ভৌগলিক মানচিত্র ও অন্যান্যঃ ( পাঠ দুই)

লিখেছেন লিখেছেন গোলাম মাওলা ০৪ মে, ২০১৬, ০৯:৫৫:১০ সকাল

ভৌগলিক মানচিত্র ও অন্যান্যঃ ( পাঠ দুই)

>প্রথম পাঠের লিংকঃ

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1093550237379567&id=100001738021664

http://www.bdeditor.net/blog/blogdetail/detail/6613/gmakas/76227#.Vyk1T3AYYuo

>>প্রাচীন ভারতের পবিত্র গ্ৰন্থ ‘বিষ্ণু-পুরাণ'-এ এক মহাদেশ সম্পর্কে তাৎপর্যপূর্ণ বর্ণনা রয়েছে। বলা হয়েছে ‘মহাদেশের টে। স্থল ভাগ, নর্থপোলের পাদদেশে তার অবস্থান, দুই স্থলভাগের আকৃতি ধনুকের মতো এবং এই মহাদেশের সম্মুখভাগে রয়েছে দুধের সাগর ।”

>>বর্ণনা শুনে মিথলজিক্যাল ননসেন্স মনে হতে পারে। কিন্তু আসলে তা নয়। বরং আমেরিকা মহাদেশের সঙ্গে এই বর্ণনার মিল লক্ষ্যণীয়। আমেরিকার দুটি ভাগ---উত্তর ও দক্ষিণ। আমেরিকার মুখ মেরু সাগরের দিকে, এবং আমেরিকার উত্তরও দক্ষিণ ভাগের আকৃতি কিন্তু ধনুকের কথাই মনে করিয়ে দেয় ।

--- ভারতীয় পবিত্র গ্রন্থের এই অধ্যায়ের এই বর্ণনার পরপরই একটি প্রশ্নের উদয় হয় - আমেরিক সম্পর্কিত এই তথ্যাদি এবং গ্রীণল্যাণ্ড থেকে প্যাটাগোনিয়া পর্যস্ত নিখত আকৃতির ধারণা প্রাচীন ভারতীয়রা কোথেকে সংগ্রহ করেছিলো ?

ভৌগোলিক সার্ভের জন্যে প্রয়োজন ট্রান্সপোর্ট এবং যন্ত্রপাতি । কিন্তু কলম্বাসের দেড় হাজার বছর আগে ভারতে সমূদ্রগামী জাহাজ ছিলনা।

---বিজ্ঞানের ইতিহাসে এটি আরেকটি অমীমাংসিত রহস্য ।

-- তিব্বতের এক প্রাচীন বইয়ে অদ্ভূত এক চার্ট পাওয়া গেছে । চার্টের কারুকাজ বিশিষ্ট চারকোণে এবং আয়তকার ক্ষেত্রগুলোয় অজ্ঞাত সব দেশের নাম লেখা ! ডায়াগ্রামে চারটি মৌলিক পয়েন্ট রয়েছে— সবচেয়ে উ চু’তে পূর্বদিক, পশ্চিম হচ্ছে নিচে, দক্ষিণ দিক ডানে এবং উত্তর হচ্ছে বায়ে ।

-- রাশিয়ার ফিলোলজিষ্ট ব্রোনিস্লাভ কুজেনস্তভের সিন্ধান্ত এটা একটি ম্যাপ । তিনি ম্যাপটির ব্যাখ্যাও দিয়েছেন । তার মতে জায়গাগুলো হচ্ছে পারস্যের শহর প্যাসারগাদী (খৃষ্টপূর্ব চতুর্থ— সপ্তম শতাব্দী ) আলেকজান্দ্রিয়া, জেরুজালেম, লিন, উত্তর পারস্য এবং কাম্পিয়ান সাগর ।

>তিববতীদের ভৌগোলিক জ্ঞান এবং বহু শতাব্দী আগে থেকেই পারস্য এবং মিশরীয়দের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের প্রমাণ আমরা এ থেকে পাই, প্রাচ্যবিদরা অবশ্য সম্প্রতিমাত্র এরকম ভাবছেন ।

-- ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪৪০ সালের একটা ম্যাপ চূড়ান্তভাবে প্রমাণ করেছে ১৪৯১ সালে স্প্যানিশ’র সান সালভেদরে পৌছানোর ৪০০ বছর আগেই নরওয়ে জলদস্যু আমেরিকার বুকে পা রেখেছিলো ।

কৌতূহল উদ্দীপক ব্যাপার নরওয়ে জলদস্যুরা ন্যাভিগেশনের কাজে যে বিশেষ ধরনের ক্রিষ্টাল ধ্যাহার করেছিলো, সূর্যের মুখোমুখি ধরলে শোদ্ভন্ন তাপহাওয়াতেও সেটি তার রং বদলাতো ।

--- রাশিয়ার আজারবাইজান বিজ্ঞান অ্যাকাডেমী ১৯৬৪ সালে এক তথ্য আবিষ্কার করে। ত্রয়োদশ শতাব্দীর এক বিজ্ঞানী নাসিরুদিন তুসী কলম্বাসের ২৫০ বছর আগেই আমেরিকার কথা জানতেন । জ্যোতিবিদ তুসী তার এক বইয়ে এটনাল আইল্যাণ্ড-এর উল্লেখ এবং এর ভৌগলিক স্থানাঙ্ক নির্দেশ করেছেন । এই স্থানাঙ্কসমূহ একত্রীত করলে যে সীমারেখা তৈরি হয় তা দক্ষিণ আমেরিকার পূর্ব উপকূলের । নাসিরুদ্দীন তুসী বহু দূরবর্তী এই মহাদেশ সম্পর্কিত তথ্য কোথেকে সংগ্রহ করেছিলেন ? ত্রয়োদশ শতাব্দীতে ভূমধ্যসাগরীয় জাহাজসমূহ জিব্রাল্টার থেকে ব্রাজিল পর্যন্ত আটলান্টিক পাড়ি দেওয়ার মতে বড় ও ক্ষমতাসম্পন্ন ছিলো না ।

----ষষ্ঠদশ শতাব্দীতে পিরি রেইস নামে তুরস্কের এক কাটোগ্রাফার ২১০টি নিখুত অঙ্কিত ম্যাপের এক সংকলন করেন । এই সংকলন বা এ্যাটলাসের নাম ছিলো বুক অব দি সি’জ ।

--তুরস্কের জাতীয় যাদুঘরে এ্যাডমিরাল পিরি রেইসের তৈরি ১৫১৩ ও ১৫২৮ সালের দুটো ম্যাপ রয়েছে। প্রথম ম্যাপে ব্রিটেন, স্পেন, পশ্চিম আফ্রিকা, অ্যাটলাণ্টিক, উত্তর আমেরিকার কিছু অংশ এবং দক্ষিণ আমেরিকার পূর্বভাগের সম্পর্ণ আউটলাইন অঙ্কিত । ম্যাপের তলদেশে দেখা যাচ্ছে অ্যান টার্কটিকার কোষ্ট লাইন পূর্বদিকে অগ্রসর হয়ে আফ্রিকার নিচ দিয়ে চলে গেছে । এই ম্যাপ বা চার্টটির দশা খুব জীর্ন, তবে অনুমান করা হচ্ছে যে আদি অবস্থায় ম্যাপে আরো তিনটি অংশে ভারত মহাসাগর, সম্ভবতঃ অষ্ট্রেলিয়া, ইউরোপ এবং এশিয়া অঙ্কিত ছিলো । এরকম অনুমান করা হচ্ছে কারণ ম্যাপ দু’টোকে অন্য কোনো এক বৃহৎ ম্যাপের অংশ বিশেষ বলে মনে হয় ।

---১৫২৮ সালের দ্বিতীয় ম্যাপে দেখা যাচ্ছে গ্রীনল্যাণ্ড, ল্যাবরাডোর, নিউফাউণ্ডল্যাণ্ড, কানাডার কিছু অংশ এবং উত্তর আমেরিকার পূর্বউপকুল ফ্লারিড পর্যন্ত। ম্যাপ দু’টোর ভৌগলিক দিক-নির্দেশ সাম্প্রতিককালের আগে বোঝা যায় নি। বিখ্যাত সুইডিশ এক্সপ্লোরার নরদেন স্কোল্ড দীর্ঘ সতের বছর ম্যাপের দিক-নিদেশ ব্যাখ্যার চেষ্টায় রত ছিলেন । তার কাজ সম্পন্ন করেন আমেরিকান কাটোগ্রাফার আরলিংটন ম্যালরী ।

-----ক্রমশ----

বিষয়: বিবিধ

১৫৬৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

368011
০৪ মে ২০১৬ রাত ১০:৪২
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File