বিসিএস এ চেতনা - কোটার জয়জয়কার জাতিকে মেধাশূণ্য করা
লিখেছেন লিখেছেন ডব্লিওজামান ২৪ নভেম্বর, ২০১৩, ০৬:৪৪:৪২ সকাল
ওয়াহিদুজ্জামানঃ
৩৩ তম বিসিএস এর ফলাফল জানলাম। মেধার তুলনায় কোটার জয়জয়কার। দেখে পুরোই স্তম্ভিত। এটা কিভাবে সম্ভব !! নির্দিষ্ট কিছু সংখক মানুষকে এগিয়ে নেবার নাম করে গোটা জাতিকে পেছনে ঠেলে দেওয়া !! মানতে পারছি না। সারাজীবন, এমনকি একটু আগেও একজনকে গর্ব করে বলে এসেছি, আমি ঠিকই দেশে ফিরে যাব, সাধ্যে যতটুকু কুলোয় দেশের জন্য করব। এখন মনে হচ্ছে ভুল বলেছি; আবার চিন্তা করতে হবে। যে দেশে মেধার মূল্যায়ন নেই, যেখানে জাতির বিবেকেরা বিকৃত সে দেশে আর যা-ই হোক ভালো কিছু করার সম্ভব নয়। কারণ কে আমার কাজে চিন্তা, বুদ্ধি আর পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করবে? কোটায় উঠে আসা লোকগুলো (!), যেখানে চাইলেই আমি শতগুণ ভালো মেধাবীদের পেতাম। মেধাপাচারের কাহিনীই এখন বাস্তবতা। এ অবস্থায় তারা দেশে থাকবে- এটা কিভাবে আশা করা যায়? চাকরি না পাক, তাদের বিবেক বুদ্ধি আর মেধা ত চলে যায়নি; ভালো-খারাপের পার্থক্য তারা ঠিকই করতে পারে।
বর্তমানের রাজনৈতিক পরিস্থিতির চাইতেও বিসিএস এর ফলাফল আমার নিকট বেশি উদ্বেগজনক। আমাদের সরকার, সে যে-ই হোক, ঊনিশ-বিশ। দেশকে নিয়ে সুন্দর কোন স্বপ্ন, পরিকল্পনা কারোরই নেই। সুতরাং সরকার পালাবদলের নাটকে দেশে যে অস্থিরতা তাতে খুব বেশি দুঃখ বা আনন্দিত হওয়ার কিছু নেই। এটা সাময়িকও বটে। মাস ছয়েক পর আবার সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিন্তু মেধাবীদের দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে না এনে যে ভুল আমরা করছি, এর মাসুল দিতে হবে চিরজীবন। আমরাই বলি, পাকিস্তানীরা নির্বোধ, রক্তগরম। এখন মনে হচ্ছে, আমরা ঠিক ভাবিনি এতদিন। তারা ঠিকই বুঝেছিল; জাতিকে মেধাশূণ্য করার চেষ্টা করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সয়লাবের সময়ও আমরা তা বুঝতে পারছি না। আফসোস।। জানিনা কেমন বাংলাদেশ আছে আগামীর জন্য । এবারের কোটার চেতনা সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে । আমার এক বন্ধু বর্তমানে সে যে পদ বহন করছে তা নিয়ে আমাদের সামনে আসতেই সে সংকোচবোধ করে কিন্তু দলবাজি, তোয়াজগীরি ও চেতনা কোটার কারণে আজ সে এ পদ বহন করে জাতিকে মেধাশূনে্যর দিকে এবং মেধাহীনদের আরও উৎসাহিত করছে । অন্যদিকে মেধাবীরা নিরাশ হয়ে বিদেশে পাড়ি দিচ্ছে । সেখানে তাদের সঠিক মূল্যায়ন ও মেধার বিকাশ করতে পারছে। এতে মেধাবীদের বিরাট একটি অংশ দেশে ফেরার মোহ হারিয়ে ফেলছে। দেশের ভবিষ্যতের জন্য এটা কিসের সংকেত ?!কোটা ও চেতনার মাঝে ও আবার প্রায় সকল পরীক্ষায় প্রশ্নপ্ত্র ফাঁসের হিড়িক !!!
অন্যদিকে আবার দেখেছি বিভিন্ন জাতীয় খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্বারা সঠিক মূল্যায়নতো দূরের কথা বিনা চিকিৎসায় না খেয়ে মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটছে । কিছুদিন আগের একটি চুটকি ঘটনা মনে পড়ে গেল …………
এক ছেলে অনেক কষ্টে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করার সুযোগ পেল । প্রধানমন্ত্রীও সময় বের করে দেখা করতে আসলেন।
প্র.মঃ-তোমার নাম কি ?
ছেলেঃ-শ্রী অমুক সিং।
প্র.মঃ-কোন কোটার অধীনে পড়েছ ?
ছেলেঃ-আমি কোন কোটার অধীনে না,আমি শাহবাগ হতে এসেছি। একটি ...............
প্র.মঃ-শাহবাগ !! (হাসি) ওই, কে কোথায় আছিস,চা-বিস্কুট যা আছে নিয়ে আয়।আহা কেমন শুকিয়ে গেছে! কতদিন যাবৎ আমাদের জন্য ওখানে আছে ছেলেগুলো ।
ছেলেঃ-না মানে আমি শাহবাগের মেধাচত্বর হতে স্মারকলিপি জমা দিতে..................
প্র.মঃ-মেধাচত্বর ? ! ওই চা-বিস্কুট নিয়া যা আর ওসি হারুনকে খবর দে,আমার এখানে জামাত-শিবির ঢুকে গেছে। সব ধারার মামলা দিয়ে একে জেলে ভর তাড়াতাড়ি।
ছেলেঃ-??? !!! আমি একজন হিন্দু,আমি জামাত-শিবিরের কেউ না।আপনি যা করছেন সেটা অন্যায়।
প্র.মঃ-অন্যায় !! বিশ্বজিৎ কে শিবির বানাইয়া আমার ছেলেরা প্রকাশ্যে কুপাইলো আর তুমি কোন মেধাচত্বর হতে আসছো !!! তোমারেও জামাত-শিবির বানাইয়া চালান করে দিলে কেউ টেরই পাইবো না ..। হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা !!!
বিষয়: বিবিধ
১২৯৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন