মুসলিম হিসেবে আমাদের গর্ববোধ
লিখেছেন লিখেছেন গোলাম মাওলা ২৩ জুলাই, ২০১৬, ০১:৪৫:৩১ দুপুর
মুসলিম হিসেবে আমাদের গর্ববোধ
--------------;---------------------------------
১.তৃতীয় বিশ্বের নাগ্রিক হিসেবে আমরা যত না গর্ব অনুভব করি তার চেয়ে বেশি (আমার মনে হয়)
আব্দুস সালাম নোবেল পাওয়াতে আমরা মুসলিম হিসেবে গর্ব অনুভব করি। অথচ অধ্যাপক সালাম ছিলেন আহমদিয়া সম্প্রদায়ের মানুষ।
২.একই কথা খাটে পাকিস্তানের প্রথম পররাষ্ট্র মন্ত্রি ও আন্তর্জাতিক আদালতের সাবেক বিচারপতি জাফরুল্লা খান সম্পর্কে। তিনিও ছিলেন আহমদিয়া সম্প্রদায়ের মানুষ।
** মজার বেপার হল ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাব ( যার ভিত্তিতে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল) এর আসল রচিয়তা ছিলেন জাফরুল্লাহ।অথচ নিয়তির কি আশ্চর্যকথা পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম গভর্নর জেনারেল জিন্নাহর মৃত্যুর পর জানাজায় জাফরুল্লাহ শরিক হতে পারেনি, কাদিয়ানী হওয়ায়।
৩.বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিঙ্গানী ইবনে সিনা ইসলামের ব্যহ্যিক আচার অনুষ্ঠান মেনে চললেও কেয়ামতের পর কবর থেকে মানুষের শারীরিক পুনরুত্থানের তত্তে বিশ্বাসী ছিলেন না। এ ছাড়া বেহেশতের সুখ বা দোজখের শাস্তি বিষয়ে কোরান বা হাদিসের বর্ণনা তিনি বিশ্বাস করতেন না। আর এই জন্য তাকে কারাভোগ ও দেশত্যাগ করতে হয়েছিল।
৪.আরেক বিশিষ্ট পন্ডিত ইবনে রুশদ কোরানের বিবরন কে আক্ষরিক অর্থে নয় রুপক অর্থে গ্রহনের কথা বলেছিলেন।
আর এর ফলে তাকে তার সময়ে সবচেয়ে বড় মোনাফেক ও নাস্তিক হিসেবে তাকে আখ্যা দেওয়া হয়েছিল এবং তার পুস্তকাদি পুড়িয়ে ফেলার আদেশ জারি হয়েছিল। এ ছাড়া তাকে চাকুরী চ্যুত ও নির্বাসন দেওয়া হয়েছিল।
৫. আব্বাসিয় খলিফা আল মামুনের আমলে একটি মতবাদ উদ্ভব হয়েছিল, খলিফা নিজে এই মতবাদের অনুসারী ছিল, মতবাদটি হল --- মুতাযিলা।
অথচ আমরা নিজেরা এদের নিয়ে গর্ব বোধ করি, বুক ফুলিয়ে বলি এদের কথা।
তো কি দাখলাম --- আমাদের নিজেদের বিপরিত মুখিতা ও আমাদের মৌলবাদীদা একে অপরের সাথে সাংঘারর্ষিক বিশ্বাস পোষণ কেন যেন আমাদের পিছিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং মুনাফিকি চরিত্র গোটা মুসলিম সমাজে জাকিয়ে বসেছে।
বিষয়: বিবিধ
১২৩৯ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
রাসুলুল্লাহ সঃ এর উম্মাহর ৭৩ ভাগ (কিংবা অসংখ্য ভাগ) এ বিভক্ত হওয়া সংশ্লিষ্ট হাদীসদ্বয় পড়লে যে বিষয়টি প্রতীয়মান হয়, তা হলঃ
১। এটা একটা স্বাধীন স্টেইটমেন্ট যেখানে রাসুলুল্লাহ সঃ প্রিডিক্ট /ফোরকাস্ট করেছেন যে ভবিষ্যতে একটা সময় আসবে (যা সম্ভবতঃ ইতোমধ্যে এসেছে) ওনার উম্মাহ (কোরান ও সুন্নাহ অনুসারী তথা কলেমার অনুসারী) ইয়াহুদী ও খৃষ্টান অপেক্ষা অধিক ভাগে বিভক্ত হবে। এ বিভক্তির কারনে মুসলিমদের এক বিরাট অংশ বিভিন্ন নামে নিজেদের আইডেন্টিফাই করবে, নিজ নিজ গ্রুপকে অধিক ভালবাসবে, বন্ড অনুভব করবে, অন্য মুসলিম গ্রুপ অপেক্ষা নিজের নিজের গ্রুপের ভাইবোনদের প্রেফারেন্স দেবে ইত্যাদি।
২। আর দ্বিতীয় অংশে যা প্রতীয়মান হয় - তা মূলতঃ আর একটি ইন্ডিপেন্ডেন্ট বা স্বাধীন স্টেইটমেন্ট। প্রথমটির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত নয়, ইনডাইরেক্টলী সম্পর্কযুক্ত।
এই স্টেইটমেন্ট এ রাসুল সঃ বলছেন, ওনার উম্মাহর এক অংশ জান্নাতবাসী হবে যারা সব কিছুর উপর (সংগঠনের গঠনতন্ত্র, লিডার, শায়খ, পীর, ফেরকা, মাজহাব ইত্যাদি) কোরান ও সুন্নাহকে প্রাধান্য দেবে - অনুসরন করবে। আর অন্য অংশ (যা সরাসরি উল্লেখ হয়নি কিন্তু অনুভব করা যায়) জান্নাতবাসী হবে না কারন তারা বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত মতামত (অপেনিয়ন) কে কোরান ও হাদীসের উপর প্রাধান্য দেবে। তারা তাদের লিডার এর কথা, শায়খ এর কথা, পীরের কথা, সংগঠনের কনস্টিটিউশান কিংবা রুলস কে কোরান ও হাদীসের উপর স্থান দেবে। এর মানে এই নয় যে তারা কোরান ও হাদীস কে অস্বীকার করবে। তারা স্বীকার করবে কিন্তু ইন রিয়ালিটিতে কোন বিষয়ে দ্বণ্ধ উপস্থিত হলে তারা কোরান ও হাদীসকে সেকেন্ড বিবেচনায় নিয়ে নিজের সংগঠন ও লিডারকে প্রথম বিবেচনায় নিবে।
স্বভাবতঃই আমরা আজ দেখি - কোন পীর, সংগঠন, আকিদা কিংবা মাজহাব ফলোয়ারকে যদি কোরানের আয়াত কিংবা হাদীস দেখিয়ে বলা হয় - আপনি ঐ কাজটি যা করলেন তা কোরানের এই আয়াত কিংবা ঐ হাদীসের সাথে কন্ট্রাডিক্টরী, শির্ক সমতুল্য - তখন ফলোয়ারদের কেউ কেউ তা মানতে চান না, এক্সপ্ট করতে অস্বীকার করেন - কারন তা তার শেখ, লিডার কিংবা সংগঠনের সাথে দ্বান্ধিক।
সিমিলারলী আহলে কোরান কিংবা ওহাবী, সালাফি কিংবা সুফী, কিংবা সুন্নী, শিয়া, জামায়াত কিংবা তাবলীগ কিংবা মাজহাবি ইত্যাদি শত শত বা হাজারো ভাগে, নামে ও টাইটেলে বিভক্ত মুসলিম দের এক ক্ষুদ্রাংশ কোরান ও হাদীসের উপর তার সংগঠন, আইডেন্টিটি কিংবা লিডার, শায়খকে প্রাধান্য দিচ্ছে অন্যদিকে মেজরিটি কোরান ও হাদীসের কাছে মাথা নত করছে।
আল্লাহ ভাল জানেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন