খোলা চিঠি: দেলাওয়ার হুসাইন সাঈদী প্রসঙ্গ
লিখেছেন লিখেছেন ডব্লিওজামান ২১ এপ্রিল, ২০১৪, ০৩:৩৯:৩০ দুপুর
প্রিয় সচেতন দেশ প্রেমিক নাগরিকগণ,
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।
জানি দেশের পরিস্থিতি নিয়ে আপনারা খুব চিন্তিত । সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনাদের সচেতন সরব ভুমিকা তার যৎসামান্য ইঙ্গিত দেয় । আপনারা সাধ্য অনুসারে কিছু চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছেন । আপনাদের এ চেষ্টা সৃষ্টি কর্তা কবুল করুক ।
আমরা সবিশেষ অবগত ‘মানবতার মুক্তি আন্দোলন’ এবং ‘গণতান্ত্রিক চেতনার’ উপর পরিচালিত জুলুম-নিপীড়ন ও অমানবিক জিঘাংসা’র প্রতিবাদে আপনার সহানুভুতিশীল এবং তথ্যসমৃদ্ধ-যুক্তিপূর্ণ মতামত বিবেকবানদের অনুপ্রানিত করে।
আপনারা জানেন দল-মত-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাংলাভাষী অধিকাংশ মানুষের প্রিয় আলেম মাওলানা দেলাওয়ার হুসাইন সাঈদী কে নিয়ে এক গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। বিচারের নামে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপে মিথ্যা, যুক্তিহীন ও জোর-জবরদস্তি মূলক কায়দায় কাউকে হত্যা করা পুরো মানবতাকে হত্যা করার শামীল। মানবতাকে হত্যা ও পদদলিত করার কোন আয়োজন প্রত্যক্ষ করার পূর্বে আমাদের অস্তিত্ব, কণ্ঠ, কলম, মাউস কিংবা কী-বোর্ড কীভাবে ন্যায়ের পক্ষে নিজ অবস্থান জানান দেবে তা আমাদেরকেই ঠিক করতে হবে। আমাদের প্রতি মহান রবের নির্দেশনা হল- “ হিকমত, যুক্তি ও উত্তম পন্থায় বিতর্ক”।
মিথ্যাচার এবং ষড়যন্ত্র ফাঁসের স্কাইপ কেলেংকারি, সেফ হাউস কেলেংকারি, ইব্রাহিম কুট্টি ও বিশাবালি হত্যার নির্লজ্জ মিথ্যা অভিযোগ, দেলওয়ার শিকদার কে সাঈদী বলে চালিয়ে দেয়া, বিশাবালির ভাই সুখরঞ্জন বালি কে সত্য সাক্ষী দেবে এই শঙ্কায় কোর্টের সামনে থেকে অপহরণ, ইব্রাহিম কুট্টির স্ত্রীর দায়ের করা মামলা নিয়ে কেলেংকারি এবং সর্বশেষ নির্লজ্জ ভাবে নথি তলব না করা- এ জাতীয় বহু বিষয় আছে যা আমাদের “উত্তম পন্থায় যুক্তি-তর্কের” পাথেয় হতে পারে। আমাদের সংগ্রহে থাকতে পারে মাওলানা সাঈদীর বহু অনুপ্রেরণা দায়ক ছবি, ছোট-ছোট বক্তব্য কিংবা স্মরণীয় স্মৃতি।
আসুন, আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ কেউ গ্রুপ তৈরি করে, কিংবা বাক্তিগত ভাবে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রচুর লিখা ও মতামত জানিয়ে, আবেগ-অনুভুতি প্রকাশ করে, দাবী উত্থাপন করে সত্যের শক্তি প্রকাশ করি।
আপনারা ইতোমধ্যে এ-প্রসঙ্গে অনেক মতামত প্রকাশ করেছেন, সেজন্য কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমরা চাই এটা প্রবল জোয়ার সৃষ্টি করুক। মনে রাখতে হবে বিচারালয় বা সংশ্লিষ্ট গণের প্রতি সম্মান-স্রদ্ধা রেখেই মত প্রকাশ করতে হবে।
আমাদের একান্ত প্রত্যাশা, অন্যায়-অবিচার ও জুলুমের বিরুদ্ধে আপনার এ ভুমিকা শুধু মাওলানা হুসাইন সাঈদীর প্রসঙ্গেই নয় বরং প্রত্যেক মজলুম মানুষ, সংগঠন ও জনগোষ্ঠীর পক্ষে নিবেদিত থাকবে।
এ আহ্বান ইনবক্সে (আপনার দৃষ্টিতে যাকে প্রয়োজনীয় ও উপযুক্ত মনে হবে) ন্যায়ের পক্ষে অবস্থানকারী ভাই-বোনের কাছে পাঠাতে পারেন।
একটু চিন্তা করুন :
সংখ্যালঘু অধ্যুষিত একটি এলাকা থেকে সাঈদীর ছেলের পাশ করে আসা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পুরো মেকানিজমটিকে নতুনভাবে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরা নিশ্চয় চান্দে সাঈদীর মুখ দেখে তার ছেলেকে এভাবে ভোট দেয় নি? সরকার বাস্তব পরিস্থিতি যত ঢেকে রাখতে চাচ্ছে, তা আরও করুণভাবে প্রকাশিত হয়ে পড়ছে।
দেইল্যা রাজাকার আর মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী যে এক ব্যক্তি নন তা এই ভোটের মাধ্যমে এলাকার জনগণ জানিয়ে দিয়েছে। এটা সরকারকে সবচেয়ে বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে।
তাছাড়া যে দুটি মামলায় সাঈদীর ফাসি দেওয়া হয়েছে সেখানেও অনেক প্রশ্ন রয়ে গেছে । বিশাবালীর ছোটভাই সরকার পক্ষের সাক্ষ্মী সুখরঞ্জন বালী অনেক আগেই হাটে হাড়ি ভেঙে দিয়েছেন । সুখরঞ্জন বালীকে নিয়েও যে উপাখ্যান সৃষ্টি হয়েছে তা পুরে বিচার প্রক্রিয়ার ন্যূনতম গ্রহনযোগ্যতাকেও নষ্ট করে ফেলেছে। অপর হত্যা মামলা যেটিতে ফাসির আদেশ হয়েছে সেখানেও একই জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। স্বাধীনতাযুদ্ধের পর পরই নিহতের স্ত্রী যে মামলা করেছিলেন সেখানে সাঈদীর নাম নেই। সাঈদীর মামলা নিয়ে স্কাইপ কেলেংকারী থেকে শুরু করে এত কিছু হওয়ার পরেও যদি সরকার এই ফাসি নিয়ে অগ্রসর হয়
তবে আন্তর্জাতিক সমালোচনা ও দেশের ভেতরে সাঈদী ভক্তদের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া সামলানো সরকারের পক্ষে সত্যিই কঠিন হয়ে পড়তে পারে । সাঈদী এমন এক ব্যক্তিত্ব যার ভক্ত সমর্থক খোদ আওয়ামীলীগেও রয়েছে। ১৯৯৬ সালে মাওলানা সাঈদীর একটি মাহফিলে জেনারেল নুরুদ্দিন বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তিনি নিজেকে সাঈদীর একজন একনিষ্ঠ ভক্ত হিসাবে তুলে ধরেন। এর কিছুদিন পর তিনি আওয়ামীলীগের মন্ত্রী হয়েছিলেন।
সৃষ্টি কর্তা, সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী এবং উত্তম বিচারক আমাদের সহায় হউন - আমীন।
বিষয়: বিবিধ
১৪৬৯ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লামা সাঈদীর কিছু করা এই সরকারের জন্য চরম ঐতিহাসিক ভুল হবে!
করতে হবে।
লেখক কে অনেক ধন্যবাদ।
কথা শুনে হাসি পেলো।
মন্তব্য করতে লগইন করুন