আজ অগ্নিযুগের বিপ্লবীর বিনোদ বিহারী চৌধুরীর প্রয়াণ দিবস

লিখেছেন লিখেছেন গোলাম মাওলা ১০ এপ্রিল, ২০১৪, ০১:১০:০৯ রাত





বিপ্লবী নেতা বিনোদ বিহারী চৌধুরীর জন্ম ১৯১১ সালের ১০ জানুয়ারী। চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালি থানায়। বাবা কামিনী কুমার চৌধুরী। মা রামা চৌধুরী। বাবা কামিনী কুমার চৌধুরী ছিলেন উকিল। তিনি অসহযোগ আন্দোলনের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। শৈশব থেকেই বিনোদবিহারী চৌধুরী তাঁর বাবা কামিনী কুমার চৌধুরীর কাছ থেকে রাজনীতির হাতেখড়ি নেন। পিতার বিপ্লবী চেতনা তাকে আলোড়িত করে। ১৯২১-২২ সালে ১১ বছরের সময় পিতার সাথে অসহযোগ আন্দোলনে তিনি জড়িয়ে পড়েন। এভাবে তার শৈশব মানস গড়ে উঠে। যা পরবর্তী বিপ্লবী রাজনৈতিক জীবন গঠনে অনুপ্রেরণা যোগায়। স্বদেশী আন্দোলনের সময় তিনি বাবার মতো বিলেতি কাপড় ছেড়ে খদ্দরের কাপড় পরতে শুরু করেন। শুধু যে নিজে পরতেন তা-ই না, অন্যান্য ছেলেমেয়েদেরও খদ্দরের কাপড় কিনে দিতেন। “মূলত তখন থেকেই তার মধ্যে স্বদেশ প্রেমের বীজমন্ত্র বপন হয়।

পড়াশুনার হাতেখড়ি বাবার কাছে। তারপর তার বাবা চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি থানার রঙামাটি বোর্ড স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। এখানে শুরু হয় তার প্রাথমিক শিক্ষা জীবন। প্রাথমিক পড়াশুনা শেষে তিনি ভর্তি হন বোয়ালখালী থানার সারোয়াতলী উচ্চ বিদ্যালয়ে। ওই বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করাকালীন সময়ে তিনি বিপ্লবী রামকৃষ্ণের সঙ্গে পরিচিত হন। রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের সাহচর্যে এসে বিনোদবিহারী সর্বপ্রথম বিপ্লবী দলের সংস্পর্শে আসেন। দু-তিন মাস পরে তিনি আরো কয়েকজন বিপ্লবী নেতার সান্নিধ্যে আসেন। এভাবে শুরু হয় বিপ্লবী দলের রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ। অল্প সময়ের মধ্যে তিনি বিনোদবিহারী মধুসূদন দত্ত, তারকেশ্বর দস্তিদরের মতো বিপ্লবী নেতাদের আস্থা অর্জন করেছিলেন। তখন তার বয়স ১৬ বছর। তিনি ১৯২৯ সালে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় কৃতিত্তের সাথে উত্তীর্ণ হন। তারপর ভর্তি হন চিটাগাং কলেজে। উচ্চতর শিক্ষা লাভের জন্য তিনি কলকাতায়ও গিয়েছিলেন। ১৯৩৪ এবং ১৯৩৬ সালে ব্রিটিশ রাজের রাজপুতনার ডিউলি ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দী থাকাবস্থায় তিনি প্রথম শ্রেণীতে আই.এ এবং বি. এ পাস করেন।

“মাস্টারদা সূর্যসেনের সঙ্গে আমার প্রথম দেখা ১৯২৯ সালে। একদিন হঠাত্ আমার এক বিপ্লবী বন্ধু এসে বললেন, আমাকে রাত ৮টায় অভয়মিত্র শ্মশানে যেতে হবে। সেখানে মাস্টারদা আমার সঙ্গে দেখা করবেন। বন্ধুর কথায় আমি ভীষণ আবেগাপ্লুত হলাম। মাস্টারদা সূর্যসেনের সঙ্গে আজ আমার দেখা হবে ভাবতেই গা কেঁপে উঠছিল।

সেদিন শনিবার। অমাবস্যার রাত। চট্টগ্রামের অভয় মিত্র শ্মশানঘাট ভীষণ ভীতসঙ্কুল জায়গা হিসেবে পরিচিত। দিনের বেলায় যেতেও লোকজন ভয় পায়। অথচ বিনোদবিহারী চৌধুরীকে আদেশ দেওয়া হয়েছিল এমনই একটি জায়গায় মাস্টারদার সঙ্গে দেখা করার জন্য। সবার সঙ্গে তিনি দেখা করেন না। তাঁর সঙ্গে দেখা হওয়া সৌভাগ্যের ব্যাপার। সুতরাং বিপ্লবী মন্ত্রে দীক্ষিত ১৯ বছরের টগবগে বিনোদবিহারী চৌধুরী হাজির হলেন অভয়মিত্র শ্মশানঘাট। "বহু দিনের সংস্কার ছিল শ্মশানে নাকি নানা রকম ভূত-প্রেতের আনাগোনা থাকে। তাই কিছুটা ভয় পাচ্ছিলাম। এদিক ওদিক হাঁটছিলাম, হঠাত্ করেই পিঠে হাতের স্পর্শ পেয়ে ভীষণ চমকে গেলাম, ফিরে তাকিয়ে দেখি এক ভদ্রলোক, দেখতে কিছুটা খাটো, সাদা ধুতির ওপর সাদা পাঞ্জাবি অন্ধকারে ফুটে উঠেছিল। তখন রাত ৮টার মতো বাজে। আমি মুগ্ধ চোখে তাঁকে দেখতে লাগলাম, ইনিই তাহলে বিখ্যাত বিপ্লবী সূর্যসেন, সবাই যাকে মাস্টারদা বলে ডাকে। সামনাসামনি তাঁর সঙ্গে এটাই আমার প্রথম স্বাক্ষাতে তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, কিরে ভয় পেয়েছিস? আমি ভয়ের কথা স্বীকার করে নিলাম। সত্যিই আমি ভয় পেয়েছিলাম। তারপর তিনি আমাকে নানা রকম প্রশ্ন করতে লাগলেন। আমি কেন বিপ্লবী দলে আসতে চাই। বিপ্লবী দলে যেন আমি না আসি সে জন্য নানাভাবে বোঝাতেও লাগলেন। কিন্তু আমি তখন দৃঢপ্রতিজ্ঞ, যেকোনো প্রকারেই হোক আমাকে বিপ্লবী দলে ঢুকতে হবে। সুতরাং এক সময় বললাম, আমি একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে বিপ্লবী দলে ঢুকে ইংরেজদের অত্যাচার-নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতে চাই, আপনি দয়া করে আমাকে নিরুত্সাহী করবেন না। শুনে সূর্যসেন স্মিত হাসলেন।----- বিনোদ বিহারী চৌধূরীর”

শুরু হলো সশস্ত্র বিপ্লববাদী জীবন। কঠোর নিয়ম শৃংখলা মেনে যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে তিনি সক্ষম হন। যার কারণে অল্প দিনেই বিনোদবিহারী চৌধুরী মাস্টারদা সূর্যসেনের স্নেহভাজন হয়ে উঠেছিলেন। ১৯৩০ সালের ঐতিহাসিক অস্ত্রাগার লুন্ঠনেও তিনি সূর্যসেনের সহযোগী ছিলেন। বিপ্লবী দলের সর্বাধিনায়ক মাস্টারদা ১৮ এপ্রিলকে চারটি এ্যাকশন পর্বে ভাগ করেছিলেন। প্রথম দলের দায়িত্ব ছিল ফৌজি অস্ত্রাগার আক্রমণ, দ্বিতীয় দলের ছিল পুলিশ অস্ত্রাগার দখল, তৃতীয় দলের ছিল টেলিগ্রাফ ভবন দখল, চতুর্থ দলের ছিল রেললাইন উত্পাটন। বিনোদবিহারী চৌধুরী ছিলেন পুলিশ অস্ত্রাগার দখল করার গ্রুপে।

১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল রাতে চট্টগ্রামে ব্রিটিশ শাসকের সব ঘাঁটির পতনের পর মাস্টারদার নেতৃত্বে চট্টগ্রামে স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়। সেই সময়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বললেন, “১৮ এপ্রিল রাতে চট্টগ্রামে ব্রিটিশদের মূল ঘঁটিগুলোর পতন ঘটিয়ে মাস্টারদার নেতৃত্বে শহর আমাদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। নেতা-কর্মীরা দামপাড়া পুলিশ লাইনে সমবেত হয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে এবং মাস্টারদাকে প্রেসিডেন্ট ইন কাউন্সিল, ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি, চিটাগাং ব্রাঞ্চ বলে ঘোষণা করা হয় এবং রীতিমতো মিলিটারি কায়দায় কুচকাওয়াজ করে মাস্টারদা সূর্যসেনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তুমুল 'বন্দে মাতরম' ধ্বনি ও আনন্দ-উল্লাসের মধ্যে এ অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়”।

জালালাবাদ যুদ্ধ ছিল বিনোদবিহারী চৌধুরীর প্রথম সম্মুখযুদ্ধ। সে দিন তিনি ব্রিটিশ সৈন্যদের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন অসীম সাহসিকতায়। গলায় গুলিবিদ্ধ হয়েও লড়াই থামাননি তিনি। চোখের সামনে দেখেছিলেন ১২ জন সহযোদ্ধার মৃত্যু। সে সময়ের এক ঘটনা বললেন তিনি, “আমরা দলে ছিলাম ৫৪ জন, পাহাড়ে লুকিয়ে আছি, তিন দিন কারো পেটে ভাত পড়েনি। পাহাড়ি গাছের দু-একটি আম খেয়ে দিন পার করেছি। এ কারণে বিপ্লবীদের মধ্যে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। এর মধ্যেই একদিন বিকেলে অম্বিকাদা কীভাবে যেন বড় এক হাঁড়ি খিচুড়ি নিয়ে হাজির হলেন। আমরা তো অবাক। ওইদিন সেই খিচুরি আমাদের কাছে মনে হয়েছিল অমৃত”।

“এর আগে অস্ত্রাগারে আগুন লাগাতে গিয়ে হিমাংশু সেন বলে এক বিপ্লবী অগ্নিদগ্ধ হয়। তাঁকে নিরাপদ স্থানে রাখার জন্য অনন্ত সিংহ ও গনেশ ঘোষ, আনন্দ গুপ্ত ও মাখন ঘোষাল দামপাড়া ত্যাগ করে। এ ঘটনার পর তত্কালীন চট্টগ্রাম জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সমুদ্র বন্দরের বিদেশী জাহাজ থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে সৈন্য নিয়ে আমাদের আক্রমণ করে। কিন্তু লোকনাথ বলের নেতৃত্বে একদল বিপ্লবী তার যোগ্য জবাব দিয়েছিল। এদিকে অনন্তদা ও গণেশদা হিমাংশুকে রেখে ফিরে না আসাতে মাস্টারদা অন্যান্যের সঙ্গে পরামর্শ করে দামপাড়া ছেড়ে নিকটবর্তী পাহাড়ে আশ্রয় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ২১ এপ্রিল তারিখেও তাঁদের সংগে যোগাযোগ না হওয়াতে শেষ রাতের দিকে পুনরায় শহর আক্রমণের উদ্দেশ্যে আমরা ফতেয়াবাদ পাহাড় হতে রওনা হই। মাস্টারদা আমাদের ডেকে বললেন, আমরা যেকোন প্রকারেই আমাদের কর্মসূচি পালন করব। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হলো ভোর রাতে চট্টগ্রাম শহর আক্রমণ করা হবে। বিনোদবিহারী চৌধুরীরা ফতেয়াবাদ পাহাড় থেকে সময়মতো শহরে পৌঁছাতে পারলেন না। ভোরের আলো ফোটার আগেই তাঁদের আশ্রয় নিতে হলো জালালাবাদ পাহাড়ে। ঠিক করা হলো রাতের বেলা এখান থেকেই শহরে ব্রিটিশ সৈন্যদের অন্যান্য ঘাটি আক্রমণ করা হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য বিপ্লবীদের, গরু-বাছুরের খোঁজে আসা রাখালরা মিলিটারি পোশাক পরিহিত বিপ্লবীদের দেখে পুলিশে খবর দেয়। ওই রাখালদের দেখেই সূর্যসেন প্রমাদ গুনেছিলেন। তখনই তিনি ধারণা করেন শত্রুর সংগে সংঘর্ষ অনিবার্য। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে তার আশংকা বাস্তব হলো। মাস্টারদা সূর্যসেন লোকনাথ বলকে আসন্ন যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্ব দিলেন”।

এরপর শুরু হলো পলাতক জীবন। কিন্তু পালিয়ে বেশিদিন থাকতে পারলেন না। তাঁকে জীবিত বা মৃত ধরে দেওয়ার জন্য ব্রিটিশ সরকার ৫০০ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে। শেষ পর্যন্ত ১৯৩৩ সালের জুন মাসে ব্রিটিশ সরকারের হাতে বিনোদবিহারী চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে। কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করতে না পারলেও বেঙ্গল ক্রিমিনাল ল অ্যামেন্ডমেন্ট এ্যাক্টে চিটাগাং জেল, কলকাতা প্রেসিডেন্সি জেল, দিউলি ডিটেনশান জেল এবং বাহরামপুর জেলে বিনা বিচারে পাঁচ বছর কারারুদ্ধ রাখা হয় তাঁকে। তিনি ১৯৩৮ সালে মুক্তি পান। কিন্তু এটি তার প্রকৃত মুক্তি ছিল না। তিনি পরের এক বছর বাড়িতেই নজরবন্দী জীবন কাটান। ১৯৩৯ সালে তিনি মূলত মুক্তি পান।

১৯৪১ সালের মে মাসে গান্ধীজীর ভারত ছাড় আন্দোলনে যোগদানের প্রস্তুতিকালে তাকে ব্রিটিশ সরকার গ্রেপ্তার করে। এসময় তিনি এবং চিটাগাং জেল, হিজলি বন্দী শিবির, ঢাকা জেল ও খকশি বন্দী শিবিরে তাঁকে আটক রাখা হয়। অবশেষে তিনি ১৯৪৫ সালের শেষের দিকে ছাড়া পান। এরপর পাকিস্থান আমলে ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হলে পাকিস্তান সরকার সিকিউরিটি এ্যাক্ট অনুযায়ী বিনোদবিহারী চৌধুরীকে বিনা বিচারে এক বছর কারাগারে আটকে রাখে। ব্রিটিশ-ইন্ডিয়ান জেলে বন্দী থাকার সময় তিনি মহাত্মা গান্ধীর অনুসারী হন।

ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের পর ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে তিনি রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা। তখন ছিলেন আইনসভার সদস্য। ২১ ফেব্রুয়ারি তিনি অ্যাসেম্বলিতে গিয়ে সারা বিশ্ববাসীর কাছে প্রচার করেন পাকিস্তান বাহিনীর বর্বর হত্যাকাণ্ডের কথা। ১৯৭১ সালে তিনি চট্টগ্রাম থেকে পালিয়ে ভারতে গিয়ে তরুণ যোদ্ধাদের রিক্রট করে ট্রেনিংয়ে পাঠিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় রাইফেল হাতে নিতে পারেননি বটে কিন্তু ক্যাম্পে ক্যাম্পে গিয়ে তরুণ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন এবং অনুপ্রাণিত যুগিয়েছেন।

১৯৩০ সালে কংগ্রেস চট্টগ্রাম জেলা কমিটি সহ-সম্পাদক, ১৯৪০-৪৬ সাল পর্যন্ত বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেস নির্বাহী কমিটির সদস্য, ৪৬ সালে চট্টগ্রাম জেলা কমিটি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৪৭ সালে ৩৭ বছর বয়সে পশ্চিম পাকিস্তান কংগ্রেসের সদস্য হন তিনি। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান সামরিক আইন জারির মাধ্যমে সব রাজনৈতিক দলকে বেআইনি ঘোষণা করলে তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নেন।

তিনি ১৯৩৯ সালে দৈনিক পত্রিকার সহকারী সম্পাদক হিসাবে তাঁর কর্ম জীবন শুরু করেন। এরপর ১৯৪০ সালে চট্টগ্রাম কোর্টের একজন আইনজীবি হিসাবে অনুশীলন শুরু করেন। কিন্ত অবশেষে তাঁর দীর্ঘ ক্যারিয়ার জীবনে শিক্ষকতাকেই তিনি পেশা হিসাবে গ্রহণ করেন।

১৯৭৭ সালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় প্লাজা উদযাপন পরিষদ সমাজসেবী হিসেবে তাঁকে সম্মাননা প্রদান করে। ১৯৮৮ সালে চট্টলা ইয়ুথ কেয়ার দেশ সেবক হিসেবে সম্মাননা পান। ১৯৯৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় সংহতি পরিষদ কর্তৃক তিনি সম্মাননা পান। ১৯৯৮ সালে দৈনিক ভোরের কাগজ, দৈনিক জনকন্ঠ, চট্টগ্রাম পরিষদ কলকাতা কর্তৃক সেবাকর্মী হিসেবে সম্মাননা পান। ২০০১ সালে বিনোদবিহারী চৌধুরীকে স্বাধীনতা পদক প্রদান করা হয়।ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে মাস্টারদা সূর্যসেনের সঙ্গী ও চট্টগ্রাম যুববিদ্রোহী আন্দোলনের অন্যতম বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরী ১০ এপ্রিল ২০১৩ পরলোকগমন করেন। তিনি কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা যান। বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরীর বয়স হয়েছিল ১০৪ বছর।

তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশে বরাবরই তাঁর আহ্বান সাহস অর্জন কর, শিরদাঁড়া সোজা কর। অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে জেগে উঠ। তোমাদের হাতেই দেশ পাল্টাবে। এজন্য প্রস্তুত হতে হবে। অহঙ্কার, অহমিকা ত্যাগ করতে হবে। দুর্বলতা, কাপুরুষতা, ভীরুতা ত্যাগ করে দেশ ও জনগণের কল্যাণে নিবেদিত হতে হবে। মাস্টার দার মনে কোন ধরনের অহঙ্কার অহমিকা ছিল না। তিনি ছিলেন উদার মনের বিশাল মানুষ। তিনি সহজ-সরল জীবন যাপনেই অভ্যস্ত ছিলেন। কিন্তু সেই তিনিই অন্যায় অসত্যের বিরুদ্ধে দৃঢ় ও কঠিন। বিপ্লবী বিনোদ বিহারী প্রায়শই বলেন, আমার দেশ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দেশ। কিন্তু এদেশে এখনও ধনী গরিবের বৈষম্য বিদ্যমান। এগুলো আমাকে প্রতিনিয়ত কষ্ট দেয়।



এক নজরে বিনোদ বিহারী চৌধুরী

জন্ম ১০ জানুয়ারি ১৯১১

মৃত্যু ১০ এপ্রিল ২০১৩ (১০৪ বছর)

জাতীয়তা বাংলাদেশী

বংশোদ্ভূত বাঙালি

নাগরিকত্ব বাংলাদেশ

পেশা বিল্পবী ও শিক্ষাবিদ

প্রভাবিত হয়েছেন সূর্য সেন

রাজনৈতিক আন্দোলন বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন

দম্পতি বিভা চৌধুরী

সন্তান বিবেকান্দ্র চৌধুরী

আত্মীয় কামিনী কুমার চৌধুরী (বাবা)

রামা চৌধুরী (মা)

পুরস্কার স্বাধীনতা পদক পুরস্কার



বিষয়: বিবিধ

১১৪২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

205462
১০ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০২:০১
চোথাবাজ লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
205542
১০ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৯:১৬
ফেরারী মন লিখেছেন : অনেক ভালো লাগলো পড়ে

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File