রপ্তানীনির্ভর অর্থনীতি দাঁড় করান।
লিখেছেন লিখেছেন ডব্লিওজামান ১৬ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৭:৪৮:৫৬ সকাল
আজকে ১ প্যাকেট মার্কার, পেন্সিল, রাবার ও কলম কিনলাম; মার্কারের গায়ে লিখা ‘Made in France’ রাবার ও কলম ‘Made in India’ আর পেন্সিলের গায়ে লিখা ‘Made in China’ !!! বুঝলাম না, আমাদের দেশ- গাড়ি, ট্রেন, টিভি, ফ্রিজ, মোবাইল না হয় আমদানি করছে, মানা যায়। কিন্তু রাবার, ব্লেড, সুঁই, সুতা, কলম, খাতা... এসব ও আমদানি করতে হয় !!
সেদিন এক দোকানে নাস্তা খাচ্ছি; দোকানদার বললেন, ‘মামা এটা মালয়েশিয়ান পরোটা’ অবাক হলাম পরোটাও আসে মালয়েশিয়া থেকে !!!
বাংলাপিডিয়া ঘেঁটে দেখলাম, এই বাংলায় নাকি ১শ' ৬৫ রকমের পিঠা ছিল। যে দেশে শুধু চালের গুঁড়া থেকে এতোএতো পিঠাপুলি তৈরি করতো সে দেশ মালয়েশিয়া থেকে পরোটা, ইন্ডিয়া থেকে রাবার ও কলম ...................................আনতে হচ্ছে !!!
যে দেশের সিলেট, পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ে আপেল, কমলা, আঙ্গুর থোকায় থোকায় ঝুলছে; সেদেশ পাকিস্তান থেকে 'সেজান জুস' আমদানী করে !!!
সেদিন একবাসায় তেঁতুলের আচার খেলাম; তারা বলল- এটা থাইল্যান্ডের আচার। আচারও থাইল্যান্ড থেকে আনতে হয় !!!
আমাদের গ্রামের জসিমের বৌ, কাশেমের মা, রহিম মিয়ার শালীরা প্রায় ৫০ রকমের আচার বানাতে পারে। আর এখন থাই, বার্মিজ আচারও আমদানী করতে হচ্ছে !!!
একটা সত্যি ঘটনা বলি- ২০০৯ সালের দিকে এক ইউরোপিয়ান পর্যটক মহাস্থানগড় পুরাকীর্তি পরিদর্শনে আসলেন। তিনি ভবন, নির্মাণশৈলী, স্তম্ভ দেখে অবাক হয়ে বলেছিলেন, দেড়হাজার বছর আগে এখানকার মানুষ বিল্ডিংয়ে ছিল !!! তখন আমরা ইউরোপিয়নরা গাছের উপরে নাকি নিচে ঘুমাবো এসব চিন্তা করতাম।
মহাস্থানগড়ে ২৪ কোন বিশিষ্ট চৌবাচ্চা সদৃশ বাথরুমটি দেখে তিনি বলেছিলেন, আমাদের বাথরুম ব্যবহারের ইতিহাস কিন্তু একশো বছর আগের, আর এই বাংলার এতো পুরানো' !!!... ...
যে জাতি ১৫শ' বছর আগে ভবন, পুরাকীর্তি বানিয়েছে; ৪শ' বছর আগে যাদের মসলিন কাপড় পুরোবিশ্বে তাক লাগিয়েছে; ৩শ' বছর আগেও যাদের জাহাজ বরিশাল থেকে কলকাতা যেত; তারা এখন পেন্সিল, রাবার, খাতা, ছাতা, কলম, মলম আমদানী করছে !!! হায়, পুরো দেশটাই হয়ে গেছে বহিঃবিশ্বের আড়ত ! শপিংমল, কাঁচাবাজার ........ .......... ..... !!!
প্রিয় রাষ্ট্রনায়কেরা, অর্থনীতিবিদেরা, ব্যবসায়ীরা, উদ্যোক্তারা....... ......... ..... দয়া করে নিজ দেশের শিল্প, স্বাধীন অর্থনীতি, আমদানী নয়; রপ্তানীনির্ভর অর্থনীতি দাঁড় করান। আপনাদের মানসন্মান না ও থাকতে পারে; কিন্তু নাগরিক হিসেবে আমাদের মান- ইজ্জত, মর্যাদা, সম্ভ্রম, গৌরব, তাজিম,সন্মান ......... ..... ... আছে ।
বিষয়: বিবিধ
১৪৬৮ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তথাকথিত মান ও ব্রান্ড এর প্রশ্ন তুলে অনেকেই বিদেশি জিনিস ব্যবহার করাকে উৎসাহ দেন। এমনকি সরকারি ভাবেও এটি করা হয়। আমাদের দেশে যথেষ্ট উন্নত মানের ষ্টেশনারি সামগ্রি তৈরি হয়। কিন্তু বাজারজাতকরন এর জন্য সেগুলির তুলনায় দোকানদার গন বিদেশি জিনিস বেশি রাখেন। অন্য দিকে তথাকথিত মুক্ত বাজার এর নামে যা খুশি তাই আমদানি হচ্ছে যার ফলে দেশিয় শিল্প গড়ে উঠতে পারছেনা।
ধন্যবাদ আপনাকে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন