কেও ভাবে না অবহেলিত গ্রামের কথা ????????
লিখেছেন লিখেছেন গোলাম মাওলা ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১১:৫১:১৩ সকাল
কেও ভাবে না অবহেলিত গ্রামের কথা ????????
হা গ্রাম, গ্রামের কথা বলছি। ৫৬ হাজার বর্গমাইল শরীরে ৫৮ হাজার এক গুচ্ছ গ্রাম নিয়েই বাংলাদেশ। আমরা শহুরে মানুষ যত যাই বলিনা কেন, একটু ফিছনে ফিরে চাইলে দেখি আমাদের সবার উৎস বা শিকড় সেই গ্রামে।
আধুনিকতার যত কিছুই ব্যবহার করি না কেন আর আধুনিক কলা কৌশল ব্যবহার আমরা করি না কেন, সবার সব ক্ষেত্রেই আমাদের পথ চলা সেই গ্রাম কে নিয়েই। গ্রামকে পাশ কাটিয়ে কিছুই সম্ভব নয়। তাই বলা চলে বাংলাদেশের বাঙ্গালিদের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সব কিছু ওত প্রোত ভাবেই গ্রামিন সমাজ জীবনের সঙ্গে জড়িত। বাংলাদেশের ৭৬/৮০% মানুষ গ্রামে বসবাস করে। সেই গ্রামের কৃষকের উৎপাদিত খাদ্যশস্যের উপর গোটা রাষ্ট্র নির্ভরশীল এবং সেই গ্রামীণ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের উপর নির্ভর করে আমাদের জাতীয় উন্নয়ন।
সেই অতীত কাল হতেই গ্রাম আর গ্রামের মানুষ রাষ্ট্রের জন্য খাদ্য উৎপাদন করে আসছে এবং এই আধুনিক কালে তা করে যাচ্ছে। মেধা আর শক্তির যোগান দিয়ে গেছে এবং যাচ্ছে। রাজস্ব খাতে সবচেয়ে বেশি অর্থ জমা দিয়েছে। তাদের শ্রমের ফলে তিলে তিলে গড়ে উঠেছে নতুন নতুন শহর ও বন্দর। এত কিছুর পরেও আর্থ সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়েছে গ্রামীণ সমাজ।
অথচ আমার আপনার চেয়ে গ্রামের ঐ চাষা( শহুরে মানুষের ভাষায়) মানুষগুলিরই এই সভ্যতার অগ্রগতিতে বেশি অবদান।
কৃষি নির্ভর অর্থনীতি গ্রামীণ মানুষকে আজ স্বাবলম্বী করে তুলতে পারছে না ঘটছেনা তাদের স্বপ্নের বিকাশ। কেন তাদের এই অবস্থা?
>> একটু তলিয়ে দেখলেই এর প্রধান ও অন্যতম কারন তারা তাদের ন্যায্য মুল্য পাচ্ছে না। সরকার যন্ত্র হতে শুরু করে শহুরে প্রত্যেক টা মানুষ কোন না কোন ভাবে জড়িত এই ঠকানোর কাজে।<<
কৃষকরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে উৎপাদন করছে ফসল। আর লাভের পুরাটায় পকেটে ভরছে শহুরে ব্যবসায়ীরা।
“এই তো কদিন আগে আলু কাণ্ড দেখলে তার সত্যতা মিলে।”
এক কেজি আলু উৎপাদনে কৃষকের খরচ ৭ টাকা। অথচ তারা দাম পেয়েছে ২-৩ টাকা। সেই আলু ঢাকা তে আমি আপনি কিনেছি ১০-১২ টাকা।
তেমনি ধানের ক্ষেত্রে একটা হিসেব দেই-----
এবার দেখুন ১ বিঘা জমিতে একটি খরচ এর নমুনা:
১। সার.................................... ১০০০ টাকা
২। বীজ.................................... ২০০ টাকা
৩। শ্রমিক খরচ........................... ৭০০ টাকা
৪। হাল চাষ.............................. ৪০০ টাকা ( বিঘে প্রতি পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ)
৫। নিড়ানি................................. ৫০০ টাকা
৬। বিষ......................................... ৫০০ টাকা
@@মোট খরচ = ৩৮০০ টাকা
>>এখন দেখুন উৎপাদন ও পাওনার হিসেব:
১। উৎপাদন বিঘেতে ............................................. ১৮ মন
২। আইধার এর পাওনা......................... ৯ মন
৩। বিক্রয় বাবদ পাওনা.................. ৯ x ৫৫০= ৪৯৫০ টাকা
৪। খরচ বাদ দিয়ে কৃষকের নিকট থাকে ..... ৪৯৫০ -৩৮০০=১১৫০ টাকা
ধরেন একজন আইধার কৃষক ১০ বিঘে জমি চাষ করে অর্থাৎ তার বছরে আয় ১০ x ১১৫০= ১১৫০০ টাকা । কি চলবে বছরে ঐ টাকা দিয়ে পরিবার নিয়ে। এখন চিন্তা করুন কি করুন অবস্থা আমাদের এই প্রান্তিক কৃষকদের। এরা না পারে সইতে না পারে প্রতিবাদ করতে।
সরকার এবং বড় বড় ব্যবসায়ীদের কাওকে কক্ষনো গ্রামের কৃষকদের উন্নয়নের জন্য কোন ভাল পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। অথচ উন্নয়নের ভাগ নিতে সবার মুখে কৃষকের নাম। ঘটে যাওয়া আলু কাণ্ডে সরকারকে একটা পদক্ষেপ নিতে দেখা গেল না। দেখা যায় না কক্ষনো। নিলেও দেখা যায় দলিয় নেতা কর্মীর পকেট শুধু ভারি হয়। প্রকৃত খতিগ্রস্থ কৃষকরা আর পায় না তার সুফল।
>>ব্যাংক বা বড় জোতদার দের কাছ হতে আলু চাষের ধার নেওয়া টাকা কেমন করে তারা শোধ করবে?????
এই কথা কেও ভাবে না।
বিষয়: বিবিধ
১০৯০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমরা কেন একটা প্লাটফর্ম তৈরী করে কৃষক থেকে সরাসরি প্রান্তিক গ্রাহকের কাছে পৌছে দিচ্ছিনা যাতে মধ্যসত্বভোগীদের অংশ দু পক্ষই ভাগ করে নিতে পারি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন