বাহাদুর শা-এর বিচার ও অজানা কিছু কথা
লিখেছেন লিখেছেন গোলাম মাওলা ০৯ এপ্রিল, ২০১৯, ০১:৫৯:২২ দুপুর
বাহাদুর শা-এর বিচার ও অজানা কিছু কথা
------------------------------------------
বাহাদুর শা-এর পুরো নাম আবদুল জাফর সিরাজ-উদ-দিন মহম্মর বাহাদুর শাহ। ইতিহাসের পাতায় তিনি শেষ মোগল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শা নামে পরিচিত কিন্তু তিনি নিজেকে কবি বাহাদুর শা জাফর নামে পরিচয় দিতে ভালবাসতেন। বাহাদুর শা যখন মোগল মসনদ লাভ করলেন তখন মসনদের কোনো জোসুস তো ছিলই না বলতে কি মোগল সাম্রাজ্যই শেষ হয়ে গিয়েছিল।
অতএব আকবর শায়ের জ্যেষ্ঠ পুত্র বাহাদুর শা ৬২ বৎসর বয়সে উপাধিটুকুই সার করে সিংহাসনে উঠলেন মাত্র। বাহাদুর শায়ের কতৃত্ব আবদ্ধ ছিল কেবলমাত্র তাঁর প্রাসাদের মধ্যে। অবশিষ্ট জমিদারি থেকে বার্ষিক মাত্র দেড় লক্ষ টাকা আয় ছিল, দিল্লির বাড়িগুলি থেকে কিছু ভাড়া পেতেন আর ইংরেজ সরকার তাকে মাসিক এক লক্ষ টাকা পেনসন দিতেন। সম্রাট বাহাদুর যদিও ইংরেজদের বিচারালয়ের আওতার বাইরে ছিলেন 'তথাপি তার গতিবিধি সীমাবদ্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এই সময়ে দেশে উর্দু কবিতা ও শের লেখার একটা জোয়ার এসেছিল। বাহাদুর শা নিজেও কবিতা ও শের লিখতে শুরু করেন। যদিও তিনি উচ্চস্তরের কবি ছিলেন না কিন্তু হেলাফেলা করবার মতও কাব্য রচনা করেন নি। উল্লেখযোগ্য যে মির্জা গালিবের কাব্যের প্রথম
বই ১৮৪১ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। ইংরেজদের কাছে বাহাদুর শা একটা নিবেদন করেছিলেন, তাঁর মৃত্যুর পর তার পুত্র মিরজা জওয়ান বখত-কে যেন মোগোল সম্রাট স্বীকৃতি দেওয়া হয়। উত্তরে ইংরেজ সরকাব বলেছিল-- আমরা তোমার পেনশনের পরিমাণ কমিয়ে দোব কিনা ভাবছি। তুমি মারা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা তোমার বংশের ইতি ঘোষণা করে দেব। বাহাদুর শা মনে মনে বি:দ্রাহী হয়ে উঠেছিলেন ,কিন্তু করবেনই বা কি। তিনি তখন ঢাল-তলোয়ার বিহীন নিধিরাম সর্দার।
তাই মিরাটে ১০ মে ১৮৫৭ তারিখে যখন সিপাহি বিদ্রোহের ধ্বমা উড়িয়েছিল তখন ইজেদের মতোই তিনি কম বিস্মিত হন নি। মনে মনে হয় তো আশা পোষণ করেছিলন যে বি:দ্রাহীরা জয়ী হক, তিনি মসনদের গৌরব লাভ করবেন। পরদিনই অর্থাৎ ১১ মে তারিখে বিদ্রোহীর তার প্রাসাদে এসে হাজির এবং বাহাদুর শাকে বললেন নেতৃত্ব নিতে। বাহাদুর প্রথমে রাজি হন নি কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে হাজি হতে হয়েছিল। তখন তার বয়স ৮১, দৈহিক বা মানসিক কোন শক্তিই অবশিষ্ট নেই। বিদ্রোহীরা তাকে হিন্দুস্তানের সম্রাট রুপে ঘোষণা করল। বিদ্রোহীর যেন একটা স্বীকৃতি অর্জন করল, তারা তাদের সম্রাটের জন্যে যুদ্ধ করছে। কিন্তু বাহাদুর শুধু নামেই রইলেন। কোনো বিষয়েই তার মতামত বা অনুমতি নেওয়া হয় নি। তিনিও যা, একটা পুতুলও তাই। বিদ্রোহীরা কেবলমাত্র সম্রাটের প্রতি তাদের আনুগত্য ঘোষণা করত। ইংরেজরা ব্যাপারটা ভাল চোখে দেখে নি। দেখতে পারে না। তারা সর্বত্রই শুনল সিপাহিদের নেতা সম্রাট বাহাদুর শা।
তিন মাস ধরে প্রস্তুতির পর ১৪ সেপ্টেম্বর তারিখে দিল্লি পুনরুদ্ধারের অন্য ইংরেজ সৈন্য দিল্লি আক্রমণ করল এবং ২০ সেপ্টেম্বর সম্রাটের প্রসাদ তাদের হাতে এসে গেল। বাহাদুর শা তখন শহরের প্রান্তে তার পূর্বপুরুষ হুমায়ুনের সমাধি মন্দিরে সপরিবারে আশ্রয় নিয়েছেন। ২১ সেপ্টেম্বর তিনি ইনটেলিজেন্স প্রধান ক্যাপ্টেন হডসনের কাছে এই শর্তে আত্মসমর্পণ করলেন যে তাকে তার বেগম জিনত মহলকে এবং তাদের পুত্র ও পৌত্রদের হত্যা করা হবে না। সম্রাটের জীবন ব্যতীত আর কারও জীবন সম্বন্ধে হডসন নাকি প্রতিশ্রুতি দেয় নি তবুও হডসন বাহাদুর শায়ের দুই পুত্র এবং এক 'পৌত্রকে দিল্লি গেটের কাছে নিজে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা
করেছিল। এজন্যে হডসনকে কঠোর সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়েছিল এবং হডসন নিজেও লখনৌয়ে বিদ্রোহীদের হাতে নিহত হয়েছিল।
তাই সমালোচনার উত্তরে তার বক্তব্য শোনা যায় নি। বাহাদুর শাকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্বেও রাজদ্রোহীতার অপরাধে তার বিচার করা সাব্যস্ত হল। বিচার অবিশ্যি শেষপর্যন্ত একটা প্রহসনে পরিণত হয়েছিল।
দিল্লী ডিভিসনের ডেপুটি ‘জজ-অ্যাডভোকেট সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলি কর্তাদের অনুমতি না নিয়েই সংবাপত্রে প্রকাশ করতে দেন।। কর্তারা এজন্য চটে গিয়েছিলেন কিন্তু ঐ পর্যন্তই।
যাই হোক সম্রাটের বিচারের জন্যে একটা মিলিটারি কমিশন নিযুক্ত করা হল। দিল্লির ঐতিহাসিক লাল কেল্লায় দিওয়ান-ই খাস ভবনে ২৭ জানুয়ারি ১৮৫৮ তারিখে সম্রাট বাহাদুর শায়ের বিচার আরম্ভ হয়। বিচার চলেছিল ২১ দিন। তখনকার পরিস্থিতিতে সম্রাট সুবিচার আশা করেন নি এবং সে ইচ্ছেও ইংবেজদের ছিল না। বিচারে সম্রাট দোষী সাব্যস্ত হলেন এবং তাকে নির্বাসন দণ্ড দেয়া হল। সেই বছরেই অক্টোবর মাসে তাকে কলকাতায় আনা হল এবং পরে রেঙ্গুনে পাঠান হল। সঙ্গে গেল বেগম ও একমাত্র জীবিত পুত্র।
১৮৬২ সালে ৭ নভেম্বর ৮৭ বছর বয়সে রেঙ্গুনে তার মৃত্যু হয়।
এই দীর্ঘদিন পরেও বাহাদুর শায়েব প্রতি ইংরেজরা তাদেব ঘৃণা ভুলতে পাবে নি। সম্রাটের বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ ছিল চারটি কিন্তু অভিযোগগুলি প্রমাণ কৰবাৰ জন্যে কোনো গুরুত্ব দেওয়া হয় নি। লোক দেখানো বিচারের প্রয়োজন ছিল তাই এই অভিনয়। মূল অভিযোগ ছিল চাবটি।
**প্রথম অভিযোগঃ ভরতে ব্রিটিশ সকাবের পেনশনভোগী বাহাদুর শা ইস্ট ইণ্ডিয়া কম্পনিব আরটিলারি রেজিমেন্টের সুবেদার মহম্মদ বখত খাঁকে এবং অন্যান্য সৈনিককে বিদ্রোহ কবতে প্ররোচিত করেছিলেন। **দ্বিতীয় অভিযোগঃ হল সম্রাট তব পুত্র মির্জা মােগলকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে প্ররোচিত কবেছিলেন। **তৃতীয় অভিযোগঃ তিনি নিজেকে ভারতের সম্রাট বলে ঘোষণা কবেছিলেন এবং বে আইনীভাবে দিল্লি নগর দখল করে রেখেছিলেন।
** চতুর্থ অভিযোগঃ প্রাসাদের সীমানার মধ্যে তিনি ৪৯ জন ইয়রোপীয়কে যাদের মধ্যে নারীব সখ্যাই অধিক তাদের এক অন্যান্য ইয়রোপীয়কে সম্প্রদায়ভুক্ত ব্যক্তিদের ১৬ মে তারিখে হত্যা জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দায়ী।
বাহাদুর শা অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। প্রত্যুত্তর জজ-অ্যাডভোকেট যা বললে তা বাতুলের প্রলাপ ব্যতীত আর কি নয়।
**তিনি বললেন : এই মামলা আর অগ্রসর হবার আগে রায় দেওয়া ভাল যে আপনার বিরুদ্ধে যেসব সাক্ষ্য প্রমাণ দাখিল কর হবে তাদ্বারা হয়তো অভিযোগগুলি সরাসরি খণ্ডন করা নাও যেতে পারে। এই ধরণের দায়িত্বজ্ঞানহীন একটা বিবৃতি দেওয়ার উদ্দেশ্যে কি । সম্রাটকে হত্যা করা হবে না এই রকম একটা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল এবং মামলা কঠোরভাবে অনুসরণ করলে হয়তো তাকে প্রাণদণ্ড দিতেই হত এই জন্যেই কি সরকার তখন সুনির্দিষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ উপস্থিত করলেন না? নাকি তখনও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে না আসার জন্যে সাক্ষ্য প্রমাণগুলি উপস্থিত করা যায় নি। সরকার পক্ষ অনেক দলিল দস্তাবেজ দাখিল করেছিল। এর মধ্যে এমন কিছু দলিল ছিল যার সঙ্গে মূল মামলার কোনো প্রত্যক্ষ সংযোগাযোগ ছিল না।
সংবাদপত্র প্রকাশের জন্য লাইসেনসের নিমিত্ত একটি আবেদন পাওয়া যায়। আবেদনের তারিখ ছিল ২৪ জুন ১৮৫৭। আবেদন কারীর নাম জুম্মা-উদ-দিন খান। তাকে লাইসেন্স মঞ্জুর করা হয়েছিল কিন্তু তাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল যে সে যেন কোনো মিথ্যা খবর না ছাপে, কোনো ব্যক্তির চরিত্রে যেন কটাক্ষপাত করা হয় ।
বিচারের দ্বিতীয় দিনে সম্রাটের পক্ষ সমর্থনের জন্য একজন গোলাম আব্বাস আদালতে হাজির হলেন কিন্তু সঙ্গে সঙ্গেই তাকে সাক্ষী হতে বলাহল। এমন ঘটনা অভূতপূর্ব। তার সাক্ষ্য শেষ হলেই তাকে আবার একালতী করতে অনুমতি দেওয়া হল। অন্যান্য সাক্ষীর মধ্যে সম্রাটের চিকিৎসক আসানুল্লাহ খাঁ এবং তাঁর প্রাক্তন মুনসি এবং জনৈক মুকুন্দলালকেও ডাকা হয়েছিল। অভিযোগগুলির বিরুদ্ধে বাহাদুর শা লিখিত জবাব পেশ করেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন।
**বিদ্রোহ ঘোষিত হবার পূর্ব পর্যন্ত ঘটনা সম্পর্কে আমার কিছুই জানা ছিল না। সকাল আটটা আন্দাজ সময়ে একদল বিদ্রোহী এসে আমার প্রাসাদের জানালার নীচে সোরগোল তোলে। তারা বলতে থাকে যে মীরাটে সমস্ত ইংরেজকে হত্যা করে তারা দিল্লিতে এসেছে। হিন্দু ও মুসলমান উভয়ের ধর্মবিরোধী গরু ও শুকর চর্বি মিশ্রিত টোটা দাত দিয়ে কাটবার জন্য তাদের বাধ্য করা হচ্ছিল বলে তারা বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে। প্রাসাদের জানালার নিচে যে-সমস্ত ফটক আছে আমি সেগুলি সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করতে বলে প্যালেস গার্ডদের কমান্ডারকে খবর পাঠাই। খবর পেরে কমাণ্ডার নিজেই এসে পড়েন এবং আমার সঙ্গে দেখা করেন। তিন গেট খুলে দেবার ইচ্ছা প্রকাশ করেন এবং বিদ্রোহীদের সঙ্গে দেখা করতে চান। আমি তাকে নিরস্ত হতে বললাম কিন্তু তিনি শুনলেন না। তিনি চলে গেলেন এবং থামের কাছে দাড়িয়ে কিছু বলে ফিরে এসে আমাকে বললেন যে তিনি শীগগির বিদ্রোহীদের সরিয়ে দেবার ব্যবস্থা করছেন। অল্পক্ষণ পরে মিঃ ফেজাব আমার কাছে দু’টি কামান চেয়ে একটি চিরকুট পাঠালেন এবং কমাণ্ডার দু'টি পালকি চেয়ে আর একটি চিরকুট পাঠালেন। কমাণ্ডা অনুরোধ করেছেন যে দু’জন মহিলা তার কাছে আছেন । তাদের নিরাপদে রাখবার জন্যে মহিলা দুজনকে তিনি আমার অন্দরমহলে রাখতে চান। আমি রাজি ছিলুম, পালকি পাঠিয়েছিলুমও কিন্তু দুঃখের বিষয় যে মিঃ ফেজাব , কমাণ্ডার এবং দু’জন মহিলাও নিহত হয়েছিলেন।
এই ঘটনার অব্যবহিত পরে বিদ্রোহীরা প্রাসাদে ঢুকে পড়ে এবং আমাকে ঘিরে ফেলে। তাদের উদ্দেশ্য কি আমি জিজ্ঞাসা করি এবং তাদের চলে যেতে অনুরোধ করি। তারা আমাকে চুপ করে থাকতে বলে। আমি ভয় পাই এবং আমার নিজস্ব ঘরে চলে যাই। নির্বিচার হত্যাকাণ্ড থেকে তিনি তাদের বিরত হতে বলেন কিন্তু তাঁর কথা কেউ শোনেনি কারণ এই হত্যাকাণ্ডও তারা সম্রাটের নামে চালাচ্ছিল।
তিনি আরও লিখেছেন : মির্জা মোগল, মির্জা খিজির সুলতান, মির্জা আবু বকর এবং বসন্ত নামে আমার একজন ভৃত্য আমার অজানতে ও বিনা অনুমতিতে বিদ্রোহীদের দলে যোগদান করেছিল এবং আমার নাম ব্যবহার করছিল। আমাকে কিছু জানানও হত না। তারা অনেক রকম কাগজপত্র এনে আমাকে দিয়ে সই করিয়ে নিত ও আমার মোহরের ছাপ দিতে আমাকে বাধ্য করত। যার যা ইচ্ছে সে তাই করত। আমি কিছুই জানি না। আমি তাদের হাতে একরকম বন্দী হয়েই ছিলুম। বিচারক স্বীকার করেছেন যে সিপাই বিদ্রোহ নামে আন্দোলন ধর্মীয় কারণে শুধু বিদ্রোহ নয়, এই বিদ্রোহ হিন্দু ও মুসলমান, উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য স্থাপিত করেছিল এবং তারা ক্ষমতা অর্জনের নিমিত্ত বিদেশি শাসকদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল। এই বিদ্রোহ ইতিহাসে তুলনারহিত।
বিচারের কোন রায় দেওয়া হয় নি। রায় দেবার কিই বা ছিল ? যা করা হবে তা তো ইংরেজ সরকারের আগে থেকেই ঠিক করা ছিল। সরকারিভাবে রায় না দিয়ে ভালোই করেছে।
মৌলানা আবুল কালাম আজাদ লিখেছেন : বাহাদুর শা-এর প্রতি যে আনুগত্য তখনকার জনসাধারণ দেখিয়েছিল তা ব্যক্তিগতভাবে বাহাদুর শাকে নয় পরন্ত বলা যেতে পারে এই আনুগত্য ছিল মোগল বাদশাদের বংশধরদের প্রতি--- ডঃ সুরেন্দ্রনাথ সেন --এইটিন ফিফটি সেভেন।
ভারতীয় জনগণের ওপর মোগল বাদশার এমনই এক প্রভাব বিস্তার করেছিল যে যখন প্রশ্ন উঠেছিল ব্রিটিশদের কাছ থেকে কে ক্ষমতা গ্রহণ করবে তখন হিন্দু ও মুসলমানেরা, একবাক্যে বাহাদুর শা-এর নাম উচ্চারণ করেছিল। দুঃখের বিষয় যে বাহাদুর শা-এর সে যোগ্যতা ছিল না।
**সিপাহি বিদ্রোহের সময় বাহাদুর শা এর ভূমিকা সম্বন্ধে স্বনাম খ্যাত ঐতিহাসিক ডঃ রমেশচন্দ্র মজুমদার সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তার মতে, যে কৃতিত্ব বাহাদুর শাকে দেওয়া হয় সে কৃতিত্ব বাহাদুর শা-এর প্রাপ্য নয়। তিনি নাকি ইংরেজদের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রক্ষা করতেন।
বেচারী বাহাদুর শা! রেঙ্গুনে নির্বাসিত থাকবার সময় আক্ষেপ করে একটি শের রচনা করেছিলেন। জাফর কি হতভাগা, যে দেশে জন্ম হল সেই দেশে কবরের জন্যে তার দু গজ জমিও জুটল না।
বাহাদুর শা জাফর লিখেছিলেন---
গনীমৎ হায় মিল জায়ে
ম-দফন কো মেরে
অগর ইস গলীমে জমী
আয়সী ঐশী।
আমার কবরের জন্য যদি এখানে ওখানে যেমন তেমন একটু জমিও পাই তবে তাই আমি যথেষ্ট মনে করব।
-------------------স্মরণীয় বিচার - চিরঞ্জীব সেন
বিষয়: বিবিধ
১১০৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন