শুক্তি( গ্রামের ঔষধি ভাত)
লিখেছেন লিখেছেন গোলাম মাওলা ২০ এপ্রিল, ২০১৫, ১১:৪০:২১ সকাল
শুক্তি( গ্রামের ঔষধি ভাত)
গ্রামের মানুষদের মাঝে এই ব্যপারটা প্রচলিত বিশ্বাস (এবং বর্তমানে তা বিঙ্গান সিদ্ধ যে—)গাছের ঔষধি গুন, যা কি না তাদেরদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং নিজেদের রোগ সারাতে বিভিন্ন রকম লতা পাতা শিকড় বাকড় সরাসরি বা এদের রস খেয়ে থাকে। আর এরই ধারাবাহিকতায় গ্রামের মানুষেরা বিশ্বাস করে “শুক্তি” তাদের শরীর হতে বিষাক্ত উপাদান বের করে দিতে এবং গ্যাস্টিক, রক্ত পিত্তনাশক, বাত নিরোধক, ক্ষুধাবৃদ্ধি কারক, আমাশয়, উদারাময় ও অম্লরোগের মহা ঔষধ।
>> শুক্তি কি?
শুক্তি হল শুকনা পাটের পাতার গুড়োর সঙ্গে ভাত এর মিশ্রণ।
>> কি ভাবে তৈরি করা হয়ঃ
এ জন্য গ্রামের মহিলারা পাটের কচি পাতা সংগ্রহ করে আনে। সেই পাতাকে ছায়া যুক্ত স্থানে রেখে উত্তম রুপে শুকিয়ে নেনে। কারণ এতে পাট পাতার (ঘরের তাপমাত্রায় ছায়ার মধ্যে শুকানোর ব্যবস্থা করলে) সবুজ রং অটুট থাকে।
(জানা গেছে জাপানীদের কাছে গাড় সবুজ রং-এর শুকনা পাট পাতা খুবই পছন্দনীয়। একটি প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখাগেছে ৩২০* তাপমাত্রায় ৮ ঘন্টা ইলেকট্রিকাল ওভেন-এ পাটের পাতা শাকানোর ব্যবস্থা করলে পাতার রং নষ্ট না হয়ে সবুজ থাকে। এই অবস্থায় পাতায় পানির পরিমান থাকে প্রায় শতকরা ৮ ভাগ।)
এর পর সেই শুকনা পাতাকে উরু গাইন এর মাধ্যমে গুঁড়ো করা হয়ে থাকে। সেই গুঁড়ো মিহি পাউডার গুলি কাচের/প্লাস্টিক বোয়মে ভরে সংরক্ষণ করা হয় ভবিষ্যতে খাবার জন্য।
>> রেসিপিঃ
একঃ-- পরিবারের সদস্যাদের প্রয়োজন মত ভাত রেধে নিন। এর পর সেই অনুসারে প্রয়োজন মত পাটের গুঁড়ো মিশিয়ে একটু গরম করে নিন। গ্রামের মানুষ সাধারণত সকালে পান্তার পরিবর্তে শুক্তি খেয়ে থাকে। রাতের বেচে জাওয়া ভাতকে পান্তা না করিয়ে রেখে দেই। সেই ভাতে সকালে পাটের পাতার গুঁড়ো মিশিয়ে একটু গরম করে নিলেই তৈরি হয়ে গেল শুক্তি।
দুইঃ-- তবে শুক্তি খেতে কিছুটা তিতে ভাব( দেশি পাটের শাক খেতে তিতে) তাই এই তিতে ভাব দূর করতে একে অন্য ভাবেও খাওয়া হয়। (তেলে দেওয়া ভাতের নাম অনেকে শুনেছেন—রাতের বেচে যাওয়া ভাত কে পিয়াজ , কাচা মরিচ ও হলুদ মিশিয়ে সামান্য তেলে ভেজে নেওয়াকে তেলে দেওয়া ভাত বলে।)
সকালে রাতের বাসি ভাতের সংগে পিয়াজ কাচা মরিচ ও হলুদ মিশিয়ে তেলে দিন। কিছুক্ষণ ভেজে নিয়ে তাতে পাটের গুঁড়ো ছেড়ে দিন। কিছুক্ষণ উল্টিয়ে পাল্টিয়ে মিশ্রণ ভাল ভাবে তৈরি করে নামিয়ে নিন। তৈরি হয়ে গেল শুক্তি।
>> কি ভাবে খাবেনঃ
শুক্তি খেতে সাধারণত আলু ভর্তা দিয়েই ভাল লাগে। আপনার ইচ্ছে মত তরকারি দিয়ে খেয়ে নিন।
>>>>>>শুক্তির মুক্তি তো হল, এবার পাটের ইতিহাস একটু দেখে নিইঃ-------
ভেষজ হিসেবে পাটের পাতার ব্যবহার প্রাচীন কাল থেকে হয়ে আসছে। পাট পাতার রস রক্ত পিত্তনাশক, বাত নিরোধক, ক্ষুধাবৃদ্ধি কারক, আমাশয়, উদারাময় ও অম্লরোগের মহৌষধ। শুকনোপাতা গুড়ো করে পানির সাথে মিশিয়ে রোগ মুক্তির জন্য এবং কাঁচা পাতা শাক হিসেবে বহু কাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আমাদের দেশের একটা বিরাট অংশে পাটের দেশী ও তোষা পাটের চাষ হয়। তাছাড়াও দেশের চট্রোগ্রাম ও সিলেটের পাহাড়ী অঞ্চলে এবং মিশর, আরব ও প্যালেষ্টাইনে বাগানের সব্জী হিসেবে পাট চাষের প্রচলন আছে।
>>সাহিত্যে পাওয়া যায়-------- “সেই রমনী ভাগ্যবতী, যিনি প্রত্যহ স্বামীকে গরম ভাতের সাথে ঘি, মাছের ঝোল ও পাট শাক সহযোগে আহার্য্য পরিবেশন করেন”।
এ যুগের রমনীদের বেলায় এ কথা কতটুকু পালনীয় সেদিকে দৃষ্টি না দিলেও, এ কথা বিশ্বাস অবশ্যই করতে হবে যে, প্রাচীন বাংলায় পাট শাকের জনপ্রিয়তা ও আভিজাত্যের উপস্থিতি ছিল। পাট শাক ব্যাপক পুষ্টিগুন ও বিভিন্ন ঔষধগুনে গুনান্নিত। পাট শাকের পুষ্টিগুন, সুস্বাধুতা ও ঔষধগুনের বিষয়াদি নিয়ে যথাযথ বিচার বিশ্লেষণ ও ব্যাপক প্রচারনা করা গেলে, পাট পাতা পুনরায় তার প্রাচীন গৌরবে অভিজাত খাদ্য তালিকায় ফিরে আসতে পারে বলে আমাদের বিশ্বাস। দড়ি, ছালা, ব্যাগ, বস্তা, কার্পেট, কাপড় ইত্যাদি বিভিন্ন ব্যবহার্য্য দ্রবাদি তৈরীতে ব্যবহৃত একটি উদ্ভিদ জাত আঁশ হিসেবেই পাটের বহুল পরিচিতি। কিন্তু একথা স্পষ্টই প্রমাণ পাওয়া যায়, প্রাচীন কালে সব্জী ও ঔষধ হিসেবেই প্রথম পাটের ব্যবহার শুর হয়েছিল।
>>>>পাটের আত্বকথা:
বাইবেল, মহাভারত ও মনুসংহিতার মত প্রাচীন গ্রন্থে পাটের নাম উল্লেখ থাকলেও ঠিক কবে কখন কি ভাবে পাটের উৎপওি ঘটেছিল তা সময়ের দীর্ঘ পরিক্রমায় জানা যায় না। তবে এ টুকু বলা যায়, পাটের শৈশব কেটেছে এই বাংলা ও ইন্দোবার্মার বৃষ্টি বহুল উষ্ণ অঞ্চলে। এই অঞ্চলের পার্বত্য এলাকাতেই পাটের উপস্থিতির উল্লেখ পাওয়া যায়।
>>অবসর প্রাপ্ত পাটের কৃষি বিজ্ঞানী রামেন্দ্র চৌধুরী-এর একটি প্রবন্ধ থেকে জানা যায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর আগে হিব্র ভাষায় “মাল্লচ” (Malluach) শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায়। “মাল্লচ” থেকেই বগী বা তোষা পাটের ইংরেজি প্রতি শব্দ “মেলোজ” (Melows) এর উৎপওি ঘটেছিল। জানা যায়, প্রাচীন মিশর ও আলেপ্পোতে সবজী হিসেবে বগী পাটের ব্যবহার ছিল। সুপ্রাচীন গ্রীক সভ্যতার ইতিহাসে “করখরস” (Korkhoros) নামে গুল্মের কথা জানা যায়। গবেষকদের বিশ্বাস সেই থেকেই পরবর্তী কালে পাটের বর্গনাম “করকরাস” ( Corchorus) এর উদ্ভব হয়েছে। আরবদের “মেলোসিয়া” নামে পরিচিত পাটের পাতা পঞ্চদশ শতকে ব্যাবিলনের রাস্তায় বিক্রি করা হতো বলে উল্লেখ পাওয়া যায়। ভারতীয় উপমহাদেশেও পাটের প্রথমতঃ সব্জী হিসেবে এবং দ্বিতীয়তঃ ঔষধ হিসেবে পরিচিতি ছিল।The Commercial Products of India (১৯০৮) গ্রন্থের লেখক স্যার জর্জ ওয়াট তার গ্রন্থে পাটের সংস্কৃত শব্দ হিসেবে উল্লেখ করেছেন “নালিতা” (N alita), তবে এই “নালিতা” ঔষধ হিসেবেই একমাত্র ব্যবহৃত হতো, আঁশ হিসেবে এর কোন পরিচিতি ছিল না। বর্তমানেও বৃহওর ময়মনসিংহের বেশ অনেক এলাকায় পাট ‘নইলা’ হিসেব পরিচিত।
>>>পাটের পাতার পুষ্টিগুন
পাটের পাতার পুষ্টিগুন খুবই অবাক হওয়ার মত। তবে সহজলভ্য ও সস্তা হওয়ার ফলে এর পুষ্টিগুন সস্পপ আমরা সচেতন নই। পালং শাক ও পাট শাকের পুষ্টি মানের তুলনা
(প্রতিটির ১০০ গ্রাম ওজনের ভিত্তিতে)
উপাদান ও একক-------------------------- পাট শাক
শক্তি (কিলো ক্যালোরী)------------------৭৩
আমিষ (গ্রাম)-------------------------- ৩.৬
লিপিড (গ্রাম)-------------------------- ০.৬
ক্যালসিয়াম (মিঃ গ্রাম)----------------- ২৯৮
লৌহ (মিঃ গ্রাম)-------------------------১১
ক্যারেটিন (মিঃ গ্রাম)--------------------৬৪০০
ভিটামিনঃ
সি-(মিঃ গ্রাম)-------------------------- ৬৪
>>পাট পাতার ঔষধীগুণ
পাটের গুণ ও উপকারিতা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। তাই পাটশাকেরও যে অনেক গুণ থাকবে, তা যেন জানা কথা। পাটশাকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, অ্যালকালয়েড, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, প্রোটিন, লিপিড, কার্বহাইড্রেট এবং ফলিক অ্যাসিড আছে। দেশীয় অন্যান্য শাকের তুলনায় পাটশাকে ক্যারোটিনের পরিমাণও থাকে অনেক বেশি।
>>>চিকিৎসা শাস্ত্র গ্রন্থ “চরক সংহিতা” এ পাটের ঔষধ গুন সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, পাট শাক রক্তপিত্ত বিনাশকারী, প্রশ্রাবের কষ্টজনিত রোগ উপশমকারী এবং বাতের প্রকোপ হৃাসকারী।
>>কবিরাজি চিকিৎসা শাস্ত্র মতে তিতা পাট আথাৎ দেশী পাটের পাতার রস আমাশয়, জ্বর ও অম্ল বিনাশে অমোঘ ঔষধ। ইহা ক্ষুধা ও হজম বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ট পরিষ্কারক হিসেবে খুবই উপযোগী। আবার মিঠা বা তোষা পাটের পাতার রস ও হলুদের গুড়া মিশিয়ে খেলে জটিল রক্ত আমাশয় নিরাময় হয়। মিঠা পাটের পাতা ভিজিয়ে পানি খেলে প্রশ্রাব বৃদ্ধি, মুত্রাশয়ের জ্বালাপোড়া দুর হয় এবং শরীরের বল বা শক্তি বৃদ্ধি পায় বলে জানা যায়।পাট শাকের যত গুণ
পাটশাক খাওয়ার রুচি বাড়ায়। মুখের স্বাদ ফিরিয়ে আনে। এতে থাকা ভিটামিন সি ও ক্যারোটিন থাকায় মুখের ঘা দূর করতে সাহায্য করে। রাতকানা রোগের বিরুদ্ধে লড়ারও ক্ষমতা আছে। কোষ্ঠকাঠিন্যতে যাঁরা ভুগছেন, তাঁরা নিয়মিত পাটশাক খেতে পারেন। যাঁদের বাতের ব্যথা আছে, তাঁদের জন্য উপকারী। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় যাঁরা দীর্ঘদিন ভুগছেন, পাটশাকে সমাধান খুঁজতে পারেন। রক্ত পরিষ্কারক হিসেবেও পাটশাক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। পাটপাতায় টিউমার ও ক্যানসার রোধক পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান। হাড় ভালো রাখার জন্যও খেতে পারেন। দাঁত ও মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও সাহায্য করে।
বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে পাটের পাতার বহুল ব্যবহার প্রচলীত আছে। পাট সাধারণত বর্ষামৌশুমের ফসল, তখন বেশীর ভাগ এলাকায় পাট শাক সব্জী হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু যদি অন্য মৌশুমে পাতার প্রয়োজন হয় তবে পাতা শুকিয়ে গুড়ো করে সযত্নে সংরক্ষণ করে রাখে গ্রামের মহিলারা যা শুক্তি নামে পরিচিত।
>>পাট পাতা বা শাকের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলের বড় চাষিরা পাটের মৌশুমে জমিতে আন্তপারিচর্যার জন্য যে শত শত শ্রমিক নিয়োগ করে, চাষীদের পক্ষ থেকে তাদের নগদ টাকা ও এক বেলা বা দু বেলা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এই বিপুল পরিমাণ শ্রমিকের সকাল বা দুপুরের খাবার দেওয়া হয় ভাতের সাথে পাট শাক, ডাল, মরিচ এবং কখনো কখনো অন্য কোন একটি তরকারী। এ ক্ষেত্রেও প্রচুর পরিমানে পাট শাক সব্জী হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তা ছাড়া বর্তমানে একটু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে শহর অঞ্চলের বড় বড় কাচা বাজার গুলোতে পাটের শাক প্রায় বছরের সব সময়ই পাওয়া যায় এবং বহুল ভাবে কেনা বেচা হয়।
জাপানী ব্যবহারকারীদের কাছে গাড় সবুজ রং-এর শুকনা পাট পাতা খুবই পছন্দনীয়। একটি প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখাগেছে ৩২০ঈ তাপমাত্রায় ৮ ঘন্টা ইলেকট্রিকাল ওভেন-এ পাটের পাতা শাকানোর ব্যবস্থা করলে পাতার রং নষ্ট না হয়ে সবুজ থাকে। এই অবস্থায় পাতায় পানির পরিমান থাকে প্রায় শতকরা ৮ ভাগ। এই ধরনের শুকনা পাতা ১৬ ম্যাস ছাকনির পরিমাপে পাউডার করা সম্ভব। তবে সাধারণ ভাবে পাট পাতা ঘরের তাপমাত্রায় ছায়ার মধ্যে শুকানোর ব্যবস্থা করলেও এর সবুজ রং অটুট থাকে।
পাট মৌশুমে বাংলাদেশে দেশী ও তোষা উভয় জাতের পাটের পাতাই সব্জী হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। পাট ফসলের আন্তপরিচর্যার সময় বীজ বপনের পর ২০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে ২ অথবা ৩ বার গাছ পাতলা করনের মাধ্যমে সাধারনত এই কচি পাট পাতা সংগ্রহ করা হয়। বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কারনেই পাটের গাছের সংখ্যার চাইতে জমিতে অতিরিক্ত বীজ বপন করা হয়। প্রায় ৫ থেকে ১০ লক্ষ কচি পাট গাছ এই ভাবে পাট ফসলের জমিতে থেকে পাতলা করনের মধ্যমে সরিয়ে ফেলা হয়। এই ভাবে ১ হাজার থেকে ২ হাজার কেজি সবুজ পাতা যাহা ২০০ থেকে ৪০০ কেজি শুকনা পাতার সম পরিমান হয়। এই ভাবে সংগ্রীহিত পাট পাতা সারা দেশে সব্জী হিসেবে এবং কোন কোন স্থানে অতিরিক্ত হলে গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে কি পরিমান পাট পাতা প্রতি বছর আমাদের দেশে ব্যবহৃত হচেছ, তার কোন সঠিক পারিমান এখনো জানা নাই। যেখানে বাংলাদেশে ভাত হলো আমাদের প্রাধান খাদ্য, সেখানে পাট পাতা শাক হিসেবে, সুপ হিসেবে, ভেজিটেবল চপ এবং ভাজা পাতা হিসেবে খাওয়ার প্রচলন তৈরী করা খুবই সহজ এবং গুরূত্ত্বপূর্ণ। আমাদের দেশের প্রায় শতকরা ৬০ ভাগ জমি সব্জী উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। এই সব্জী উপাদনের বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। যেমন- জমির প্রাপ্যতা, প্রযুক্তির অভাব, খারাপ মানের বীজ, খারাপ আবহাওয়া, পোকা মাকড়ের আক্রমন, কর্তন পরবর্তীতে উৎপাদিত ফসল নষ্ট হওয়া এবং বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার কারনে সঠিক মূল্য না পাওয়া। তবে এতো কিছূ সমস্যার মাঝেও পাট পাতার উৎপাদনে তেমন কোন সমস্যা নেই। যদিও পাট গ্রীষ্মের ফসল, তবে বছরের যে কোন সময় সব্জী হিসেবে পাট পাতার উৎপাদন করা সম্ভব। তা ছাড়া যে কোন সময়ে উৎপাদিত পাতা শুকিয়ে সংরক্ষণ করলে বছরের যে কোন সময় চাহিদা মত ব্যবহার করা চলে।
উপরোক্ত বিষয়গুলো অনুধাবন করে পরিকল্পিত ভাবে উদ্দোগ গ্রহণ করা গেলে অদুরভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে জাপান এবং অন্যান্য দেশে রপ্তানীযোগ্য পন্যের তালিকায় পাট পাতাকে সহজেই অšরভূক্ত করা যেতে পারে। তা ছাড়া বাংলাদেশে পুষ্টিহীনতার সমস্যা ব্যাপক। এ ক্ষেত্রে পাটশাকের ব্যবহার আরো জনপ্রিয় করে তোলা গেলে সমস্যার কিছুটা হলেও সহজেই সমাধান করা সম্ভব।
সুত্রঃ কৃষিবিদ ড. মোঃ মাহবুবুল ইসলাম,মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (চ. দায়িত্ব) ও প্রধান কৃষিতত্ব বিভাগ, বাংলাদেশ পাট গবেষনা ইনস্টিটিউট, ঢাকা।
বিষয়: বিবিধ
১৬০৪ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন