অজাচার(Incest) গল্প , গ্রিক থেকে বাংলায়
লিখেছেন লিখেছেন গোলাম মাওলা ০৬ ডিসেম্বর, ২০১৬, ০১:১৬:০৬ দুপুর
অজাচার(Incest) গল্প , গ্রিক থেকে বাংলায়
>>ধর্ম বা সামাজিক প্রথা অনুসারে যাদের সাথে বিবাহ নিষিদ্ধ তাদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করাকে অজাচার(Incest) বলে।
>>অজাচার হলো ঘনিষ্ঠ রক্তীয় সম্পর্ক আছে এমন আত্মীয়ের সঙ্গে যৌনকর্ম বা যৌনসঙ্গম. সাধারণত অজাচার তিনটি যৌনসম্পর্কে ইঙ্গিত করে; যথা: কন্যার সঙ্গে পিতার, পুত্রের সঙ্গে মাতার এবং বোনের সঙ্গে ভাইয়ের যৌনকর্ম বা যৌনসঙ্গম। সকল প্রধান ধর্মে অজাচার নিষিদ্ধ ও গর্হিত হিসাবে ধীকৃত। ইসলাম ধর্মে ১৪ শ্রেণীর সঙ্গে বিবাহ নিষিদ্ধ, অতএব এদের সঙ্গে যৌনসঙ্গম অজাচারের পর্যায়ভুক্ত।
--উইকিপিডিয়া
>>Wikipedia:Incest is sexual activity between family members or close relatives. This typically includes sexual activity between people in a consanguineous relationship (blood relations), and sometimes those related by affinity, such as individuals of the same household, step relatives, those related by adoption or marriage, or members of the same clan or lineage.
>>The crime of sexual relations or marriage taking place between a male and female who are so closely linked by blood or affinity that such activity is prohibited by law.
>>Incest is intimate sexual contact between a child under the age of eighteen and a relative such as an uncle, aunt, brother, sister, stepbrother, stepsister, mother, father, stepmother, stepfather, or grandparent. In other words, someone you are not legally allowed to marry.
***শুরুর কথাঃ
ঈডিপাসের কাহিনি যখন পড়ি তখন বয়স কম ছিল, ঠিক বুঝিনি ব্যপারটা কি হল। বড় হয়ে রসময় গুপ্তে মহাশয়ের কল্যাণে কম বেশি এই সব বুঝতে শুরু করেছি। তখন হতেই এই সব ছাই পাশ পড়া বন্ধ। ধর্ম, সমাজিক রীতি নীতি এই সব হতে দূরে সরিয়েছে অনেক দূর। আরো বড় হয়ে নেটের কল্যাণে এই সব বার বার এসেছে সামনে। এড়িয়ে গেছি সব সময়।
** পরের কথাঃ
তখন মনে হয় ৪র্থ বর্ষে, এই সময় আবার হাতে এল ঈডিপাস। পড়ে যারপরনাই বিরক্ত। আরো বিরক্ত হই যখন দেখি ইহাই দেশের বড় বড় বিদ্যাপীঠের সিলেবাস ভুক্ত। মহা সমারোহে বিদ্যাপীঠে অজাচার শিক্ষা দীক্ষা চলছে। কোন বিকার নেই সমাজের , আমাদের শিক্ষিত মানুষদের মাঝে।
এই কয়েকদিন আগে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের একটি বই পড়ছিলাম ।ইতিহাস আমাকে বার বারি টানে। তাই ইতিহাসের বই সংগ্রহ ও পড়া হবির মত দাঁড়িয়ে গেছে। পড়ছিলাম বাংলা সাহিত্যের একটি হারানো ধারা(১৭৬০-১৮৭০ )। লেখক মুহাম্মদ আবু তালিব ।
এটি পড়তে গিয়েই আক্কেল গুড়ুম । বাংলা সাহিত্যেও গ্রিক ধারার অজাচার সাহিত্য রচনা করার দুঃসাহস করেছে কোন লেখক ??
** আর সেটির নাম --পালাজুরের ইতিকথা
>রচনাঃ ৫ × ৪র্থ সাইজের হস্তলিখিত পুথি ।
>নামঃ ‘পালাজুরের ইতিকথা” ।
>রচনাকাল—১২৬৯ সাল = ১৮৬১ খ্রীঃ ।
>রচয়িতা—কহোর সরকার ।
**মূল কথাঃ
আধুনিক ও সভ্য সমাজে অজাচার সম্পর্ক ঘৃণ্য। এটি ধর্ম, প্রচলিত আইন ও সামাজিক মূল্যবোধ এই তিন মাপকাঠিতেই নিষিদ্ধ ও পরিত্যাজ্য বিবেচিত । ঈডিপাসের কাহিনি ও পালাজ্বরের ইতিকথা বাংলা সাহিত্যে কেন, একমাত্র প্রাচীন গ্রীক উপকথা ঈডিপাসের কাহিনী ব্যতীত, অন্য কোন দেশের সাহিত্যে এই ধরনের সাহিত্য রচনার দুঃসাহসের প্রয়াস কেউ পেয়েছেন বলে জানা যায় না | অবশ্য ঈডিপাসের কাহিনীর সঙ্গে এ কাহিনীর কিছুটা মিল থাকলেও এর চরিত্র-সূচি ও কাহিনী-বিন্যাসের পার্থক্য সুস্পষ্ট। ঈডিপাস রাজা হলে সে দেশের রেওয়ায মুতাবেক তাঁকে সে দেশের রাণীর সঙেগ বিয়ে দেওয়া হয় এবং এই রাণী ষে শিশুকালে
মাতৃপিতৃ-স্নেহচু্যত ঈডিপাসের ভাগ্য বিড়ম্বিতা জননী ছিলেন, তা না ঈডিপাস না তার জননীর জ্ঞানগোচরে এসেছিল। পরে দৈবনিবন্ধে পরিচয় উদঘাটিত হওয়ায় মাতা আত্মঘাতিনী হয়ে জীবনের জ্বালা নিবারণ করেন ।
ঈডিপাসও মাতার গাত্রাবাস থেকে সোনার কাটা খুলে নিয়ে নিজের দু'চোখে বিধিয়ে অন্ধ হয়ে যান ।গ্রীক নাট্যকার সফোক্লিসের বিশ্ববিখ্যাত Triology : The Three Theban plays (১) King Oedipus (২) Oedipus at Colonus এবং (৩) Antigone --এই তিন খণ্ডে সমাপ্ত
>>ইঈডিপাস নাটক ও অজাচার গল্প
কিং ইঈডিপাস নাটকটি লিখেছেন বিখ্যাত গ্রীক নাট্যকার সফোক্লিস। ট্রাজেডি নাটক রচনায় যার সুনাম সারা বিশ্বে সমাদৃত।
>>কিং ইঈডিপাস
থিবিসের রাজা লেয়াস এক দৈববাণী পেয়ে ভীত হয়ে তার শিশুপুত্র ঈডিপাস কে নির্জন পর্বতে ফেলে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন। কিন্তু রক্ষা পেল এডিপাস। স্থান পেল করিস্থের রাজার গৃহে। রাণী তাকে তার নিজের সন্তানের মত লালন পালান করলেন। ঈডিপাস যখন যুবকে পরিনত হল তখন তার বন্ধুদের মাধ্যমে জানতে পারল যে সে তাদের আসল ছেলে নয়।
ঈডিপাস তাই মনের দুঃখে করিস্থ ছেড়ে তার জন্ম স্থান থিবিস নগরীতে চলে আসলেন। কিন্তু ঈডিপাস জানতো না যে ইটিই তার জন্মভূমি। নগরীতে ঢুকে সে উত্তেজনা বসত কোন কারণে থিবিসের রাজাকে হত্যা করলো। এর পরে ভাগ্যবশত ঈডিপাস এক ভয়াল দানবীর এর প্রশ্নের জবাব দিয়ে এই রাজ্যের শ্রদ্ধাভাজন লোকদের একজন হলো। সে রাজ্যের এমন একজন হলো যে থিবিসের লোকেরা তাকে ঐ রাজ্যের রাজা বানাতে চাইল। একসময় তাই হল। রাজা হওয়ার পর প্রথানুযায়ী ঈডিপাস রাজা লেয়াস এর স্ত্রীকে বিয়ে করলেন। অবশ্য ঈডিপাস দস্যুদ্বারা নিহত তাই তার প্রিয়তমা সুন্দরী স্ত্রীকে ঈডিপাসের সাথে বিয়ে দিতে কেউ নারাজ হয়নি।
এদিকে ঈডিপাস রাজা হওয়ার পর দেশে ভয়াল মহামারী দেখা দিল। ঈডিপাস তখন দেশের অবস্থা জানার জন্য এক অন্ধ্য জ্যোতিষী ট্রেসিয়াস এর কাছে গেল। জ্যোতিষী তখন রাজা এডিপাসকে জানালো। থিবিসে পুর্বে যে রাজা ছিল তাকে যে খুন করেছে সে এখন এই রাজ্যেই আছে। এবং একথাও সত্য যে সে রাজা লেয়াসকে হত্যা করে তার প্রিয়তমা স্ত্রী জোকাস্টাকে বিয়ে করে সংসার করছে। আর এই কারণে এ রাজ্যে দূর্ভিক্ষ্য দেখা দিয়েছে। রাজা ঈডিপাস এর কারণ জানতে চাইলে জ্যোতিষী বলেন যে রাজা লেয়াসের স্ত্রীকে বিয়ে করেছে সে আর কেউ নয় তারই গর্ভের সন্তান। আর তিনি হচ্ছেন আপনি। থিবিসের নতুন রাজা ঈডিপাস।
ঈডিপাস জ্যোতিষীর কথা শুনার পর ভাবল তার শালা ক্রেয়ন ষড়যন্ত্র করে তার উপর জঘন্য অপবাদ চাপিয়ে তাকে সিংহাসনচ্যুত করার জন্য জ্যোতিষীকে এসব কথা বলাচ্ছে। কিন্তু এডিপাস তার জন্ম রহস্য খোঁজ করে জানতে পারে এ রাজ্যে প্রবেশকালে সে যাকে হত্যা করে সেই ছিল থিবিসের আগের রাজা লেয়াস। ঈডিপাস এর জন্মদাতা পিতা । আর ঈডিপাস যাকে বেয়ে করেছে সেই স্ত্রীই তার গর্ভধারীনী মা ।
এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর তার প্রিয়তমা স্ত্রী মানে তার মা লজ্জায় আত্ম হত্যা করে। আর ঈডিপাস নিজেই মাতার গাত্রাবাস হতে সোনার কাঁটা খুলে নিয়ে নিজের চোখ দুটি অন্ধ করে দেয়। এই ছিল কিং ইঈডিপাস নাটকের সারকথা।
>>সফোক্লিস (খ্রিস্টপূর্ব ৪৯৭/৪৯৬, – খ্রিস্টপূর্ব ৪০৬/৪০৫)
সফোক্লিস সবচেয়ে বিখ্যাত তিনজন প্রাচীন গ্রিক নাট্যকারদের একজন, যাঁদের লেখা নাটক আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। অন্য দুইজন হলেন এসকাইলাস এবং ইউরিপিদেস। তাঁর লিখিত বিভিন্ন ট্র্যাজেডি বা বিয়োগান্ত নাটক, যেমন ''আন্তিগনে'' বা ''রাজা অয়দিপাউস'' আজও মঞ্চে অভিনীত হয় এবং সারা পৃথিবীতেই এই নাটকগুলি অত্যন্ত জনপ্রিয়।
এথেন্স নগর রাষ্ট্রে খ্রিষ্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর যে নাট্য প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হত, প্রায় ৫০ বছর ধরে সেই প্রতিযোগিতায় বিয়োগান্ত নাটকের ক্ষেত্রে জনপ্রিয়তম স্থানটি ছিল তাঁর জন্য বরাদ্দ। যদিও তিনি তাঁর জীবদ্দশায় সম্ভবত ১২৩টি নাটক রচনা করেছিলেন, আমাদের হাতে তার মধ্যে মাত্র ৭টি পূর্ণাঙ্গ অবস্থায় এসে পৌঁছেছে। এগুলি হল - ''আয়াক্স'', ''আন্তিগনে'', ''ত্রাখিসের মহিলারা'', ''রাজা অয়দিপাউস'', ''ইলেকট্রা'', ''ফিলোকতেতেস'' ও ''কলোনাসে অয়দিপাউস''। এছাড়াও তাঁর লেখা অনেকগুলি নাটকের কিছু কিছু অংশ পাওয়া গেছে।
আঙ্গিক হিসেবে নাটকের বিকাশের ক্ষেত্রে সফোক্লিসের অবদান অনস্বীকার্য। তাঁর লেখা নাটকেই আমরা প্রথম কোনও তৃতীয় চরিত্রের দেখা পাই। তাছাড়া কোরাসের ভূমিকাও তিনি সংকুচিত করেন। তাঁর লেখা নাটকে নাটকের ঘটনাবলী বর্ণনার ক্ষেত্রে কোরাস তার আগের গুরুত্ব অনেকটাই হারিয়ে ফেলে। নাটকে তাঁর চরিত্রগুলিও পূর্ববর্তী নাট্যকারদের তুলনায় অনেক বেশি বিকশিত।
>>জীবন ও কর্ম
সফোক্লিস ছিলেন আইসখুলোসের বয়ঃকণিষ্ঠ সমসাময়িক, এবং এউরিপিদিসের বয়ঃজ্যেষ্ঠ সমসাময়িক। তিনি আথিনা'র দেয়ালের বাইরে অবস্থিত কোলোনুস নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন, যেখানে তার বাবা, সোফিলুস, একজন ধনী অস্ত্র নির্মাতা ছিলেন। সফোক্লিস নিজে বেশ ভালো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা পেয়েছিলেন। তার দৈহিক সৌন্দর্য্য, ক্রীড়া নৈপুণ্য, এবং সঙ্গীতে পরদর্শীতার কারণে তিনি ৪৮০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, ১৬ বছর বয়সে, সালামিস এর নৌ-যুদ্ধে পারসিকদের বিরুদ্ধে নিরঙ্কুশ বিজয় উদ্যাপনের জন্য আয়োজিত পিয়ান (ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে বৃন্দগীতি) এর নেতৃত্ব দেয়ার জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। সফোক্লিসের নাগরিক জীবন সম্পর্কে প্রাপ্ত তুলনামূলক অপর্যাপ্ত তথ্য থেকে ধারণা জন্মে যে, তিনি জনগণের প্রিয়পাত্র ছিলেন, গোষ্ঠীগত কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করতেন এবং অনন্যসাধারণ শৈল্পিক গুণে গুণান্বিত ছিলেন। ৪৪২ পূর্বাব্দে তিনি দিলিয়াকি লীগে আথিনা'র অধীনস্থ মিত্রদের কাছ থেকে পাওয়া সম্মাননামূলক অর্থ গ্রহন ও ব্যবস্থাপনার কাজে নিয়োজিত কোষাধ্যক্ষদের একজন হিসেবে কাজ করেন। ৪৪০ পূর্বাব্দে, তার বয়ঃকণিষ্ঠ পেরিক্লিসের সাথে, ১০ জন স্ত্রাতিগস (সেনাবাহিনীর দায়িত্বে নিয়োজিত উচ্চপদস্থ নেতৃস্থানীয় কর্মকর্তা) এর একজন হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর সম্ভবত আরো দুইবার সফোক্লিস স্ত্রাতিগস হিসেবে কাজ করেছিলেন।
>>‘পালাজুরের ইতিকথা”।
*রচনাঃ ৫ × ৪র্থ সাইজের হস্তলিখিত পুথি ।
*নামঃ ‘পালাজ্বরের ইতিকথা” ।
*রচনাকাল—১২৬৯ সাল = ১৮৬১ খ্রীঃ ।
*রচয়িতা—কহোর সরকার ।
*সাং/গ্রামঃ জএপুর, পরগণে, দেওড়া অথবা দেওয়া । জেলার নাম উল্লিখিত হয়নি ।
**খুব সম্ভব লেখক রংপুর অথবা দিনাজপুর এলাকার লোক । কেননা পুঁথি রংপুর জিলার পীরগাছা থানার এবং জানা যায়, দিনাজপুর জেলার চিরির বন্দর থানার এলাকাধীন এক ‘দেওড়া’ পরগণা অদ্যাবধি বিদ্যমান । কিছুদিন আগেও এই পরগণায় জএদেবপুর নামে একটি গ্রাম ছিল । গ্রামটি বর্তমানে 'যদুপুর’ নামে পরিচিত। তবে কি ‘জএদেবপুর কোনদিন 'জএপুর’ নামে পরিচিত ছিল ?
আবার বগুড়া জেলার আদমদীঘি থানাতেও এক বিখ্যাত প্রাচীন দেওড়া নামে নগরীর ধ্বংসাবশেষ বিদ্যমান । কে জানে, এখানেই কহোঁর সরকারের বাড়ী ছিল কিনা।
পুঁথির নকলকারী টুলু মণ্ডলের বাড়ীও ছিল 'দেওড়া’ পরগণার লক্ষীপুরে । নকলকারীর ভাষায় তাঁদের পরিচয় ও ঠিকানা নিলুরূপঃ
*লিখক কহোর সরকার
*সাং জএপুর পরগণে দেওড়া
*টুলু মণ্ডল সাং লক্ষীপুর
*পরগণে দেওড়া সবে পুঁথি
*লিখুক(লিখার) সন ১২৬৯ সাল ( - ১৮৬২ খ্রী: )
*নকল ১২৯০ সালঃ তারিখ প্রথোম ফালগুন মাস ৷ ”
>>কাহিনী সংগ্রহের ইতিহাসঃ
*লেখকের ভাষায়--- (বাংলা সাহিত্যের একটি হারানো ধারা(১৭৬০-১৮৭০ )লেখক-- মুহাম্মদ আবু তালিব )
---কাহিনীটি সংগ্রহে আমাকে সাহায্য করেছেন আমার রংপুর কারমাইকেল কলেজের প্রাক্তন ছাত্র নাসিরউদ্দীন আহমদ । তারই স্বগ্রাম নিবাসী কাজী নূরউজ্জামানের কাছ থেকে তিনি আমাকে কতিপয় প্রাচীন পুঁথির অনুলিপি ও সঙ্গে কতিপয় প্রাচীন ছিন্নপত্র সংগ্রহ করে দেন ( ১৯৬১ সালের ডিসেম্বর মাসে ) । এই ছিন্ন পত্রের স্তুপ থেকেই সম্প্রতি আলোচ্য ‘পালাজুরের ইতিকথা” কাহিনীটি উদ্ধত হয়েছে।
আজ এ-কথা ভাবতে সত্যিই আশচর্য বোধ হচ্ছে যে, এমন একটি মূল্যবান দলীল আমার নিকট থাকা সত্ত্বেও গত তিন-চার বৎসরের মধ্যেও তা আমার নযরে পড়েনি । কি করে আজ হঠাৎ আমার নযরে এলো সেও এক মজার কাহিনী ।
১৯৬১ সাল ৷ শীতের প্রারম্ভ । পীরগাছা থানার এলাকাধীন শিবদেব গ্রাম নিবাসী আমার স্নেহাস্পদ ছাত্র নাসিরউদ্দীন আহমদ তাদের খাসিয়ারবাড়ী হাই স্কুলের বাষিক মিলাদ মাহফিলের জন্য দাওয়াত দিতে এল । বলা বাহুল্য, নাসিরউদ্দীন উক্ত স্কুলেই শিক্ষকতা করে । ব্যক্তিগত কারণে আমি যেতে আপত্তি জানালে সে আমাকে প্রাচীন পুঁথির প্রলোভন দেখাতে শুরু করল । কারণ ছাত্ররা তাদের উস্তাদের প্রকৃত দুর্বলতার কথা জানে । বলা বাহুল্য সে প্রলোভন এড়ানো আমার পক্ষে সম্ভব হল না। যতদূর মনে হচ্ছে আমার শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক ও তৎকালীন সহকমী জনাব গোলাম রসূল সাহেবও উক্ত সভায় আমার সঙ্গী হন ।
এই সভা উপলক্ষে গিয়ে আমি সত্যি সত্যিই লাভবান হই এবং পনের শতকের কবি মুহম্মদ কালার নিজাম পাগলা’র একখানি প্রাচীন পুঁথি ও আঠারো শতকের কবি তাহির মাহমুদের ( কৃষ্ণ হরি দাসের নামে প্রচলিত ) একখানি সত্যপীরের পুথির অনুলিপিসহ কতিপয় অতি মূল্যবান প্রাচীন পুঁথির সন্ধান পাই । এই পুঁথিপত্রের ছিন্নপত্রের মধ্যে আলোচ্য কাহিনীটির সন্ধান মিলেছে । এই ছিন্নপত্রগুলির মধ্যে কিছু দুর্বোধ্য মন্ত্র-তন্ত্র ও কবিরাজী গ্রস্থেরও কিছু কিছু অংশ আছে। এগুলি আগে বিশেষ মূল্যবান বলে মনে না হওয়ায় একটি বাণ্ডিল বেঁধে আমার প্রাচীন পুঁথিগুলির সঙ্গে রেখে দিয়েছিলাম । এই বাণ্ডিলটির কথা এতদিন বেমালুম ভুলে গিয়েছিলাম , সম্প্রতি স্মরণে এসেছে । স্মরণে আসার অবিশ্যি একটি কারণও সম্প্রতি ঘটেছে ।
রাজশাহীর হযরত শাহ মখদুম সাহেবের জীবন-কাহিনী সংক্রান্ত প্রাচীন গদ্য গ্রন্থখানি আবিষ্কারের পর থেকে মুসলিম বাংলা গদ্যের যে প্রাচীন ধারার সন্ধান মিলেছে, তার পূর্ণ পরিচয় উদ্ঘাটন করার প্রাথমিক প্রচেস্টা হিসেবে এই এলাকায় অন্য কোন সমসাময়িক কালের গদ্য রচয়িতার সন্ধান মিলে কিনা, এই উদ্দেশ্যে খোঁজাখুজি করতে গিয়ে বর্তমান কাহিনীর সন্ধান মিলেছে। সাহিত্যের ঐতিহাসিকদের কাছে এর মূল্য কিরূপ হবে জানিনে, তবে এ থেকে আমাদের এ বিশ্বাস দৃঢ় হয়েছে যে, উপযুক্ত অনুসন্ধান ও গবেষণার মাধ্যমে মুসলিম বাংলা গদ্যের সেই লুপতপ্রায় প্রাচীন ধারাটির আবিষ্কার অচিরেই সম্ভব হবে ।
>>কাহিনী সংক্ষেপঃ
কুলীন ব্রাহ্মণ, ব্রাহ্মণপত্নী, এক চণ্ডাল ও তাদের ছোট দুই পুত্র এদের নিয়ে কাহিনী ।
কুলীন ব্রাহ্মণ তার কৌলিন্য রক্ষার্থে ভিন্ন দেশে গিয়ে বিয়ে করে । এক চণ্ডাল তার প্রিয়তমা পত্নীকে যাত্রাপথ থেকেই অপহরণ করে তার কৌলিন্যের প্রতি চরম আঘাত হানে । অসহায়া নারী এই চরম অবমাননা সহ্য করেও চণ্ডালের গৃহবাস করতে বাধ্য হয় । চণ্ডালের ঔরসে তার দুটি পুত্র-সন্তানও জন্মে ।
পরে চণ্ডালের অবর্তমানে মায়ের মুখেই নিজেদের জন্মকথা শুনে ব্রাহ্মণীপুত্রদ্বয় ক্ষোভে দুঃখে গৃহত্যাগ করে ।
এদিকে ব্রাহ্মণী উপায়ান্তর না দেখে ভিক্ষাবৃত্তি গ্রহণ ক’রে দ্বারে দ্বারে ফিরতে লাগল। এভাবে ভিক্ষা করতে করতে একদিন এক ভিনৃদেশী গৃহস্থের বাড়ীতে হাযির হ’ল । গৃহস্থেরা দুই ভাই ব্রাহ্মণীর রূপগুণ দেখিআ দুইজন ভিখারিণী রাপিণী ব্রাহ্মণীর রূপে মুগ্ধ হয়ে নিজ গৃহে দাসীরাপে তাদের বাড়ীতে অবস্থানের আহবান জানায় ।
ব্রাহ্মণী নিজের অসহায় অবস্থা হতে( ভিক্ষাবৃত্তি হতে) কুলীন গৃহস্থের বাড়িতে দাসিরুপে থাকা অধিক সম্মানের বলে থেকে যায়।
পারে,—দাসীর সঙ্গে নবীন গৃহস্থদ্বয়ের অবৈধ যৌন সম্পর্ক স্থাপিত হয় । এবং দুর্ভাগ্যক্রমে এই দাসীই ছিল তাদেরই গর্ভধারিণী জননী। গল্প লেখকের ভাষায় ; "মায়েক না চিনিআ রসত কর্ম করিতে লাগিল ।
ব্রাহ্মণী কি জানত যে, এই নবীন গৃহস্থদ্বয় তারই গর্ভজাত ?
পরে এ কাহিনী প্রকাশিত হওয়ায় ক্ষোভে, দুঃখে, লজ্জায় সন্তানসহ জননী মরমে মরে যায় । ধর্মরাজের আদেশে তারা ত্বরব্যাধিরাপে মানব দেহে পুনর্জন্ম লাভ করে আজীবন প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করছে। সংক্ষেপে এই হল কাহিনী ।
কাহিনী শেষে অবশ্য তাদের কাছ থেকে এরূপ প্রতিজ্ঞা করিয়ে নেওয়া হয়েছে যে, তাদের এই মর্মান্তিক জীবন-কথা বলার পর যদি কেউ ধর্মের দোহাই দেয়, তবে অবিশ্যি অবিশ্যি তাদেরকে রোগী দেহ ছেড়ে যেতে হবে।
এই জ্বরকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে, যথা——
১. তেহাই জ্বর ( তিন দিন অন্তর একদিন )
২. একজ্বর ( একদিন অন্তর একদিন )
৩. রাহাজ্বর ( আবিরাম জ্বর ) ।
এইরূপ পালাক্রমে জ্বর আসার নাম ‘পালাজ্বর’ ।
কাহিনীটি যে জ্বর বিতাড়নের মন্ত্ররুপে রচিত হয়েছে, তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই। বিশেষ ক’রে শেষ ভাগের নিলিখিত উক্তিটি থেকে এরূপ অনুমান হয়ঃ
“প্রথম রবিবার পালি হৈতে তি (ন) বার কহি এহি মন্ত শুনাবেক । পালিজ্বর তেহাই জ্বর আহা জ্বর একজর ধর্ম ঠাকুর বলে জাও বেটা দুর হও দুর হও ।”
>>মূল কাহিনী পালাজ্বরের ইতিকথাঃ
এক দেশে এক ব্রাহ্মন ছিল । তাহার বিভাও নাহি হএ(হয়নি) । বিভাএর কারনে আর দেশে গেল । তাহা যাইআ (সেখানে যাইয়া)এক ব্রামন কুলীন দেখিতা তাহার কন্যাক বিভাও করিতা বছর দিন সেহিখানে থাকিল । পরে বিদাএ হইআ ওহার তিরিকে (স্ত্রীকে) সসুর আলএ রাখিল । ব্রাহ্মন তখন য়াপন(আপন) দেশে চলিআ গেল। কতেক দিন পরে ব্রামোনের সমরণ হইল । দুই এক বছর পরে পরমান লইআ য়াপন সসুর আলএ ব্রামন গেল চলিআ । য়াপন ত্রিকে (স্ত্রীকে) লইয়া গমন করিল । তাহাতে গতের(পথের) মাঝে মাএআ নদী (মায়া নদী ) হইল । সেহি নদী দেখি বাপু বড় গহীন । নওকা নাহি ব্রামোন ভাবে মনে । অকস্মাত ভাঙ্গা নওকা লইআ এক চাণ্ডাল ঘাটে আইল চলিআ , তাহাকে দেখিআ বলিতে লাগিল , এহি দুই জনা বাপু পার করহ আমারে । চাণ্ডাল বলে বাপু আমার ভাঙ্গা নাও । কিরুপে করিব পার দরিতা, দুইজনা বিনে তিনজনা নাহি ধরে ।
কিরূপে পার করি বল মোরে ।
ব্রামন বলে আমি বলি তোরে ।
একে একে পার করহ আমারে ।
এ কথা শুনিআ চণ্ডাল খোশ হৈল
আগে ব্রামনোক পার করিতে লাগিল ।
ওপারে ব্রামোনোক থুইয়া উত্তর মুখে নওকা চণ্ডাল দিলোগো ছাড়িআ । এখানে আসিয়া ব্রাহ্মণীকে নওকাতে লইআ দখিন দিকে নাও দিলেগো ছাড়িআ । দশ পোহরে রোজে (র) পথ লইআ গেল । অন্য দেশেতে ব্রাহ্মণীকে উপরে তুলিল। সেহিখানে চাণ্ডাল বান্ধিল বাড়ীঘর । তথাতে দুইজন থাকিল
বিস্তর(বিস্তর দিন) । এহিরূপে তথাতে থাকিল । তাহাতে দুই বাল্পক হৈল । বড় পুত্রের নাম শ্রীধর থুইল । ছোট পুত্রের নাম শ্রী রাখিল। দুইটি পুত্র দিনে দিনে শিয়ানা হৈল । কতে নে পর ছাল ( ছাওয়াল ) দুইটি পাথির ( পাঠপালা ) জাএ । বাখানি শুনিয়া শ্ৰী গুরুর কাছে পড়িতে রাএ ( থাকে ) এহিমতে দুই ভাই লাগিল পড়িতে । একদিন ঝগড়া হৈল সরকারের সাথে । কোর্দ্ধ (ক্রুদ্ধ) হৈয়া সরকার বোলে তক্ষনে জারুআজাদ (অবৈধ সন্তান) বেটা ও ত্রিভুবনের ধরম ৷ এহি কুবচন গুরুর কাছে শুনি ব্রামণীর কাছে আইল কান্দিআ । কান্দিতে তখন থির(স্থির) করিল মন । কহিতে লাগিল এহি বিবরন । শুন শুন মাও তুমি আমার বছন। জারুআ (অবৈধ সন্তান) কেমন আমরা কহো এহিখন । এহি বিস্তাস্ত(বিত্তান্ত) জদি না বলিবে আমার তরে প্রাণ বদ্ধ(বধ) করিব আজি তোমার উপরে । নহে তুমি বোল আমার গোছর। শুনিআ এ বদ্ধ দিব চিত্তের ভি(ত)র ।
ইহা শুনিআ ব্রামনী চিতে ভএ পাইল ।
শ্রীধর করিআ কথা কহিতে লাগিল ।
স্নান করিয়া আগে রন্ন(অন্ন) করোহ ভোজন ।
পচ্ছাত কহিব আমি সব বিবরণ।
ছাওলি দুইটি বোলে তবে করিএ ভোজন ।
সত্য করি কহ বলিব জারুআ বিবরণ ।
ব্রামনী তখন এক সত্য দুই সত্য তিন সত্য করিল।
চান করি দুই ভাই ভোজন করিল ।
দুই ভা(ই) বোলে কহ মা আদ্যের কথা
ব্রামনী শুনিয়া তবে হেট করিল মাথা ।
ছাওয়ালের জিদ্যে (জিদে)সহিতে না পারিল তখন । বলিতে লাগিল জত আদ্যের কথা
ইহা শুনি দুই ভাই মিত্তু (মৃত্যু) কল্প হইল ।
মাও তেগ করি দুইজন দেশান্তরে গেল ।
এথায় ব্রামনী একস্ক(একাকী) হইয়া ।
ভিক্ষা করি খাঞ(খায়) মাগিয়া ।
তাহারা দুই ভাই অন্যদেশে গেল ।
সেই দেশে যাইয়া গিরস্তি করিতে লাগিল ৷৷
এথা ব্রামনী ভিক্ষা করি থাইতে পাঁচ সাত বছরে গেল তাহার বাড়ি । ব্রামনীর রূপগুণ দেখিয়া দুইজনে বলিতে লাগিল কথা তাহার সদনে । মাগিয়া খাইয়া বেড়াও ।
দাসীপোনা করিয়া খাও আমার অন্দরে ।
পরিছএ নাহি ব্রামনী থাকিল সেহিখানে ।
দাসীপোনা করিয়া থাকে তাহার সদনে ।
এহিরূপে কতদিন খেদমত করিয়া রহে । দুই জনার গাএ তৈলব দিয়া নিবাদিবা করে । মাএক (মাকে) না চিনিঞা রসত(অসৎ) কর্ম করিতে লাগিল । তাহার সহিত কতেক দিন এহিরাপে গেল ।
একদিন শ্রীধরের পাএ তৈলব দিতে লাগিল । শ্রীধরের পাএ এক দাগ চিন্য ছিল । তাহা দেখি ব্রাহ্মণী কান্দিতে লাগিল । কোরোন্দন(ক্রন্দন) সুনিঞা শ্রীধর পুছিতে লাগিল। আমারে বোল তুমি কান্দ কি কারণ । সমাচার কহ আমার সদন । রন্য(অন্ন) বস্ত্ৰ জন্ত (যত) লাগে সকলি দেই আমি । কি কারণে কান্দ তাহা কহ তুমি । ব্রাহ্মণী বোলে আমার দসার সহিত দুইটি ছাওয়াল ছাড়ি আইলাম অন্য দেশান্তরে। বড় পুত্রের নাম শ্রীধর ছোট পুত্রের নাম শ্রী ছিল । শ্রীধরের পাএ নিরশানি ছিল। না জানি পুত্র আমার কোন দেশে গেল। মিত্তু(মৃত্যু) হইল কি আছে পুনৰ্ব্বার দেখা না হইল। এহি কারন কান্দি আমি । শ্রীধর পুছিল তোমার বড় পুত্রের নাম কি শুনি । বড় পুত্রের নাম শ্রীধর ছোট পুত্রের নাম ছিরি ছিল। তাহা শুনি তিনজন কান্দিতে লাগিল । ক্রান্দোন করিআ তিনজনে যুক্তি করিল থির । এত বড় মোহাপাপের কি রূপাএ করিব । যুক্তি ঠাহরিল জে ধর্মের বাড়ী জাই । তাহার পাশে বিধি লইয়া মোহাপাপ খণ্ডাই ।
এহি কথা তিনজনে চিত্যে ( চিন্তে ) ভাবিয়া । ধর্ম ঠাকুর বাড়িত উতরিল জাইয়া ।
তথা জাইআ তিনজনে রহিল। এক দুই করি তথা তিন রোজ থাকিল । ইহা শুনি ধর্ম ঠাকুর শ্রীধরের কাছে আইল । কি কাছে আইলে তোরা পুছিতে লাগিল । ইহারা আপনকার সমাচার কহিতে লাগিল। ধর্ম ঠাকুর পলে তোমার এ পাপ খণ্ডন না হইল ।
ইহারা বোলে ঠাকুর কুকর্ম করিব । এরূপে এ পাপ ভখন করিব । সেহি রূপাএ(উপায়) আমাক কহি দেহো । ধর্মরাজ শীধর তুমি তেহাজর(তেহাজরে অর্থাৎ তিনদিন বাদে একদিন জ্বর হওয়া ) হও । তি'রাজ মধ্যে তুমি এক রোজ লোকোকে ধরিবা । ধরিআ কষ্টজাত নাসির পীড়া দিবা । জখন ধরিবা তখন এক চোঙ্গা রক্ত খাইবে । জখন ছাড়ি জাইবা জখন দুই চোঙ্গা রক্ত সঙ্গে নেবা ।
ছোট পুত্র শ্রী তুমি একজ্বর (একজ্বর-একদিন বাদে একদিন) হও । এক রোজ লোকোখে ধরিও। জখন ধরিবা তখন এক চোঙ্গা রজ্ঞ সঙ্গে নেবা ।
তোর মাও রাহা(রাস্তা অথবা রাহা উত্তর বঙ্গীয় ভাষা) জ্বর হৈবেক ।
তিন জনে তোরা এহিরূপে বেড়াবেক ।
ইসক(এসব ) কথা আদ্যপুনত্তি (আদ্যোপান্ত) জেবা কহিবেক ।
এক দণ্ড তাহার কাছে না রহিবেক ।
এহি কথা তিন জনে সইত্যে(সত্য)করহো ।
নাকে ভারা তিন জনে দেহো ।
আদ্যে বুলাউ কথা কহে আমার নাম লহে
তাহার নিকট না জাবা ।
ইহা শুনিআ তিন জনাতে নাকে ভারা (খত) দিল ।
তিন জনাতে ধর্মের কাছে সত্য করিল ।
এক সত্য দুই সত্য তিন সত্য করিলাম তোমারে সাক্ষাতে
এহি সত্য অন্যথা করি ।
রিদয় (হৃদয়) ফাটিয়া প্রাণে মরি।
এক সত্য করি নাকে ভরা দিল । তিলেক এহি কথা আমার দিনে কহি
বেক । ধর্মরাজ ঠাকুরের নাম জেবা লৈবেক । তাহার নিকট তিলেক এক ঘড়ি না রহিবেক ।
সূত্রঃ
১।উইকিপিডিয়া
২।বাংলা সাহিত্যের একটি হারানো ধারা(১৭৬০-১৮৭০ )লেখক-- মুহাম্মদ আবু তালিব ।
৩।প্রভাস চন্দ্র সেন,--বগুড়া জেলার ইতিহাস, ২য় সংখ্যা ( বগুড়া, ১৩৩৫ - ১৯২৯ ঈ ) পৃঃ ৮২ ৷
৪।কলমী পুথি, শেষ পৃষ্ঠা।
বিষয়: বিবিধ
৫১৪৩ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন