযুদ্ধে ইতিহাসের নিকৃষ্ট বিকৃতিঃ
ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানী বাহিনীর আত্মসমর্পণের সেই দৃশ্যে শেখ মুজিবরের উপস্থিতি কেবল মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কলঙ্কিতই করেনি, জাতিকে লজ্জিতও করেছে।
(সেই ঐতিহাসিক মুহুর্ত ১৯৭১। ১৬ ডিসেম্বর। বিকাল ৪:০৬ মিনিট)
ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানী বাহিনীর আত্মসমর্পণের দিন শেখ মুজিব ছিলেন পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী। অথচ মুজিবনগরে স্থপিত মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক মনুমেন্টে রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানী বাহিনীর আত্মসমর্পণের সেই দৃশ্যে শেখ মুজিবরের উপস্থিতি দেখানো হয়েছে। এ কোন নিকৃষ্টতম জালিয়াতি? শেখ মুজিবের উপস্থিতি ঘটিয়ে আওয়ামী লীগ কী বোঝাতে চায়? জাতি অবাক হল! লজ্জা পেল! হায়রে আওয়ামী লীগ! তাদের দ্বারা সব কিছুই সম্ভব!
এক কে খন্দকার সত্য প্রকাশ করায় সংসদের মত পবিত্র জায়গায় তিরস্কৃত করা হল- সেই ঐতিহাসিক মুহুর্তে উপস্থিত থাকা সম্প্রতি প্রকাশিত ‘১৯৭১: ভেতরে বাইরে’ বইয়ের লেখক এ কে খন্দকার বীরউত্তম’কে
* জিয়াউর রহমানই স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়েছিলেন- এ কে খন্দকার
* এ কে খন্দকার আরও লিখেছেন, স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে শেখ মজিবের নামে আওয়ামীলীগ যা কিছু দাবী করে, তা সব মিথ্যা। “যুদ্ধকালে মুজিব প্রকাশ্যে কাউকে কিছু বলেননি বলেই আমি জানি।
ভিন্নমত প্রকাশের কারণে এ যাবত রোষের শিকার হতে হয়েছে অনেক রাজনৈতিক নেতৃত্ব, মুক্তিযুদ্ধের অধিনায়ক, বীর সেনানী ও লেখক-বুদ্ধিজীবীকে। এঁদের মধ্যে মোটা দাগে আছেন, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার জিয়াউর রহমান বীরোত্তম, মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এমএজি ওসমানী, বঙ্গবন্ধুর অন্যতম সহযোগী, বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ও পরবর্তীকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন, মুক্তিযুদ্ধে কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান বাঘা কাদের নামে খ্যাত আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম অধিনায়ক কর্ণেল (অব) অলি আহমদ বীর বিক্রম, অপর সেক্টর কমান্ডার মেজর এম.এ. জলিল ও হামিদুল্লাহ খান বীর প্রতীক এবং সর্বশেষ পরিস্থিতির শিকার মুক্তিযুদ্ধের উপ-অধিনায়ক এয়ার ভাইস মার্শাল (অব) এ.কে. খন্দকার বীরোত্তম।
বিব্রত-বিভ্রান্ত আওয়ামী লীগ
সামপ্রতিকতম সময়ে দেশজুড়ে আলোচনার শীর্ষে উঠে এসেছেন মুক্তিযুদ্ধের উপ-অধিনায়ক সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সভাপতি এ.কে. খন্দকার বীরোত্তম। তিনি তাঁর লেখা আত্মজৈবনিক গ্রন্থ ‘১৯৭১ : ভেতরে বাইরে’ প্রকাশের জন্য তাঁর নিজের দল আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগীদের ক্ষোভের মুখে পতিত হয়েছেন। এই বইয়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর নিজের অভিজ্ঞতালব্ধ যে বিবরণ দিয়েছেন তাতে তাঁর নিজের দল আওয়ামী লীগ বেজায় ক্ষুব্ধ হয়েছে। এই বিবরণের গুরুতর ও উল্লেখযোগ্য দিক হলো, বইয়ের ৩২ পৃষ্ঠায় এ.কে. খন্দকার লিখেছেন, ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণের শেষ শব্দ ছিল ‘জয় পাকিস্তান’। এ ছাড়া এ.কে. খন্দকার তার বন্ধু মঈদুল হাসানের বরাত দিয়ে বলেছেন, তাজউদ্দীন আহমদ ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে স্বাধীনতার একটি ঘোষণাপত্র লিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তা পাঠ করতে বললেও তিনি রাজি হননি। উল্টো তিনি বলেন, ‘এটা আমার বিরুদ্ধে একটা দলিল হয়ে থাকবে। এর জন্য পাকিস্তানীরা আমাকে দেশদ্রোহের বিচার করতে পারবে।’ এ কথা শুনে তাজউদ্দীন আহমদ ক্ষিপ্ত হয়ে বঙ্গবন্ধুর বাসা থেকে বেরিয়ে যান। এ ছাড়া ‘মুজিব বাহিনী ভারতীয়দের কাছ থেকে সম্মানী পেতো’, ‘মুজিব বাহিনী অস্থায়ী সরকার ও মুক্তিবাহিনীকে অবজ্ঞা করত’ মুক্তিযুদ্ধকালীন এমন আরো কিছু তথ্য তিনি তার বইয়ে উল্লেখ করেছেন।
এদিকে, এ.কে. খন্দকারের এই বই নিয়ে বেজায় বেকায়দায় পড়েছে আওয়ামী লীগ। গত প্রায় এক সপ্তাহ যাবত তাঁর বিরুদ্ধে তিরস্কার, গালাগালি ও সমালোচনার বন্যা বয়ে যাচ্ছে। জাতীয় সংসদ অধিবেশন থেকে শুরু করে রাজপথ, আলোচনার টেবিল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ প্রায় সবখানেই দলের বাঘা বাঘা নেতা থেকে পাতি নেতা পর্যন্ত এ.কে খন্দকারের পিণ্ডি চটকানোর কাজ চলছে। আওয়ামী লীগ নীতিনির্ধারকদের কেউ কেউ বইটি অবিলম্বে নিষিদ্ধের দাবি তুলেছেন। ইতিহাস বিকৃতি এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের চেয়ারম্যান এ.কে. খন্দকারকে গ্রেফতারেরও দাবি জানিয়েছেন। বুড়ো বয়সে এ.কে. খন্দকারের ‘মতিভ্রম’ হয়েছে মন্তব্য করে দলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, ‘দেশের মানুষ জানে কার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। তাই কোথাকার কোন এ.কে. খন্দকার কী বলল তাতে কিছু আসে যায় না।’ অন্যদিকে বইটি নিষিদ্ধ করে তাকে আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন বলে গুরুতর মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। একজন নেতা তাঁকে ‘কুলাঙ্গার’ এবং আরেকজন নেতা ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ আখ্যা দেন। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতীয় সংসদ অধিবেশনে এনিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হওয়ায় তা সংসদের রেকর্ডভুক্ত হয়ে গেছে। ফলে বই নিষিদ্ধ করে প্রকৃত বিষয় চাপা দেয়ার অবকাশ থাকছেনা। এই বইয়ের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেয়া হয়েছে বলে তাদের অভিমত। এর আগে বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা শারমিন আহমদের ‘তাজউদ্দীন আহমদ : নেতা ও পিতা’ গ্রন্থে বঙ্গবন্ধুর অবদানকে খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়।
সাজানো ইতিহাস তছনছ
আওয়ামী বুদ্ধিজীবীরা এতোদিন দাবি করে আসছিলেন যে, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সেই পঞ্চাশের দশক থেকেই দেশকে স্বাধীন করার জন্য পরিকল্পনা ও প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন। আর মুক্তিযুদ্ধের সব সাফল্যের দাবিদার কেবল আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নেতৃত্ব। কিন্তু এ.কে. খন্দকারের এই সামপ্রতিক বিবরণের ফলে সেসব দাবি অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত হয়ে পড়েছে। এ.কে. খন্দকারের দাবি অনুযায়ী ৭ মাচের্র ঐতিহাসিক ভাষণের শেষে বঙ্গবন্ধু যদি ‘জয় পাকিস্তান’ বলে থাকেন তাহলে আওয়ামী লীগের স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ লড়াইয়ের দাবি অসার প্রমাণিত হয়। তিনি যে পাকিস্তানেরই প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন বিরোধীমহলের সেই দাবি প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। অন্যদিক, ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা সম্পর্কিত বিতর্কেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবর্তে জিয়াউর রহমানের অবস্থান জোরদার হয়ে উঠেছে। বঙ্গবন্ধু আদৌ স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি বলেই এ.কে. খন্দকার তাঁর অভিমত প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন। বিপরীতে চট্টগ্রামে মেজর জিয়ার বেতার ঘোষণা ও তার কার্যকারিতার কথা জোরের সঙ্গে উপস্থাপন করেছেন এ.কে. খন্দকার। পাশাপাশি, এই গ্রন্থে মুক্তিযুদ্ধের বেসামরিক নেতৃত্বের মধ্যে একমাত্র তাজউদ্দীন আহমদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণায় ‘অস্বীকৃতি’র বিপরীতে তাজউদ্দীনের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রচারের জন্য অবিরাম প্রচেষ্টা এবং ভারতে গিয়ে প্রবাসী সরকার প্রতিষ্ঠায় তাঁর নানামুখী উদ্যোগের পেছনে চাপা পড়ে গেছে আওয়ামী লীগের অনেক বাঘা বাঘা নেতার প্রচারকৃত কৃতিত্ব। অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে তত্কালীন বেসামরিক নেতৃত্ব। এ ছাড়া ‘মুজিব বাহিনী ভারতীয়দের কাছ থেকে সম্মানী পেতো’, ‘মুজিব বাহিনী অস্থায়ী সরকার ও মুক্তিবাহিনীকে অবজ্ঞা করত’ প্রভৃতি মন্তব্যে দর্পচূর্ণ হয়েছে ‘মুজিববাদী’ হিসেবে গর্বিত নেতাদের।
একের পর রোষের শিকার
বিশ্লেষকরা অভিমত প্রকাশ করেন, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে বরাবর অগ্রণী ভূমিকা থাকলেও খন্দকার মোশতাক আহমদের ১৫ আগস্ট ট্রাজেডির সঙ্গে সম্পৃক্তার কারণে তাঁর দল আওয়ামী লীগের বিরাগভাজন হবার একটা যৌক্তিক কারণ আছে। কিন্তু অন্যদের ক্ষেত্রে শুধুই মতভেদ করা এবং আওয়ামী লীগের চিন্তার সঙ্গে একমত না হবার খেসারত দিতে হয়েছে অনেক বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধাকে। জিয়াউর রহমানকে ‘পাকিস্তানের এজেন্ট’ বলে আখ্যা দেয়া ও ‘প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নয়’ বলে প্রচারণা চালানো হয়েছে। জেনারেল ওসমানীকে চিরদিন অস্পৃশ্য করে রাখা হয়েছে। মাওলানা ভাসানীকে ‘চীনের দালাল’ বলে গালাগালি করা হয়েছে। ড. কামাল আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করায় তাঁকে ‘অর্বাচিন’ হিসেবে চিহ্নিত হতে হয়েছে। কাদের সিদ্দিকীকে ‘রাজাকার’ আখ্যা পেতে হয়েছে। ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদ করায় মেজর জলিলকে কারাবরণ করতে হয়েছে। আর মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদাধিকারী ব্যক্তি এ.কে. খন্দকারকে মতিভ্রষ্ট, রাষ্ট্রদ্রোহী, কুলাঙ্গার প্রভৃতি বিশেষণে অভিসিক্ত হতে হলো। আওয়ামী লীগ বরাবরই বিএনপিতে কোনো প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নেই বলে প্রচার চালিয়ে এসেছে। আর আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক বিরোধিতার জন্য গড়ে ‘স্বাধীনতা বিরোধী’, ‘রাজাকার’ প্রভৃতি সম্বোধন পেয়ে আসছেন বেশীর ভাগ আওয়ামী বিরোধী দলগুলো। পর্যবেক্ষকদের অভিমত, দিন যতোই গড়াবে প্যান্ডোরার বাক্স ততই খুলতে থাকবে। এ.কে. খন্দকারের লেখা বই সেই পথে যাত্রার অন্যতম সূচক বলে তারা মনে করেন। উৎসঃ আমারদেশ
আসলে তরুণ প্রজন্ম সঠিক ইতিহাস পড়বে কেমতে ?
ইতিহাসবীদই বিকৃত মষ্তিষ্কের ।
ইতিহাসবীদই বিকৃত মষ্তিষ্কের ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন