বাংলা সাহিত্যে দস্যু বা ডাকাত(প্রথম পাঠ)

লিখেছেন লিখেছেন গোলাম মাওলা ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৩:৫৬:৪২ দুপুর

>>বাংলা সাহিত্যে দস্যু বা ডাকাত(প্রথম পাঠ)

বাংলা সাহিত্যে ইতিহাস ঐতিহ্যে ভরপুর। এই সাহিত্য আমাদের উপহার দিয়েছে নানা বিষয় নানা উপদান। এই উপদানের একটি শাখা গল্প। আর এই গল্প লিখার বা বলার ভাগ বা বিভাগ আবার অনেক। সেই অনেকের মধ্যে দস্যু বা ডাকাতদের নিয়ে লিখা গল্প এক সময় আমাদের দাদা-ঠাকুরদা দের বেশ বিমোহিত করেছিল তা তাদের সঙ্গে কথা বললেই বুঝা যায়। কিন্তু বাংলা সাহিত্যে প্রথম এই ধারা শুরু হয়েছিল কি ভাবে তা জানা খুব মুশকিল।

উপমহাদেশের সাহিত্যে কৃত্তিবাসী রামায়ণে আমাদের সাথে প্রথম দস্যু চরিত্রের সাথে পরিচয় ঘটে। আর সেই দস্যু--- দস্যু রত্নাকর।

>>কৃত্তিবাসী রামায়ণে দস্যু রত্নাকর চ্যবন ঋষির পুত্র। ঋষিটি নিপাট ভদ্রলোক। কিন্তু ছেলেটি তাঁর গোল্লায় গেছে (এমন দৃষ্টান্ত অবশ্য বাঙালি সমাজে দুর্লভ নয়)। বনপথে নিরস্ত্র পথিককে হত্যা করে সর্বস্ব লুট করে। মহাপাপী। কিন্তু রামনাম এহেন মহাপাতকীকেও পাপমুক্ত করতে পারে। তাই দেবতারা এঁকে রামনাম দিয়ে শুদ্ধ করার পরিকল্পনা করলেন। নারদ ও ব্রহ্মা ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে এলেন রত্নাকরের কাছে। রত্নাকর যথারীতি এঁদের হত্যা করতে গেল। কিন্তু ব্রহ্মা মায়াবলে রত্নাকরের মুগুর অকেজো করে দিলেন। বললেন, “বাপু হে, এত পাপ কার জন্য করো? তোমার পাপের ভাগী কে হবে?” রত্নাকর বললে, “কেন? আমি দস্যুবৃত্তি করে যে ধন পাই, তাতে আমি, আমার পিতামাতা ও স্ত্রী, চারজনে খাই। তারাই আমার পাপের ভাগী হবে।” ব্রহ্মা হেসে বললেন, “তাই নাকি? পাপ করলে নিজে। তোমার পাপের ভাগী তারা হতে চাইবে কেন? তুমি তাদের জিজ্ঞাসা করে এসো। দ্যাখো, ওরা কী বলে।” রত্নাকর গেল জিজ্ঞাসা করতে। কিন্তু বাপ-মা এমনকি স্ত্রী কেউই তার পাপের ভাগী হতে রাজি হল না। সকলেই শাস্ত্রের দোহাই পেড়ে দেখালে, পাপ যা কিছু সব রত্নাকরের দেহে। তার আঁচ পিতামাতা বা স্ত্রীর গায়ে লাগে না। অনুতপ্ত রত্নাকর ছুটে গেল ব্রাহ্মণবেশী ব্রহ্মার কাছে। ব্রহ্মা তাঁকে রামনাম দান করলেন। রত্নাকর বসলেন রামনামের তপস্যায়। বল্মীকে ঢেকে গেল তাঁর দেহ। তপস্যা চলল ষাট হাজার বছর। তপস্যান্তে ব্রহ্মা এসে তাঁকে বর দিলেন মহাকবি হওয়ার। এরপর একদিন তাঁর চোখের সামনে ব্যাধ মিলনরত এক ক্রৌঞ্চযুগলকে বধ করলে বাল্মীকির মুখ থেকে উচ্চারিত হল অভিশাপবাণী। শোক থেকে উৎসারিত সেই প্রথম শ্লোক –

মা নিষাদ প্রতিষ্ঠাং ত্বমগমঃ শাশ্বতীঃ সমাঃ।

যৎ ক্রৌঞ্চমিথুনাদেকমবধীঃ কামমোহিতম্।।

**রত্নাকর দস্যু ও রামনামের মাহাত্ম্য**

মানুষ মারিয়া আনি যত ধন আমি।

আমার পাপের ভাগী বট কি না তুমি।।

পুত্রের বচন শুনি কুপিল চ্যবন।

হেন কথা তোমায় বলিল কোন্ জন।।

কোন্ শাস্ত্রে শুনিয়াছ কে কহে তোমারে।

পুত্রকৃত পাপভাগ লাগিবে পিতারে।।

অজ্ঞান বালক তোরে কি কহিব কথা।

কভু পিতা পুত্র হয় পুত্র হয় পিতা।।

যখন বালক ছিলা পিতা ছিনু আমি।

এখন বালক আমি পিতা হৈলা তুমি।।

যখন বালক ছিলা না ছিল যৌবন।

বহু দুঃখ করি তব করেছি পালন।।

যত পাপ করিয়াছি আপনি সংসারে।

সে সব পাপের ভাগ না লাগে তোমারে।।

এবে পিতা হইয়াছ পুত্রতুল্য আমি।

কোনরূপে আমারে পুষিবে নিত্য তুমি।।

মনুষ্য মারিতে তোমা বলে কোন্ জন।

তোমার পাপের ভাগী হব কি কারণ।।

শুনিয়া বাপের বাক্য মাথা হেঁট করে।

কান্দিতে কান্দিতে কহে মায়ের গোচরে।।

সত্য করি আমারে গো কহিবা জননী।

আমার পাপের ভাগী হইবা আপনি।।

জননী কহিলা ক্রুদ্ধা হইয়া অপার।

এক দিবসের ধার কে শোধে মাতার।।

দশ মাস গর্ভে ধরি পুষেছি তোমায়।

তব কৃত পাপ পুত্র না লাগে আমায়।।

শুনিয়া মায়ের বাক্য মাথা হেঁট কৈল।

পত্নীর নিকট গিয়া সকল কহিল।।

জিজ্ঞাসি তোমারে প্রিয়ে সত্য করি কও।

আমার পাপের ভাগী হও কি না হও।।

শুনিয়া স্বামীর বাক্য কহিছে রমণী।

নিবেদন করি প্রভু শুন গুণমণি।।

বিধাতা করিল মোরে অর্ধাঙ্গের ভাগী।

অন্য পাপ নিতে পারি এ পাপ তেয়াগি।।

যখন করিলা তুমি আমারে গ্রহণ।

সর্বদা করিবে মম রক্ষণ পোষণ।।

আর যত পাপপূণ্য ভাগ লাগে মোরে।

পোষণার্থে পাপভাগ না লাগে আমারে।।

মনুষ্য মারিতে কেবা বলিল তোমায়।

এইমাত্র জানি তুমি পালিবা আমায়।।

শুনিয়া ভার্যার বাক্য রত্নাকর ডরে।

কেমনে তরিব আমি এ পাপসাগরে।।

ডুবিনু পাপেতে মম কি হইবে গতি।

কান্দিতে লাগিল দস্যু স্মরিয়া দুষ্কৃতি।।

লোহার মুদ্গর নিজ মাথায় মারিয়া।

পড়িল ভূমিতে দস্যু অচেতন হৈয়া।।

উঠিয়া মুনির পুত্র ভাবিল অন্তরে।

সেই মহাজন যদি মোরে কৃপা করে।।

ইহা ভাবি উভয়ের সন্নিধানে গিয়া।

কহিল ব্রহ্মার পায় দণ্ডবৎ হৈয়া।।

একে একে জিজ্ঞাসিনু আমি সবাকারে।

মম পাপভাগী কেহ নাহিক সংসারে।।

আপনি করিয়া কৃপা দিলা দিব্যজ্ঞান।

এই সব পাপে কিসে পাব পরিত্রাণ।।

কহিলেন পিতামহ মুনির কুমারে।

তুমি স্নান করিয়া আইস সরোবরে।।

শুনি চলে রত্নাকর সরোবর পাড়ে।

তার দৃষ্টিমাত্র জল ভস্ম হৈয়া উড়ে।।

শুষ্ক স্থলে মরে মীন মকর কুম্ভীর।

কহিল ব্রহ্মার কাছে না পাইয়া নীর।।

ছিল যে অগাধ জল এই সরোবরে।

মম দৃষ্টিমাত্র তাহা যাইল অন্তরে।।

শুনিয়া কহেন ব্রহ্মা সঙ্গী তপোধনে।

হইয়াছে পূর্ণ পাপ তরিবে কেমনে।।

কমণ্ডলু জল ছিল দিলেন মাথায়।

মহামন্ত্র মুনি তারে কহিবারে যায়।।

নিকটে আসিয়া ব্রহ্মা কহে তার কর্ণে।

একবার রাম নাম বল রে বদনে।।

পাপে জড় জিহ্বা রাম বলিতে না পারে।

কহিল আমার মুখে ওকথা না স্ফুরে।।

শুনিয়া ব্রহ্মার বড় চিন্তা হৈল মনে।

উচ্চারিবে রাম নাম এ মুখে কেমনে।।

মকার করিলে অগ্রে রা করিলে শেষে।

তবে না পাপীর মুখে রাম নাম আসে।।

ব্রহ্মা কহিলেন তারে উপায় চিন্তিয়া।

মনুষ্য মরিলে বাপু ডাক কি বলিয়া।।

শুনিয়া ব্রহ্মার কথা বলে রত্নাকর।

মৃত মনুষ্যেরে মড়া বলে সব নর।।

মড়া নয় মরা বলি জপ অবিরাম।

তব মুখে তখনি সরিবে রামনাম।।

শুষ্ক কাষ্ঠ দেখিলেন বৃক্ষের উপরে।

অঙ্গুলি ঠারিয়া ব্রহ্মা দেখান তাহারে।।

বহুক্ষণ রত্নাকর করি অনুমান।

বলিল অনেক কষ্টে মরা কাষ্ঠখান।।

মরা মরা বলিতে আইল রামনাম।

পাইল সকল পাপে দস্যু পরিত্রাণ।।

তুলারাশি যেমন অগ্নিতে ভস্ম হয়।

একবার রামনামে সর্ব পাপ ক্ষয়।।

নামের মহিমা দেখি ব্রহ্মার তরাস।

আদিকাণ্ডে গাইল পণ্ডিত কৃত্তিবাস।।

তবে বাংলা সাহিত্যে বা বাংলায় রচিত প্রথম দস্যু নিয়ে লিখা পাওয়া যায়-- মৈমনসিংহ গীতিকায়।মৈমনসিংহ গীতিকায় দস্যু কেনানের পালা নামে এক দস্যুর জীবনের বিভিন্ন সময়ের বর্ণনা নিয়ে রচিত হয়েছে পালা গান । এটিই বাংলা সাহিত্যে দস্যুকে উপজীব্য করে প্রথম বাংলা লিখা বলে ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়। যদিও সাহিত্য বিচারে এটি পালা গান।

এবার দেখে নিই দস্যু কেনানের পালার সারসংক্ষেপঃ

দস্যু কেনানের পালার লেখক বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে প্রথম বাঙালি মহিলা কবি চন্দ্রাবতী। চন্দ্রাবতীর জন্ম: ১৫৫০ - মৃত্যু: ১৬০০ । তাঁর পিতা, ‘মন্নসা মঙ্গল’ কাব্যের অন্যতম রচয়িতা দ্বিজবংশী দাশ এবং মা সুলোচনা দেবী। বাড়ি কিশোরগঞ্জের নীল গঞ্জের পাতুয়াইর গ্রামে।কিশোরগঞ্জ শহর থেকে উত্তর পূর্ব দিয়ে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে ওই গ্রাম। আর ঈশা খার স্মৃতি বিজরিত জঙ্গঁলবাড়ি অঞ্চলের পাতুয়াইর এলাকার ‘কাচারি পাড়া গ্রামে ফুলেশ্বরী নদীর তীরে কালের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে চন্দ্রাবতীর শিব মন্দির। চন্দ্রাবতীর রচনাণ্ডলোর মধ্যে মলুয়া, দস্যু কেনারামের পালা ও রামায়ন কথা (অসমাপ্ত) অন্যতম।

>>গল্প আকারে পালা দস্যু কেনানঃ

জালিয়া হাওয়র এর কাছে বাকুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা দ্বিজ খেলারাম ও যশোধারা । সন্তানহীন এই দম্পতি গ্রামের মানুষের কাছে আটখুরা ও বাজী বলে পরিচিত। মানুষের খোটা শুনতে শুনতে একদা মনের দুঃখে খেলারাম শফত করে বসে স্ত্রী সন্তান সম্ভাবা না হলে আর আহার-জল গ্রহণ ক্রবেন না এবং দেখবেন না সূর্য দেবের মুখ। দ্বিতীয় দিন অতিবাহিত হয়ে তৃতীয় দিনের দিন দেবি মনসা প্রসন্ন হয়ে দেখা দিলেন খেলারাম এর স্ত্রী যশোধারার স্বপনে। খুশির সংবাদ দিলেন পুত্র সন্তান হবে তার। স্বপ্নের বয়ানে খুশিতে আত্মহারা খেলারাম ও যশোধারা দম্পতি আত্মীয় স্বজন ডেকে পাঁঠা বলি দিলেন দেবীর পদতলে। পূজা আরচনা নিবেদন করলেন ভাল ভাবে। মাস না গড়াতেই যশোধারার দেহে ফুটে উঠল গর্ভবতি চিহ্ন। আর দশ মাস দশ দিন দেবীর বরে জন্ম নিল ফুটফুটে এক পুত্র । মায়ের কোলে বেড়ে উঠছিল যেন দেবদূত। পুত্রের ছয়-মাস বয়েসে ঘটা করে আয়োজন করা হল অন্নপ্রাশন। সেই অনুষ্ঠানে পুত্রের নাম রাখা হল কেনারাম। কিন্তু দেবীর কৃপা হতে এবার যেন বঞ্চিত হল শিশু কেনান। সাত মাস বয়সে মাতৃহারা হয়ে দেবপুর নানার বাড়িতে মামির কোলে আশ্রয় পেল শিশু কেনান। সেখানে দেবতার বরে বেড়ে উঠছিল কেনান। আর পিতা খেলারাম স্ত্রী শোকে হরিনাম জপে হলেন নিরুদ্দেশ। মামির অতি আদর আর শাসনের অভাবে দিন দিন উচ্ছন্নে যেতে লাগল কেনান । টকবগে ভীম সদৃশ কেনান উত্তেজনার বশে স্থানীয় হালুয়ার ডাকাত পুত্রের সঙ্গে মিশতে শুরু করল। একসময় যুবা বয়সের রক্তের গরমে ডাকাতি শুরু করল কেনান। অতি অল্প দিনে খুনে মেজাজ আর হত্যা লিলায় তার নাম ডাক ছড়িয়ে পড়ল আশেপাশের এলাকাময়। হয়ে উঠল দস্যু সরদার ।তার বিবেক হিন নিষ্ঠুরতার গল্প শুনে ভয়ে কেপে উঠত সকলের মন।তার হাতে কত মানুষ লুণ্ঠনের শিকার হল, কত মায়ের বুক খালি হল তার কোন হিসেব রইলনা । এই হত্যা আর লুন্ঠন একদিন বন্ধ হল--- (তার জন্মদাতা পিতা) এক সন্ন্যাসীর স্পর্শে।

একদা জটায়ু সন্ন্যাসী ভক্ত সহ কেনানের জঙ্গল আস্তানার পাশ ঘেঁষে হরিনাম আর ভজন গাইতে গাইতে যাচ্ছিল। পথে তারা পড়ল দস্যু কেনানের সামনে। লুণ্ঠন ও হত্যার জন্য সন্ন্যাস দলকে থামিয়ে দিল দস্যু দল।

“কেমন ঠাকুর তুমি চেন আমারারে”

হাসিয়া কহেন পিতা ডাকাইতের স্থানে

পাপেরে দেখিয়া বল কেবা নাহি চেনে”

দস্যু কেনান সন্ন্যাসীর কথায় ও ভয়হীন অভিব্যক্তিতে চটে তাকে হত্যা করার জন্য খাগড়া তুলে। সন্ন্যাসী তাকে বলে – মানব হত্যা মহা পাপ। ধর্মের নানা কথা বলে নরকের কথা বলে কেনারাম কে মানব হত্যা হতে ফিরে আস্তে বলে। কিন্তু পাষণ্ড কেনান বলে মানুষ হত্যা করে সে খুব সুখ পায়। কথায় আছে না—

“চোরা না শুনে দেখ ধর্মের কাহিনী

পিশাচ না শুনে রাম অন্তরেতে গ্লানি”

এক পর্যায়ে সন্ন্যাসী তার নাম জিঙ্গেস করে। নাম শুনে ভক্ত গন ভয়ে কেদে উঠে। পিতা চিনতে পারে পুত্রকে।

এর পর পুত্র কেনানের কাছে জীবনের শেষ গান গাইবার অনুমতি নেয় পিতা। তার পর জেন তাকে হত্যা করা হয়।

দুই চক্ষে অশ্রুর বান তুলে মনসার নাম স্মরে জীবনের শেষ ভজন গাইতে লাগে পিতা। গান শুনে দস্যু কেনারামের মন বিগলিত হয়।

“কেনার ইঙ্গিতে যত ডাকাতিয়া ছিল

আন্ধার নাশিতে সবে মশাল জ্বালিল,

মশালের তেজে হইল বন যে উজালা

সূর্যের পশরে যেমন দিন হইল আলা”।

>>বাঁকাউল্লার দপ্তরঃ ঠগী দস্যুদের দমনে নিযুক্ত স্লীম্যান সাহেবের এক দারোগা।তিনি কিছু কিছু কাহিনী সরকারী ফাইল থেকে উদ্ধার করে ইংরেজীতে ছাপিয়েছিলেন। পরে বাংলায় ‘বাঁকাউল্লার দপ্তর’ নামে এগুলি প্রকাশিত হয়।

>>সেকালের দারোগার কাহিনীঃ গিরিশচন্দ্র বসু( ১৮৫৩ থেকে ১৮৬০) এই সাত বছর দারোগার চাকরি করেছিলেন। দুষ্কৃতিদের নানার কীর্তিকাহিনী তিনি লিপিবদ্ধ করেন ‘সেকালের দারোগার কাহিনী’-তে। ১৮৯৪-১৯৯৫ সালে একটি পত্রিকায় এগুলি প্রথম প্রকাশিত হয়।

>>হরিদাসের গুপ্তকথাঃ ভুদেবচন্দ্র মুখোপাধ্যায় (১৮৪২-১৯১৯) বটতলার বই ‘হরিদাসের গুপ্তকথা’ লিখে খ্যাত হয়েছিলেন। দেশী-বিদেশী নানান কেচ্ছা ও অপরাধকাহিনীর মিশ্রণে তৈরী এই লেখা। ভুবনচন্দ্রের বহু বই বটতলা থেকে প্রকাশিত হয়েছিল, কিন্তু তার সবগুলিই ভুবনচন্দ্র লিখেছিলেন বলে মনে হয় না।

>>নেপাল ডাক্তারের কাহিনীঃ হরিলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, বি.এল: পেশায় উকিল ছিলেন। ‘নেপাল ডাক্তারের কাহিনী’ (১৮৯৮) লিখে প্রসিদ্ধ হন।

>>‘দারোগার দপ্তরঃ প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায় (১৮৫৫-১৯৪৭): বহু বছর দারোগার চাকরি করেছিলেন। নিজের পুলিশ-জীবনের নানান কাহিনী (সম্ভবতঃ কিছু কল্পিত) ‘দারোগার দপ্তর’ নাম দিয়ে এক কালে মাসে মাসে প্রকাশিত হত।

এর পর দস্যুদের নিয়ে সাহিত্য বলতে ১৯৬০ সালের পর বাংলা সাহিত্যে আবার দস্যুদেরনিয়ে মহা সমারোহে লিখা লিখি শুরু হয়। আর এই দস্যু সাহিত্যে নায়কদের প্রায় সব্বার চরিত্র ধার করা হলেও সব কিন্তু মৌলিক লেখা।এদের ঘটনা গুলি না কোন বিদেশী বই এর গল্প থেকে ধার নেওয়া না বিদেশী কোন গল্পের ছায়া অবলম্বনে রচিত ।তবে মুল বিষয় কিন্তু ধার করা।

আর এই গল্প গুলির আদর্শ ধরা হয় রবিন হুড ।

>>রবিন হুড হলেন ইংরেজ লোককাহিনীর একজন বীরত্বপূর্ণ ডাকু, অত্যন্ত দক্ষ তীরন্দাজ ও অসিযোদ্ধা।জনপ্রিয় সংস্কিৃতিতে রবিন হুড ও তার দল মেরি ম্যান নটিংহামসায়ারের শেরউড জঙ্গলে বসবাস করতেন যেখানে তার বীরত্বপূর্ণ কাহিনীর অধিকাংশের সূত্রপাত। ১৫-শতকের প্রথমদিকে রবিন হুডকে নিয়ে ৪ লাইনের

ছড়া রচনা করা হয় যার প্রথম লাইন ছিল,

“রবিন হুড ইন স্কেরউড স্টোড”।

যাইহোক, প্রথমদিকের বীরত্বপূর্ণ যুদ্ধ থেকে বেঁচে ফেরা ও প্রথমদিকের উৎস অনুসারে এটা ধারনা করা হয় যে, রবিন হুডের গল্পগুলো বার্ণসডেল (বর্তমান ইয়র্কসায়ার, নটিংহামসায়ার সীমান্ত) এলাকার উপর ভিত্ত করে তৈরি।

আর সেই গল্প গুলি এবং রবিন হুড ১৯-শতকের প্রথমদিকে পরিচিত হয়েছেন গরিবেরর বন্ধু হিসেবে যিনি তার অনুসারী কিছুডাকুদের (আউটল) নিয়ে মেরি ম্যান নামে একটি দল গঠন করেন যারা ধনীদের কাছ থেকে ডাকাতি ও মালামাল লুট করে গরীবদের মাঝে বিলিয়ে দিতেন। প্রথাগতভাবে রবিন হুড ও তার অনুসারীরা লিঙ্কন সবুজ এক ধরনের কাপড় পরিধান করতেন।এই কিংবদন্তী উৎপত্তি হয়েছিল কিছু আসল ডাকু বা বীর গাথা বা ডাকুদের গল্প থেকে।রবিন হুড মধ্যযুগীয় সময়ের মধ্যে একটি জনপ্রিয় লোক চরিত্রে পরিণত হন, আধুনিক সাহিত্যেও যেমন, গল্প, নাটক ও চলচ্চিত্রেও তিনি সমান জনপ্রিয়।

প্রথমদিককার সূত্রে তাকে মধ্যচাষী বা জমিদারভৃত্য হিসেবে বর্ননা করা হয় কিন্তু পরবর্তীতে তিনি একজন অসাধু শেরিফ (শহরের আইন রক্ষক) কর্তৃক তার জমি থেকে বিচ্যুত হন এবং ডাকুতে পরিণত হন।

**আর রবিন হুড এর গল্প কে আদর্শ ধরে বাংলায় রচনা হতে থাকে একে একে

>>শশধর দত্তের--- দস্যু মোহন,

দস্যু মোহন জননন্দিত একজন দস্যু। নানা উপায়ে বদমাশ বিত্তশালীদের অর্থ লুণ্ঠন করে গরিব মানুষের কাছে বিলানো ও সমাজহিতৈষী কাজকর্মে দস্যু মোহনের সংযোগ ।(কিছুটা দস্যু বনহুর এর কপি বলা যায় অথবা রবিন হুডের কিছুটা বাংলা সংস্করণ।) সেই একই রুপ ভিন্ন ভাবে। তার তথাকথিত কাজের ধরন ছিল বুদ্ধিদীপ্ত ও কৌশলী।তার কাজই হল মানুষের উপকার।আর অবশ্য তা গরিব মানুষের জন্য।

>>এ সিরিজের (২০৬) দুইশ ছয়টি বই প্রকাশিত হয়।

১।মোহন ২।কারাগারে মোহন৩। মোহন ও রমা৪।রমার বিয়ে৫।আবার মোহান৬।রমা হারা মোহন৭।নাগরিক মোহন ৮।মোহনের জার্মানী অভিযান ৯।মোহনের অজ্ঞাতাবাস ১০।ব্যবসায়ি মোহন ১১। নারী ত্রাতা মোহন ১২।ব্রক্ষ-সিমান্তে মোহন ১৩।মুখোস মোহন ১৪।মহনের তূর্যনাদ ১৫। মোহন ও জল্লাদ ১৬।দস্যু মোহন ১৭।মোহন ও স্বপন ১৮।মোহান্ত দমনে মোহন ১৯। স্বপ্নের সীমান্ত সংঘর্ষ ২০।গেস্টাপো যুদ্ধে মোহন ২১।নেতা মোহন ২২। মোহনের প্রথম অভিযান ২৩। মোহন ও পঞ্চমবাহিনী ২৪।ফাসির মঞ্চে মোহন ২৫।রমার দাবি ২৬।মোহন ও গুপ্ত শাসক ২৭।মোহনের প্রতিদ্বন্দ্বী ২৮।বার্লিনে মোহন ২৯। স্বপন ও দস্যু ৩০। বন্ধু মোহন ৩১। মোহন ও হুই ৩২। তরুণ মোহন ৩৩। জার্মান ষড়যন্ত্রে ৩৪। ছদ্মবেশী মোহন ৩৫। স্বপ্নের ব্রক্ষ অভিযান ৩৬। রাজ্যেশ্বর স্বপন ৩৭।মোহনের অভিনয় ৩৮। নিশা গ্রামে মোহন ৩৯। মোহন চপলা সংঘর্ষ ৪০।মোহনের অনুরাগ ৪১। প্রিয় মোহন ৪২। সর্বঞ্চ মোহন ৪৩। মোহন তিন শত্রু ৪৪। ত্রয়ী যুদ্ধে মোহন ৪৫।অফিসার মোহন ৪৬। স্বপনের অ্যাডভেঞ্চার ৪৭।মোহনের প্রতিদান ৪৮। নবরূপে মোহন ৪৯।মোহনের নতুন অভিযান ৫০। ত্রাতা মোহন ( আমার কাছে থাকা একমাত্র হার্ড কপি)

>>এক সময় খুব জনপ্রিয় এই বই এর এই জনপ্রিয়তা কে কাজে লাগিয়ে দস্যু মোহন চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়। সুদর্শন অভিনেতা প্রদীপ কুমার দস্যু মোহন চরিত্রে অভিনয় করে নন্দিত হন।

>> লেখক পরিচিতিঃ

শশধর দত্ত হুগলী জেলার আরামবাগ থানার অন্তর্গত হরাদিত্য (সমিতি) গ্রামে ১৯০১ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম উপেন্দ্রনাথ দত্ত এবং মাতার নাম সেখর বালা দেবী।

তিনি সংবাদ পত্রের চাকরি দিয়ে জীবন শুরু করেন। আর তার সুবাদে ভারতের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করেন তিনি । আর তার লিখায় সেই সব স্থানের নিখুঁত বর্ণনা ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। দস্যু মোহন কে নিয়ে ২০৬ টি বই লিখেছেন।

>>রোমানা আফাজের--- দস্যু বনহুর, দস্যু রাণী,

দস্যু বনহুর বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক রোমেনা আফাজ কর্তৃক সৃষ্ট একটি কথাচরিত্র। দস্যু বনহুর সিরিজে এই চরিত্রভিত্তিক নিয়ে শতাধিক (১৩৬টি) গোয়েন্দা কাহনী প্রকাশিত হয়েছে। ছোটবেলা নৌদূর্ঘটনায় চৌধুরী বাড়ীর ছেলে মনির হারিয়ে যায়, দস্যু সর্দার কালু খাঁ তাঁকে কুঁড়িয়ে পান ও পরবর্তিতে তাঁকে "দস্যু বনহুর" রুপে গড়ে তোলেন। গরীবের বন্ধু ও চোরাকারবারীদের চির শত্রু দস্যু বনহুর যেমন গরীবের কাছে ছিলেন পূঁজোনীয় তেমনি চোরাকারবারী ও সন্ত্রাসদের কাছে ছিলেন জমদূতের মত। এই সিরিজের স্লোগান হচ্ছে 'সত্য ও ন্যায়ের প্রতীক দস্যু বনহুর'।

দস্যু বনহুরের সহায়ক চরিত্র হিসেবে রয়েছে রহমান ও কায়েস, তাঁরা একাধারে বনহুরের বন্ধু ও সহযোদ্ধা ছিলেন। তাঁর দু'জন স্ত্রী ছিলো একজন জঙ্গলে অন্যজন শহরে; শহুরে স্ত্রীর নাম মনিরা ও অপরজনের নাম নূরী। মনিরার গর্ভে দস্যু বনহুরে বড় ছেলে "নুরুজ্জামান নূর" এর জন্ম, যে পরবর্তীতে দেশের সৎ ও সাহসী ডিটেকটিভ হিসেবে পরিচয় লাভ করে। নূরীর গর্ভে "জাভেদ" নামে তার একটি ছেলের জন্ম হয়, যে পিতার মতই দস্যুতা করতে ভালবাসে।

"কালু খাঁ" যাঁকে দস্যু বনহুর বাপু বলে সম্বোধন করতেন, কালু খাঁ ছিলেন একজন প্রখর বুদ্ধিসম্পন্ন ডাকাত সর্দার। একদিন তিনি ছোট্র মনিরকে কুঁড়িয়ে পান ও পরবর্তিতে তাঁকে "দস্যু বনহুর" রুপে গড়ে তোলেন।

দস্যু বনহুর সিরিজে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের মধ্যে "আশা" নামের চরিত্রটিকে ধারনা করা হয় এই সিরিজের সবচেয়ে রহস্যময়। এছাড়া "দস্যু রানী" নামের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র রয়েছে যিনি "আহাদ" নামের একজন নাম করা একজন ডিটেকটিভের স্ত্রী।

>>এ সিরিজের (১৩৬) একশত ছত্রিশটি বই প্রকাশিত হয়।

দস্যু বনহুর,দস্যু বনহুরের নতুন রুপ,সৈনিক বেশে দস্যু বনহুর,নাথুরামের কবলে মনিরা,দুর্ধর্ষ দস্যু বনহুর,ছায়ামূর্তি,মনিরা ও দস্যু বনহুর,সাগরতলে দস্যু বনহু,সর্বহারা মনিরা, ঝিল শহরে দস্যু বনহুর, ঝিন্দের রানী, দস্যু দুহিতা, বন্দিনী,মায়াচক্র,চিত্রনায়ক দস্যু বনহুর,কান্দাইয়ের পথে দস্যু বনহুর,বন্দী বনহুর,দস্যু বনহুরের মৃত্যুদন্ড,অন্ধ মনিরা,প্রেত আত্মা,মৃত্যুর কবলে নূরী,বনহুরের অন্তর্ধান, আফ্রিকার জঙ্গলে দস্যু বনহুর,বাংলাদেশে দস্যু বনহুর,বন্ধনহীন দস্যু বনহুর,দিল্লীর বুকে দস্যু বনহুর,রাত্রী ভয়ঙ্কর,প্রতিধ্বনি,সাপুড়ে সর্দার,নাবিক দস্যু বনহুর, ফৌজিন্দিয়া দ্বীপ,আস্তানায় দস্যু বনহুর

>>চলচিত্রে দস্যু বনহুরঃ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী অঞ্জনা অভিনীত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা ছায়াছবিটির নাম ছিলো "দস্যু বনহুর"। ছবিটিতে "দস্যু বনহুর" চরিত্রে অভিনয় করে চিত্রনায়ক সোহেল রানা। এতে আরও অভিনয় করেন প্রয়াত চিত্রনায়ক জসিম। এ ছাড়া এ ছবিতে অতিথি চরিত্রে দেখা গিয়েছিল রাজ্জাককে। ছবিটির "ডোরা কাটা দাগ দেখলে বাঘ চেনা যায়" গানটি দারুন জনপ্রিয়তা পায়।

>>লেখক পরিচিতিঃ রোমেনা আফাজ

**জন্ম ও শিক্ষাজীবনঃ রোমেনা আফাজ ১৯২৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর বগুড়া জেলার শেরপুর শহরের জন্মগ্রহণ করেন। লেখিকার বাড়ি ছিল বগুড়া জেলার জলেশ্বরীতলায়, যা বর্তমানে স্মৃতি জাদুঘর।তাঁর পিতার নাম কাজেম উদ্‌দীন আহম্মদ এবং মায়ের নাম বেগম আছিয়া খাতুন। বগুড়া জেলার সদর থানার ফুলকোট গ্রামের ডাক্তার মোঃ আফাজ উল্লাহ সরকারের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়।

**কর্মজীবনঃ রোমেনা আফাজ লেখালেখি শুরু করেন নয়বছর বয়স থেকে। তার প্রথম লেখা বাংলার চাষী নামক একটি ছড়া প্রকাশিত হয় কলকাতার মোহাম্মদী পত্রিকায়। এরপর অসংখ্য ছোটগল্প, কবিতা, কিশোর উপন্যাস, সামাজিক উপন্যাস, গোয়েন্দা সিরিজ ও রহস্য সিরিজ রচনা করেছেন। তাঁর লেখা রহস্য সিরিজ "দস্যু বনহুর" ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। তাঁর সৃষ্ট এই দস্যু বনহুর চরিত্রের জন্যেই মূলত তিনি বিখ্যাত। রোমেনা আফাজের লিখিত বইয়ের সংখ্যা ২৫০টি।

**চলচ্চিত্রঃ তাঁর লেখা উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে ৬টি চলচ্চিত্র; জনপ্রিয় এই চলচ্চিত্রগুলো হলো - কাগজের নৌকা,

মোমের আলো,

মায়ার সংসার,

মধুমিতা, মাটির মানুষ

ও দস্যু বনহুর৷

**অন্যন্যঃ রোমেনা আফাজ শুধু একজন প্রতিভাময়ী লেখকই ছিলেন না, ছিলেন একজন সক্রিয় সমাজ সেবিকাও। ৩৭টি সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি৷ তারমধ্যে জাতীয় মহিলা সংস্থা, বগুড়ার সাবেক চেয়ারম্যান; ঠেংগামারা মহিলা সবুজ সংঘ, বগুড়ার আজীবন উপদেষ্টা ও প্রতিষ্ঠাতা পৃষ্ঠপোষক; বাংলাদেশ মহিলা জাতীয় ক্রীড়া সংস্থা, বগুড়ার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান; উদীচী সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী, বগুড়ার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান; বাংলাদেশ রেডক্রস সমিতি, বগুড়ার সাবেক সদস্য; শিশু একাডেমী, বগুড়ার সাবেক উপদেষ্টা; বাংলাদেশ রাইটার্স ফোরাম, বগুড়ার সাবেক উপদেষ্টা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য৷

**পুরস্কার ও সম্মাননাঃ নিরলস সাহিত্য সাধনার অনন্য দৃষ্টান্ত রোমেনা আফাজকে সাহিত্য ক্ষেত্রে অসামান্য ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি-স্বরূপ “স্বাধীনতা পুরস্কার-২০১০” (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। রোমেনা আফাজের অবদানকে ধরে রাখার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রোমেনা আফাজ স্মৃতি পরিষদ৷ সাহিত্যে প্রশংসনীয় বিশেষ অবদানের জন্যে বিভিন্ন সংগঠন থেকে পেয়েছেন বহু পুরস্কার৷ তারমধ্যে নারী বিকাশ সংস্থা, বগুড়া থেকে বেগম রোকেয়া স্বর্ণপদক -২০০০; বাংলাদেশ রাইটার্স ফোরাম, বগুড়া থেকে ২১শে পদক (সাহিত্য),২০০৩; গণউন্নয়ন গ্রন্থাগার (সি,ডি,এল) নারী ফোরাম থেকে নারী মুক্তি আন্দোলনের অগ্রদূত সম্মাননা পদক, ২০০৬ (মরণোত্তর) ইত্যাদি অন্যতম৷ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন থেকে সাহিত্যে তাঁর অবদানের স্বীকৃতি-স্বরূপ বিভিন্ন সময়ে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়; তারমধ্যে ঢাকার নারীগ্রন্থ প্রবর্তনা গুণীজন-১৯৯৯ সম্বর্ধনা উল্লেখযোগ্য৷

**সাহিত্যকর্মঃ

দেশের মেয়ে: সামাজিক ও পারিবারিক

জানি তুমি আসবে: প্রণয়মূলক উপন্যাস

বনহুর: রহস্য সিরিজ

রক্তে আঁকা মাপ: দুঃসাহসিক অভিযান

মান্দিগোর বাড়ি: কিশোর উপন্যাস

**মৃত্যুঃ অসামান্য প্রতিভার অধিকারী এই সাহিত্যিক ১২ জুন, ২০০৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন৷

ক্রমশ-------

সূত্রঃ

১। কৃত্তিবাসী রামায়ণ/আদিকাণ্ড/রত্নাকর দস্যু ও রামনামের মাহাত্ম্য

২। মৈমনসিংহ গীতিকা-- দস্যু কেনারামের পালা।

৩। উইকি

৪।বিভিন্ন ব্লগ

৫।পত্রিকা

বিষয়: বিবিধ

২৯৫৩ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

343848
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:০৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ. রোমেনা আফাজ এর লিখা একসময় সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল। যদিও মাসুদ রানা সিরিজ সেই জায়গা করে নেয় কিন্তু বিদেশি কাহিনি ভিত্তিক মাসুদ রানা থেকে দেশিয় মেীলিক প্লটে বনহুর ভিন্ন স্বাদের।
রবিন হুড কিন্তু শুধু কাল্পনিক নয়। এর মধ্যে কিছুটা সত্যতা আছে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File