পথখাবার
লিখেছেন লিখেছেন গোলাম মাওলা ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০২:৪২:২৮ রাত
পথখাবার
রাস্তায় নামলেই ঢাকায় দুটি জিনিশ খুব চোখে পড়ে—
এক--ময়লা আবর্জনার ঢিপি
দুই-- পথখাবারের দোকান।
আমার চোখে পড়া রাস্তার খাবার দোকান সম্পর্কে আজ কিচু মিচু বলিব। এই কিচু-মিচু সম্পর্কে অনেকদিন আগে শৈশবে দাদীর কাছে শোনা একটা গল্প মনে পড়ে গেল। আগে সেটির বয়ান করে নিই তার পর না হয় রাস্তার খাবার সম্পর্কে কিছু বলিব। আসুন শুনে নেই সেই গল্প----
“””” এক গ্রামে বাস করত এক বিধবা। আর তার ছিল এক ছেলে। নাম তার রহিম বাদশা। রহিম বাদশা ছিল হদ্দ বোকা। আর সেই জন্য তার মা ছিল খুব চিন্তিত।তা যাই হোক ছেলের বয়স হয়েছে, এবার ছেলেকে বিয়ে থা তো দিতে হবে! অনেক দেখে শুনে সাত গ্রাম পার হয়ে দিদুল গ্রামের মেয়ের সঙ্গে ছেলেকে বিয়ে দিয়ে বউ এনেছেন বাড়িতে।এ করেই মা, বউ ছেলের খুব ভাল চলে যাচ্ছিল।
একদিন বউ এর ভাই পালকি আর সঙ্গে মিঠা-মন্ডা নিয়ে বাড়িতে উপস্থিত। রহিম বাদশার শশুর অসুস্থ মেয়েকে দেখতে চান। তাই তাকে নিয়ে আজি বাড়ি ফিরে যেতে চান তার শ্যালক।
কদিন বাদে মা রহিম বাদশা কে ডেকে বলল—খোকা বেশ কদিন হয়ে গেল একবার শশুর বাড়ি ঘুরে আয়।তোর শশুর কেমন আছে দেখে বউমাকেও নিয়ে আয়।
ছেলেও মাথা ঝাঁকিয়ে রাজি।
যাবার আগে মা বোকা ছেলের হাতে টাকা ধরিয়ে বলল—শশুর বাড়িতে প্রথম যাবি খালি হাতে তো আর যেতে পারবিনা তাই উজান তলির হাট হতে কিচু-মিচু কিনে নিয়ে যাস।
রহিম বাদশা দুই গ্রাম পার হয়ে উজান তলির হাটে উপস্থিত হয়ে কিচু-মিচু খুঁজতে লেগেগেল।
সব দোকানদার বলল তারা কিচু-মিচু চেনে না। কিন্তু এক ধুরন্দর দোকানদার তার অবিক্রিত ওল দেখিয়ে বলল এই হল কিচু-মিচু।
বোকা রহিম বাদশা খুশি মনে সেই ওল কে কিচু-মিচু( মা বলেছিল মিষ্টি বা এই জাতীয় কিচু-মিচু) মনে করে কিনে নিয়ে শশুর বাড়ির পথে রওনা হল।“””””
>> আমরাও হয় বোকা হয়ে না হয় বোকার ভান ধরে, জেনে শুনে, না হয় দোকানির চালাকি না ধরতে পেরে, না বোকা সাজতে পছন্দ করি – কোন ট্রামটা যে আমাদের জন্য ঠিক তা আমার বোধগম্য নয়।
আর তাই তো রাস্তায় নানা খাবারের পসরা বসিয়ে দিধারচে বিক্রি হচ্ছে নানা রকমের নানা স্বাদের খাবার । আর সেই খাবার দেখে---- আহ! কি স্বাদ,লোভে জিবে জল চলে আসে আমাদের। আর দিধারচে সেই খাবার খাচ্ছি এই আমরাই। খেয়ে ঢেঁকুর তুলে রহিম বাদশার মত খুশি মনে বলছি—বাহ! খেতে ভারি মজা তো।
এই খুশি আমাদের হওয়া যে উচিত নয় তা নিচের খবর টা পড়লেই টনক নড়বে--
***আইসিডিডিআরবির গবেষণা ----ঢাকার ৫৫ শতাংশ পথখাবারে জীবাণু।
>>আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) এক গবেষণায় দেখা গেছে, রাজধানী ঢাকার ৫৫ শতাংশ পথখাবারে নানা ধরনের জীবাণু রয়েছে। এসব খাবার বিক্রেতাদের ৮৮ শতাংশের হাতে থাকে জীবাণু। গবেষণাকারীরা বলছেন, বিক্রেতাদের সচেতন করে খাবার দূষণ কমিয়ে আনা সম্ভব।
‘ঢাকা শহরে নিরাপদ পথখাবার (স্ট্রিট ফুড) নিশ্চিতকরণে রাস্তার বিক্রেতাদের আচরণ পরিবর্তনে উদ্যোগ’ শীর্ষক গবেষণায় এ তথ্য পাওয়া গেছে। ২৫ জানুয়ারি, ২০১৫ রোববার আইসিডিডিআরবির সাসাকাওয়া মিলনায়তনে গবেষণার তথ্য উপস্থাপন করা হয়। এ গবেষণায় ২০১৩ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৪ সালের অক্টোবরের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭ হাজার ৭৫৪ জন পথখাবার বিক্রেতার তথ্য নেওয়া হয়েছে। এঁদের বিক্রি করা খাবার পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হয়েছে।গবেষণায় নেতৃত্ব দেন আইসিডিডিআরবির সহযোগী বিজ্ঞানী আলেয়া নাহিদ। ফলাফল উপস্থাপনের সময় আলেয়া নাহিদ বলেন, ঢাকা শহরের রাস্তাগুলোতে প্রায় দুই লাখ বিক্রেতা নানা ধরনের খাবার বিক্রি করেন।
>>ঢাকার রাস্তায় বিক্রি হওয়া খাদ্যদ্রব্যঃ
এর মধ্যে আছে শুকনো, তেলে ভাজা, রান্না করা, আগুনে সেদ্ধ-পোড়ানো, তেলে মাখানো ইত্যাদি খাবার। আর আশ্চর্যের বিষয় এই খাদ্য গুলি খুবি সুস্বাদু। আর আমরা প্রায় কোন না কোন উপায়ে বা পরিস্থিতিতে খেয়েও থাকি।
১। ফল
২। চা
৩।ঝালমুড়ি
৪। পিঠা
৫। বাদাম
৬।ছোলা
৭।চটপটি
৮।ফুচকা
৯।চাটনি
১০।আচার
১১।আচার পিঠে
১২। মিষ্টি
১৩।ডিম (ভাজা বা সেদ্ধ)
১৪।রুটি
১৫।পরোটা
১৬।পুরি
১৭।চিপস
১৮।মোয়া
১৯।গজা
২০।শিঙাড়া
২১।সমুচা
২২।পেঁয়াজু
.২৩।শরবত
২৪।ফলের রস
২৫। আখের রস
২৬।হালিম
২৭।আইসক্রিম
২৮।নুডলস
২৯।পোলাও
৩০।তেহারি
৩১।খিচুড়ি
৩২।ভাত
৩৩।শিক কাবাব ইত্যাদি।
>> দূষণের স্তরঃ
ক)তৈরি প্রক্রিয়া বা সময়ে
খ)রান্না করার সময়
গ)সংরক্ষণ করার সময়
ঘ)সরবরাহের সময়
এসব স্তরে পথখাবার দূষিত হয়।
>> খাদ্য দূষণের কারনঃ
ক)দূষণের কারণ বা জীবাণুযুক্ত হওয়ার একটি বড় কারণ অনিরাপদ পানির ব্যবহার।
খ)খাবার বিক্রেতার নোংরা হাতে
গ)গামছা বা মুছনি
ঘ)খাবার সরবরাহের প্লেটে বা কাগজে জীবাণু থাকে
ঙ) মাছি বা অন্যান্য কীটপতঙ্গের কারণেও দূষণ ঘটে।
চ)দূষণের আর একটি কারণ বারবার টাকা নাড়াচাড়া করা।
আলেয়া নাহিদ বলেন, পথখাবার বিক্রেতা এবং এসব খাবার যাঁরা ক্রয় করেন, তাঁদের সচেতনতা প্রায় একই স্তরে। তিনি জানান, গবেষণার অংশ হিসেবে পথখাবার বিক্রেতাদের সচেতন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
>> যা করা প্রয়োজনঃ
খাদ্য দূষণের বা জীবাণুযুক্ত হয়ার হাত থেকে বাঁচতে বিক্রেতার প্রয়োজন নিচের কাজ গুলি মান্য করা।
ক)বিক্রেতাদের খাবার খোলা অবস্থায় না রাখা
খ) সরু মুখওয়ালা পানির পাত্র ব্যবহার
গ) কাঁচা খাবার বা রান্নার সরঞ্জাম পরিষ্কার রাখা
ঘ) বার বার হাত ধোয়া
ঙ) গ্লাভস ব্যবহার করা
চ) টেবিল হতে কাষ্টমারদের নোংরা প্লেট সরিয়ে ভাল করে হাত ধুয়ে নেওয়া।
ছ)ক্রেতারা যেন খাবারে হাত না দেন
জ)বিক্রেতারা যেন একই পানি বারবার ব্যবহার না করেন
এ সব বিষয়ে সচেতন থাকা আবশ্যক।
এবার আসুন দেখে নিই মন ভুলানো জীবে জল চলে আসা কিছু খাবারের ছবি—
ছবি গুলি এই কয়েকদিন ঢাকার বিভিন্ন যায়গায় তোলা।
>> নেতিবাচক প্রভাবঃ
অনেকেই প্রায় নিয়মিতই রাস্তার পাশের বা ফুটপাতের খোলা খাবার খান। বাসস্ট্যান্ডের পাশের খোলা দোকান থেকে শিঙ্গাড়া-পুরি, রাস্তায় দাঁড়িয়ে মুড়ি-চানাচুর ভর্তা, আচার ,আলুর চপ, ডালপুরি, সমুচা, পিঁয়াজু, চা, পান খান। গরমকালে ফুটপাতে ফলের রস বা লেবুমিশ্রিত ঠাণ্ডা পানি পান করেন। সাময়িকভাবে এই ঠাণ্ডা পানি শরীরে প্রশান্তি আনে, খাবার পেট ভরায়। কিন্তু এসব খাবার বা পানীয়ের সুদূরপ্রসারী নেতিবাচক শারীরিক প্রভাব রয়েছে। খেয়াল করে দেখুন, অধিকাংশ সময় খাবারগুলো খোলা অবস্থায় রাখা হয়। আশপাশ দিয়ে তীব্র বেগে গাড়ি চলে যায় ধুলা উড়িয়ে। মাছি উড়তে থাকে পাশে। বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা ও জীবাণু এসব খাবার বা পানীয়ের ওপর জমতে থাকে। অসংখ্য মাছি খাবারের ওপর ভনভন করে, বসে, বমি করে, মল ত্যাগ করে ও জীবাণু ছড়ায়। এসব জীবাণু ও ধুলা খালি চোখে দেখা যায় না। পানিটা হয়তো টিউবওয়েল থেকেই আনা।কিন্তু পানি রাখার পাত্রটা কতটা পরিষ্কার? কিংবা পাত্র থেকে যে মগ দিয়ে পানি তুলে দেওয়া হচ্ছে গ্লাসে, সেই মগ কতটা জীবাণুমুক্ত? মগে হয়তো পাঁচটা মাছি বসে ছিল। গ্লাসটাই বা কতটা পরিষ্কার করে ধোয়া হয়েছিল এবং কতটা পরিষ্কার রাখা হয়েছিল? থালা-বাসন, কাপ-প্লেট ইত্যাদি সাধারণত বোলে রাখা পানিতেই ধোয়া হয়।
সুতরাং খুব ভালোভাবে যে পরিষ্কার হয়, তা বলা যাবে না। ধোয়ার পরে রেখে দেওয়া স্থানে ধুলাবালি ও মাছির অবাধ প্রবেশ! কতটা পরিষ্কার থাকবে?
পানের দোকান থেকে কেনা খিলি পান। কতটা পরিষ্কার করে ধোয়া বা কতটা পরিষ্কার করে রাখা? খিলিটা বানিয়ে দেওয়ার সময়ই বা কতটা পরিচ্ছন্নতা মানা? পরিবেশকদের স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে জ্ঞান সীমিত।
হাতের নখ হয়তো বড়। হাত দিয়ে ঘাম মুছছে নিয়মমতো এবং সময়মতো হয়তো হাত ধোয়া হয়নি। একটা তোয়ালে বা গামছা দিয়ে খাবার টেবিল পরিষ্কার করছে। সেই অপরিষ্কার হাতেই একটা শিঙ্গারা তুলে দিল আপনার প্লেটে। খরিদ্দারের কাছ থেকে যে হাতে টাকা নিল, সেই হাত না ধুয়েই আপনাকে একটা পরোটা পরিবেশন করল। ব্যাপারগুলো মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়।
বাসি, পচা বা নি্নমানের খাবার বিক্রির কথাটিও মনে রাখতে হবে। অনেক সময় আগের রাতে তৈরি করে রাখা খাবারে তেলাপোকা বা অন্যান্য কীটপতঙ্গের পদচারণা হয়ে থাকতে পারে। হতে পারে জীবাণু সংক্রমণ।
>>চিকিত্সকরা বলছেন, এ ধরনের খোলা খাবার খেয়ে পেটের পীড়া, পেটের প্রদাহ, ক্ষুধামন্দা, এন্টিফিভার, জন্ডিস, হেপাটাইটিসসহ মারাত্নক সব রোগে আক্রান্ত হচ্ছে কোমলমতি শিশুরা৷ শিশু বিশেষজ্ঞ গোলঅম সারোয়ার বলেন, , ‘দেশের শতকরা ৫০ ভাগ রোগীই মূলত পেটের প্রদাহ, ক্ষুধামন্দা, জন্ডিস ইত্যাদি রোগে ভোগে৷ এসব রোগ মূলত অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার কারণেই হয়ে থাকে৷ আর শিশুরা এসব খাবার খেয়ে রোগে আক্রান্ত হয় দ্রুত৷’
>>এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনষ্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক সাগরময় বড়ূয়া বলেন, ‘রাস্তার পাশে যেসব খোলা খাবার বিক্রি হয় তার মাইক্রোবায়োলজিক্যার ভ্যালু রীতিমত ভয়ঙ্কর৷ যে পরিবেশে খাবার রান্না কিংবা তৈরি করা হয়, তা বেশির ভাগ সময়ই নোংরা অস্বাস্থ্যকর থাকে৷ তাছাড়া এসব খাবার বিশেষ করে আচার বা এ ধরনের খাবারে যে সব রঙ মেশানো হয় তা ফুডগ্রেডের নয়৷ এসব রঙ কাপড়ে ব্যবহার করা হয়৷ এই রঙ মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর৷ কিছু কিছু রঙের কারণে ক্যান্সার হয়৷ এই রঙ কিডনী ও লিভার নষ্ট করে দেয়৷ পর্যাপ্ত হিটিং সিষ্টেমে রান্না না করার কারণে খাবরগুলোতে প্রচুর জীবাণু থাকে যা মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর৷ এসব খাবার খেয়েই শিশুরা অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে৷ এ ব্যাপারে বাবা-মাকে সচেতন হতে হবে৷’
>>আইন কি বলে?
বাংলাদেশ সরকার জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে 'বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন অর্ডিন্যান্স ১৯৮৫' জারি করেছে। এর আগে মানুষের ভোগের জন্য খাদ্য প্রস্তুত ও বিক্রি নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে 'বিশুদ্ধ খাদ্য অধ্যাদেশ ১৯৫৯' জারি হয়। এইসব আইনের ফাঁক ফোকর গুলি বন্ধ করে আরও আধুনিক ও আধুনকায়ন করতে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ থেকে কার্যকর হয়েছে ‘নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩’।
নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩-এ যেসব নতুন বৈশিষ্ট্যের সন্নিবেশ ঘটেছে, সেগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো—
>> ভেজাল খাদ্য বলতে কী বোঝাবে তার বিস্তারিত বিবরণ। বলা হয়েছে, ভেজাল খাদ্যের অর্থ— ক. কোনো খাদ্য বা খাদ্যদ্রব্যের অংশ, যাতে মানবস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বা জীবনহানির কোনো রাসায়নিক বা ভারী ধাতু বা কীটনাশক ব্যবহার করা হয়; বা খ. মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এমন কোনো খাদ্যদ্রব্য অথবা কোনো আইন বা বিধির অধীন নিষিদ্ধ করা হয়েছে এমন কোনো উপাদান মিশ্রিত খাদ্যদ্রব্য; বা গ. খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে কোনো আইন বা বিধির অধীন নিষিদ্ধ ভিন্ন কোনো উপাদান মেশানো, রঞ্জিত করা, আবরণ দেয়া বা আকার পরিবর্তন করা। যার ফলে খাদ্যের গুণাগুণ বা পুষ্টিমান কমে যায়; ঘ. খাদ্যদ্রব্যে বিকিরণসহ কোনো দূষক বা বিষাক্ত উপাদানের উপস্থিতি, যা খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুতকারী, ক্রেতা বা গ্রহণকারীর স্বাস্থ্যহানির কারণ হতে পারে।
>> বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) গঠন। বলা হয়েছে, একজন চেয়ারম্যান ও পাঁচজন সদস্যের সমন্বয়ে এ কর্তৃপক্ষ গঠিত হবে। নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য নিশ্চিত এবং এ লক্ষ্যে প্রাসঙ্গিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বিএফএসএর দায়িত্ব।
>> খাদ্য ব্যবসায়ীদের দায়দায়িত্ব নির্ধারণ। এতে বলা হয়েছে, প্রত্যেক খাদ্য ব্যবসায়ী নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ এবং এর অধীন বিধি ও প্রবিধান প্রতিপালন করে তার নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যবসার মাধ্যমে খাদ্যদ্রব্য উত্পাদন, প্রক্রিয়াকরণ, আমদানি, বিতরণ ও বিপণনের নিশ্চয়তা প্রদান করবেন।
>> খাদ্যে ভেজাল মেশানোর জন্য সংশোধিত পিএফও, ১৯৫৯-এর সর্বোচ্চ শাস্তি ২ লাখ টাকা জরিমানা এবং তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড বৃদ্ধি করে ২০ লাখ টাকা জরিমানা এবং পাঁচ বছর কারাদণ্ড নির্ধারণ।
>> পিএফও, ১৯৫৯-এ কোনো ব্যক্তি অনিরাপদ খাদ্য উত্পাদক, প্রক্রিয়াকারী বা বিক্রেতার বিরুদ্ধে সরাসরি মামলা দায়ের করতে না পারলেও নিরাপদ খাদ্য আইনে তিনি মামলা দায়ের করার কারণ উদ্ভব হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে নিরাপদ খাদ্য বিরোধী যে কোনো কাজ সম্পর্কে সরাসরি মামলা দায়ের করতে পারবেন।
তাছাড়া বলবৎ রাখা হয়েছে সংশোধিত পিএফও, ১৯৫৯-এর বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত স্থাপন-সংক্রান্ত বিধানটি। সংশোধিত পিএফও, ১৯৫৯-এর আদলে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রীর স্থলে খাদ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে ৩০ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের বিধান রাখা হয়েছে।
>>সব শেষে আশা ব্যক্ত করি আইনের প্রয়োগ হোক আর আসুন সতর্ক হই এবং এড়িয়ে চলি পথখাবার।
বিষয়: বিবিধ
১৪৪২ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমাদের দেশের বেশিরভাগ বাসার কিচেন এর পরিবেশ ও এর চেয়ে ভাল নয়। হোটেল এর কথা বাদই দিলাম্
আবার KFC, Pizza Hut এসব পরিচ্ছন্ন টিপ টপ দোকানের ভাল ভাল পুষ্টিকর খাবার খেয়ে বড় লোকের পোলাপানরা হোতকা পেটুক হয়ে যাচ্ছে । এবং এতে অল্প বয়সেই বিভিন্ন ধরনের অসংক্রামক দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন