দ্বীনী- ইলাহী ও ইসলামের উপর প্রথম আঘাত
লিখেছেন লিখেছেন গোলাম মাওলা ২৮ জুন, ২০১৭, ০৬:৪৬:২১ সন্ধ্যা
দ্বীনী- ইলাহী ও ইসলামের উপর প্রথম আঘাত
এটা মোগল সম্রাট আকবর-প্রবর্তিত একটি নতুন ধর্ম। ইতিহাস পর্যালোচনায় জানা যায়- মোগল ঐতিহ্য অনুযায়ী সম্রাট আকবর ছিলেন একজন ধর্মপ্ৰাণ মুসলমান। আবার ধর্মপ্রাণ হ’য়েও তিনি ছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিসম্পন্ন ও খুবই উদার প্রকৃতির ব্যক্তি। তাছাড়া মোগল সম্রাটদের মধ্যে আকবর উচ্চাভিলাষীও ছিলেন বটে। একই সাথে উদারনীতিক ও উচ্চাভিলাষী হওয়ার কারণে ব্ৰাহ্মণ্যবাদীদের প্ররোচণায় নিজে জগৎবিখ্যাত-অমর হওয়ার মোহে পতিত হয়ে আকবর ইসলাম ধর্ম পরিত্যাগ করে ‘দ্বিনী-ইলাহী” ধর্মের প্রবর্তন করেন। এটি ছিল ভারতবর্ষ থেকে ইসলাম-ধৰ্ম উচ্ছেদ করার এক সুদূরপ্রসারী ব্ৰাহ্মণ্যবাদী ষড়যন্ত্র। এই বিরাট ষড়যন্ত্রের সাথে তৎকালীন পারস্য হতে বিতাড়িত হ্যে ভারতে আশ্রয়গ্ৰহণকারী “মালহেদ' নামধারী একদল বিকৃত ছুফিপন্থীরাও যুক্ত হন। ষড়যন্ত্রটি যে কত গভীর ছিল তার বড় প্রমাণ হ’ল- একজন মহাপ্রতাপশালী মুসলিম সম্রাজ কর্তৃক, ইছলামের বিকল্প নতুন ধর্ম ‘দ্বনীইলাহী”
**প্রবর্তনের পুরষ্কারস্বরূপ- ইতিহাসে শুধুমাত্র চিতোর গড়ের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ হাজার ব্ৰাহ্মণ সৈন হত্যকারী আকবরকে ব্ৰাহ্মণরা "জগদীশ্বর উপাধিতে ভূষিত করেন।**
হাজার হাজার ব্ৰাহ্মণ হত্যা করে ‘মহাপাতক হন যে আকবর, তাঁকে ব্ৰাহ্মণরা জগদীশ্বর ভূষণে ভূষিত করেছিলেন শুধু এই কারণে যে—
**আকবরের “দ্বনী-ইলাহী’ ধৰ্ম ভারতবর্ষে ইসলাম, কোরআন ও মুসলমানদের অস্তিত্বের ওপর আঘাত হেনেছিল।**
দ্বনী-ইলাহীর চূড়ান্ত পরিণতির কথাও আমরা জানি।
**সমগ্র ভারতবর্ষে এই ধর্ম আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেছিলেন সম্রাট আকবরের দরবারের নবরত্বের একজন বীরবল ও অপরাপর ১৭ জন (যাদের একজনও ব্রাহ্মণ ছিলেন না)।**
যে ব্ৰাহ্মণরা আকবরকে ‘জগদীশ্বর’ বানিয়েছিলেন, সেই ব্ৰাহ্মণদেরই তো দলে দলে এই ধর্ম গ্রহণ করার কথা ছিল, নাকি? অথচ দ্বনী-ইলাহী গ্রহণের জন্য একজন বামুন-কায়েতকেও পাওয়া গেল না, এর কারণ কী?
আমরা জানি, দ্বনী-ইলাহীর বিরূপ প্ৰতিক্রিয়ায় সম্রাট আকবরের সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটার উপক্রম হয়েছিল। সেই ইতিহাসও চাপা দেওয়া হয়েছে এবং পরবতীতে সেই উদ্দোর পিন্ডি, আওরঙ্গজেব নামের “বুন্দোর” ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে ইসলাম ও মুসলমানদের ‘সাম্প্রদায়িক ও পরমধর্মবিদ্বেষী বানানোর প্রয়াস চালানো হয়েছে।
দ্বনী-ইলাহীর মাধ্যমে ব্ৰাহ্মণ্যবাদীরা উপমহাদেশে তাদের অনেক নীলনকশা বাস্তবায়নে সফল হয়েছে। দ্বনী-ইলাহী আজ মৃত হলেও, তার লাশ ঘাড়ে নিয়ে আজও নাচানাচি করার রেওয়াজ চালু আছে ভারত ও বাংলাদেশের ব্ৰাহ্মণ্যবাদী ও ব্রাহ্মণ্যবাদ-প্রভাবিত বুর্জোয়া-পেটিবুর্জেীয়া রাজনীতিক, বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে। বিশেষ করে সম্প্রতিকালে বাংলাদেশ ও ভারতীয় বাঙলায় যারা দ্বনী-ইলাহী নিয়ে নাচানাচি করেন, তাদের লক্ষ্য হ’ল— ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তরেখা মুছে দেওয়া।
বিষয়: বিবিধ
১২৪৪ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভালো লাগলো , অনেক ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন