পারাপার(অনু গল্প)

লিখেছেন লিখেছেন গোলাম মাওলা ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০২:৩৪:৫১ রাত

পারাপার(অনু গল্প)



রনির সম্পূর্ণ মনোযোগ তার মোবাইলের স্কিনে। ফুটপাত দিয়ে হাটতে হাটতে চৌরাস্তার দিকে যাচ্ছে ও।

উদ্দেশ্য মোড়ের মেইন রোডে গিয়ে বাস ধরা।মধ্যবিত্তদের এই এক সমস্যা, না পারে রিক্সা নিতে না পারে ক্যাব বা সিএনজি নিতে।তাই ভরসা সেই বাস।

ফুটপাতে না দেখে হাটার বিপদ গুলি তুচ্ছ করে অলস পদক্ষেপে হেঁটে যাচ্ছে ও। অখণ্ড মন তার স্কিনের দিকে। বাংলা পিডিএফ গ্রুপে ফুয়াদ ভাই এর করা পোষ্ট দেখছে। সামনে আপকামিং নতুন কি পিডিএফ বই আসছে তা খুঁটিয়ে পড়ে নিচ্ছে।

ফুটপাত শেষ, সামনে মোড়। এবার রাস্তা পার হয়ে ওপারের ফুটপাতে যেতে হবে।

পলকে সামনে একবার দেখে নেয় রনি --সামনে ফাঁকা দেখে পা বাড়িয়ে অটো চোখ স্কিনের দিকে নিবন্ধ হয়ে যায় ওর।

ফেসবুকে হোম পেজে আসা নোটিফেকশনে এক বন্ধুর চুটকি পড়ে ফিক করে হাসি ফুটে উঠে ওর ঠোঁটে, সেই একই সময়ের ভগ্নাংশে হর্নের শব্দে চমকে উঠে তাকিয়ে দেখে একটুর জন্য বেঁচে গেছে এক বাইকের সংঘর্ষ হতে।

চালকের সঙ্গে চোখাচোখি হতেই, তারুণ্যের উচ্ছলতাই চোখে রাগের একটা ভাব ফুটে উঠে—(ভাব খানা এমন দোষ যেন চালকের—কপালে চোখ নাই তার, দেখে চালাতে পারেননা মিয়া)কিছুই হয়নি ভেবে আবার চোখ ফিরিয়ে যেই না কয়েক পা এগিয়ে গেছে অমনি পিছন হতে এক জোরসে বিরাশী ছিক্কির থ্যাবড়া।

হাতে থাকা মোবাইল ছিটকে পড়ে সামনে পড়ে-- আর নিজে পড়তে পড়তে কোনরকমে সামলে নেয় রনি।

পিছনে ফিরে দেখে সেই বাইক চালক, চোখে আগুন নিয়ে তাকিয়ে।

ওও সমান তেজে ফিরে তাকিয়ে শুধু মুখ খুলেছে—কি বেপা---- শেষ হয়না শব্দ,

--শালা মোবাইল না—আরেক থাবড়া পড়ে রনির গালে।

ও কিছু বলবে কি ?

হতবিহব্বল হয়ে প্রতিবাদ করতে চায় কিছু বলতে চায়।

কিন্তু মোড়ের একজন বলে উঠে—দিন আরেকটা লাগিয়ে। রাস্তায়ও মোবাইল টেপা। এই ছেলেপুলেরা যে কি!

কথাটা যে ওকে উদ্দেশ্য করে বলা হচ্ছে না তা বেশ বুঝছে রনি।তাই আর উচ্চবাচ্য না করে মাথা নিচু করে সামনে রাস্তায় পড়ে থাকা মোবাইলটা কুড়িয়ে কেটে পড়ার মতলব করে ও।

এখানে আর এক সেকেন্ড থাকলে আর দু একটা থ্যাবড়া খেতে হতে পারে। আর ওরই দোষ মনে হয়। কিছু করারও নেই।

------------------------------------

বিঃদ্রঃ সেদিন বাসাবো চৌরাস্তার মোড়ে খিলগাঁ ফ্লাইওভার হতে নেমে আসার স্থলে এক বাইক চালক এক ১৮-২২ বছরের এক ছেলেকে আচ্ছা করে ঘুষি মারছে। তাদের ঘুষি পর্বে রাস্তা জ্যাম বেঁধে গেছে। যাকে মারছে সে শুধু আত্মরক্ষা করছে। সকলে হায় হায় করে উঠল। তা দেখে মনে ছেলেটার প্রতি মন আদ্র হয়ে উঠল আমার। আহ বেচারা শুধু শুধু মার খাচ্ছে। বাইক চালক বাইকে উঠে চলে গেল ছেলেটাও তার রাস্তায় ছিটকে পড়া দুটি মোবাইল কুড়িয়ে মাথা নিচু করে ওপার পাগার পার হল।

তখন জানা গেল বেচারা আর একটু হলে বে খেয়ালে বাইক চালকের চাকায় পিষ্ট হচ্ছিল।সে মোবাইলে কথা বলছিল আর বে খেয়ালে রাস্তা পার হচ্ছিল। তখন অনেককে বলতে শুনলাম ঠিক হয়েছে। আরও দু একটা লাগিয়ে দেওয়া লাগত। এমন মন্তব্য।

বিষয়: বিবিধ

১০০৭ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

297408
২৭ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ০৭:১৪
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : ঠিকই আছে। চাপা পড়লে দোষ হত চালকের। এদের এভাবেই মাথা ঠিক করা দরকার।
১৭ জানুয়ারি ২০১৫ বিকাল ০৫:৩২
243187
গোলাম মাওলা লিখেছেন : ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File